LIVE
Loading latest headlines...

সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাহাবির বিয়ের মোহরানা "কোরআন তোমার মুখস্থ "

সোমবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪ 0
বার দেখা হয়েছে

 


হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.)-এর বরাতে একটি হাদিসের বর্ণনা আছে।


এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করতে এসেছি।’


নবী (সা.) তাঁর দিকে তাকিয়ে সতর্ক দৃষ্টিতে তাঁর আপাদমস্তক দেখলেন। তারপর মাথা নিচু করে রইলেন। ওই নারী যখন দেখলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন তিনি বসে পড়লেন।


সাহাবিদের মধ্য থেকে একজন দাঁড়িয়ে তখন বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, যদি আপনার বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে আমার সঙ্গে এই নারীকে বিয়ে দিয়ে দিন।’


রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কাছে কী আছে?’


সাহাবিটি উত্তর দিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কিছুই নেই।’


রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ, কিছু পাও কি না।’



সাহাবি চলে গেলেন। ফিরে এসে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি কিছুই পাইনি।’


রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘আবার গিয়ে লোহার একটি আংটিও পাও কিনা দ্যাখো।’


সাহাবি আবারও ফিরে গেলেন। এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! তা–ও পেলাম না। এই আমার বস্ত্র। শুধু এটাই আছে।’ তাঁর কাছে কোনো চাদরও ছিল না। লোকটি তার অর্ধেক নারীটিকে দিতে চাইলেন।


রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমার বস্ত্র দিয়ে সে কী করবে? তুমি যদি এটি পরো, তাহলে তার কোনো কাজে আসবে না; আর যদি সে পরে, তাহলে তোমার কোনো কাজে আসবে না।’


সাহাবিটি বেশ কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকলেন। এর পর উঠে দাঁড়িয়ে চলে যেতে উদ্যত হলেন। নবী (সা.) তখন তাঁকে ডেকে এনে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার কি কোরআন মুখস্থ আছে?’


তিনি বললেন, ‘অমুক অমুক সুরা আমার মুখস্থ।’


রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘এগুলো কি তোমার মুখস্থ।’


তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’


রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘যে পরিমাণ কোরআন তোমার মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে তোমার কাছে এই নারীকে আমি বিয়ে দিলাম।’ (বুলুগুল মারাম, হাদিস: ৯৭৯)


বেশ বৈচিত্র্যময় সাহাবিদের যুগে বিয়ে ছিল



পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ কোরো না

সোমবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪ 0
বার দেখা হয়েছে

 




আল্লাহ–তাআলা বলেছেন, তোমরা অপরের গোপন বিষয় অনুসন্ধান কোরো না। (সুরা হুজরাত, আয়াত: ১২)


কোরআনে আছে, ‘যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ আর স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে।’ (সুরা আহযাব, আয়াত: ৫৮)


হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-র বরাতে একটি হাদিসের বর্ণনা আছে। তিনি জানিয়েছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা মন্দ ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাক। কারণ, মন্দ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। অন্যের গোপন দোষ খুঁজে বেড়িও না, অন্যের গোয়েন্দাগিরি করো না, একে অন্যের সঙ্গে (অসৎ কাজে) প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোরো না, পরস্পরকে হিংসা কোরো না, অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ কোরো না, একে অন্যের বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ কোরো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও—যেমনটা তিনি তোমাদের আদেশ দিয়েছেন।



এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। একজন আরেকজনকে অত্যাচার কোরো না, অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দিও না এবং তাকে তুচ্ছ ভেবো না। এখানে আল্লাহভীতি রয়েছে (তিনি নিজের বুকের দিকে ইঙ্গিত করলেন।) কোনো মুসলমান ভাইকে তুচ্ছ ভাবা আরেকজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, সম্ভ্রম আর সম্পদ আরেক মুসলমানের ওপর হারাম। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের দেহ আর আকার-আকৃতি দেখেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল দেখেন।


আরেক বর্ণনায় আছে: তোমরা পরস্পরকে হিংসা কোরো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ কোরো না, অন্যের গোয়েন্দাগিরি কোরো না, অন্যের গোপন দোষ খুঁজে বেড়িও না, পরস্পরের পণ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়ো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও।




অন্য আরেক বর্ণনায় আছে: তোমরা পরস্পর সম্পর্কচ্ছেদ কোরো না, একে অন্যের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়ো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ কোরো না, পরস্পর হিংসা কোরো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও।


অন্য আরও একটি বর্ণনায় আছে: তোমরা একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন কোরো না এবং অন্যের কেনাবেচার ওপর কেনাবেচা কোরো না।


 বুখারি, হাদিস: ৫,১৪৩



সুরা ইউসুফের সারকথা

সোমবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪ 0
বার দেখা হয়েছে

 


সুরা ইউসুফ পবিত্র কোরআনের ১২তম সুরা। এর আয়াত সংখ্যা ১১১। রুকু ১২টি। সুরা ইউসুফ পবিত্র নগরী মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় ধারাবাহিকভাবে হজরত ইউসুফ (আ.)–এর জীবনকথা বর্ণনা করা হয়েছে। তা থেকে আমরা আল্লাহর মহিমা সম্পর্কে জানতে পারি এবং আমাদের জন্য শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি।


সুরা ইউসুফের মর্মবস্তু হলো ধৈর্যের সুফল। এ সুরায় মানবজাতির জন্য বিশেষ নির্দেশনা ও শিক্ষা নিহিত রয়েছে।



হজরত ইয়াকুব (আ.)–এর ১২ ছেলে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে হজরত ইউসুফ (আ.) ছিলেন অতি রূপবান। তাঁর স্বভাবও ছিল অপূর্ব। ইউসুফ (আ.)–এর প্রতি হজরত ইয়াকুব (আ.)–এর ভালোবাসা ছিল প্রকাশ্য। এ কারণে ভাইয়েরা তাঁকে হিংসা করতেন। একবার খেলাধুলার কথা বলে ভাইয়েরা তাঁকে কুয়ায় ফেলে দেন। পরে কুয়ার পাশ দিয়ে একটি কাফেলা যাওয়ার সময় তারা পানি নেওয়ার জন্য তাতে বালতি ফেললে ভেতর থেকে ইউসুফ (আ.) বের হয়ে আসেন।



কাফেলার লোকেরা ইউসুফ (আ.)–কে বিক্রি করে দেন। মিসরের এক মন্ত্রী তাঁকে কিনে বাড়িতে নিয়ে যান। ইউসুফ (আ.) যৌবনে পদার্পণ করলে মন্ত্রীর স্ত্রী জোলেখা তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন। ইউসুফ (আ.) তাঁর প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করেন। এ ঘটনার পরম্পরায় ইউসুফ (আ.)–কে জেলে বন্দী করা হয়।


জেলখানায় ইউসুফ (আ.) তাওহিদের দাওয়াত দেন। বন্দীরা তাঁকে সম্মান করত। সে সময় মিসরের বাদশাহ একবার স্বপ্ন দেখেন। বাদশাহর সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেন না। কিন্তু জেলবন্দী ইউসুফ (আ.) অর্থপূর্ণভাবে সে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেন। বাদশাহ এতে সন্তুষ্ট ও উপকৃত হন। ইউসুফ (আ.)–কে তিনি দেশের খাদ্যভান্ডার, ব্যবসা-বাণিজ্য তদারক করার জন্য উজির পদে নিয়োগ করেন।


কিছুদিন পর মিসর ও আশপাশে প্রবল দুর্ভিক্ষ হয়। ইউসুফ (আ.)–এর দুর্ভিক্ষপীড়িত ভাইয়েরা ত্রাণ নিতে মিসর আসেন। ভাইদের সঙ্গে কয়েকবার সাক্ষাতের পর ইউসুফ (আ.) নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁদের বলেন, ‘আমি তোমাদের ভাই ইউসুফ।’ এরপর তাঁরা মা–বাবাসহ মিসরে বসবাস করতে থাকেন।


পবিত্র কোরআনের ১২ নম্বর সুরা হলো সুরা ইউসুফ। সুরা ইউসুফে ইউসুফ (আ.)–এর কাহিনিকে ১২ ভাগে বিভক্ত করা যায়। ১. হজরত ইউসুফ (আ.) স্বপ্ন দেখলেন। ২. ইউসুফ (আ.)–এর ভাইয়েরা তাঁর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করলেন। ৩. মন্ত্রীর স্ত্রী জোলেখা ইউসুফ (আ.)–এর সঙ্গে তাঁর বাসনা পূরণ করতে চাইলেন। ৪. জোলেখার সহচরীরা ইউসুফ (আ.)–এর রূপে বিবশ হয়ে আপেলের বদলে নিজেদের আঙুল কেটে ফেললেন। ৫. ইউসুফ (আ.)–কে জেলে পাঠানো হলো। ৬. মিসরের বাদশাহ রহস্যময় একটি স্বপ্ন দেখলেন। ৭. ইউসুফ (আ.) বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দিলেন। ৮. ইউসুফ (আ.)–কে জেল থেকে বের করা হলো। ৯. জোলেখার সহচরীরা নিজেদের দোষ স্বীকার করলেন। ১০. জোলেখা নিজের দোষ স্বীকার করলেন। ১১. ইউসুফ (আ.)–এর ভাইয়েরা তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলেন। ১২. বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যার মর্ম বোঝা গেল। এখানে আরেকটি মিল খুঁজে পাওয়া যায়: ১ নম্বরের (ইউসুফ (আ.) স্বপ্ন দেখলেন) সঙ্গে ১২ নম্বরের (বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যার মর্ম বোঝা গেল) মিল পাওয়া যায়। ২ নম্বরের (ইউসুফ (আ.)–এর ভাইয়েরা তাঁর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করলেন) সঙ্গে ১১ নম্বরের (ইউসুফ (আ.)–এর ভাইয়েরা তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলেন) মিল পাওয়া যায়। ৩ নম্বরের (মন্ত্রীর স্ত্রী জোলেখা ইউসুফ (আ.)–এর সঙ্গে তাঁর বাসনা পূরণ করতে চাইলেন) সঙ্গে ১০ নম্বরের (জোলেখা নিজের দোষ স্বীকার করলেন) মিল পাওয়া যায়। ৪ নম্বরের (জোলেখার সহচরীরা ইউসুফ (আ.)–এর রূপে বিবশ হয়ে আপেলের বদলে নিজেদের আঙুল কেটে ফেললেন) সঙ্গে ৯ নম্বরের (জোলেখার সহচরীরা নিজেদের দোষ স্বীকার করলেন) মিল পাওয়া যায়। ৫ নম্বরের (ইউসুফ (আ.)–কে জেলে পাঠানো হলো) সঙ্গে ৮ নম্বরের (ইউসুফ (আ.)–কে জেল থেকে বের করা হলো) মিল পাওয়া যায়। ৬ নম্বরের (মিসরের বাদশাহ রহস্যময় একটি স্বপ্ন দেখলেন) সঙ্গে মিল পাওয়া যায় ৭ নম্বরের (ইউসুফ (আ.) বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দিলেন)।



বেশ বৈচিত্র্যময় সাহাবিদের যুগে বিয়ে ছিল

সোমবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪ 0
বার দেখা হয়েছে

 



সাহাবিদের যুগে বিয়ে ছিল বেশ বৈচিত্র্যময়। বিয়ের আয়োজন ছিল সাদামাটা, প্রস্তুতি ছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টার। সকালবেলা একজন সাহাবি ছিলেন অবিবাহিত। কবে বিয়ে করবেন, কাকে বিয়ে করবেন, সেটা সকালেও জানা ছিল না। সন্ধ্যায় তিনি সংসার শুরু করতেন! বিয়ের কারণে পাড়াপড়শির নির্ঘুম বিরক্তি সাহাবিদের যুগে ছিল না।


বিয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া। পুরুষ সাহাবিরা নিজেদের বিয়ের প্রস্তাব সরাসরি পাত্রীপক্ষের কাছে নিয়ে যেতেন। আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিজের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান। তিনি প্রথমে সংকোচ বোধ করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে অভয় দেন। এরপর নবী–কন্যা ফাতেমাকে (রা.) বিয়ে করেন আলী (রা.)।



সম্ভ্রান্ত নারীরাও কারও মাধ্যমে নিজেদের বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে পারতেন। খাদিজা (রা.) তাঁর বান্ধবী নাফিসা (রা.)-র মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। এমনকি কয়েকজন নারী সাহাবিও সরাসরি এসে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এমন একজন প্রস্তাবকারী ছিলেন খাওলা বিনতে হাকিম (রা.)। তাঁর স্বামী উসমান ইবনে মাজউন (রা.) ইন্তেকালের পর তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বিয়ে করেননি।


একজন নারীর রাসুল (সা.)–কে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা চৌদ্দ শ বছর পর বিস্ময়কর মনে হতে পারে, কিন্তু সাহাবিদের সময় এটা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সাহাবিরা যখন তাঁদের সন্তানদের কাছে ঘটনাটি বলেন, তাঁরা অবাক বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করেন, সেই নারী কীভাবে রাসুল (সা.)–কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন!



বিয়ের মোহরানা ছিল একেক জনের একেক রকম। যাঁর যাঁর সামর্থ্য ও পাত্রীর সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী মোহরানা নির্ধারিত হতো। এক সাহাবির মোহরানা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। তাঁর মুখস্থ কোরআনকে মোহরানা হিসেবে ধার্য করা হয়, যা তিনি স্ত্রীকে শেখাবেন।


সাহাবিদের যুগে পাত্রীরাও চাইলে মোহরানার প্রস্তাব দিতে পারতেন। রুমাইসা বিনতে মিলহান (রা.) আবু তালহা (রা.)-কে বিয়ে করার সময় নিজের মোহরানা নির্ধারণ করেন স্বামীর ইসলাম গ্রহণ। তিনি শর্ত জুড়ে দেন, তাঁকে বিয়ে করতে চাইলে আবু তালহাকে ইসলাম গ্রহণ করতে হবে। আবু তালহা কয়েক মিনিট চিন্তা করে বিয়েতে রাজি হন।


আলী ও ফাতেমা (রা.)-র বিয়ের মোহরানা ছিল ৪৬০ দিরহাম। সাহাবিদের যুগের ৪৬০ দিরহাম বর্তমান সময়ে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা।


সে যুগে মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হতো না। বিয়েতে মেয়ের মতামতকে অসম্ভব গুরুত্ব দেওয়া হতো। এমনকি বিয়ের পরও যদি পাত্রী জানাতেন যে সে বিয়েতে অসম্মত ছিলেন, তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) সে বিয়ে বাতিল করে দিতেন।


নারীরা নিজেদের বিয়ে নিয়ে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারতেন। কোনো কারণে পাত্র পছন্দ না হলে ‘না’ করে দিতে পারতেন। পাত্র ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক মর্যাদার অধিকারী হলেও নারীদের মতামত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হতো।


ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবি, খলিফাতুল মুসলিমিন। তিনি আবু বকর (রা.)-র মেয়ে উম্মে কুলসুম (রাহি.)-কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ওমরের (রা.) মেজাজের কারণে সে নারী বিয়েতে রাজি না হয়ে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ওমর ইবনুল খাত্তাব পরে অন্য এক উম্মে কুলসুমকে বিয়ে করেন। তিনি ছিলেন আলীর (রা.) মেয়ে উম্মে কুলসুম বিনতে আলী (রাহি.)।


সাহাবিদের বিয়েতে প্রথমদিকে মোহরানা অনেক কম ছিল। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) খলিফা হওয়ার পর মুসলমানদের অর্থনৈতিক জীবনে আমূল পরিবর্তন আসে। তখন বিয়েতে মোহরানার পরিমাণ বেড়ে যায়। খলিফা মোহরানা কমানোর জন্য রাষ্ট্রীয় ফরমান জারি করতে চেয়েছিলেন। তাতে এক নারী আপত্তি জানান। তিনি কোরআনের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এটা তিনি করতে পারেন না। খলিফা সেই নারীর আপত্তি আমলে নিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ মোহরানা নির্ধারণ করা থেকে বিরত থাকেন।


তিনি উম্মে কুলসুম বিনতে আলীকে বিয়ে করার সময় মোহরানা হিসেবে ৪০ হাজার দিরহাম দেন। সাহাবিদের যুগে ১২ দিরহাম দিয়ে একটি ভেড়া কেনা যেত।


সাহাবিদের মধ্যে অন্যতম ধনী সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) স্ত্রীকে মোহরানা বাবদ ৩০ হাজার দিরহাম দিয়েছিলেন।



সাবিত ইবনে কায়স (রা.) তাঁর স্ত্রীকে মোহরানা হিসেবে একটি বাগান দেন, যা সেই যুগ হিসেবে মোটা অঙ্কের মোহরানা।


সাহাবিদের যুগে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ছিল সীমিত। এ কারণে বিয়ে ছিল সহজ। বিয়েতে সবাইকে দাওয়াত দিতে হবে, না দিলে কে কী মনে করবেন—এমন মনোভাব তখন ছিল না। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সাহাবিদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি। তাই বলে রাসুলুল্লাহকে (সা.) প্রত্যেক সাহাবিই বাধ্যতামূলকভাবে বিয়েতে দাওয়াত দিতেন না। কখনো কখনো এমনও হতো, কোনো সাহাবির বিয়ের কয়েক দিন পর রাসুলুল্লাহ (সা.) সে খবর পেতেন। এমনটা হয়েছিল আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) এবং জাবির ইবনে আব্দিল্লাহ (রা.)-র সঙ্গে।


রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও মোটেই এ প্রত্যাশা করতেন না যে প্রত্যেক সাহাবিই তাঁকে বিয়ের দাওয়াত দেবেন বা তাঁকে জানিয়ে বিয়ে করবেন। এ যুগে যেসব সামাজিক বাধ্যবাধকতার মধ্য দিয়ে আমরা বিয়ের আয়োজন করি, সে সময় মোটেও সেসব ছিল না।


আরিফুল ইসলাম: লেখক



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png