LIVE
Loading latest headlines...

সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০

যে নারী হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে গোসল করে ফেলেছে; এরপর ফজরের আগে নিশ্চিত হয়ে রোযা রেখেছে ও নামায পড়েছে; কিন্তু পুনরায় গোসল করেনি

সোমবার, এপ্রিল ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।
এক:
নীচের দুটো আলামতের কোন একটির মাধ্যমে হায়েয থেকে পবিত্র হওয়া জানা যায়:
১। সাদা স্রাব নির্গত হওয়া। সেটা হচ্ছে স্বচ্ছ পানি; নারীরা যে পানিটা চিনে থাকে।
২। স্থানটি সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ স্থানটির ভেতরে যদি কটন বা এ জাতীয় অন্য কিছু রাখা হয় তাহলে পরিষ্কার বেরিয়ে আসে। কটনের মধ্যে রক্তের দাগ, হলেদেটে বা লালচে দাগ থাকে না। নারীর উচিত গোসল করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া না করা; যাতে করে পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন:
হায়েযের আগমন ও প্রস্থান শীর্ষক পরিচ্ছেদ। নারীরা আয়েশা (রাঃ) এর কাছে ন্যাকড়ার থলেটি পাঠাত; যে ন্যাকড়াতে হলদেটে পানি থাকত। তখন তিনি বলতেন: তোমরা তাড়াহুড়া করো না; যতক্ষণ পর্যন্ত না সাদা স্রাব দেখতে পাও। তিনি এর দ্বারা উদ্দেশ্য করেছেন: হায়েয থেকে পবিত্রতা। যায়েদ বিন ছাবেতের মেয়ের কাছে খবর পৌঁছেছে যে, নারীরা রাতের বেলায় পবিত্রতা পরীক্ষা করে দেখার জন্য চেরাগ চেয়ে পাঠাত। তখন তিনি বললেন: আগের নারীরা তো এভাবে করতেন না। তিনি তাদের এ কর্মের সমালোচনা করলেন।"[সমাপ্ত]

দুই:
যদি কোন নারী ফজরের আগে তার পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় তাহলে তার উপর রোযা রাখা আবশ্যক হবে। আর যদি পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত না হন তাহলে তার রোযা সহিহ হবে না; এমনকি যদি ধরে নেয়া হয় যে, সারাদিনে তার থেকে কোন কিছু নির্গত হয়নি তবুও। কেননা হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া ছাড়া রোযার নিয়ত করা শুদ্ধ নয়।

তিন:
যদি কোন নারী পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে প্রথম রাত্রিতে গোসল করে ফেলেন; এরপর ফজরের আগে পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হন এবং পুনরায় গোসল না করে রোযা রাখেন ও নামায পড়েন তাহলে তার রোযা সহিহ হবে; কিন্তু নামায সহিহ হবে না। কারণ রোযার জন্য কেবল হায়েযের রক্ত বন্ধ হওয়া শর্ত; যদি গোসল নাও করে। কিন্তু নামাযের জন্য অবশ্যই গোসল করতে হবে। আর হায়েযের রক্ত বন্ধ হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহ থেকে যাওয়ার কারণে তার প্রথম গোসল শুদ্ধ নয়।

"মুনতাহাল ইরাদাত" গ্রন্থে (১/৫২) বলেন: "'হায়েয ও নিফাসের গোসল করার জন্য শর্ত হল এ দুটো থেকে অবসর হওয়া।' অর্থাৎ হায়েয ও নিফাস বন্ধ হওয়া। যেহেতু এ দুটো চলমান থাকাটা গোসলের সাথে সাংঘর্ষিক"।[সমাপ্ত]

"কাশ্‌শাফুল ক্বিনা" গ্রন্থে (১/১৪৬) গোসল ফরয হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে বলেন: "পঞ্চম কারণ হল: হায়েয নির্গত হওয়া"। দলিল হচ্ছে ফাতিমা বিনতে আবি হুবাইশ (রাঃ)কে লক্ষ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "(হায়েয) যখন চলে যাবে তখন গোসল করে নামায পড়বে"।[মুত্তাফাকুন আলাইহি]

এবং তিনি উম্মে হাবিবা (রাঃ), সাহলা বিনতে সুহাইল (রাঃ) ও হামনা (রাঃ) প্রমুখ নারীদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন। এবং এর পক্ষে সমর্থন রয়েছে আল্লাহ্‌তাআলার এই বাণীতে: "তারপর তারা যখন প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে তখন তাদের কাছে যাও।" [সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২২২] অর্থাৎ তারা যখন গোসল করবে। এখানে স্ত্রী গোসল করার আগে স্বামীকে সহবাস করতে বারণ করা হয়েছে। এর থেকে প্রমাণ হয় যে, গোসল করা ওয়াজিব। কারণের সাথে বিধানকে সম্পৃক্ত করার হেতুবশতঃ রক্তপাত শুরু হওয়ার মাধ্যমেই গোসল ফরয হয়েছে। আর রক্তপাত বন্ধ হওয়া গোসল শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত।[সমাপ্ত]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।


শরিয়ত অনুমোদিত এমন কিছু বিশেষ বিষয় কি আছে যা দিয়ে একজন মুসলিম রমযানকে স্বাগত জানাতে পারে?

সোমবার, এপ্রিল ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
উত্তর
আলহামদু লিল্লাহ।
মাহে রমযান বছরের সবচেয়ে উত্তম মাস। কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা এ মাসে সিয়ামকে ফরয করে, ইসলামের চতুর্থ রুকন বানিয়ে এ মাসকে বিশেষত্ব দিয়েছেন। এ মাসের রাতে কিয়াম পালন করার বিধান জারী করেছেন। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর নির্মিত: এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহ্‌র রাসূল (বার্তাবাহক), নামায প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, রমযানের রোযা রাখা এবং বায়তুল্লাহ্‌র হজ্জ আদায় করা।"[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবপ্রাপ্তির আশায় রমযান মাসে কিয়াম পালন করবে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]

রমযান মাসকে স্বাগত জানানোর জন্য বিশেষ কিছু আছে মর্মে আমি জানি না। তবে একজন মুসলিম রমযানকে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সাথে, আগ্রহ-উদ্দীপনার সাথে এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে গ্রহণ করবে; যেহেতু তিনি তাকে রমযান পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন, তাওফিকপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং জীবিতদের মধ্যে রেখেছেন যারা নেক আমলের ক্ষেত্রে পরস্পর প্রতিযোগিতা করে। যেহেতু রমযানে উপনীত হতে পারা আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে একটি মহান নেয়ামত। এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে রমযান আগমনের সুসংবাদ দিতেন রমযানের মর্যাদা তুলে ধরার মাধ্যমে এবং আল্লাহ্‌ তাআলা রোযাদার ও নামাযগুজারদের জন্য যে মহান সওয়াব প্রস্তুত রেখেছেন তা বর্ণনা করার মাধ্যমে। শরিয়ত একজন মুসলিমের জন্য অনুমোদন করে যে, তিনি এই মহান মাসটিকে স্বাগত জানাবেন খালিস তাওবার মাধ্যমে, সিয়াম ও কিয়ামের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার মাধ্যমে, নেক নিয়ত ও দৃঢ় সংকল্পের সাথে।"[সমাপ্ত]

ফাদিলাতুশ শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায এর "মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া মাকালাত মুতানাওয়্যিয়া" (১৫/৯)]



কোন মুসলিম যদি আগুনে পুড়ে বা বিল্ডিং ধসে মারা যায় তাহলে সে কি শহীদের মর্যাদা পাবে?

সোমবার, এপ্রিল ১৩, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

আগুন
 ইন-শা-আল্লাহ্‌ একজন ভাল মুসলিম আগুনে পুড়ে বা বিল্ডিং ধসে মারা গেলে শহীদের মর্যাদা পাবে, যদি সে কোন পাপ কাজ না করতে যেয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়। সহীহ হাদিস থেকে জানা যায় যে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
.
● যে পানিতে ডুবে মারা গেল সে শহীদ,
● যে পেটের পীড়ায় মারা গেল সে শহীদ,
● যে আগুনে পুড়ে মারা গেল সে শহীদ,
● যে প্লেগে মারা গেল সে শহীদ,
● সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কোন নারী মৃত্যুবরণ করলে সে শহীদ,
● বিল্ডিং ধসে চাপা পড়ে যে মারা গেল সে শহীদ।

(নাসায়ী ১৮৪৬, ৩১৯৪, আবূ দাউদ ৩১১১, আহমাদ ২৩২৪১, মুয়াত্তা মালেক ৫৫২, আল-আহকাম ৩৯-৪০ নং পৃষ্ঠা, আত-তালীকুর রাগীব ২/২০২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।)

শহীদের মর্যাদা আল্লাহ্‌র কাছে অত্যন্ত উঁচু। আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, এমন কোন ব্যক্তিই নাই যে জান্নাতে যাওয়ার পর আবার এই লোভে দুনিয়ায় ফিরে আসতে চাইবে যে, দুনিয়ায় যা কিছু আছে সবই তার হবে। কিন্তু, শহীদ এই ইচ্ছা করবে। কেননা, সে জান্নাতে তার প্রাপ্ত সম্মান ও মর্যাদা প্রত্যক্ষ করে দুনিয়ায় এসে ১০বার শহীদ হতে চাইবে। (বুখারী, মুসলিম, তাহকিক রিয়াদুস সালেহীন ১৩১৯)

❒ সাহায্যকারী সূত্রসমূহ:
১। আল ফাতোয়া আল কুবরা – ৩/২৩, ইবনে তাইমিয়াহ
২। http://islamqa.info/en/ref/22140


ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png