LIVE
Loading latest headlines...

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

প্রশ্নঃ মৃতব্যক্তিকে গোসল দেয়ার মাধ্যমে ৪০বার ক্ষমা লাভ করার অন্যতম শর্ত গুলো কি?

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

মানুষের মৃত্যুর পর গোসল দেয়া ফরজে কেফায়া। অনেকের মধ্য থেকে কেউ গোসল দিয়ে দিলেই তা সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। আর মৃতব্যক্তি যদি নিখোঁজ কোনো ব্যক্তি হয় তবে তার গোসলের দেয়ার দায়িত্ব সার্বিকভাবে সব মুসলমানের।

মৃতব্যক্তিকে গোসল করাবে কারা? মৃতব্যক্তিকে গোসল করানো ব্যক্তির জন্য শর্তই বা কী? মৃতব্যক্তিকে গোসল করালে সাওয়াবই বা কী? এ সম্পর্কে ইসলামের রয়েছে কিছু দিক নির্দেশনা।

অনেকেই মৃতব্যক্তিকে গোসল দিতে ভয় পায়। অথচ মৃতব্যক্তিকে গোসল করালে অনেক ফজিলত লাভ হয়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে উল্লেখ করেন-

‘যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির দোষ ত্রুটি প্রকাশ করবে না এবং তাকে গোসল দিবে আল্লাহ তাআলা তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করে দেন।’

মৃতব্যক্তির গোসল সম্পর্কে কিছু দিক-নির্দেশনা রয়েছে। মৃতব্যক্তিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যারা গোসল করাতে পারবে, তারা হলো-
> গোসলের সুন্নাত সম্পর্কে বেশি জানা ব্যক্তিই মৃতব্যক্তিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গোসল দেবে।
> মৃত ব্যক্তি যদি কোনো ব্যক্তির অসিয়ত করে যায় তবে সেই বেশি হকদার।
> অসিয়ত না থাকলে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়রাই বেশি হকদার।
> রক্তের সম্পর্কে আত্মীয় অপারগ হলে নিকটাত্মীয়-স্বজন গোসল দেবে। এভাবে ধারাবাহিকতায় যারা আগে আসবে তারাই মৃতব্যক্তির গোসল দেবে।
> তারপর মৃতব্যক্তির মায়ের পক্ষের আত্মীয়-স্বজন।
> মৃতব্যক্তি নারী হলে তার অসিয়তকৃত নারীই তাকে গোসল দেবে। অসিয়ত না থাকলে পুরুষের মতো ধারাবাহিকভাবে নারীরা গোসল দেবে।

মৃতব্যক্তিকে গোসল দেয়ার মাধ্যমে ৪০বার ক্ষমা লাভ করার অন্যতম শর্ত হলো-
- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মৃতব্যক্তিকে গোসল দেয়া।
- মৃতব্যক্তির শারীরিক যে কোনো দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা।
- খারাপ-ভালো যা কিছুই দেখবে তা মানুষের কাছে না বলা।

পরিশেষে...
মৃতব্যক্তির গোসলে ভয় নয় বরং সাহস করে মৃতব্যক্তি গোসল দেয়া অনেক উত্তম কাজ। কারণ মৃতব্যক্তিকে যে ব্যক্তি গোসল দেয় প্রিয়নবির ঘোষণায় সে ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা ৪০বার ক্ষমা করে দেন। মৃতব্যক্তির গোসল দানকারীর জন্য এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে?

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃতব্যক্তির গোসল দেয়াসহ দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণের কাজে অংশগ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত সব নসিহত ও প্রতিদান লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।




প্রশ্ন: মৃতব্যক্তিদেরকে গোসল দেয়ার পদ্ধতি কি?

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

উত্তর
আলহামদুলিল্লাহ।
গোসলের শরিয়তসম্মত পদ্ধতি হচ্ছে- প্রথমে ইসতেনজা করাবে। অর্থাৎ মৃতব্যক্তির পেশাব বা পায়খানা জাতীয় কিছু বের হলে গোসলদানকারী হাতে একটি নেকড়া বেঁধে নিয়ে মৃতব্যক্তির পায়খানা ও পেশাবের স্থানদ্বয় ধুয়ে পরিস্কার করবে। নাভি ও হাঁটুর মাঝখানের স্থান ঢেকে নিয়ে পানি ঢালবে।
এরপর ওজু করাবে। মুখ ও নাক পানি দিয়ে মুছে দিবে। চেহারা ও হাতদ্বয় ধুয়ে দিবে। মাথা ও কানদ্বয় মাসেহ করাবে। পা দুটো ধুয়ে দিবে। এরপর বরইপাতা মিশ্রিত পানি তার মাথার উপর ঢালবে। এরপর তার ডান পার্শ্বে পানি ঢালবে। তারপর বাম পার্শ্বে পানি ঢালবে। এরপর সারা শরীরে পানি ঢালবে। শেষবার পানির সাথে কর্পুর দিবে। কর্পুর একজাতীয় সুগন্ধি; যা সবাই চিনে। কর্পুর শরীরকে ভাল রাখে এবং সুগন্ধি ছড়ায়।
এটি গোসলের উত্তম পদ্ধতি। তবে যেভাবেই গোসল করানো হোক না কেন সেটা জায়েয। গুরুত্বপূর্ণ হলো-মৃতব্যক্তির সারা শরীরে পানি পৌঁছানো ও নাপাকি দূর করা।
তবে উত্তম হলো- ইসতেনজা করানোর মাধ্যমে শুরু করা। এরপর ওজু করানো। এরপর বরই পাতার পানি দিয়ে তিনবার পানি ঢালা। এরপর সারা শরীরে তিনবার পানি ঢালা। প্রথমে ডান পাশে। তারপর বাম পাশে। তিনবার পানি ঢালবে।
যদি তিনবারের বেশিও পানি ঢালা প্রয়োজন হয় তাহলে পাঁচবার পানি ঢালা যেতে পারে। যদি পাঁচবারের বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে সাতবার পানি ঢালবে। অর্থাৎ বেজোড় সংখ্যায় শেষ করবে।
এটি উত্তম। যদি একবার বা দুইবার গোসল করায় সেটাও জায়েয হবে। তবে উত্তম হচ্ছে- তিনবার। প্রয়োজন হলে পাঁচবার, আরও বেশি প্রয়োজন হলে সাতবার।[শাইখ বিন বাযের নুরুন আলাদ দারব ফতোয়াসমগ্র থেকে কিঞ্চিত সংক্ষেপিত]
আল্লাহই ভাল জানেন।



প্রশ্ন :সূর্য ডোবার পরপরই ইফতার করা উত্তম; নাকি আকাশ থেকে আলো দূর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম?

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
প্রশ্ন
সূর্য ডোবার পরপরই ইফতার করা উত্তম; নাকি আকাশ থেকে আলো দূর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম?

উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।
সুন্নত হচ্ছে- অবিলম্বে ইফতার করা; অর্থাৎ সূর্য ডোবার অব্যবহিত পরেই ইফতার করা। বরং তারাগুলো উদিত হওয়া পর্যন্ত দেরী করা ইহুদীদের কর্ম এবং শিয়া রাফেযি সম্প্রদায় তাদেরকে অনুসরণ করে আসছে। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে ভালভাবে সন্ধ্যা হওয়ার জন্য দেরী করা রোযাদারের জন্য বাঞ্ছনীয় নয়। এমনকি আযান শেষ হওয়া পর্যন্তও বিলম্ব করা ঠিক নয়। কারণ এর কোনটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ নয়।
সাহল বিন সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "মানুষ ততদিন কল্যাণে থাকবে যতদিন তারা অবিলম্বে ইফতার করবে"।[সহিহ বুখারী (১৮৫৬) ও সহিহ মুসলিম (১০৯৮)]

ইমাম নববী বলেন:
"এ হাদিসে সূর্য ডোবা নিশ্চিত হওয়ার পর অবিলম্বে ইফতার করার প্রতি উৎসাহ রয়েছে। যতদিন উম্মত এ সুন্নত রক্ষা করে যাবে ততদিন তারা সুশৃঙ্খল থাকবে এবং তারা কল্যাণে থাকবে। যদি তারা ইফতার করতে বিলম্ব করতে থাকে তাহলে সেটা তাদের বিশৃঙ্খলায় লিপ্ত হওয়ার আলামত।"[শারহে মুসলিম (৭/২০৮)]
ইবনে আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি ও মাসরূক আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বললাম: ইয়া উম্মুল মুমেনীন! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে একজন অবিলম্বে ইফতার করেন ও অবিলম্বে নামায পড়েন। অপর একজন বিলম্বে ইফতার করেন ও বিলম্বে নামায আদায় করেন। তিনি বললেন: তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি অবিলম্বে ইফতার করেন ও অবিলম্বে নামায পড়েন? আমরা বললাম: আব্দুল্লাহ্‌ অর্থাৎ ইবনে মাসউদ। তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবেই করতেন।[সহিহ মুসলিম (১০৯৯)]

সতর্কতা:
"এ যামানায় যে গর্হিত বিদাতগুলো প্রবর্তিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রমযান মাসে ফজর হওয়ার ২০ মিনিট আগে দ্বিতীয় আযান দেয়া এবং বাতিগুলো নিভিয়ে দেয়া; যে বাতিগুলো রোযা রাখতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য পানাহার নিষিদ্ধ হওয়ার আলামত হিসেবে রাখা হয়। যে ব্যক্তি এটি প্রবর্তন করেছে সে এই ধারণা থেকে করেছে যে, এতে ইবাদতের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে। গুটি কতক মানুষ ছাড়া আর কাউকে বিষয়টি জানায় না। একই চিন্তা থেকে তারা সূর্য ডোবার কিছু সময় পরে আযান দেয়; তাদের ধারণা অনুযায়ী যাতে করে সময় হওয়াটা জোরদার হয়। এভাবে তারা ইফতার করতে দেরী করে ও সেহেরী খাওয়া আগে আগে শেষ করে সুন্নাহ্‌র বিপরীত আমল করে যাচ্ছে। তাই তাদের মাঝে কল্যাণ হ্রাস পেয়েছে এবং অকল্যাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আল্লাহ্‌ই সহায়।"[ফাতহুল বারী (৪/১৯৯)]



প্রশ্ন: চাঁদ দেখাই ধর্তব্য; জ্যোর্তিবিদদের হিসাব-নিকাশ নয়

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
প্রশ্ন: এখানে মুসলিম আলেমদের মধ্যে রমযানের রোযার শুরু ও ঈদুল ফিতর নির্ধারণ নিয়ে চরম মতভেদ। তাদের মধ্যে কেউ “চাঁদ দেখে রোযা রাখ ও চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ” এ হাদিসের উপর নির্ভর করে চাঁদ দেখাকে ধর্তব্য মনে করেন। আর কেউ আছেন তারা জ্যোর্তিবিদদের মতামতের উপর নির্ভর করেন। তারা বলেন: বর্তমানে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছেন; তাদের পক্ষে চন্দ্র মাসের শুরু জানা সম্ভব। এ মাসয়ালায় সঠিক রায় কোনটি?




উত্তর
আলহামদুলিল্লাহ।
এক:
সঠিক অভিমত হচ্ছে, যে অভিমতের ভিত্তিতে আমল করা কর্তব্য তা হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ” যা প্রমাণ করছে তার ভিত্তিতে আমল করা। অর্থাৎ চর্মচোখে চাঁদ দেখে রমযান মাস শুরু করা ও রমযান মাস শেষ করা। কেননা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে শরিয়ত বা অনুশাসন দিয়ে পাঠানো হয়েছে সেটা কিয়ামত পর্যন্ত শ্বাশত ও অব্যাহত থাকবে। ইসলামী শরিয়ত সর্বকাল ও সর্বযুগের জন্য উপযোগী। হোক না, জাগতিক জ্ঞান অগ্রসর হোক; কিংবা অনগ্রসর থাকুক। হোক না যন্ত্রপাতি পাওয়া যাক; কিংবা না পাওয়া যাক। হোক না কোন দেশে জ্যোর্তিবিদ্যায় পারদর্শী বিজ্ঞানী থাকুক কিংবা না থাকুক। পৃথিবীর সর্বকালের, সর্বস্থানের মানুষ চাঁদ দেখে আমল করার সাধ্য রাখে। কিন্তু, জ্যোর্তিবদ্যায় পারদর্শী ব্যক্তি কোথাও পাওয়া যেতে পারে; আবার কোথাও পাওয়া যাবে না। যন্ত্রপাতি হয়তো কোথাও পাওয়া যাবে; আবার হয়তো কোথাও পাওয়া যাবে না।
দুই:
জ্যোর্তিবিজ্ঞান কিংবা অন্যান্য বিজ্ঞানের যে বিকাশ ঘটেছে কিংবা ভবিষ্যতে ঘটবে নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাআলা সে ব্যাপারে জ্ঞাত আছেন। তা সত্ত্বেও আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: সুতরাং তোমাদের মাঝে যেব্যক্তিএই মাসপাবেসে যেনরোজাপালন করে।”[২ সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৫] এ বিধানকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন যে, “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ; চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ”[আল-হাদিস]। এর মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের রোযা শুরু করা ও রোযা ভঙ্গ করাকে চাঁদ দেখার সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। নক্ষত্রের হিসাবের সাথে মাস গণনাকে সম্পৃক্ত করেননি। অথচ আল্লাহ্‌র জ্ঞানে রয়েছে যে, জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা অচিরেই নক্ষত্রের হিসাব ও বিচরণের জ্ঞানে এগিয়ে যাবেন। তাই মুসলমানদের কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্‌র রাসূলের মুখনিসৃত যে বিধান আল্লাহ্‌ দিয়েছেন সেটাকে গ্রহণ করা। তা হচ্ছে- চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোযা রাখা ও রোযা ভাঙ্গা। এটি আলেমদের ইজমার পর্যায়ে। যে ব্যক্তি এ অভিমতের বিপক্ষে গিয়ে নক্ষত্র গণনার উপর নির্ভর করবে তার অভিমতটি অসমর্থিত; এর উপর নির্ভর করা যাবে না।
আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png