LIVE
Loading latest headlines...

বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০

নসীহত ও আমানত

বৃহস্পতিবার, মে ১৪, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

পাঠ সংক্ষেপ
নসীহত ও আমানত: নসীহত তথা কল্যাণকামিতা হলো দীনের ভিত্তি,মৌল উপকরণ।বরং দীনের পুরোটাই হলো কল্যাণকামিতা। নসীহত হবে আল্লাহর জন্য,আল্লাহর কিতাবের জন্য, মুসলমানদের নেতা ও কর্ণধার এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্য।মানুষ যদি উল্লিখিত বিষয়গুলোয় কল্যাণকামী হয় তবে সে তার দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে নেয়। আর যদি কোনো একটিতে অবহেলা করে তবে অবহেলার মাত্রানুযায়ী দীনকে অপূর্ণাঙ্গ রেখে দেয়। অবশ্য নসীহত তথা কল্যাণকামিতার ক্ষেত্রে একজন মুসলমানকে আমানদারিরও পরিচয় দিতে হবে সমানভাবে। কোনো মানুষকে তোষামোদের আশ্রয়ে না গিয়ে যা সত্য তা প্রকাশ করতে হবে অকুতোভয়ে।
 
প্রথম খুৎবা
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ خَلَقَ الْخَلْقَ لِيَعْبُدُوهُ، وَأَبَانَ آيَاتِهِ لِيَعْرِفُوْهُ، وَأَرْسَلَ رُسُلَهُ وَأَنْبِيَاءَهُ نُصَحَاءَ أُمَنَاءَ لِيَعْرِفَ النَّاسُ طَرِيْقَ الْوُصُولِ إِلَيْهِ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، وَأَشْهَدُ أَنَّ نَبِيَّنَا مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوُلُهُ صَلََّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَالتَّابِعِيْنَ لَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيِنِ، أَمَّا بَعْدُ :

আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে

সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
মুহতারাম হাযেরীন! আজ আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা রাখব। বিষয়টি এতই জরুরী যে, প্রতিটি মুসলমান নর-নারী তার প্রতি মুখাপেক্ষী। শুধু তাই নয়, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে পূর্ণ দীন বলে অভিহিত করেছেন এবং সমস্ত নবী-রাসূল তার ওপর আমল করেছেন। বিষয়টি হলো, নসীহত বা কল্যাণকামিতা।

নসীহত কাকে বলে? এ সম্পর্কে ইমাম খাত্তাবী রহ. ও অন্যান্যরা বলেন, ‘নসীহত হলো, অন্যের ভালো চাওয়া বা কল্যাণ কামনা করা’।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আল্লাহ তা‘আলার একমাত্র মনোনীত দীন হলো ইসলাম। আর ইসলামের মূল ভিত্তি হলো-নসীহত। যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
(الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، قَالُوْا : لِمَنْ يَا رَسُوْلَ اللَّهِ؟ قَالَ : لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُوْلِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ وَعَامَّتِهِمْ ‘)
দীন হলো নসীহত, দীন হলো নসীহত, দীন হলো নসীহত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নসীহত কার জন্য? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: মহান আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল, মুসলমানদের ইমাম এবং সমস্ত মুসলমানের জন্য’ (মুসলিম)।

সুতরাং যখন কোনো বান্দা হাদীসে বর্ণিত ক্ষেত্রসমূহের জন্য পরিপূর্ণরূপে নসীহত বা কল্যাণ কামনা করবে তখন তার দীন পূর্ণ হবে। আর এতে যার যতটুকু কমতি থাকবে তার দীন ততটুকু কম থাকবে।

সুপ্রিয় মুসল্লিয়ান! আল্লাহর জন্য নসীহতের অর্থ, যাবতীয় আমল একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা এবং তার সন্তুষ্টি অর্জনে আন্তরিক হওয়া। এটা এভাবে করতে হবে যে, প্রতিটি মানুষ নিজকে সত্যিকার অর্থেই আল্লাহ তা‘আলার দাস বলে মনে করবে, তাঁর যে কোনো ফয়সালা মেনে নিবে, তিনি যা দিয়েছেন তা নিয়েই তুষ্ট থাকবে, তাঁর আদেশগুলো পালন করবে ও নিষেধগুলো বর্জন করবে এবং উল্লিখিত সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই উদ্দেশ্য ও মকসুদ বানাবে কোনো অবস্থাতেই লৌকিকতা ও সুনাম-সুখ্যাতি কামনা করবে না।

আল্লাহর কিতাবের জন্য নসীহতের অর্থ
আল্লাহর কিতাবের জন্য নসীহতের অর্থ হলো, তা তিলাওয়াত করা, তাতে বর্ণিত আদেশ-নিষেধগুলো মেনে চলা, তার বিষয়সমূহের সত্যায়ন করা, ভ্রান্ত মতালম্বীদের রদবদল ও মুলহিদদের অপব্যাখ্যা থেকে তাকে রক্ষা করা এবং এ বিশ্বাস রাখা যে, এটা মহান রাব্বুল আলামীন, আল্লাহ তা‘আলা র কালাম, যা ওহীর মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ হয়েছে।

আল্লাহর রাসূলের জন্য নসীহতের অর্থ

আল্লাহর রাসূলের জন্য নসীহতের অর্থ হলো, তাঁকে মনেপ্রাণে মহব্বত করা, জাহেরী বাতেনী উভয় দিক দিয়ে তাঁর অনুসরণ করা, তাঁর জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর তাঁকে সাহায্য করা, তাঁর বক্তব্য ও হেদায়েতকে অন্যসব বক্তব্য ও হেদায়েতের ওপর প্রাধান্য দেয়া ইত্যাদি।

মুসলমানদের ইমামের জন্য নসীহতের অর্থ
মুসলমানদের ইমাম বা শাসকগোষ্ঠির জন্য নসীহতের অর্থ হলো, তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা, তাদেরকে ঐসব বিষয়ে সুপরামর্শ দেয়া যেসব বিষয়ে উম্মতের দীন ও দুনিয়ার ফায়দা নিহিত আছে এবং সেই সুপরামর্শ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ না দেয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কথা শোনা ও মানা এবং এই বিশ্বাস রাখা যে, তারা আমাদের অনুসরণীয় ব্যক্তি। কেননা এর বিপরীত করা তাদের নির্দেশাবলীর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন এবং সীমাহীন বিভেদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বৈ কিছু নয়।

সমস্ত মুসলমানের জন্য নসীহতের অর্থ

সমস্ত মুসলমানের জন্য নসীহতের অর্থ হলো, নিজের জন্য যা পছন্দ করা হয় তা তাদের জন্য পছন্দ করা, তাদের জন্য কল্যাণের যাবতীয় দরজা খুলে দেয়া, কল্যাণের প্রতি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা, মন্দ ও অকল্যাণের যাবতীয় পথ বন্ধ করা এবং তা থেকে তাদেরকে দূরে রাখা। পরস্পরে ভালোবাসা ও ভ্রাত্বত্বের বিনিময় করা, তাদের সৌন্দর্য ও গুণসমূহের প্রচার করা এবং দোষসমূহ গোপন রাখা। যালেম-মাযলুম উভয়কে সাহায্য করা। তা এভাবে যে, যালেমকে তার যুলম থেকে বিরত রাখা এবং মযলুমকে যুলম থেকে রক্ষা করা।

যখন কোনো সমাজ উল্লিত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে তখন সেখানে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজ করবে এবং সমাজের লোকজন স্বাচ্ছন্দময় ও প্রশংসনীয় জীবনযাপন করবে।

হে আল্লাহর বান্দাগণ! পূর্বের আলোচনা দ্বারা একথা পরিস্কার হয়ে গেছে যে, নসীহত বা কল্যাণকামিতা গোটা দীনকে শামিল করে। শামিল করে দীনের ছোট-বড় সকল শাখা-প্রশাখাসহ আল্লাহ ও তার বান্দাদের যাবতীয় হক বা অধিকারসমূহকে।

সুতরাং যেখানে আল্লাহর হক পদদলিত করে হারামকর্ম সম্পাদন করার দুঃসাহস দেখানো হয়, সেখানে কি আল্লাহর জন্য নসীহত থাকে?

এমনিভাবে যেখানে আমানতের খেয়ানত করা হয় এবং লেনদেনে ধোঁকা দেওয়া হয় সেখানে কি নসীহত থাকে?

অনুরূপভাবে যেখানে মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ার কামনা করা হয় এবং যেখানে তাদের দোষত্র“টি ও পদস্খলন খুঁজে বেড়ানো হয় সেখানে কি নসীহত থাকে? বস্তুত যাদের মধ্যে এগুলো বিদ্যমান তারা নসীহত বা কল্যাণকামিতার গুণ থেকে বহু দূরে অবস্থান করছে।

কল্যাণকামীদের জন্য সুসংবাদ! আর ধোঁকাবাজদের জন্য আফসোস!! আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এবং আপনাদের সবাইকে নসীহতের গুণে গুনান্বিত করুন এবং লাঞ্ছনা ও অপমানের যাবতীয় উপায়-উপকরণ থেকে হেফাযত করুন। আমীন।

কল্যাণকামী ব্যক্তিকে কল্যাণ কামনার সময় যেসব বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে

১. নসীহত যার জন্যই হোক না কেন, তাতে কোনো রিয়া বা লৌকিকতা থাকবে না। থাকবে না কোনো সুনাম বা সুখ্যাতি অর্জনের কামনা-বাসনা বরং নসীহত বা কল্যাণকামনা হবে শুধু আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে। অন্যকোনো উদ্দেশ্যে নয়। কেননা যেসব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয় না তা আল্লাহ তা‘আলা কবুল করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
{وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ}
‘তাদেরকে কেবল এ নির্দেশই দেওয়া হয়েছে যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্র ইবাদত করবে’ (সূরা বায়্যিনাহ: ৫)।

২. নসীহত হতে হবে ইলমনির্ভর। অর্থাৎ যে বিষয়ের নসীহত করা হচ্ছে, সে বিষয়ে নসীহতকারীর স্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।

৩. নসীহতকারীকে অবশ্যই আমানতদার ও বিশ্বস্ত হতে হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা হূদ আলাইহিস সালামের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
{أُبَلِّغُكُمْ رِسَالَاتِ رَبِّي وَأَنَا لَكُمْ نَاصِحٌ أَمِينٌ ‘}
আমি তোমাদের নিকট আমার রবের পয়গাম পৌঁছে দেই। আর আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত কল্যাণকামীও বটে’ (সূরা আল আরাফ:৬৮)।

৪. শাসক-শাসিত সবার জন্য নসীহত হবে গোপনে। তবে নসীহত বা কল্যাণকামনার বিষয়টি যদি এমন হয় যে, গোপনে তা সম্পাদন করা সম্ভব নয় তখন তা প্রকাশ্যে করাতে কোনো অসুবিধা নেই। বিশেষ করে বিষয়টি যদি ইজমা তথা সকলের ঐক্যমতে প্রতিষ্ঠিত কোনো বিষয়ের বিরোধিতা প্রতিহত করার জন্য হয় তবে তো সেই নসীহত অবশ্যই প্রকাশ্যে করতে হবে।

৫. যার কল্যাণ কামনা করা হয় তার থেকে কল্যাণাকামীকে বেশী জ্ঞানী, মর্যাদায় বড় এবং ন্যায়পরায়ণতায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হওয়া জরুরী নয়।

ইমাম আহমদ ইবনে ইসহাক বলেন, ‘স্বল্পজ্ঞানী ব্যক্তি যদি অধিকজ্ঞানী ব্যক্তিকে অন্যায় কর্মে বাধা দিতে না পারত, তাহলে আমর বিল মারুফ বা সৎকাজের আদেশ করার বিষয়টি বন্ধ হয়ে যেত এবং আমরা বনী ইসরাঈলের মতো হয়ে যেতাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
{كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ ‘}
তারা পরস্পরকে মন্দ কাজে নিষেধ করত না, যা তারা করত’ (সূরা মায়িদা: ৭৯)।

মোটকথা, কম সম্মানী ব্যক্তি অধিক সম্মানী ব্যক্তিকে এবং পাপাচারী ব্যক্তি নেককার ব্যক্তিকেও নসীহত করতে পারবে। পারবে তাকে অন্যায় ও গর্হিত কর্ম থেকে ফিরিয়ে রাখতে এবং এসব বিষয়ে তাকে সতর্ক করতে। তবে এক্ষেত্রে তাদের ইজ্জত-সম্মানের প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যাতে তাদের মর্যাদায় কোনো আঘাত না লাগে।

একবার হাসান বসরী রহ. এক লোককে দেখলেন যে, সে এক ব্যক্তির জানাযা পড়ে ফিরছে। হাসান বসরী রহ. তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি এরূপ মনে হয় যে, লোকটি যদি পুনরায় দুনিয়ায় ফিরে আসতে পারত তবে কি সে নেক আমল করত?

লোকটি জবাবে বলল, হ্যাঁ। তখন হাসান বসরী রহ. বললেন, সে তো আর ফিরে আসতে পারবে না এবং নেকআমলও করতে পারবে না কিন্তু তুমি তো জীবিত আছ। তাই তুমি তার স্থলে পৌঁছার আগেই নেক আমল করে নাও।

আমরা যদি খুলাফায়ে রাশেদীন এবং হেদায়েতপ্রাপ্ত ইমামগণের জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখব যে, তাদের কোনো দোষ কেউ ধরিয়ে দিলে তারা তাতে বেশ খুশি হতেন এবং কল্যাণকামী ব্যক্তির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন। এটাকে তারা মোটেই খারাপ মনে করতেন না।

আবূ বকর রাযি. বলেন, কেউ আমাদের দোষ ধরে দিলে আমরা যদি তা গ্রহণ না করি তবে আমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। আর তোমাদের মধ্যেও কোনো কল্যাণ নেই, যদি তোমরা আমাদের দোষ-ত্র“টি না ধর’।

উমর রাযি. বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো দোষ ধরিয়ে দিল আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর রহম করুন।
بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر ِالحْكِيْمِ, أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .
 
দ্বিতীয় খুৎবা
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، أَحْمَدُهُ سُبْحَانَهُ وَأَشْكُرُهُ، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنْ نَبِيَّنَا مُحَمَّدا عَبْدُهُ وَرَسُوُلُهُ صَلَّى اللهُ وَسَلَّمَ عَلَيْهِ وَعَلَىَ آَلِهِ وَأَصْحَابِهِ وَالتَّابِعِيْنَ لَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَىَ يَوْمِ الدِّيِنِ، أَمَّا بَعْدُ:

সুপ্রিয় মুসল্লিয়ান! আমানত একটি বিরাট দায়িত্ব ও ভারী বোঝা। তবে আল্লাহ তা‘আলা যার জন্য তা হালকা করে দেন তার কথা ভিন্ন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন
{إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ عَلَى السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَنْ يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا الْإِنْسَانُ إِنَّهُ كَانَ ظَلُومًا جَهُولًا.}

‘নিশ্চয় আমি আসমানসমূহ, যমীন ও পর্বতমালার প্রতি এ আমানত পেশ করেছিম অতঃপর তারা তা বহন করতে অস্বীকার করেছে এবং এতে ভীত হয়েছে। নিশ্চয় সে ছিল অতিশয় যালিম, একান্তই অজ্ঞ’ (সূরা আহযাব: ৭২)।

আমানত কাকে বলে? আমানত হলো, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তার হক ও ইবাদতসমূহ শরীয়ত সমর্থিত পন্থায় আদায় করা এবং কোনো ধরনের ত্রুটি ও কম না করে মানুষের হকসমূহ আদায় করা।

মুসলিম ভাই ও বন্ধুগণ! আল্লাহ তা‘আলা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেন আমানতকে তার নিজ নিজ হকদারের কাছে পৌঁছে দেই এবং লোকদের মাঝে ন্যায়বিচার করি। বস্তুত এ দুটি বিষয় এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলো ছাড়া আমানতের অস্তিত্বই কল্পনা করা যায় না।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আমরা সবাই জানি যে, আমানত রক্ষা করার এই গুরুদায়িত্ব সবখানেই আছে। আছে প্রতিটি জিনিসের মধ্যে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :
(كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَالْإِمَامُ رَاعٍ، وَهُوَ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِيْ أَهْلِهِ، وَهُوَ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ فِيْ بَيْتِ زَوْجِهَا، وَهِيَ مَسْؤُوْلَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا ، وَالْخَادِمُ رَاعٍ فِيْ مَالِ سَيِّدِهِ، وَهُوَ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِيْ مَالِ أَبِيْهِ وَهُوَ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ)
‘ সরকারপ্রধান বা আমীর তার প্রজাদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। ব্যক্তি তার পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরে দায়িত্বশীল। সেও তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদে দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ব্যক্তি তার পিতার সম্পদে দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’ (বুখারী)।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আমানতের বিষয়টি কেবল অর্থ-সম্পদ আদায় ও অঙ্গীকার পূরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ।

আমানত হচ্ছে- তাওহীদের বৃক্ষ, ঈমানের ফল, হিজরতকারীদের জন্য ছায়া এবং মুসাফিরের জন্য পাথেয় স্বরূপ। এটা মূল্যবান মোতি, স্বচ্ছ মণি এবং দক্ষ কারীগরের হাতে নির্ভেজাল খনি সদৃশ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
(إِنَّ الْأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِيْ جَذْرِ قُلُوْبِ الْرِّجَالِ ثُمَّ عَلِمُوْا مِنْ الْقُرْآنِ ثُمَّ عَلِمُوْا مِنْ السُّنَّةِ)
‘নিশ্চয় আমানত প্রথমে মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় অবর্তীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তারা তাকে কুরআন থেকে শিখেছে, তারপর শিখেছে হাদীস থেকে’ (বুখারী)

আমানত হলো, আল্লাহ তা‘আলার বিধি-বিধানকে মানবজীবনের প্রতিটি অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:
{الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ}
‘তারা এমন যাদেরকে আমি যমীনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে’ (সূরা আল-হজ্জ: ৪১)।

নামায একটি আমানত। যখন কোনো ব্যক্তি নামায নষ্ট করে তখন সে নামায ছাড়া অন্যান্য আমলকে আরো বেশি নষ্ট করবে।

ইমাম যুহরী রহ. বলেন, একদা আমি দামেস্কে আনাস ইবনে মালিক রাযি. এর খেদমতে উপস্থিত হলাম। দেখলাম, তিনি অঝোরে কাঁদছেন। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, কেন কাঁদছেন?

জবাবে তিনি বললেন, এখানে আমি নামায ছাড়া অন্য কোনো আমল ঠিকঠাক মতো কাউকে করতে দেখিনি। আজ দেখছি তাও নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ লোকজন এখন নামায ও ঠিকমত আদায় করছে না (বুখারী)।

যাকাতও আমানত। আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. যাকাত প্রদানে অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী বলে আখ্যায়িত করেন।

রোযা , হজ্ব, মানুষদেরকে আল্লাহর পথে আহ্বান করা, সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্য করা এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত দীনের ওপর অটল থাকাও আমানত। পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ, মুসলমানদের ধন-সম্পদ হিফাযত করা এবং অন্যের মান-সম্মান রক্ষা করাও আমানত। অধিকার সংরক্ষণের শক্তিও এক প্রকার আমানত। যেমন বাদশাহ ইউসুফ আলাইহি সালামকে বলেছিলেন:
{إِنَّكَ الْيَوْمَ لَدَيْنَا مَكِينٌ أَمِينٌ، قَالَ اجْعَلْنِي عَلَى خَزَائِنِ الْأَرْضِ إِنِّي حَفِيظٌ عَلِيمٌ}
‘ নিশ্চয় আজ আপনি আমাদের নিকট মর্যাদাবান ও আস্থাভাজন। সে বলল, আমাকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের দায়িত্ব দিন, নিশ্চয় আমি যথাযথ হিফাযতকারী, সুবিজ্ঞ’ (সূরা ইউসুফ: ৫৪-৫৫)।

নবী শুয়াইব আলাইহিস সালামের কন্যা মূসা আলাইহিস-সালাম সম্পর্কে বলেছিলেন :
{يَا أَبَتِ اسْتَأْجِرْهُ إِنَّ خَيْرَ مَنِ اسْتَأْجَرْتَ الْقَوِيُّ الْأَمِينُ}
‘ হে আমার পিতা! আপনি তাকে মজুর নিযুক্ত করুন। নিশ্চয় আপনি যাদেরকে মজুর নিযুক্ত করবেন তাদের মধ্যে সে উত্তম, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত’ (সূরা কাসাস: ২৬)।

প্রতিটি মানুষকে তার নিজ নিজ মর্যাদা অনুযায়ী সম্মান করা, তাদের হক আদায়ে ত্র“টি না করা এবং সকলের সাথে ন্যায়ানুগ আচরণ করাও আমানত। ইরশাদ হয়েছে
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى}
‘ হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর জন্য ন্যায়ের সাথে সাক্ষ্যদানকারী হিসেবে সদা দণ্ডায়মান হও। কোনো কওমের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে কোনোভাবে প্ররোচিত না করে যে, তোমরা ইনসাফ করবে না। তোমরা ইনসাফ কর, তা তাকওয়ার নিকটতর’ (সূরা মায়িদা: ৮)।

আল্লাহর একত্ববাদে সাক্ষ্য দেয়া, মুসলমানদের কল্যাণ কামনা করা এবং হক বা সত্য বিষয় বর্ণনা করাও আমানত।

অতএব, হে আল্লাহর বান্দাগণ! আল্লাহকে ভয় করুন। একে অপরের কল্যাণ কামনা করুন। কেননা কল্যাণকামিতার নামই হলো দীন। যে জাতির মধ্যে পরস্পর কল্যাণ কামনার নিয়ম চালু নেই, সে জাতির কোনো উন্নতি ও কল্যাণ নেই। আমানতকে তার হকদারের কাছে পৌঁছে দিন। মনে রাখবেন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

কেবল নিজকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য মানুষের জন্ম নয় বরং মানব জন্মের উদ্দেশ্য হলো, সে নিজের কল্যাণ চিন্তার পাশাপাশি অন্যের কল্যাণও মনেপ্রাণে কামনা করবে।

প্রিয় মুসল্লিয়ান! আজকের আলোচনা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে পারি যে, আমরা আজ থেকে কেবল নিজের কল্যাণ-চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকবো না বরং আমার পরিবারের, আমার সমাজের, আমার দেশের এমনকি সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কল্যাণের জন্য যথাসাধ্য সব কিছুই করব। আমরা এর জন্য জান দেব, মাল দেব, সময় দেব। নিজের জ্ঞান ও মেধা খরচ করে অবিরত চিন্তা করে যাব-কিভাবে তাদের মঙ্গল সাধনা করা যায়। কিভাবে তাদের মুখে হাসি ফুটানো যায়। কিভাবে তাদের দঃখ-দুর্দশা লাঘব করা যায়। যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা এ কাজটি আনজাম দিয়ে যেতে পারি তাহলে পদে পদে আমরা আল্লাহর সাহায্য ও মদদ প্রাপ্ত হবো। এতে কোনো সন্দেহ নেই। উপরন্তু ইহকালীন শান্তি, সুখ, সম্মান ও পরকালীন অফুরন্ত নেয়ামত তো আছেই।

اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَى عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ، صَاحِبِ الْوَجْهِ الْأَنْوَرِ، وَالْجَبِيْنِ الْأَزْهَرِ، وَارْضَ اَللَّهُمَّ عَنِ الْأَرْبَعَةِ الْخُلَفَاءِ أَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَعَلِيٍّ، وَعَنْ سَائِرِ أَصْحَابِ نَبِيِّكَ أَجْمَعِيْنَ، وَعَنِ التَّابِعِيْنَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَىَ يَوْمِ الْدِّيِنِ

হে করুণাময় আল্লাহ! আপনি আমাদের শক্তি দিন, সাহস দিন, অন্যের মঙ্গলসাধন করার জন্য খাঁটি মনে পাক্কা এরাদা করার তাওফীক দিন।

হে দয়াময় রব! যারা দীনে মুহাম্মদীর সাহায্যকারী, আপনি তাদেরকে সাহায্য করুন এবং আমাদেরকে সেই দলের অন্তর্ভুক্ত করুন। আর যারা দীনে মুহাম্মদীকে অপমান ও অপদস্থ করতে চায়, তাদেরকে হিদায়েত করুন। তাদের ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের ঈমান ও আমলকে হিফাযত করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সকল প্রকার বালা-মুসিবত ও বিপদ-আপদ থেকে হিফাযত করুন। আপনি আমাদের নামায , রোযাসহ ছোট বড় প্রতিটি আমল আপনার শান মোতাবেক কবুল করে নিন।

عِبَادَ اللهِ رَحمِكُمُ الله ِ: (إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمْنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ


ভূমি থেকে উৎপন্ন খাদ্যশস্য ও খনিজদ্রব্য ও গুপ্তধন এর যাকাত

বৃহস্পতিবার, মে ১৪, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

ভূমি থেকে উৎপন্ন বস্তু
যা ভূমি থেকে উৎপন্ন হয় এবং উপকারে আসে।
প্রথমত: শস্য ও ফলফলাদি
খাদ্যশস্য

ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেয়া যায় এমনসব খাদ্যশস্য, যেমন যব, গম, ধান ইত্যাদি।

ফল
ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেয়া যায় এমনসব ফল, যেমন খেজুর, কিশমিশ ও কাঠবাদাম
খাদ্যশস্য ও ফলের যাকাত প্রদানের হুকুম খাদ্যশস্য ও ফলের যাকাত প্রদান করা ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(এবং ফল কাটার দিনই তার হক আদায় করে দাও)
[ সূরা আলআনআম: ১৪১]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যা আকাশ অথবা ঝর্নার পানি দ্বারা উৎপন্ন অথবা যা সেচ ব্যতীতই উৎপন্ন তাতে ১০% এবং যা নিজেদের শ্রম ব্যয় করে সেচ দেয়া হয়েছে তাতে ৫% যাকাত দিতে হবে।’(র্বণনায় বুখারী )
খাদ্যশস্য ও ফলে যাকাত ফরজ হওয়ার শর্তাবলী

১ - তা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষিত হতে হবে। সে হিসেবে যদি ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষিত না হয় অথবা নিত্যদিনের খাবারে ব্যবহৃত হয়, তাহলে তাতে যাকাত ফরজ হবে না। কেননা যা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা যায় না, তা সম্পদ হওয়ার বৈশিষ্ট্যে পুরোপুরি উত্তীর্ণ হয় না।

২ - পরিমাপ-পাত্র দিয়ে মাপার উপযোগী হতে হবে। অর্থাৎ এমন হতে হবে যা মেপে ওসকের হিসাব বের করা যায়; কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘খাদ্যশস্য অথবা খেজুরে পাঁচ ওসকের নিচে যাকাত নেই।’(বর্ণনায় মুসলিম)আর যদি পরিমাপ-পাত্র দিয়ে মাপা না যায়, যেমন শাকসবজি, শিম, মটরশুঁটি ইত্যাদি তবে এগুলোতে যাকাত ফরজ হবে না।

৩ - বস্তুটি এমন হতে হবে যা মানুষ উৎপন্ন করে। সে হিসেবে যা নিজে নিজে উৎপন্ন হয় তাতে যাকাত নেই।
৪ - নিসাব পরিমাণ হওয়া:
এ ক্ষেত্রে নিসাব হলো পাঁচ ওসক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘খাদ্যশস্য অথবা খেজুরে পাঁচ ওসকের নিচে যাকাত নেই।’(বর্ণনায় মুসলিম) ‘খাদ্যশস্য অথবা খেজুরে পাঁচ ওসকের নিচে যাকাত নেই।’।
শর্ত নয়
খাদ্যশস্য ও ফলের যাকাতে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। এর প্রমাণ আল্লাহ তাআলার বাণী:
(وَءَاتُواْ حَقَّهُۥ يَوۡمَ حَصَادِهِۦۖ ) [الأنعام:141]
{এবং তোমরা ফল কাটার দিনই তার হক আদায় করে দাও} [ সূরা আল আনআম: ১৪১]
খাদ্যশস্য ও ফলের যাকাত ফরজ হওয়ার সময়

খাদ্যশস্য যখন শক্ত হয়ে ব্যবহারোপযোগী হয় আর ফল যখন পরিপক্ক হয়ে খাওয়ার উপযোগী হয় তখন তাতে যাকাত ফরজ হয়ে যায়। অতএব যদি কেউ যাকাত ফরজ হওয়ার পর খাদ্যশস্য বা ফল বিক্রি করে দেয়, তবুও তার কাঁধে যাকাত দেয়ার দায়িত্ব বহাল থেকে যাবে; কেননা যাকাত ফরজ হওয়ার সময় সে তার মালিক ছিল।
খাদ্যশস্য ও ফলে ফরজ হওয়া যাকাতের পরিমাণ

১ - বিনা পরিশ্রমে বৃষ্টি অথবা ঝর্নার পানির প্রাকৃতিক সেচে উৎপন্ন ফসলে যাকাতের পরিমাণ হলো উশর তথা (১০%)।
২ - শ্রমনির্ভর সেচ, যেমন কূপ ইত্যাদি থেকে পানি এনে সেচ দেয়া সাপেক্ষে যে ফসল উৎপন্ন হয় তাতে যাকাতের পরিমাণ হলো (৫%)।
৩ - আর উভয় ধরনের সেচ অর্থাৎ কখনো প্রাকৃতিক ও কখনো শ্রমনির্ভর সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন ফসলে যাকাতের পরিমাণ হলো (৭.৫%)।
এর দলিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস, ‘যা আকাশ, নদী ও ঝর্না দ্বারা সেচকৃত তাতে উশর(১০%) এবং যা কূপ থেকে সেচ দেয়া হলো তাতে অর্ধ-উশর(৫%)।’(বর্ণনায় মুসলিম)
খাদ্যশস্য ও ফল ধ্বংস হয়ে যাওয়া

যদি খাদ্যশস্য ও ফল ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোনো কারসাজি বা হস্তক্ষেপ ব্যতীত ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে যাকাত রহিত হয়ে যাবে। কিন্তু যদি যাকাত ফরজ হওয়ার পর ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোনো কারসাজি বা হস্তক্ষেপের ফলে ধ্বংস হয় তবে যাকাত রহিত হবে না। বরং তা বলবৎ থাকবে।
মাসায়েল

১ - মধুর যাকাত নেই; কেননা এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোনো নির্দেশ আসেনি। তবে যদি কেউ স্বেচ্ছায় যাকাত প্রদান করে তবে তা উত্তম হবে এবং তা মৌমাছি ও মধু বেড়ে যাওয়ার কারণ হবে। কিন্তু তা বাধ্যতামূলক নয়, যা পরিত্যাগ করলে কেউ গুনাহগার হবে।

২ - যে ব্যক্তি অন্যকারও ভূমি ভাড়া নিল এবং তাতে ফল উৎপন্ন করল, এমতাবস্থায় ভাড়াটে ব্যক্তির ওপর যাকাত ফরজ হবে, মূল মালিকের ওপর নয়।

৩ - যাকাত হিসেবে সরাসরি দ্রব্য না নিয়ে তার মূল্য নেওয়াও বৈধ রয়েছে। বরং প্রয়োজন ও জনস্বার্থের বিবেচনায় তাই হবে শরীয়তসিদ্ধ।
 
খনিজদ্রব্য ও গুপ্তধন

খনিজদ্রব্য

ভূমিজাত নয়, এমন যে দ্রব্যসমূহ ভূমি থেকে বের করা হয়, যেমন সোনা- রুপা, লোহা, সীসা এবং এ ধরনের অন্যান্য কাচামাল।

গুপ্তধন
অর্থাৎ মানুষ কর্তৃক ভূমিতে গচ্ছিত কোনো দ্রব্য, যেমন সোনা-রুপা ইত্যাদি।
খনিজদ্রব্য ও গুপ্তধনের যাকাতের হুকুম

এ সবের যাকাত দেয়া ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন :
(يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَنفِقُواْ مِن طَيِّبَٰتِ مَا كَسَبۡتُمۡ وَمِمَّآ أَخۡرَجۡنَا لَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِۖ٢٦٧ )[البقرة:267]
{হে মুমিনগণ, তোমরা ব্যয় কর উত্তম বস্তু, তোমরা যা অর্জন করেছ এবং আমি জমিন থেকে তোমাদের জন্য যা উৎপন্ন করেছি তা থেকে} [সূরা আল বাকারা:২৬৭]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘গুপ্তধনে খুমুস (২০%) প্রদেয়।
গুপ্তধনের যাকাতের শর্তাবলী গুপ্তধনের যাকাতের কোনো শর্ত নেই। যদি কোনো ব্যক্তি তার মালিক হয়ে থাকে তবে সরাসরি সে তার যাকাত প্রদান করবে।
খনিজদ্রব্য ও গুপ্তধনের যাকাতের পরিমাণ এ জাতীয় দ্রব্য অল্প হোক বেশি হোক তাতে খুমুস তথা ২০% যাকাত প্রদেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী ‘গুপ্তধনে একপঞ্চমাংশ প্রদেয়’ এর প্রতিই নির্দেশ করে।



ইসলামিক বই- পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা

বৃহস্পতিবার, মে ১৪, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা
লেখকঃ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
প্রকাশনীঃ আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স




লায়লাতুল কদর নামকরণের কারণ কি? বিস্তারিত আলোচনা!

বৃহস্পতিবার, মে ১৪, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে


- কদরের এক অর্থ সম্মান ইরশাদ হয়েছে :
(وَمَا قَدَرُواْ ٱللَّهَ حَقَّ قَدۡرِهِۦٓ ){আর তারা আল্লাহকে যথার্থ সম্মান দেয়নি}[ সূরা আল আনআম:৯১]
সে হিসেবে লায়লাতুল কদর অর্থ হবে সম্মানিত রাত; কেননা রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে, রাতে ফেরেশতাগণ নেমে আসেন এবং রাতে রবকত-রহমত-মাগফিরাত নাযিল হয়

- কদরের আরেক অর্থ সংকীর্ণকরণ, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:
(وَمَن قُدِرَ عَلَيۡهِ رِزۡقُهُۥ فَلۡيُنفِقۡ مِمَّآ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُۚ )
{আর যার রিয্ক সংকীর্ণ করা হয়েছে সে যেন আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা হতে ব্যয় করে} [ সূরা আত-তালাক:]
লায়লাতুল কদরের ক্ষেত্রে সংকীর্ণকরণের অর্থ হবে লায়লাতুল কদর সংঘটিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট তারিখ গোপন করে রাখা

- কাদ্র কাদার থেকেও উৎকলিত হতে পারে, যার অর্থ হবে রাতে আল্লাহ তাআলা সে বছরের সকল আহকাম নির্ধারণ করেন আল্লাহ তাআলা বলেন:
(يُفۡرَقُ كُلُّ أَمۡرٍ حَكِيمٍ )
{সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়} [সূরা আদ-দুখান:]

লায়লাতুল কদরের ফজিলত মর্যাদা
- লায়লাতুল কদরেই পবিত্র কুরআন নাযিল করা হয়েছে

আল্লাহ তাআলা বলেন :
(إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ)
{নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছিলাইলাতুল কদরে}[ সূরা আল কাদ্র:]

- লায়লাতুল কদর হাজার মাস থেকেও উত্তম
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ )
{লায়লাতুল কদর এক হাজার মাস থেকে উত্তম} [সূরা আল-কাদ্র:] অর্থাৎ লায়লাতুল কদরে আমল করা লায়লাতুল কদরের বাইরে এক হাজার মাস আমল করার চেয়েও উত্তম

- লায়লাতুল কদরে ফেরেশতা জিব্রীল এর অবতরণ

আল্লাহ তাআলা বলেন:
(تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ )
{সে রাতে ফেরেশতারা রূহ (জিব্রীল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে}[ সূরা আল কাদ্র:]

আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘লায়লাতুল কদর হলো সাতাশ তারিখ অথবা ঊনত্রিশ তারিখের রাত, আর ফেরেশতাগণ রাতে পৃথিবীতে কঙ্করের সংখ্যা থেকেও বেশি থাকেন
- লায়লাতুল কদর হলো শান্তির রাত
আল্লাহ তাআলা বলেন :
(سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥ )
{শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত}[ সূরা আল কাদ্র:]
অর্থাৎ লায়লাতুল কদরের পুরোটাই ভালো, এর শুরু থেকে সুবেহ সাদেক পর্যন্ত আদৌ কোনো অনুত্তম বিষয় নেই

- লায়লাতুল কদর মুবারক রাত
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةٖ مُّبَٰرَكَةٍۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ ٣ )
{নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী}
[ সূরা আদ-দুখান:]

উক্ত আয়াতেলায়লাতুম্ মুবারাকা’- এর অর্থ ইবনে আব্বাস রাযি. এর নিকটলায়লাতুল কদর - রাতে এক বছরের সকল প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়

আল্লাহ তাআলা বলেন:
(فِيهَا يُفۡرَقُ كُلُّ أَمۡرٍ حَكِيمٍ )
{সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়} [ সূরা আদ-দুখান:]

- যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করল, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হলো’(বর্ণনায় ইবনে খুযায়মাহ)
কোন রাত লায়লাতুল কদর?

আল্লাহ তাআলা রাতকে গোপন করে রেখেছেন, যাতে মুসলিম ব্যক্তি রমজানের শেষ দশদিনে অধিক শ্রম ব্যয় করে, বিশেষ করে বেজোড় রাতগুলোয় আর সেগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ২৯ তারিখের রাত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশের বেজোড় রাতগুলোতে লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করো’(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

আলেমদের কেউ কেউ বিভিন্ন দলিলের মাধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে বলেছেন, রাতগুলোর একেকটায় একেক সময় লায়লাতুল কদর সংঘটিত হয়ে থাকে(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

লায়লাতুল কদরে যেসব আমল মুস্তাহাব
- ইতিকাফ : রমজানের শেষ দশকের পুরোটাতেই ইতিকাফ করতে হয়, শুধু লায়লাতুল কদরে নয় আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন
(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

- ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাসসহ আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাসসহ আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করল, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হলো’(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

- দুআ : আয়েশা রাযি. বলেন,‘ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি লায়লাতুল কদর পাই তবে কি দুআ করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলো,‘ اللهم إنك عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُ الْعَفْوَ، فاعْفُ عَنِّي অর্থাৎ হে আল্লাহ, আপনি অতি ক্ষমাশীল দয়ালু, আপনি ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন, তাই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন
লায়লাতুল কদরের আলামত
- রাত বেশি ঠাণ্ডাও হয় না, বেশি গরমও হয় না, বরং তা হয় উজ্জ্বল
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে লায়লাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে রাত হলো রমজানের শেষ দশদিনের রাতগুলোয় রাত হলো মুক্ত উজ্জ্বল, যা ঠাণ্ডাও না গরমও না’(বর্ণনায় তিরমিযী)

- লায়লাতুল কদর শেষে সকালের সূর্য আলোকরশ্মি ব্যতীত সাদা হয়ে উদিত হয়
উবায় ইবনে কা রাযি. কে যখন লায়লাতুল কদরের আলামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন তিনি বলেছেন,‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নিদর্শনের কথা বলেছেন, তার দ্বারা আমরা লায়লাতুল কদর চিনতে পারি, অর্থাৎ ওইদিন সূর্যোদয় হয় রশ্মিবিহীন আকারে’ (বর্ণনায় ইবনে খুযায়মাহ)

সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, ‘আলোকরশ্মিবিহীন সাদা আকারে’ (বর্ণনায় তিরমিযী)



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png