LIVE
Loading latest headlines...

রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০

মেথির ১০টি আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য গুনাগুণ

রবিবার, মার্চ ২৯, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

মসলা, খাবার, পথ্য মেথিকে এই তিনটিই বলা যায়। এর পাতা শাক হিসাবে গ্রামের মানুষের একটি প্রিয় খাবার।  যুগ যুগ ধরে কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় মেথির বীজ ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়া মশলা অর্থাৎ পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান হিসাবেও এটি ব্যবহার  করা হয়। মেথি বীজে রয়েছে নানা উপকারি উপাদান যা শরীরের অনেক উপকারে লাগে। চলুন জেনে নিই মেথির আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য গুনাগুণ সম্পর্কে।

মেথির বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রোটিন,ভিটামিন-সি, পটাসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতির অনন্য এক উৎস হচ্ছে মেথি। ১০০ গ্রাম মেথি শাক থেকে ৫০ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া ছাড়াও ১.৫ গ্রাম (৭%) স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৬৭ মিলিগ্রাম (২%) সোডিয়াম, ৭৭০ মিলিগ্রাম  (২২%)  পটাশিয়াম, ৫৮ গ্রাম (১৯%) কার্বোহাইড্রেট এবং ২৩ গ্রাম (৪৬%) প্রোটিন পাওয়া যায় যা মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। নিয়মিত মেথি খাওয়ার নানা উপকারিতা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-

১। শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে   

মেথিতে থাকে স্টেরিওডাল সেপোনিনস নামক উপাদান যা শরীরে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে গ্লেকটোম্যানান নামক আরেকটি  উপাদানের খোঁজ পাওয়া গেছে যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তে লবনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে যার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি পান করলে হঠাৎ করে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের মাত্রা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।

২। রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে
যাদের কম বয়সেই রক্তে চিনির পরিমাণ অর্থাৎ ব্লাড সুগার ঊর্ধমুখি থাকে তারা নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি খেতে পারেন। এটি তাদের শরীরে গ্লেকটোমেনানের পরিমাণ বাড়ানো ছাড়াও দেহে শর্করার শোষণের পরিমাণ কমিয়ে আনে। এতে রক্তে সুগার লেভেল বাড়ার আশঙ্কা  অনেক কমে যায়। এছাড়া মেথিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় ফলে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় না।

৩। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
সহজ উপায়ে দেহে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে মেথি বীজ দারুণ ভুমিকা রাখতে পারে। মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বাওয়েল মুভমেন্টে উন্নতি করে হজমে অনেক সহায়তা করে থাকে। তাই কনস্টিপেশনের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি খাওয়া যেতে পারে।

৪। দেহের ওজন কমাতে
প্রতিদিন সকালে মেথি ভেজানো পানি পান করলে তা শরীরের স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। কেউ যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি বীজ পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করে তাহলে তাঁর শরীরে ধীরে ধীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে থাকে। এতে একদিকে যেমন তাঁর ক্ষিদে কমে যায় অন্যদিকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহনেও লাগাম পরে। এতে শরীরের ওজন আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে।

৫। জ্বরের প্রকোপ কমাতে ও সর্দি-কাশি সারাতে
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় জ্বর হয়। এ অবস্থায় কেউ যদি এক গ্লাস মেথি বীজের পানি পান করেন তাহলে অনেক উপকার পেটে পারেন। মেথিতে বেশ কিছু উপকারি উপাদান রয়েছে যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক বৃদ্ধি করে এবং দ্রুত জ্বরের প্রকোপ কমাতে  সাহায্য করে।  এছাড়া সর্দি-কাশি সারাতেও ঘরোয়া চিকিৎসা হিসাবে এর বিকল্প নেই বললেই চলে।

৬।  চুল পড়া রোধে
বহুকাল ধরে চুল পড়া রোধে মেথির ব্যবহার হয়ে আসছে। স্বাস্থ্যহীন চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত খাওয়া ছাড়াও বেটে মাথায় দেওয়া যেতে পারে। এজন্য মেথি বাটা নারিকেল তেলের মধ্যে সারা রাত চুবিয়ে রেখে সকালে চুলে মেখে এর ঘণ্টাখানেক পর গোসল করে ফেললে যথেষ্ট উপকার পাওয়া সম্ভব।

৭। ত্বক উজ্জ্বল রাখতে
রূপচর্চায়ও মেথির ভুমিকা অপরিসীম। চেহারায় বলিরেখা দেয়ার জন্য দায়ী নানা ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে মেথির ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতেও মেথির ভুমিকা রয়েছে।

৮। খুশকি দূর করতে
অনেকের চুলে প্রচুর খুশকি হয়ে থাকে যা মাথার শুষ্ক ও মৃত ত্বকের কারণে হয়ে থাকে।  খুশকির সমস্যা দূর করতে মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে বেটে পেস্ট তৈরি করতে হবে তবে চাইলে এর সাথে দই মেশানো যেতে পারে। এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগিয়ে তিরিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত এর ব্যবহারে দ্রুত খুশকি চলে যাবে।

৯। মহিলাদের ঋতুকালীন ও প্রসবজনিত সমস্যার সমাধানে
মেথিতে সাইটো-ইস্ট্রোজেন নামক উপাদান থাকে যা নারীদেহে প্রোলাকটিন নামের হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধি্তে সাহায্য করে। এই হরমোন নারীদেহকে সুগঠিত করতে সাহায্য ছাড়াও ঋতুকালীন বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে খুবই কার্যকরী। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা জরায়ুর সংকোচন ও প্রসারণের যন্ত্রণা কমাতে মেথির অবদান প্রমান করেছেন। তবে অতিরিক্ত খাওয়া হলে গর্ভপাত বা অপরিণত শিশুর জন্মদানের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভবতী মায়েদের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর খেতে হবে।

১০। ক্যান্সারকে দূরে রাখতে
রক্তে যদি টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে  ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কাও  বেড়ে যায়। আর এই ক্যান্সারকে দূরে রাখতে মেথি বীজের রয়েছে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা। এতে থাকা ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান রক্তে ভেসে বেরানো টক্সিক উপাদানগুলোকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই শরীরে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়া প্রতিরোধ করতে নিয়মিত মেথিশাক কিংবা এর বীজ খাওয়া উচিত।

গত কয়েক দশক ধরে  দেশ ও বিদেশে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মেথি বীজে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন, উপকারি ফ্য়াট, ভাল কোলেস্টেরল, ডায়াটারি ফাইবার এবং আরও বেশ কিছু খনিজ এবং মিনারেল। এসব উপাদান নানাভাবে শরীরের উপকারে লাগে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে নিয়মিত মেথির ব্যবহার করতে হবে। 



করোনাভাইরাস ও সেলফ আইসোলেশন

রবিবার, মার্চ ২৯, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

আমাদের সাধারন মানুষের কাছে শব্দ দুটির অর্থ প্রায় একই হলেও, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের মানে সম্পূর্নই আলাদা। চলুন জেনে নিই সেলফ আইসোলেশন কি, এবং এ সময় কি কি করনীয়।
সেলফ আইসোলেশন কি?
সেলফ আইসোলেশন হচ্ছে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস থেকে সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু কিংবা সহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য একটি কার্যকরী প্রতিরোধমূলক উপায়। বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তি বা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ব্যক্তির জন্যই ১৪ দিনের সেলফ আইসোলেশন প্রযোজ্য।

আমরা সবাই জানি যে আমরা একটি দূর্যোগপূর্ন সময় পার করছি, এ সময় আমাদের এধরনের প্রতিরোধ্মূলক ব্যবস্থা শুধু আমাদেরকেই না, বরং আমাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও সর্বোপরি দেশের সকলকে এই ভাইরাসজনিত রোগ থেকে নিরাপদ রাখতে পারে।

বাহিরের লোকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তি যদি বাসায় অবস্থান করেন, সেক্ষেত্রে পরিবারের অন্যান্যরা যারা বিদেশ ভ্রমন করেননি বা অন্য কোন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি, তাদের কাছ থেকে অন্তত ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে; এবং আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার প্লেট, বাটি, কাপ, চামচ, গ্লাস, তোয়ালে, বালিশ ও অন্যান্য ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র ব্যবহার করা যাবেনা। আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিসপত্র ব্যবহারের পরপর সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

সেলফ আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দিলে, যেমন – কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দেরি না করে আইইডিসিআর এর জরুরি হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।

সাধারন পরামর্শ
১. সেলফ আইসোলেশনের ক্ষেত্রে অন্তত ১৪ দিন বাসায় অবস্থায় করতে হবে।
২. আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য আপনার নিয়োগকর্তা, বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যের কাছে সাহায্য নিন।
৩. বাড়িতে থেকেই কাজ করার জন্য আপনার নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন।
৪. কেনাকাটার জন্য অনলাইন শপগুলোর সাহায্য নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে পন্য ডেলিভারি আপনার বাসার দরজা পর্যন্ত রেখে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করুন।
৫. বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগের জন্য ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করুন; সরাসরি যোগাযোগ বা সংস্পর্শ পরিহার করুন।

৬. সেলফ আইসোলেশনের সময় শরীর ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করতে পারেন।

৭. ১৪ দিনের সেলফ আইসোলেশনের সময় যেকোন ধরনের গণপরিবহন, ট্যাক্সি বা এ জাতীয় বাহন পরিহার করুন।
৮. সেলফ আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় পরিবারের অন্যান্যদের সাথে নিবিড় সংস্পর্শ পরিহার করুন, এমনকি একই বিছানা, কাপড় ও খাবার শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
৯. ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন।
১০. অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, মুখ ও নাক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
১১. কাশি ও হাঁচি দেয়ার সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন অথবা হাতের কনুই দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকুন।
১২. ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলে দিন এবং সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলুন।
১৩. শিশুদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে সহজ ভাষায় বুঝিয়ে বলুন।
১৪. বিভিন্ন দেশের আক্রান্ত ব্যক্তিদের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তি যেমন হৃদরোগে আক্রান্ত, ডায়াবেটিস আছে কিংবা উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন, এমন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে আছেন। এক্ষেত্রে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ পরিহার করুন।

কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাযথ যত্নের প্রয়োজন। অসুস্থ মানুষদের জন্য প্রয়োজন সর্বোচ্চ সহায়তামূলক সেবা।

ভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা দিলে সরকারের রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাথে যোগাযোগ করুন এবং আসুন আমরা সবাই উপরোক্ত বিষয়গুলোর দিকে সর্বদা খেয়াল রেখে আমাদের জীবন যাপন করি তাহলে আমরা সহজেই এরোগ থেকে অনেকটা নিজেদের দূরে রাখতে পারব।



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png