LIVE
Loading latest headlines...

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯

ঈমানকে তাজা রাখার জন্যে প্রতিদন কুরআনের চর্চা ও অর্থ জানা জরুরি

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯ 0
বার দেখা হয়েছে

আমরা লক্ষ্য করছি প্রতিটি রমজান মাসে বাড়িতে বাড়িতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে পেরিত আসমানি কিতাব কুরআনুল কারিমের চর্চা হয়। কুরআনুল কারিমকে নিয়ে পর্যালোচনা হয়। মা আয়েশা সিদ্দিকা রা:- কে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল নবী করিম সা:-এর জীবনযাপন কেমন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘নবী করিম সা: হচ্ছেন জীবন্ত কুরআন’। অর্থাৎ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে পেরিত কুরআনুল কারিমের প্রতিট অক্ষর মহানবী সা: পালন করতেন। নবী করিম সা: একদল সাহাবাকে কুরআনের হাফেজ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। এদের একটাই কাজ ছিল- পবিত্র কুরআনুল কারিমকে নিয়ে গবেষণা করা ও মুখস্থ করে রাখা- যেন পরবর্তীকালে এই কুরআনুল কারিমকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া যায়। আসহাবে সুফ্ফার সম্মানিত সাহাবিগণ সারা দিন নবী করিম সা:-এর ভালোবাসার ছায়ায় থাকতেন। তারা কুরআনুল কারিমকে নিয়ে ভাবতেন এবং গবেষণা করতেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই কুরআনুল কারিমে জগতের সব কিছুকে তুলে ধরেছেন। যারা গবেষক তারা নিশ্চয়ই কুরআনুল কারিমের গবেষণা করে সব কিছু পেয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীর সব মহাপুরুষ কুরআনুল কারিমের চর্চা করে মহান রাব্বুল আলামিনের সর্বোচ্চ সান্নিধ্য পেয়েছেন। বিশ্বখ্যাত ফরাসি বিজ্ঞানী ড. মরিস বুকাইলি তার বিখ্যাত পুস্তক বাইবেল, বিজ্ঞান ও কুরআনে স্বীকার করেছেনÑ কুরআনুল কারিম একমাত্র পুস্তক, যা কখনোই বিকৃত হয়নি। মহান রাব্বুল আলামিন নিজেই কুরআনুল কারিমকে হেফাজতে রেখেছেন। একই সাথে তিনি এই পবিত্র কুরআনুল কারিমকে লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত করেছেন। সারা পৃথিবীর সব মহাপুরুষ, লেখক, গবেষকের কাছে কুরআনুল কারিম প্রতিদিন নতুন করে সবাইকে হেদায়াতের আলোতে আলোকিত করছে। অন্ধকারে যখন পথিক পথ হারিয়ে ফেলে তাকে যেমন চন্দ্র তার কিরণ দ্বারা পথ দেখিয়ে দেয়, তদ্রুপ উম্মতি মোহাম্মদির অনুসারীরা যখন পথ হারিয়ে ফেলে, তখন কুরআনুল কারিম তাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেয়। বাংলাদেশের প্রতিট বাড়িতে অত্যন্ত যতেœর সাথে কুরআনুল কারিম সংরক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু দু:খের বিষয় কেউ মারা না গেলে অথবা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে কুরআনুল কারিম পাঠ করতে সহজে কাউকে দেখা যায় না। আমাদের উচিত প্রতিদন অন্তত একটিবারের জন্য হলেও অর্থসহ কুরআনুল কারিম পাঠ করা। যারা প্রতিদিন কুরআনুল কারিম চর্চা করছেন, পাঠ করছেন তাদেরকে হেদায়াতের পথ স্বয়ং কুরআনুল কারিম দেখিয়ে দেয়। একটি দেশে যখন আপনি ভ্রমণ করতে যাবেন তখন আপনার প্রয়োজন হবে একটি গাইডবুকের। কিন্তু সারা জীবন পৃথিবীতে যত দিন থাকবেন এবং অনন্ত অসীম পারলৌকিক জীবনে যদি সুখময় জীবন চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে-আমাকে, সবাইকে কুরআনুল কারিমকে সাথী করতে হবে। আমরা যদি কুরআনুল কারিমকে বরণ করে নিতে পারি তাহলে আমরা কখনো পথ হারাব না। সমগ্র পৃথিবীতে যে হানাহানি হচ্ছে তা বন্ধ হওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে কুরআনের আলোয় আলোকিত হওয়া। মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে আমাদের বিনীত ফরিয়াদ- হে দয়াময় আল্লাহ, দয়া করে আপনি আমাদের হেদায়েত দান করুন। কুরআনুল কারিমের আলোয় আলোকিত করুন। আমাদের দেশের কুরআন পাঠকেরা, গবেষকেরা যদি আন্তর্জাতিক মানের কুরআনের তাফসির পড়তে চান তাহলে আজই সংগ্রহ করুন ,তাফসিরে তাফহীমুল কুরআন ,তাফসিরে ইবনে কাসির, তাফসিরে জালালাইন, প্রভৃতি তাফসির  গ্রন্থ  সংগ্রহ করে পড়তে পারেন। –
এবং শব্দে শব্দে কুরআনের অর্থ জানাও জরুরি  কুরআন তেলাওয়াত অর্থাৎ পড়ার উদ্দেশ্য কি কেবল শব্দ পড়া, না কি অর্থ বুঝে পড়া? রাসূল (সাক্স) বলেছেন, কুরআনের প্রতিট অক্ষর পড়ার জন্য রয়েছে ১০টি নেকি। এটা কি অর্থ ছাড়া পড়ার জন্য, না কি অর্থসহ পড়ার জন্য, এটা কি আবার কেবল অর্থসহ  বুঝার জন্য, না কি তা জীবনে প্রয়োগ করার জন্যও? আরবের লোকের মাতৃভাষা আরবি। তাই তারা আরবিতে লেখা কুরআন সহজে বুঝতে পারে। যেমন আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় লেখা কোন বই সহজেই বুঝতে পারি। কুরআন বাংলায় নাজিল হলে আমরা সহজে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থও বুঝতে পারতাম। উল্লেখ্য, আল্লাহ বলেছেন, রাসূলদের মাতৃভাষা অনুযায়ীই তাদের ওপর  কিতাব ও সহিফা নাজিল হয়েছিল।
একটি বতলভর্তি মধু ছিপি দিয়ে বদ্ধ। এখন এ বোতলটার বাইরের অংশ চুষলে বা বোতলটি মুখে লাগালে কি মধু খাওয়া হবে? উদ্দেশ্য তো মধু খাওয়া। তাই ছিপি খুলে মধু খেতে হবে। তেমনি অর্থসহ কুরআন পড়লে  প্রকৃত কোআন পড়া হবে। এবং তা হলেই হৃদয়-মন-কলব পরিপুষ্ট হবে। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আন্তরিকতা সহকারে কলেমা পড়ে সে অবশ্য বেহশতে যাবে। সাহাবারা আন্তরিকতার অর্থ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন কলেমার বাক্য মানুষকে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হারাম ও অবৈধ কর্ম থেকে বিরত রাখবে তখন তা আন্তরিকতা সহকারে পড়া হবে।রাসূল (সা:) এও বলেছেন, এমন দিন আসবে যখন ইসলামের কিছুই থাকবে না শুধু নাম ছাড়া ও কুরআনের বাহ্যিক রূপ ছাড়া। মুসলমানদের মসজিদগুলো হবে ভক্তি ও জ্ঞানশূন্য।
আল্লাহ কুরআনে (সূরা আনআম আয়াত ৫০) বলেছেন, ‘চক্ষুষ্মান ও অন্ধ কি সমান? তোমরা কি অনুধাবন করবে না?’ তেমনি সূরা মুহাম্মদ আয়াত ২৪-এ আল্লাহ বলেন, ‘তবে কি ওরা কুরআন সম্বন্ধে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা করে, না ওদের অন্তর  তালাবদ্ধ? তোমরা কি ভেবে দেখবে না? (কাসাস-আয়াত ৭১-৭২)। এগুলো কি কুরআনের অর্থ ও তাৎপর্য জানার কথা বলে না? ইসলাম প্রথম পর্যায়ে আরব এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। পরে তা অন্যান্য ভাষাভাষী অঞ্চলে  প্রসার লাভ করে। অর্থ ছাড়া পড়লেই যদি প্রতিট অক্ষরের জন্য ১০টি নেকি পাওয়া যায়, তাহলে অর্থসহ পড়লে কি অনেক বেশি নেকি পাওয়া যাবে না?

যে কোন বিবেকবান ব্যক্তি বলবেন, অবশ্য বেশি নেকি পাওয়া যাবে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, কোন কোন ধর্মবিশারদকে দেখেছি, কেবল কুরআন শব্দ পড়ার কথা বলেন। অর্থসহ পড়ার জন্য তেমন তাকিদই দেন না। ফলে সুখ ও শান্তিময় জীবন (ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক) নির্বাহের জন্য, সুষ্ঠু  প্রশাসন, বিচার, অর্থনীতি ইত্যাদি ব্যবস্থার জন্য, উত্তম চরিত্র গঠনের জন্য শাশ্বত কল্যাণময় কুরআনে যে শত শত বিধিবিধান ও দিকনির্দেশনা রয়েছে, সেগুলো সম্বন্ধে আমরা অজ্ঞই থেকে যাই।
সমাজ থেকে তাই অসত্যতা, কুসংস্কার, কলুষতা, পঙ্কিলতা, অশান্তি, অস্থিরতা দূরীভূত না হয়ে বরং বেড়েই চলছে যদিও আমরা নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদির বাহ্যিক অনুষ্ঠানাদি পালন করে যাচ্ছি। মানুষ কে, কোথা থেকে এসেছে, তাকে এবং এ বিশ্ব জগৎকে কে সৃষ্টি করেছেন এবং নিয়ন্ত্রণ করছেন, ¯্রষ্টার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, সৃষ্টির সঙ্গে মানুষের কি সম্পর্ক কি, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কি?  সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি, এ দুনিয়াই কি শেষ, নাকি মৃত্যুর পর আরেক জগৎ আছে, কারও কাছে মানুষের জবাবদিহিতা আছে কি ? ইত্যাদি অনেক মৌলিক, গূঢ়, সূক্ষ্ম ও জীবনধর্মী প্রশ্ন মনোজগতে জাগে। মানুষ যুগে যুগে এগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন ভুল ও অস্বচ্ছ ধারণা পোষণ করে আসছিল। এগুলোর অকাট্য, সত্য ও পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান আমরা কুরআন পড়ে জানতে পারি। তেমনি কুরআনে প্রায় ৭০০টি বিজ্ঞানবিষয়ক আয়াত পড়লে আল্লাহর অস্তিত্ব  একত্ব  সার্বভৌমত্ব   অসীমত্ব  বিশালত্ব  বিশ্বজগৎ পরিচালন  প্রকৗশলী  প্রভৃৃতি অবহিত হয়ে আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর হয় এবং অনুগত্যে মাথা নত হয়ে আসে। তাই ঈমান তাজা রাখার জন্যে অর্থ জানা জরুরি। আসুন আমরা কুরআনের অর্থ ও তাফসির  পড়ার জন্যে আমাদের দৈনন্দিনের রুটিনের মধ্যে এক ঘন্টা সময় নির্দ্বারিত  করি , আজই আমরা তোবাহ করি এবং আল্লাহর কাছে সঠিক হেদায়েত পাওয়ার জন্যে প্রার্থনা করি । আমিন।


ঈমানের ৭৭ টি শাখা /প্রশাখা

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯ 0
বার দেখা হয়েছে
১· পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে কালেমায়ে তাইয়্যেবা পড়া। -মুসলিম শরীফঃ ১/৪৭

২· আল্লাহ তা‘য়ালার উপর ঈমান আনা। -সূরা হাশরঃ ২২,২৩,২৪

৩· সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা‘য়ালা- একথার উপর বিশ্বাস করা। -সূরা বাকারাঃ ২৯

৪· ফেরেশতা সম্মন্ধে ঈমান আনায়ন করা। -সূরা নাবাঃ ৩৮

৫· আল্লাহর কিতাব সম্মন্ধে ঈমান রাখা। -সূরা ইউসূফঃ ২

৬· নবী-রাসূল আ·সম্মন্ধে ঈমান রাখা। -সূরা মুমিনঃ ৭৮

৭· আখিরাত সম্মন্ধে ঈমান রাখা। -সূরা মুমিনুনঃ ১১৫

৮· তাকদীর সম্পর্কে ঈমান রাখা। -সূরা ফুরকানঃ ২

৯· জান্নাতের উপর ঈমান রাখা। -সূরা নিসাঃ ১৩

১০· জাহান্নামের উপর ঈমান রাখা। -সূরা আ‘রাফঃ ৪১

১১· অন্তরে আল্লার প্রতি ভালোবাসা রাখা। -সূরা আলে ইমরানঃ ৩১,৩২

১২· আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের স·সন্তুষ্টির জন্যই কারো সাথে বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুতা পোষণ করা।

-মাজমাউয যাওয়াইদঃ ১/৪৮৫

১৩· রাসূল স·এর প্রতি ভালোবাসা রাখা এবং তাঁর সুন্নতকে ভালোবাসা বা সেগুলোর অনুসরণ

করা। -সূরা আলে ইমরানঃ ১৩২

১৪· ইখলাস বা একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করা। সূরা আ‘রাফঃ ২৯

১৫· গুনাহ বা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের স·অবাধ্যতা থেকে তওবা করা।- সূরা বাকারাঃ ১৫৯-১৬০

১৬· অন্তরে আল্লাহর ভয় রাখা। -সূরা বাকারাঃ ১৯৭

১৭· আল্লাহর রহমতের আশা করা। -সূরা যুমারঃ ৫৩

১৮· লজ্জাশীলতা বজায়ে রাখা। -মুসলিম শরীফঃ ১/৪৭

১৯· সর্বদা আল্লাহর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। -সূরা বাকারাঃ ১৫২

২০· অঙ্গকার রক্ষা করা। -সূরা বাণী ইস্রাঈলঃ ৩৪

২১· সবর বা ধৈর্যধারণ করা। -সূরা আছরঃ ৩

২২· তাওয়াজু বা ন্রতা অবলম্বন করা। -সূরা ফুরকানঃ ৬৩

২৩· দয়াদ্র বা স্নেহশীল ও মমতামী হওয়া। -তিরমিজী -২/১৫

২৪· তাক্বদীরের উপর সন্তষ্ট থাকা। -মুসলিম শরীফ, কিতাবুল

২৫· সকল কাজ ও ক্ষেত্রে তাওয়াক্কুল বা একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা। -সূরা আলে ইমরানঃ ১৬০

২৬· অহংকার না করা। -মুসলিম শরীফঃ ১/৬৫

২৭· চোগলখুরী ও অযথা মনোমালিন্য বর্জন করা। -সূরা হজ্বঃ ৭৭

২৮· হাসাদ বা হিংসা বিদ্বেষ বর্জন করা। -বুখারী শরীফঃ ২/৮৯৬

২৯· ক্রোধ দমন করা। -সূরা শুরাঃ ৩৭

৩০· অন্যের অনিষ্ট সাধন ও প্রতারণা না করা। -মুসলিম শরীফঃ ১/৭০

৩১· দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক মায়া মুহাব্বত ত্যাগ করা। -বুখারী শরীফঃ ২/৯৪৯

৩২· কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত করা। -মুসলিম শরীফঃ ১/২২০

৩৩· দীনি (ইসলামী) জ্ঞান অর্জন করা। -বুখারী শরীফঃ ১/১৬

৩৪· দীনি (ইসলামী) জ্ঞান শিক্ষা দেয়া। -ইবনে মাজাহ-১৯

৩৫· আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। -তিরমিজী -২/৬৬

৩৬· আল্লাহর জিকির করা। -বুখারী শরীফঃ ২/৯৪৮

৩৭· অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা। -সূরা শুরাঃ ৩৭

৩৮· পাক-পবিত্র ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায়ে রাখা। -তিরমিজী -২/১০৭

৩৯· সালাত (নামাজ) আদায় করা ও সামাজে প্রতিষ্ঠা করা। -সূরা মুজ্জামিলঃ ২০

৪০· যথাযথভাবে যাকাত দেয়া। -সূরা মুজ্জামিলঃ ২০

৪১· সিয়াম (রোজা) পালন করা। -সূরা বাকারাঃ ১৮৫

৪২· হজ্ব পালন করা। -সূরা আলে ইমরানঃ ৯৭

৪৩· ইতিকাফ করা। -মুসলিম শরীফঃ ১/৩৭১

৪৪· ইসলামের জন্য প্রয়োজনে হিজরত করা। -সূরা বাকারাঃ ২১৮

৪৫· জায়েজ মানত পুরা করা। -বুখারী শরীফঃ ২/৯৯১

৪৬· জায়েজ শপথ (কসম) রক্ষা করা। -সূরা মায়িদাঃ ৮৯

৪৭· কাফ্‌ফারা আদায় করা। -সূরা মায়িদাঃ ৯৫

৪৮· কুরবাণী করা। -সূরা কাউছারঃ ২

৪৯· সতর ঢাকা। -তিরমিজী -২/১০৭

৫০· মৃত্যুব্যক্তির দাফন কাফন করা। -বুখারী শরীফঃ ১/১৬৬

৫১· ঋণ পরিশোধ করা। -সূরা বাকারাঃ ২৮২

৫২· ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা বজায়ে রাখা। -তিরমিজী -১/২৩০

৫৩· সত্য সাক্ষ্য দেয়া। -সূরা বাকারাঃ ২৮৩

৫৪· বিবাহের মাধ্যমে চরিত্র রক্ষা করা। -সূরা মু‘মীনুনঃ ৫-৬

৫৫· পরিবারের সদস্যদের হক আদায় করা। -তিরমিজী -২/১৮

৫৬· পিতা-মাতার খিদমত করা। -সূরা নিসাঃ ৩৬

৫৭· সন্তান লালন পালন করা। -সূরা তাহরীমঃ ৬

৫৮· আত্নীয়তা রক্ষা করা। -মুসলিম শরীফঃ ২/৩১৫

৫৯· মনিবের আদেশ-নিষেধ মান্য করা। -সূরা নিসাঃ ৫৯

৬০· ন্যায় বিচার করা। -সূরা মায়িদাঃ ৪২

৬১· সহীহ ইসলামী সংগঠনের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ও আল্লাহর পথে জিহাদ করা। -সূরা বাকারাঃ ২৪৪

৬২· ইসলামী রাষ্ট্র প্রধানের আনুগত্ব করা। -সূরা নিসাঃ ৫৯

৬৩· দু‘পক্ষের কলহ মিটিয়ে দেয়া। -সূরা হুজরাতঃ ৯

৬৪· সৎ কাজে পরস্পর সহযোগিতা করা। -সূরা মায়িদাঃ ২

৬৫· সৎ কাজের আদেশ করা। -সূরা তাওবাঃ ৭১

৬৬· অসৎ কাজে বাধা দেয়া। -সূরা তাওবাঃ ৭১

৬৭· হদ বা ইসলামী দন্ড বিধান (রাষ্ট্রিয়ভাবে) বাস্তবায়ন করা। -ইবনে মাযাহঃ ১৮২

৬৮· ইসলামী শাসনব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা। -মুসলিম শরীফঃ ১/৫১

৬৯· আমানতদারী রক্ষা করা। -সূরা মূমীনুনঃ ৮

৭০· মানুষকে করজে হাসানা দেয়া। -সূরা হাদীদঃ ১১

৭১· পাড়া প্রতিবেশীর সাথে সদ্বব্যবহার করা। -বুখারী শরীফঃ ২/৯৫৯

৭২· অর্থ সম্পদের সদ্বব্যবহার করা। -সূরা আ‘রাফঃ ৩১

৭৩· সালামের উত্তর দেয়া। -সূরা নিসাঃ ৮৬

৭৪· হাঁচি দাতার উত্তর দেয়া। -বুখারী শরীফঃ ১/১৬৬

৭৫· কাউকে কোন প্রকার কষ্ট না দেয়া। -বুখারী শরীফঃ ১/৬

৭৬· ইসলামে অবৈধ খেলাধুলা ও হাসি ঠাট্টা না করা। -সূরা মায়িদাঃ ৯০

৭৭· রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেয়া। -মুসলিম শরীফঃ ১/৪৭



সুনানে আন-নাসায়ী - ২ পানির বর্ণনা (৩২৫ - ৩৪৭ টি হাদীস)

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯ 0
বার দেখা হয়েছে
পরিচ্ছেদ
সুনানে আন-নাসায়ী - ২ পানির বর্ণনা

আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

৩২৫
أَخْبَرَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ بَعْضَ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اغْتَسَلَتْ مِنَ الْجَنَابَةِ فَتَوَضَّأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِفَضْلِهَا فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: «إِنَّ الْمَاءَ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ»

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সহধর্মিণীদের মধ্যে একজন জানাবাতের গোসল করলে তাঁর গোসলের উদ্ধৃত্ত পানি দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করলেন। পরে তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট তা উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ পানিকে কোন বস্তুই নাপাক করে না। [১]

[১] এ হাদীস দ্বারা বুযা‘আ কূপের পানি উদ্দেশ্য করা হয়েছে। এ কূপের পানি শস্যক্ষেত ও খেজুর ইত্যাদির বাগানে সেচকার্যে ব্যবহার করা হত। তাই তাতে কোন নাপাক বস্তু পড়লেও তা সেখানে অবশিষ্ট থাকত না। এ ছাড়া বুযা‘আ কূপের পানির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। আর বেশি পানি দূষিত হয় না। যেমন কোন বড় পুকুরের পানি। অপরদিকে সম্ভবত বুযা‘আ কূপটি এমন স্থানে ছিল, যেখানে বাইরে থেকে পানির গমনাগমন ছিল। যেমন, নদীর পানি। এর তলদেশ পাতালের পানির সাথে সংযুক্ত ছিল বলে যাবতীয় ময়লা অপসারিত হয়ে যেত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
বুযা’আ নামক কূপ প্রসঙ্গে আলোচনা
৩২৬

أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ كَثِيرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَعْبٍ الْقُرَظِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: أَتَتَوَضَّأُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ وَهِيَ بِئْرٌ يُطْرَحُ فِيهَا لُحُومُ الْكِلَابِ وَالْحِيَضُ وَالنَّتَنُ؟ فَقَالَ: «الْمَاءُ طَهُورٌ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ»

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে প্রশ্ন করা হলোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমরা কি বুযাআ নামক কূপের পানিতে উযূ করব? তা এমন একটি কূপ যাতে কুকুরের মাংস, হায়যের ন্যাকড়া ও আবর্জনা নিক্ষেপ করা হয়। তিনি বললেনঃ পানি পবিত্র, তাতে কোন বস্তুই নাপাক করে না।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩২৭
أَخْبَرَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ - وَكَانَ مِنَ الْعَابِدِينَ - عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ طَرِيفٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي نَوْفٍ، عَنْ سَلِيطٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: مَرَرْتُ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَتَوَضَّأُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ فَقُلْتُ: أَتَتَوَضَّأُ مِنْهَا وَهِيَ يُطْرَحُ فِيهَا مَا يُكْرَهُ مِنَ النَّتَنِ؟ فَقَالَ: «الْمَاءُ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ»
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পাশ দিয়ে গমন করলাম, তখন তিনি বুযাআ কূপের পানি দ্বারা উযূ করছিলেন। আমি বললাম, আপনি কি এই কূপের পানি দ্বারা উযূ করছেন? অথচ তাতে ঘৃণ্য ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে। তখন তিনি বললেনঃ পানিকে কোন বস্তুই নাপাক করে না।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
পানির পরিমাণ নির্ণয়
৩২৮

أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمَاءِ وَمَا يَنُوبُهُ مِنَ الدَّوَابِّ وَالسِّبَاعِ؟ فَقَالَ: «إِذَا كَانَ الْمَاءُ قُلَّتَيْنِ لَمْ يَحْمِلِ الْخَبَثَ»

আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে পানি এবং তাতে যে কোন সময় চতুস্পদ জন্তু ও হিংস্র পশু অবতরন করে, সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ যখন পানি দুই ‘কুল্লা’ পরিমাণ হয় তখন তা নাপাক হয় না। [১]

[১] ‘কুল্লা’ বড় ধরনের মাটির কলসীকে বলা হয়। যাতে পাঁচশত রতল পানি ধরে। এক রতলের পরিমাণ অর্ধ সের বা অর্ধ লিটারের একটু বেশি। হাদীসে উল্লেখিত কুল্লাতায়ন -এর উদ্দেশ্য, পানি প্রচুর হলে তা নাপাক হয় না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩২৯
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ: أَنَّ أَعْرَابِيًّا بَالَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَامَ إِلَيْهِ بَعْضُ الْقَوْمِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُزْرِمُوهُ، فَلَمَّا فَرَغَ دَعَا بِدَلْوٍ مِنْ مَاءٍ فَصَبَّهُ عَلَيْهِ»
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলে উপস্থিত লোকদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে তিরস্কার করতে উদ্যত হল। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে বাধা দিও না। যখন ঐ ব্যক্তি পেশাব করা শেষ করল, তখন তিনি এক বালতি পানি আনিয়ে তা পেশাবের উপর ঢেলে দিলেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৩০
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْوَاحِدِ، عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْوَلِيدِ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَامَ أَعْرَابِيٌّ فَبَالَ فِي الْمَسْجِدِ فَتَنَاوَلَهُ النَّاسُ، فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَعُوهُ وَأَهْرِيقُوا عَلَى بَوْلِهِ دَلْوًا مِنْ مَاءٍ؛ فَإِنَّمَا بُعِثْتُمْ مُيَسِّرِينَ وَلَمْ تُبْعَثُوا مُعَسِّرِينَ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক বেদুঈন মসজিদে দাঁড়িয়ে পেশাব করল। উপস্থিত লোকজন তাকে পাকড়াও করতে উদ্যত হলে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও এবং তার পেশাবের উপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও। তোমাদেরকে নরম ব্যবহার করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোর ব্যবহারের জন্য নয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
বদ্ধ পানিতে জুনুব ব্যক্তির গোসল করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা
৩৩১


أَخْبَرَنَا الْحَارِثُ بْنُ مِسْكِينٍ قِرَاءَةً عَلَيْهِ وَأَنَا أَسْمَعُ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرٍو - وَهُوَ ابْنُ الْحَارِثِ، عَنْ بُكَيْرٍ، أَنَّ أَبَا السَّائِبِ حَدَّثَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَغْتَسِلْ أَحَدُكُمْ فِي الْمَاءِ الدَّائِمِ وَهُوَ جُنُبٌ»
বুকায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সায়িব তাঁর নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যেন জানাবাত অবস্থায় বদ্ধ পানিতে গোসল না করে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
সমুদ্রের পানি দ্বারা উযূ করা
৩৩২

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّ الْمُغِيرَةَ بْنَ أَبِي بُرْدَةَ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ: سَأَلَ رَجُلٌ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَرْكَبُ الْبَحْرَ وَنَحْمِلُ مَعَنَا الْقَلِيلَ مِنَ الْمَاءِ، فَإِنْ تَوَضَّأْنَا بِهِ عَطِشْنَا، أَفَنَتَوَضَّأُ مِنْ مَاءِ الْبَحْرِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هُوَ الطَّهُورُ مَاؤُهُ الْحِلُّ مَيْتَتُهُ»
সাঈদ ইব্‌ন আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুগীরা ইব্‌ন আবূ বুরদা (রহঃ) তাঁকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌! আমরা সমুদ্রে ভ্রমন করি এবং আমাদের সাথে করে স্বল্প পানি নিয়ে যাই। আমরা যদি ঐ পানি দ্বারা উযূ করি তবে আমরা পিপাসায় কষ্ট পাব, এমতাবস্থায় আমরা সমুদ্রের পানি দ্বারা উযূ করব কি? রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এর পানি পবিত্র আর এর মৃত জীব হালাল।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
বরফ ও বৃষ্টির পানি দ্বারা উযূ করা
৩৩৩

أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالْبَرَدِ، وَنَقِّ قَلْبِي مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ»
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ (আরবি) “হে আল্লাহ্‌! আমার পাপসমূহ বরফ ও মেঘের পানি দ্বারা ধৌত কর আর আমার অন্তঃকরনকে গুনাহ থেকে পরিষ্কার কর, যেমন তুমি সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিষ্কার করে থাক।”

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৩৪
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالثَّلْجِ وَالْمَاءِ وَالْبَرَدِ»
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ (আরবি) “হে আল্লাহ্‌! আমার পাপসমূহ বরফ, পানি এবং মেঘের পানি দ্বারা ধুয়ে ফেল।”

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
কুকুরের উচ্ছিষ্ট

৩৩৫
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي رَزِينٍ وَأَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيُرِقْهُ، ثُمَّ لِيَغْسِلْهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ»
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুকুর তোমাদের কারো কোন পাত্রে মুখ দিলে সে যেন পাত্রের বস্তু ফেলে দেয় আর পাত্রটি সাতবার ধুয়ে ফেলে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
কোন পাত্রে কুকুরের মুখ দেয়ার দরুন তা মাটি দ্বারা ঘষা
৩৩৬
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْأَعْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ قَالَ: سَمِعْتُ مُطَرِّفًا، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِقَتْلِ الْكِلَابِ، وَرَخَّصَ فِي كَلْبِ الصَّيْدِ وَالْغَنَمِ، وَقَالَ: «إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي الْإِنَاءِ فَاغْسِلُوهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ، وَعَفِّرُوهُ الثَّامِنَةَ بِالتُّرَابِ»

আবদুল্লাহ ইব্‌ন মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুরকে হত্যা করতে আদেশ করেছেন এবং বকরীপালের ও শিকারের কুকুরের বিষয়ে অনুমতি দান করেছেন। তিনি বলেছেনঃ কুকুর কোন পাত্রে মুখ দিলে তা সাতবার ধুয়ে নেবে আর অষ্টমবারে তা মাটি দ্বারা ঘষবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৩৭
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ يَزِيدَ بْنِ حُمَيْدٍ قَالَ: سَمِعْتُ مُطَرِّفًا يُحَدِّثُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ قَالَ: أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلِ الْكِلَابِ قَالَ: «مَا بَالُهُمْ وَبَالُ الْكِلَابِ؟» قَالَ: وَرَخَّصَ فِي كَلْبِ الصَّيْدِ وَكَلْبِ الْغَنَمِ
وَقَالَ: «إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي الْإِنَاءِ فَاغْسِلُوهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ، وَعَفِّرُوا الثَّامِنَةَ بِالتُّرَابِ» خَالَفَهُ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَالَ: إِحْدَاهُنَّ بِالتُّرَابِ

আবদুল্লাহ ইব্‌ন মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর হত্যার নির্দেশ প্রদান করেন। পরে বলেন, কুকুরের বিষয়ে তাদের কী হল? আবদুল্লাহ বলেনঃ আর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিকারের কুকুর ও বকরীপালের কুকুর পোষার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ যখন কুকুর পাত্রে মুখ দেয়, তখন তা সাতবার ধুয়ে নেবে আর অষ্টমবার মাটি দ্বারা ঘষে নেবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) -এর বর্ণনা আবদুল্লাহ ইব্‌ন মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) -এর বর্ণনা হতে ভিন্নরূপ। তিনি বলেছেনঃ তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তন্মধ্যে একবার মাটি দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৩৮
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ خِلَاسٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْسِلْهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ أُولَاهُنَّ بِالتُّرَابِ»
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কুকুর তোমাদের কারো পাত্রে মুখ দেয়, তখন তা সাতবার ধুয়ে ফেলবে তন্মধ্যে প্রথমবার মাটি দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৩৯
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنِ ابْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْسِلْهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ أُولَاهُنَّ بِالتُّرَابِ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যখন কুকুর তোমাদের কারো পাত্রে মুখ দেয়, তখন ঐ পাত্র সাতবার ধুয়ে ফেলবে যার প্রথমবার হবে মাটি দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
বিড়ালের উচ্ছিষ্ট
৩৪০
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ حُمَيْدَةَ بِنْتِ عُبَيْدِ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ كَبْشَةَ بِنْتِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ دَخَلَ عَلَيْهَا - ثُمَّ ذَكَرَ كَلِمَةً مَعْنَاهَا - فَسَكَبْتُ لَهُ وَضُوءًا، فَجَاءَتْ هِرَّةٌ فَشَرِبَتْ مِنْهُ، فَأَصْغَى لَهَا الْإِنَاءَ حَتَّى شَرِبَتْ. قَالَتْ كَبْشَةُ: فَرَآنِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ فَقَالَ: أَتَعْجَبِينَ يَا ابْنَةَ أَخِي؟ قُلْتُ: نَعَمْ. قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّهَا ليْسَتْ بِنَجَسٍ , إِنَّمَا هِيَ مِنَ الطَّوَّافِينَ عَليْكُمْ وَالطَّوَّافَاتِ»

কাব্‌শা বিন্‌তে কা’ব ইব্‌ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ কাতাদা তাঁর নিকট আগমন করলেন, তারপর বর্ণনাকারী কিছু কথা বললেনঃ যার অর্থ এই; আমি তার জন্য পানিভর্তি একটি উযূর পাত্র উপস্থিত করলাম। এমন সময় একটি বিড়াল তা হতে পান করল। তারপর তিনি ঐ বিড়ালটির জন্য পাত্রটি কাত করে দিলেন যাতে সে পান করতে পারে। কাব্‌শা বলেন, তখন আবূ কাতাদা দেখলেন, আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে আছি, তিনি বললেন, হে ভাতিজী! তুমি কি আশ্চর্যবোধ করছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এরা (বিড়াল) অপবিত্র নয়, এরা তোমাদের আশেপাশে বিচরণকারী এবং বিচরণকারিণী।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
ঋতুমতি নারীর ভুক্তাবশেষ
৩৪১
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: «كُنْتُ أَتَعَرَّقُ الْعَرْقَ فَيَضَعُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاهُ حَيْثُ وَضَعْتُهُ وَأَنَا حَائِضٌ، وَكُنْتُ أَشْرَبُ مِنَ الْإِنَاءِ فَيَضَعُ فَاهُ حَيْثُ وَضَعْتُ وَأَنَا حَائِضٌ»

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি গোশ্‌তযুক্ত হাড় হতে গোশত আলগা করতাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মুখ সেখানেই রাখতেন যেখানে আমি মুখ রেখেছিলাম। আর আমি পাত্র হতে পানি পান করতাম এবং তিনি সেখানেই মুখ রাখতেন যেখানে আমি রেখেছিলাম, অথচ আমি তখন ঋতুমতি।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
স্ত্রীর উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারের অনুমতি
৩৪২
أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: حَدَّثَنَا مَعْنٌ قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: «كَانَ الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ يَتَوَضَّئُونَ فِي زَمَانِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَمِيعًا»

ইব্‌ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সময়ে নারী-পুরুষ সকলে একত্রে উযূ করত।[১]

[১] এ ছিল পর্দার নির্দেশ নাযিল হওয়ার পূর্বেকার কথা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
নারীর উযূর উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
৩৪৩
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمٍ الْأَحْوَلِ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا حَاجِبٍ قَالَ: أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَاسْمُهُ سَوَادَةُ بْنُ عَاصِمٍ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «نَهَى أَنْ يَتَوَضَّأَ الرَّجُلُ بِفَضْلِ وُضُوءِ الْمَرْأَةِ»
হাকাম ইব্‌ন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারীর উদ্বৃত্ত উযূর পানি দ্বারা পুরুষদের উযূ করতে নিষেধ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
জানাবাতগ্রস্থ ব্যক্তির উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারের অনুমতি
৩৪৪
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: «أَنَّهَا كَانَتْ تَغْتَسِلُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْإِنَاءِ الْوَاحِدِ»
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে একত্রে একই পাত্রে গোসল করতেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ
একজন লোকের উযূ এবং গোসলের জন্য কতটুকু পানি যথেষ্ট
৩৪৫
أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَبْرٍ قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَوَضَّأُ بِمَكُّوكٍ وَيَغْتَسِلُ بِخَمْسَةِ مَكَاكِيَّ»
আবদুল্লাহ ইব্‌ন আবদুল্লাহ ইব্‌ন জাব্‌র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাক্‌কূক পানি দ্বারা উযূ করতেন এবং পাঁচ মাক্‌কূক পানি দ্বারা গোসল করতেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৪৬
أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْكُوفِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدَةُ يَعْنِي ابْنَ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ، عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «كَانَ يَتَوَضَّأُ بِمُدٍّ وَيَغْتَسِلُ بِنَحْوِ الصَّاعِ»

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মুদ পরিমাণ পানি দ্বারা উযূ করতেন আর গোসল করতেন এক সা পানি দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩৪৭

أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ قَالَ: حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أُمِّهِ، عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ وَيَغْتَسِلُ بِالصَّاعِ»

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করতেন এক মুদ পানি দ্বারা এবং গোসল করতেন এক সা’ পানি দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস




সহিহ ফাযায়েলে আমল অধ্যায়- ৩ ফাযায়িলে সলাত ( ৭৩ - ১৫১ টি হাদীস )

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯ 0
বার দেখা হয়েছে
পরিচ্ছেদঃ
সলাত পরিচিতি
সলাত শব্দটি স্থানভেদে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার হয়। যেমন : (১) আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত হলে এর অর্থ হবে : অনুগ্রহ, দয়া (২) বান্দার সাথে সম্পর্কিত হলে এ অর্থ হবে : প্রার্থনা, দু’আ (৩) ফিরিশতার সাথে সম্পর্কিত হলে এর অর্থ হবে : ক্ষমা প্রার্থনা (৪) নাবীর সাথে সম্পর্কিত হলে এর অর্থ হবে : দরূদ পড়া (৫) পশু পাখির সাথে সম্পর্কিত হলে এর অর্থ হবে : তাসবীহ পাঠ করা (৬) সলাত আদায় করা- যা একটি বিশেষ ‘ইবাদাত’ আলোচ্য অনুচ্ছেদে এটাই উদ্দেশ্যে।
পরিভাষায় সলাত হলো : কতিপয় নির্দ্দিষ্ট আরকান ও আহকামের সমষ্টি একটি নির্দ্দিষ্ট ‘ইবাদাত। ইসলামী শরীয়তে এর নিদ্দিষ্ট সময়সীমা বর্ণিত হয়েছে। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় ফরয। সলাত ইসলামের শ্রেষ্ঠতম ‘ইবাদাত এবং ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ।
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : “তোমরা সলাত আদায় করো ঠিক ঐভাবে যেভাববে আমাকে আদায় করতে দেখো।” (সহীহুল বুখারী)
পরিচ্ছেদঃ
ফাযায়িলে ত্বাহারাত - উযূ করার ফাযীলাত
৭৩
আবু মালিক আল-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।
হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৫৬, আহমান শাকির বলেন (হা/২২৮০০, ২২৮০৬) : সানাদ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সলাত

৭৪
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবুল হয় না।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৫৭
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭৫
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : পবিত্রতা (উযূ) হলো সলাতের চাবি।
হাসান সহীহ : তিরমিযী হা/৩, শায়খ আলবানী বলেন : হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭৬
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি এভাবে (উত্তমরূপে) উযূ করে, তার পূর্বেকার সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হয়। ফলে তার সলাত ও মাসজিদে যাওয়া অতিরিক্ত ‘আমল বলে গণ্য হয়।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৬৬
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭৭
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি : ক্বিয়ামাতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহবান করা হবে যে, পূর্ণাঙ্গরূপে উযূ করার কারণে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। কাজেই তোমরা যারা সক্ষম তারা অধিক উজ্জ্বলতাসহ উঠতে চেষ্টা করো।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/১৩৩
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭৮
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : আমার উম্মাত (ক্বিয়ামাতের দিন) আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর আমি লোকদেরকে তা (হাওয) থেকে এমনভাবে বিতাড়িত করবো, যেভাবে কোন ব্যক্তি তার উটের পাল থেকে অন্যের উটকে বিতাড়িত করে থাকে। লোকেরা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাদেরকে চিনতে পারবেন? জবাবে তিনি (সাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তোমাদের এক নিদর্শন হবে যা অন্য কারো হবে না। উযুর প্রভাবে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত-পায়ের উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়বে। উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত অবস্থায় তোমরা আমার নিকট উপস্থিত হবে। আর তোমাদের একদল লোককে জোড় করে আমার থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। ফলে তারা আমার কাছে পৌঁছতে পারবে না। তখন আমি বলবো, হে আমার রব! এরা তো আমার লোক। জবাবে ফিরিশতারা আমাকে বলবে, আপনি জানেন না আপনার অবর্তমানে তারা কি কি নতুন কাজ (বিদ’আত) করেছে।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৬০৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
উযূর পানির সাথে গুনাহ্সমূহ ঝরে যায়
৭৯
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : কোন মুসলিম বান্দা উযূর সময় যখন মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায়। যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন তার দুই হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায়। অতঃপর যখন সে তার পা দু’খানা ধৌত করে তখন তার দুই পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়, এভাবে সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যায়।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৬০০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮০
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : উযূ করার সময় কেউ যদি উত্তমরূপে উযূ করে তাহলে তার শরীরের সমস্ত গুনাহ ঝরে যায়। এমনকি তার নখের নীচের গুনাহও বের হয়ে যায়।৪৮

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৬০১
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮১
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজের কথা জানাবো না, যা করলে আল্লাহ্ (বান্দার) গুনাহ্ ক্ষমা করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। লোকেরা বললো, হে আল্লাহর রাসূল আপনি বলুন। তিনি (সাঃ) বললেন : কষ্টকর অবস্থায় থেকেও পূর্ণাঙ্গরূপে উযূ করা, সলাতের জন্য বারবার মাসজিদে যাওয়া এবং এক সলাতের পর আরেক সলাতের জন্য অপেক্ষায় থাকা। আর এ কাজগুলোই হলো প্রস্তুতি (রিবাত)।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৬১০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
উযূ করে সলাত আদায়ের ফাযীলাত
৮২
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন একদা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) পূর্ণাঙ্গরূপে উযূ করার পর বললেন। যে ব্যক্তি আমার ও উযূর ন্যায় উযূ করার পর একাগ্রচিত্তে দু’ রাক’আত সলাত আদায় করবে এবং এ সময় অন্য কোন ধারণা তার অন্তরে উদয় হবে না। তাহলে তার পূর্বেকার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/১৫৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮৩
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি : কোন মুসলিম উত্তমরূপে উযূ করে সলাত আদায় করলে পরবর্তী ওয়াক্তের সলাত পর্যন্ত তার সমস্ত গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হয়। [৫১]

[৫১] হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৬২ শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮৪
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যখন কোন মুসলিমের ফরয সলাতের সময় উপস্থিত হয়, তখন যদি কোন মুসলিম উত্তমরূপে উযূ করে এবং একান্ত বিনীতভাবে সলাতের রুকূ’ সাজদাহ্ ইত্যাদি আদায় করে তাহলে সে পুনরায় কবীরা গুনাহে লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তার পূর্বেকার সমস্ত গুনাহ্-ক্ষমা হয়ে যায়। আর এরূপ সারা বছরই হতে থাকে।

৫২ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৬৫, হাদীসের শব্দাবলী তার।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮৫
‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : মহান আল্লাহ্ যেভাবে আদেশ করেছেন যদি কোন ব্যক্তি সেইভাবে উযূ করে এবং ফরয সলাতসমূহ আদায় করে তাহলে তার ফরয সলাতসমূহের মধ্যবর্তী সকল গুনাহ্ ক্ষমা হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৬৯- হাদীসের শব্দাবলী তার, আহমাদ হা/৪০৬- শু’আইব আরনাউত্ব বলেন : এর সানাদ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮৬
‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি উযূ করে সলাতের জন্য মাসজিদের দিকে যায় এবং তার মাসজিদে যাওয়া যদি সলাত ছাড়া অন্য কোন কারণে না হয় তবে তার অতীত জীবনের সব গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হবে।

৫৪ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৭০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮৭
‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : কোন মুসলিম যখন উত্তমরূপে উযূ করে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দিকে রুজু হয়ে দাঁড়িয়ে দুই রাক’আত সলাত আদায় করে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।

৫৫ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৭৬
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
উযূর শেষে যে দু’আ পড়া ফাযীলাতপূর্ণ
৮৮
‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : তোমাদের মধ্যকার কেউ যদি উত্তমরূপে উযূ করার পর বলে : “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল।” তাহলে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হয় সে ইচ্ছে করলে এর যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।৫৬

৫৬ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৫৭৬
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
উযূ করে মাসজিদে যাওয়ার ফাযীলাত
৮৯
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : “যে ব্যক্তি উযূ করার পর বলবে : “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহামাদিক আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক্”- তার জন্য এটি একটি সাদা পাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। অতঃপর তা সীল করে দেয়া হয় যা কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত নষ্ট করা হয় না।”

ত্বাবারানী আওসাত ২/১২৩, নাসায়ীর সুনানুল কুবরা ৬/২৫, হাকিম, সহীহ আত্-তারগীব হা/১৪৭। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ লিগাইরিহি বলেছেন
হাদিসের মানঃ সহিহ লিগাইরিহি

৯০
সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক আনসারী সাহাবীর মৃত্যু আসন্ন হলে তিনি বলেন, আমি তোমাদের নিকট কেবল সাওয়াব লাভের আশায় একটি হাদীস বর্ণনা করবো। আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি। তোমাদের কেউ যখন উত্তমরূপে উযূ করে সলাতের উদ্দেশ্যে বের হয়, তখন সে তার ডান পা উঠাতেই মহান আল্লাহ্ তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেন। এরপর বাম পা ফেলার সাথে সাথেই মহা সম্মানিত আল্লাহ্ তার একটি গুনাহ ক্ষমা করে দেন। এখন তোমাদের ইচ্ছা হলে মাসজিদের নিকটে থাকবে অথবা দূরে।
অতঃফর সে যখন মাসজিদে গিয়ে জামা’আতে সলাত আদায় করে তখন তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। যদি জামা’আত শুরু হয়ে যাওয়ার পর মাসজিদে উপস্থিত হয় এবং অবশিষ্ট সলাতে শামিল হয়ে সলাতের ছুটে যাওয়া অংশ পূর্ণ করে, তাহলেও তাকে অনুরূপ (জামা’আতে পূর্ণ সলাত আদায়কারীর সমান সাওয়াব) দেয়া হয়। আর যদি সে (মাসজিদে এসে) জামা’আত সমাপ্ত দেখে একাকী সলাত আদায় করে নেয়, তবুও তাকে ঐরূপ (ক্ষমা করে) দেয়া হয়।

হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫৬৩- তাহক্বীক্ব আলবানী : হাদীস সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯১
আবূ সুমামাহ্ আল-হান্নাত থেকে বর্ণিতঃ
একদা মাসজিদে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে কা’ব ইবনু ‘উজরাহর (রাঃ) সাথে তার সাক্ষাত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে আমার দু’ হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের মধ্যে ঢুকিয়ে মটকাতে দেখতে পেয়ে আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন। তিনি আরো বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : তোমাদের কেউ উত্তমরূপে উযূ করে মাসজিদের উদ্দেশ্যে বের হলে সে যেন তার দু’ হাতের আঙ্গুল না মটকায়। কেননা সে তখন সলাতের মধ্যেই থাকে (অর্থাৎ উযূ করা অবস্থায় তাকে সলাত আদায়কারী হিসেবেই গণ্য করা হয়)।৫৮

৫৮ হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫৬২- হাদীসের শব্দাবলী তার, তিরমিযী হা/৩৮৬- তাহক্বীক্ব আলবানী : হাদীস সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
উযূসহ রাতে ঘুমানোর ফাযীলাত
৯২
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন : কেউ উযূ করে রাত্রি যাপন করলে তার কাছাকাছি একজন ফিরিশতা রাত্রি যাপন করেন। সে জাগ্রত হওয়ার আগ পর্যন্ত (বা জাগ্রত হলে) ঐ ফিরিশতা তার জন্য এই বলে দু’আ করেন : হে আল্লাহ! আপনার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দিন, কেননা সে পবিত্রতা অর্জন করে রাত্রি যাপন করেছে।৫৯

৫৯ হাসান সহীহ : ইবনু হিব্বান হা/১০৫৭- শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ

৯৩
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : কোন মুসলিম যদি পবিত্র অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, অতঃপর রাতে উঠে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করে, তবে আল্লাহ্ তাই দান করেন।৬০

৬০ হাসীদ সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫০৪২- আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯৪
বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেন : যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন সলাতের উযূর মতো উযূ করে নেবে। তারপর ডান পাশে শুয়ে বলবে : “হে আল্লাহ্! আমার জীবন আপনার কাছে সমর্পণ করলাম। আমার সকল কাজ আপনার কাছে সমর্পণ করলাম এবং আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করলাম আপনার প্রতি আগ্রহ ও ভয় নিয়ে। আপনি ছাড়া প্রকৃত কোন আশ্রয়স্থান ও পরিত্রাণের স্থান নেই। হে আল্লাহ্! আমি ঈমান আনলাম আপনার অবতীর্ণ কিতাবের উপর এবং আপনার প্রেরিত নাবীর উপর।”-অতঃপর যদি সেই রাতেই তোমার মৃত্যু হয় তবে ইসলামের উপর মৃত্যু হবে। কাজেই এ কথাগুলো তোমার সর্বশেষ পরিণত করো।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/২৩৯
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মিশওয়াক করার ফাযীলাত
৯৫
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেন : মিসওয়াক হচ্ছে মুখের পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম এবং প্রতিপালকের সন্তুষ্টি লাভের উপায়।৬২
হাদীস সহীহ : আহমাদ হা/২৪২০৩, ইমাম ইবনু হিব্বান, শু’আইব আরনাউত্ব ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯৬
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মিসওয়াক করার আদেশ দিয়ে বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেন : বান্দা যখন মিসওয়াক করে, অতঃপর দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করে, তখন তার পিছনে একজন ফিরিশতা দাঁড়ায় এবং মনোযোগ দিয়ে তার ক্বিরাআত শুনে। অতঃপর ফিরিশতা তার অতি নিকটবর্তী হয় এমনকি ফিরিশতার নিজের মুখ তার মুখের উপর রাখেন। তখন তার মুখ থেকে কুরআনের যা কিছুই তিলাওয়াত বের হয় তা ফিরিশতার উদরে প্রবেশ করে। কাজেই তোমরা তোমাদের মুখকে পবিত্র রাখো কুরআনের জন্য।৬৩

৬৩ হাদীস সহীহ : বাযযার হা/৬০৩- শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯৭
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : “আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবার সম্ভাবনা না থাকলে আমি প্রত্যেক সলাতের জন্য মিসওয়াক করার আদেশ দিতাম।”

৬৪ হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/৮৩৮
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
ফাযায়িলে আযান - আযান ও ইক্বামাতের ফাযীলাত
৯৮
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি : শয়তান সলাতের আযানের শব্দ শুনে পলায়ন করতে করতে রাওহা পর্যন্ত ভেগে যায়। আ’মাশ বলেন, আমি আবূ সুফিয়ানকে রাওহা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এ স্থানটি মাদীনাহ্ হতে ছত্রিশ মাইল দূরে অবস্থিত।

৬৫ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৮৭৮
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯৯
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি : শয়তান সলাতের আযানের শব্দ শুনে পলায়ন করতে করতে রাওহা পর্যন্ত ভেগে যায়। আ’মাশ বলেন, আমি আবূ সুফিয়ানকে রাওহা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এ স্থানটি মাদীনাহ্ হতে ছত্রিশ মাইল দূরে অবস্থিত।৬৬

৬৬ হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৮৮০শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০০
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি : যেকোন মানুষ, জ্বিন অথবা যে কোন বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়ায শুনবে, সে ক্বিয়ামাতের দিন তার জন্য সাক্ষ্য দিবে।৬৭

৬৭ হাদীস সহীহ ; সহীহুল বুখারী হা/৩০৫৩
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০১
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যখন সলাতের আযান দেয়া হল, তখন শয়তান পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে বাতকর্ম করতে করতে (দ্রুত) পলায়ন করে, যেন সে আযানের শব্দ শুনতে না পায়। আযান শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে। আবার যখন ইক্বামাত দেয়া হয় তখন সে পলায়ন করে। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে এবং মুসল্লীর মনে সংশয় সৃষ্টি করতে থাকে। সে তাকে বলে, এটা স্মরণ করো, ওটা স্মরণ করো। অথচ এ কথাগুলো সলাতের পূর্বে তার স্মরণও ছিলো না। শেষ পর্যন্ত মুসল্লী এমন এক বিভ্রাটে পড়ে যে, সে বলতেও পারে না, সে কত রাক’আত সলাত আদায় করেছে।৬৮

৬৮ হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/৫৭৩
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০২
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
“মুয়াজ্জিনের আযানের আওয়ায যেকোন জ্বিন, ইনসান, গাছ এমনকি পাথরও শুনবে সে ক্বিয়ামাতের দিন তার জন্য সাক্ষ্য দিবে।”

ইবনু মাজাহ্, সহীহ আত-তারগীব হা/২২৫। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি সহীহ
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৩
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি বার বছর আযান দেয় তার জন্য জান্নাতে নির্ধারিত হয়ে যায় এবং তার জন্য তার প্রত্যেক আযানের বিনিময়ে লিখা হয় ষাট নেকী এবং প্রত্যেক ইক্বামাতের বিনিময়ে লিখা হয় ত্রিশ নেকী।

হাদীস সহীহ : ইবনু মাজাহ্ হা/৭২৮- শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৪
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন ; মুয়াজ্জিনের কণ্ঠস্বর যতদূর পর্যন্ত যায় তাকে ততদূর ক্ষমা করে দেয়া হয় তাজা ও শুষ্ক প্রতিটি জিনিসই (ক্বিয়ামাতের দিন) তার জন্য সাক্ষী হয়ে যাবে। আর কেউ জামাআতে হাজির হলে তার জন্য পঁচিশ ওয়াক্ত সলাতের সাওয়াব লিখা হয় এবং এক সলাত থেকে আরেক সলাতের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হয়।

হাদীস সহীহ ; আবূ দাউদ হা/৫১৫, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৫
বারাআ ইবনু ‘আযিব্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : মুয়াজ্জিন ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ সাওয়াব পায় যে তার সাথে সলাত আদায় করে।

হাদীস সহীহ : নাসায়ী হা/৬৪৬, তাহক্বীক্ব আলবানী : সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৬
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : ইমাম হচ্ছে যিম্মাদার এবং মুয়াজ্জিন (ওয়াক্তের) আমানতদার। ‘হে আল্লাহ্! ইমামদের সঠিক পথ প্রদর্শন করুন এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করে দিন।

হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫১৭, তিরমিযী হা/২০৭, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৭
ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : “তাজা ও শুষ্ক প্রতিটি জিনিসই মুয়াজ্জিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।” (আহমাদ হা/৬২০২, ইবনু মাজাহ্ হা/৭২৪, সহীহ আত-তারগীব হা/২৩৪। তাহক্বীক্ব আলবানী : হাসান সহীহ

হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ

পরিচ্ছেদঃ
মুয়াজ্জিনের আযানের জবাবে যা বলা ফাযীলাতপূর্ণ
১০৮
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাঃ)- কে বলতে শুনেছেন। তোমরা আযান শুনতে পেলে মুয়াজ্জিন যেরূপ বলে তোমরাও তদ্রুপ বলবে। তারপর আমার উপর দরূদ পাঠ করবে। কেননা কেউ আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করলে আল্লাহ্ তার প্রতি দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর তোমরা আল্লাহর নিকট আমার জন্য ওয়াসিলাহ প্রার্থনা করবে। ওয়াসিলাহ্ হচ্ছে জান্নাতের একটি বিশেস মর্যাদার আসন, যার অধিকারী হবেন আল্লাহর একজন বিশিষ্ট বান্দা। আমি আশা করছি, আমিই হবো সেই বান্দা। কেউ আল্লাহর নিকট আমার জন্য ওয়াসিলাহ্ প্রার্থনা করলে সে আমার শাফা’আত পাবে।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৮৭৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০৯
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি আযান শুনে দু’আ করে : (অর্থ) : “ হে আল্লাহ্ যে পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সলাতের রব! মুহাম্মাদ (সাঃ)- কে ওয়াসিলাহ্ ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সেই মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিন যার অঙ্গীকার আপনি করেছেন”- ক্বিয়ামাতের দিন সে আমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/৫৭৯
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১০
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহ্ রাসূল! মুয়াজ্জিনরা তো আমাদের উপর মর্যাদার অধিকারী হয়ে যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন : মুয়াজ্জিনরা যেরূপ বলে থাকে তোমরাও সেরূপ বলবে। অতঃপর আযান শেষ হলে (আল্লাহর নিকট) দু’আ করবে। তখন তোমাকে তাই দেয়া হবে (তোমার দু’আ ক্বুবুল হবে)।

হাসান সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫২৪- হাদীসের শব্দাবলী তার- তাহক্বীক্ব আলবানী : হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১১
সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি আযান শুনে বলে : “এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ্ নেই। তাঁর কোন শরীক নেই, মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল, আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, মুহাম্মাদ (সাঃ)- কে রাসূল হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট”- তার গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৮৭৭- শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১২
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যদি মুয়াজ্জিনের আল্লাহ্ আকবার আল্লাহু আকবার-এর জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে এবং আশহাদু আল্-লা ইলাহা- ইল্লাল্লাহ-এর জওওয়াবে আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলে এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্ এর জওয়াবে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্ বলে, অতঃপর হাইয়্যা ‘আলাস্-সলাহ্ এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্ বলেত, তারপর হাইয়্যা ‘আলাল-ফালাহ্-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্ বলে, তাপর যদি আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এর জওয়াতে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/৮৭৬
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে দু’আর ফাযীলাত
১১৩
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ কখনো প্রত্যাখ্যাত হয় না।৭৮

৭৮ হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৫২১- হাদীসের শব্দাবলী তার, আহমাদ হা/১২২০০, তিরমিযী হা/২১২, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১৪
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্যবর্ণায় রয়েছে: “যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলবে সে জান্নাতের প্রবেশ করবে।”
নাসায়ী, ইবনু হিব্বান, হাকিম। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি হাসান। তা’লীক্বাতুল হাস্সান ‘আলা সহীহ ইবনে হিব্বান হা/১৬৬৫।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৫
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যখন সলাতের ইক্বামাত দেয়া হয় তখন আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং দু’আ কবুল করা হয়।

হাদীস হাসান : আহমাদ হা/১৪৬৮৯- হাদীসের শব্দাবলী তার, সহীহ আত-তারগীব হা/২৬০, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ লিগাইরিহি বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস

১১৬
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : “আযান ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ের দু’আ কবুল হয় । সুতরাং তোমরা দু’আ করো।” -(ইবনু খুযাইমাহ হা/৪২৫, তা’লীক্বাতুল হাস্সান ‘আলা ইবনে হিব্বান হা/১৬৯৪, তাহক্বীক্ব আলবানী : সহীহ)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১৭
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
“দুই সময়ে দু’আকারী দু’আ করলে তা প্রত্যাখ্যাত হয় না। যখন সলাতের ইক্বামাত দেয়া হয় এবং আল্লাহর পথে (জিহাদের) কাতারে।” (ইবনু হিব্বান, হাকিম। ইমাম হাকিম ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। সহী আত-তারগীব হা/২৫৪, ২৬০। মালিক হাদীসটি মাওকুফভাবে বর্ণনা করেছেন)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
ফাযায়িলে মাসাজিদ - মাসজিদ নির্মাণের ফাযীলাত
১১৮
‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)- কে শুনেছি : যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য একটি মাসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/১২১৭শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১৯
‘আয়িশাহ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যক্তি মাসজিদ নির্মাণ করলো এবং মাসজিদ নির্মাণে তার লোক দেখানো বা সুনাম অর্জনের কোন ইচ্ছা না থাকলে আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন। [১]
“আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর নির্মাণ করেন।” (সহীহুল বুখারী সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য)
“আল্লাহ্ জান্নাতে তার জন্য ঐ মাসজিদ ঘরের চাইতেও অধিক প্রশন্ত ঘর নির্মাণ করেন।” (আহমাদ হা/২৭৬১২, সহীহ আত-তারগীব হা/২৬৮। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন : শু’আইব আরনাউত্ব বলেন : সহীহ লিগাইরিহি)
“আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে এর চাইতে অতি উত্তম ঘর তৈরি করেন।” (আহমাদ হা/১৬০০৫, ত্বাবারানী, সহীহ আত-তারগীব হা/২৬৯। শু’আইব আরনাউত্ব বলেন : সানাদে দুর্বলতা আছে তবে হাদীস সহীহ। শায়খ আলবানী একে হাসান বলেছেন)

[১] হাসান লিগাইরিহি : ত্বাবারানী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ হা/১৯৪২, সহীহ আত-তারগীব হা/২৭৪। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি হাসান লিগাইরিহি।
হাদিসের মানঃ হাসান লিগাইরিহি

পরিচ্ছেদঃ
সকাল সন্ধ্যায় মাসজিদে যাওয়ার ফাযীলাত
১২০
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি সকালে এবং সন্ধ্যায় সালাত আদায় করতে মাসজিদে যায় এবং যতবার যায় আল্লাহ্ তা’আলা ততবারই তার জন্য জান্নাতের মধ্যে মেহমানদারীর উপকরণ প্রস্তুত করেন।

হাদীস সহীহ ; সহীহুল বুখারী হা/৬২২
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদে লেগে থাকার ফাযীলাত
১২১
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : আল্লাহ্ সাত শ্রেণীর লোককে ক্বিয়ামাতের দিন তাঁর ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। যে দিন তাঁর ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না। (১) ন্যায়পরায়ণ শাসক, (২) যে যুবক আল্লাহর ‘ইবাদাতে রত থাকে, (৩) যার অন্তর মাসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে, (৪) এমন দু’ব্যক্তি যারা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পরস্পরকে ভালবাসে এবং আল্লাহর জন্য কেবল পরস্পরে ভালবাসায় মিলিত অথবা পৃথক হয়, (৫) ঐ ব্যক্তি, যাকে কোন সুন্দরী উচ্চ বংশীয় ভদ্র মহিলা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য নিজের দিকে আকৃষ্ট করে আর সে বলে, আমি আল্লাহর ‘আযাবকে ভয় করি, (৬) যে ব্যক্তি গোপনে সদাক্বাহ করে। এমন কি তার বাম হাত জানে না ডান হাত কি খরচ করছে, (৭) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহর স্মরণকালে তার দু'চোখ অশ্রুসিক্ত হয়।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/৬২০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২২
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : যতক্ষণ কোন মুসলিম ব্যক্তি মাসজিদে সলাত ও যিকিরে মশগুল থাকে,আল্লাহ্ তার প্রতি এরূপ সন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন, যেরূপ প্রবাসী তার প্রবাস থেকে ফিরে এলে তার ঘরের লোকেরা তাকে পেয়ে খুশি হয়ে থাকে।৮৪

৮৪ হাদীস সহীহ : ইবনু মাজাহ হা/৮০০- শায়খ আলবানী বলেন হাদীসটি সহীহ এবং তা বুখারী ও মুসলিমের শর্তে, যেমনটি হাকিম বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদ ঝাড়– দেয়ার ফযীলাত
১২৩
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন কালো বর্ণের পুরুষ অথবা কালো বর্ণের মহিলা মাসজিদ ঝাড়ু দিতো। অতঃপর সে মারা গেলো। কিন্তু নবী (সাঃ) তা জানতেন না। একদা নাবী (সাঃ) তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বললেন, তার খবর কি? সাহাবীগণ বলেন, সে মারা গেছে, হে আল্লাহর রাসূল! নবী (সাঃ) বললেন : তোমরা আমাকে খবর দিলে না কেন? তারা লোকটির কাহিনী বলে বললো, সে তো এরূপ এরূপ ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, তারা তাকে যেন খাটো করলো। আমাকে তার কবরটা দেখিয়ে দাও। অতঃপর তিনি (সাঃ) তার কবরের নিকট গেলেন এবং তার জানাযার সলাত আদায় করলেন।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/১২৫১- হাদীসের শব্দাবলী তার, ইবনু মাজাহ হা/১৫৩০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২৪

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আদেশ করেছেন মহল্লায় মাসজিদ নির্মাণ ও মাসজিদকে পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় করে রাখতে।

হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৪৫৫, তিরমিযী হা/৫৯৪- হাদীসের শব্দাবলী উভয়ের, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদে বসে থাকার ফযীলাত
১২৫
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত সলাত আদায়রত ব্যক্তি হিসেবেই গণ্য হবে, যতক্ষণ সালাত (অর্থাৎ সলাতের অপেক্ষা) তাকে আটকে রাখবে। তাকে তো তার পরিবার পরিজনদের নিকট ফিরে যেতে কেবল সালাতই বারণ করছে।

হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/৬১৯, সহীহ মুসলিম হা/১৫৪২- হাদীসের শব্দাবলী উভয়ের, আবূ দাউদ হা/৪৭০, আহমাদ হা/৮২৪৬, ১০৩০৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২৬
আবূ হুরাইরাহ্ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : কোন বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত সালাত আদায়ের স্থানে (জায়নামাযে) সলাতের অপেক্ষায় থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুরো সময় সে সলাতেই থাকে। তার প্রত্যাবর্তন না করা অথবা উযূ টুটে না যাওয়া পর্যন্ত মালায়িকাহ্ (ফিরিশতারা) তার জন্য এই বলে দু’আ করতে থাকে : হে আল্লাহ্! তাকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ্! তার প্রতি রহম করুন।’ আমি বললাম, উযূ টুটে যাওয়ার অর্থ কী? তিনি বললেন। (পায়খানার রাস্তা দিয়ে) নিঃশব্দে অথবা সশব্দে বায়ু নির্গত হওয়া।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/১৫৪১
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২৭
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) বলেন : “ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাদেরকে আদেশ করেছেন মহল্লায় মাসজিদ নির্মাণ করতে এবং আমাদেরকে আদেশ করেছেন মাসজিদ পরিচ্ছন্ন রাখতে।” (আহমাদ ও তিরমিযী। ইমাম তিরমিযী বলেন : হাদীসটি সহীহ। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২৮
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : কেউ কোন উদ্দেশ্যে মাসজিদে এলে, সে ঐ উদ্দেশ্য অনুপাতেই (প্রতিদান) পাবে।

হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/৪৭২, হাদীসের শব্দাবলী তার, বায়হাক্বী। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
সলাত আদায়ের জন্য পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাওয়ার ফাযীলাত
১২৯
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : মাসজিদ থেকে যার (বাসস্থান) যত বেশী দূরে, সে তত বেশি সাওয়াবের অধিকারী।

হাদীস সহীহ : ইবনু মাজাহ্ হা/৭৮২, অনুরূপ ইমাম যাহাবী এবং শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩০
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “যার হাটার পথ মাসজিদ থেকে বেশি দূরে সে সলাতের অধিক সাওয়াব লাভের হকদার।” (সহীহ মুসলিম)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩১
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার জানা মতে মাদীনাহর সালাত আদায়কারীদের মধ্যে এক ব্যক্তির বাসস্থান মাসজিদ থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে অবস্থিত ছিল। এ সত্ত্বেও তিনি সর্বদা পায়ে হেঁটে জামা’আতে উপস্থিত হতেন। আমি তাকে বললাম, আপনি একটি গাধা খরিদ করে নিলে গরম ও অন্ধকারে তাতে সাওয়ার হয়ে আসতে পারতেন। তিনি বললেন, আমার ঘর মাসজিদের নিকটবর্তী হোক, তা আমি অপছন্দ করি। একথা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছলে তিনি তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি মাসজিদে আসা ও মাসজিদ থেকে ঘরে ফেরার বিনিময়ে সাওয়াব লাভের প্রত্যাশা করি (তাই এরূপ বলেছি)। তিনি (সা:) বললেন : তুমি যা পাওয়ার আশা করেছ, আল্লাহ্ তোমাকে তাই দিয়েছেন : তুমি যা সাওয়াবের প্রত্যাশা করেছ আল্লাহ তা পূর্ণরূপেই তোমার জন্য মঞ্জুর করেছেন।

হাদীস সহীহ : আবূ দাউদ হা/৫৫৭- হাদীসের শব্দাবলী তার, সহীহ মুসলিম হা/১৫৪৬, ইবনু মাজাহ্ হা/৭৮৩, দারিমা। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩২
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের বাড়ি মাসজিদ থেকে দূরে অবস্থিত ছিল। আমরা মাসজিদের আশেপাশে বাড়ি নির্মাণের জন্য ঐ বাড়ি-ঘর বিক্রি করার মনস্থ করলে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তা করতে নিষেধ করলেন। তিনি (আমাদেরকে) বললেন : (সলাতের উদ্দেশ্যে মাসজিদে আসার) প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে মর্যাদা ও সাওয়াব বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/১৫৫০শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৩
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা বনু সালিম গোত্রের লোকেরা মাসজিদের সামনে বসতি স্থাপন করতে মনস্থ করলে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাদেরকে বললেন : হে বনু সালিম গোত্রের লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঐ বাড়িতেই থাকো। কারণ তোমাদের সালাতের জন্য মাসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিবদ্ধ করা হয়। (অন্য বর্ণনায় রয়েছে) এ কথা শুনে তারা বললো : আমরা এতে এতো খুশি হলাম যে, আমাদের বাড়ি-ঘর স্থানান্তরিত করে মাসজিদের কাছে আসলে এতোটা খুশি হতাম না।
উল্লেখ্য, যে যতদূর থেকে মাসজিদে সলাতের জন্য আসবে তার সাওয়াব ততো বেশি হবে- এ মর্মে বহু সহীহ হাদীসাবলী বর্ণিত আছে সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/১৫৫১, ১৫৫২শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৪
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি বাড়ি থেকে পাক পবিত্র হয় (উযূ করে) তারপর কোন ফরয সলাত আদায়ের জন্য আল্লাহর কোন ঘরে (মাসজিদে) যায় তার প্রতিটি পদক্ষেপের একটিতে গুনাহ্ ঝরে পড়ে এবং অপরটিতে মর্যাদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।

হাদীস সহীহ : সহীহ মুসলিম হা/১৫৫৩শির্‌ক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৫
‘উক্ববাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন: যখন কোন ব্যক্তি পবিত্রতা হাসিল করে সালাতের জন্য মাসজিদে আসে, তখন তার জন্য দু’জন কিংবা একজন লিখক (ফিরিশতা) মাসজিদের উদ্দেশ্যে প্রতিটি কদমের বিনিময়ে দশটি করে নেকী লিপিবদ্ধ করেন।

হাদীস সহীহ : আহমাদ হা/১৭৪৪০- শায়খ আলবানী ও শু’আইব আরনাউত্ব হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৬
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “তার প্রতি কদমের একটিতে নেকী লিখা হয় এবং অপরটিতে গুনাহ মুছে ফেলা হয়।” (নাসায়ী হাকিম, ইবনু হিব্বান, মালিক, সহীহ আত-তারগীব হা/২৯৩। ইমাম হাকিম বলেন : মুসলিমের শর্তে সহীহ। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৭
আবূ উমামাহ্ আল-বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন : তিন প্রকার লোকের প্রত্যেকেই মহান আল্লাহর দায়িত্বে থাকে। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য বের হয়, তার মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহ্ তার দায়িত্বশীল। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন কিংবা তাকে নিরাপদে তার নেকী ও গনীমাতসহ তার বাড়িতে ফিরিয়ে আনবেন । দ্বিতীয়ত, যে ব্যক্তি আগ্রহ সহকারে মাসজিদে যায়, আল্লাহ্ তার দায়িত্বশীল। এমনকি তার মৃত্যুর পর আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন কিংবা তাকে নিরাপদে তার নেকী ও গনীমাতসহ তার বাড়িতে ফিরিয়ে আনবেন। তৃতীয়ত, যে ব্যক্তি নিজ পরিবার-পরিজনের সাথে মিলিত হয়ে সালাম বিনিময় করে, আল্লাহ্ তার জিম্মাদার।

হাদীস সহীহ : আবূ দাঊদ হা/২৪৯৪- হাদীসের শব্দাবলী তার, মিশকাত, হা/৭২৭। শায়খ আলাবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৮
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
“যে ব্যক্তি জামা’আতের সাথে ফরয সলাত আদায়ের জন্য সন্ধ্যা বেলায় পায়ে হেঁটে মাসজিদে যায় তার একটি পদক্ষেপে একটি গুনাহ্ মোচন হয় এবং আরেক পদক্ষেপে একটি নেকী লিপিবদ্ধ হয়, তার আসা ও যাওয়া উভয়টিতেই এরূপ হয়ে থাকে।” (আহমাদ- হাসান সানাদে এবং ত্বাবারানী ও ইবনু হিব্বান। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহ আত-তারগীব হা/২৯৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩৯
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
“যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযূ করে কোন ফরয সলাত আদায়ের জন্য মাসজিদে যায়, অতঃপর ইমামের সাথে সালাত আদায় করে, তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হয়।” (ইবনু খুযাইমাহ। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন সহীহ আত-তারগীব হা/২৯৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪০
সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি বাড়ি থেকে সুন্দরভাবে উযূ করে মাসজিদে আসে সে আল্লাহর যিয়ারাতকারী। আর যাকে যিয়ারাত করা হয় তার উপর হক যে, তিনি যিয়ারাতকারীকে সম্মানিত করবেন।

হাদীস সহীহ : ত্বাবারানী কাবীর হা/৬১৩৯- হাদীসের শব্দাবলী তার, সহীহ আত-তারগীব হা/৩১৭। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪১
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “তিন ব্যক্তির প্রত্যেকেরই জিম্মাদারী আল্লাহর উপর। তারা বেঁচে থাকা অবস্থায় আল্লাহ্ তাদের রিযিকের ব্যবস্থা করবেন এবং তাদের জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। আর যদি তারা মারা যায় তাহলে আল্লাহ্ তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তারা হলোঃ যে ব্যক্তি নিজ বাড়িতে সালাম দিয়ে প্রবেশ করে সে আল্লাহর জিম্মায়, যে ব্যক্তি মাসজিদের উদ্দেশ্যে বের হয় সে আল্লাহর জিম্মায় এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হয় সে আল্লাহর জিম্মায়।”

ইবনু হিব্বান হা/৪৯৯-তাহক্বীক্ব আলবানী, সহীহ আত-তারগীব হা/৩১৬। শু’আইব আরনাউত্ব ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মহিলাদের বাড়িতে সলাত আদায়ের ফাযীলাত
১৪২
উম্মু হুমাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সাথে সালাত আদায় করতে ভালবাসি। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : আমি জানি যে, তুমি আমার সাথে সালাত আদায় করতে ভালোবাসো। কিন্তু (জেনে রেখো), তোমার ঘরে সালাত আদায় তোমার কক্ষে সালাত আদায়ের চাইতে উত্তম, তোমার কক্ষে সলাত আদায় তোমার বাড়িতে সলাত আদায় হতে উত্তম এবং তোমার বাড়িতে সালাত আদায় আমার এ মাসজিদে সালাত আদায় হতে উত্তম। অতঃপর ঐ মহিলার নির্দেশে তার বাড়ি থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাতে একটি মাসজিদ নির্মাণ করা হলো। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ঐ মাসজিদে সালাত আদায় করতেন।

হাদীস সহীহ : আহমাদ হা/২৭০৯০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৩
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাঃ) বলেছেন: কোন নারী তার বাড়ির সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে বসে যে সালাত আদায় করে, সেই সালাত আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।
হাসান লিগাইরিহি : ইবনু খুযাইমাহ হা/১৬৯১, ১৬৯২- হাদীসের শব্দাবলী তার, ত্বাবারানী, সহীহ আত-তারগীব হা/৩৪৩। তাহক্বীক্ব আলবানী : হাসান লিগাইরিহি।
হাদিসের মানঃ হাসান লিগাইরিহি

১৪৪
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : তোমরা তোমাদের নারীদেরকে মাসজিদে যেতে নিষেধ করবে না। অবশ্য তাদের ঘর তাদের জন্য উত্তম।

হাদীস সহীহ : আবূ দাউদ হা/৫৬৭- হাদীসের শব্দাবলী তার, সহীহ আত-তারগীব হা/৩৩৮। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীস সহীহ। উল্লেখ্য, মহিলারা মাসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করতে পারবে। যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। নাবী (সাঃ)-এর যুগে মহিলা সাহাবীরা মাসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করতেন এমনকি অন্ধকার রাতে ফজরের সলাতও তারা মাসজিদে গিয়ে আদায় করেছেন। তবে মহিলাদের জন্য সলাত আদায়ে মাসজিদে যাওয়া আবশ্যক করা হয়নি। আবশ্যক করলে হয়তো তা পালন করা তাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যেতো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৫
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “মহিলারা পর্দার আড়ালে থাকার যোগ্য। সে যখন বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তার উপর প্রবল হয়ে যায়।” (ত্বাবারানী আওসাত। এর রিজাল সহীহ রিজাল। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীসটি সহীহ। সহীহ আত-তারগীব হা/৩৩৯, ৩৪১। হাদীসটি প্রমাণ করে, মহিলাদের বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়া অপছন্দনীয়। তাদের জন্য বাড়িতে বসেই অনেক ‘ইবাদাত বন্দেগী করার সুযোগ রয়েছে)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদুল হারামে সলাত আদায়ের ফাযীলাত
১৪৬
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : মাসজিদুল হারামে সালাত আদায়ে অন্য যে কোন মাসজিদে সালাতের চেয়ে একলক্ষ গুণ বেশি ফাযীলাত রয়েছে।

হাদীস সহীহ : আহমাদ হা/১৫২৭১, ইবনু মাজাহ্ হা/১৪০৬- শব্দাবলী উভয়ের, ইরওয়াউল গালীল হা/১১২৯। আল্লামা মুনযিরী, আল্লামা বুসয়রী , ইবনু ‘আবদুল হাদী, শু’আইব আরনাউত্ব, শায়খ আলবানী এবং একদল মুহাদ্দিস হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদে নাববীতে সলাত আদায়ের ফাযীলাত
১৪৭
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : আমার এই মাসজিদ (মাসজিদে নাববীতে) এক রাক’আত সালাত আদায় অন্য মাসজিদে এক হাজার রাক’আত সালাত আদায়ের চাইতেও উত্তম। কিন্তু মাসজিদুল হারাম ব্যতীত।

১০২ হাদীস সহীহ : সহীহুল বুখারী হা/১১১৬- শু’আইব আরনাউত্ব, শায়খ আলবানী ও একদল মুহাদ্দিস হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
বাইতুল মুকাদ্দাসে সলাত আদায়ের ফাযীলাত
১৪৮
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাঃ) বলেছেন: সুলাইমান ইবনু দাঊদ বাইতুল মাকদিস মাসজিদের কাজ সম্পন্ন করে আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেন: আল্লাহর বিধানের অনুরূপ সুবিচার, এমন রাজত্ব যা তার পরে আর কাউকে দেয়া হবে না, এবং যে ব্যক্তি বাইতুল মুকাদ্দাসে শুধুমাত্র সলাত আদায়ের জন্য আসবে, সে তার গুনাহ্ হতে সদ্য প্রসূত সন্তানের মত নিস্পাপ অবস্থায় বের হবে। অতঃপর নাবী (সাঃ) বলেন: প্রথম দু’টি তাঁকে দেয়া হয়েছে। আর আমি আশা করি তৃতীয়টি আমাকে দান করা হবে।

হাদীস সহীহ : ইবনু মাজাহ্ হা/১৪০৮- হাদীসের শব্দাবলী তার, নাসায়ী, আহমাদ হা/৬৬৪৪, ইবনু খুযাইমাহ হা/১৩৩৪, ইবনু হিব্বান হা/৪৪২০, মুস্তাদরাক হাকিম হা/৩৬২৪, তা’লীকুম রাগীব ২/১৩। আল্লামা বুসয়রী ‘মিসবাহুয যুজাজাহ’ গ্রন্থে হা/৫০২, এবং ডক্টর মুস্তফা আ’যমী ইবনু খুযাইমাহর তাহক্বীক্বে বলেন : সানাদ যঈফ।
শায়খ আলবানী বলেন : মুসনাদ আহমাদ ও অন্যত্র এর ভিন্ন একটি সহীহ সানাদ রয়েছে। ইমাম হাকিম বলেন : বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ, এর কোন ক্রটি আছে বলে জানা নেই। ইমাম যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। শু’আইব আরনাউত্ব ইবনু হিব্বান ও আহমাদের তাহক্বীক্ব গ্রন্থে বলেন : সানাদ সহীহ। শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “বাইতুল মাকদিসে সলাত আদায়ের মর্যাদা মাসজিদে নাববীর সলাতের এক চতুর্থাংশ।” (বায়হাক্বী- সহীহ সানাদে। দেখুন, শায়খ আলবানী প্রণীত ‘তাহজীরুল সাজিদ’- হাদীসের শব্দ তার থেকে গৃহীত)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেন : তিনটি মাসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও (সাওয়াবের উদ্দেশে) সফর করা যাবে না। এ মাসজিদগুলো হলো : মাসজিদুল হারাম, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মাসজিদ এবং মাসজিদুল আকসা।

হাদীস সহীহ ; সহীহুল বুখারী হা/১১৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদঃ
মাসজিদে কুবায় সলাত আদায়ের ফাযীলাত
১৫০
সাহল ইবনু হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি নিজের ঘরে পবিত্রতা অর্জন করার পর মাসজিদে কুবায় এসে সলাত আদায় করে, তার জন্য একটি ‘উমরাহর সাওয়াব রয়েছে।

হাসীস সহীহ : ইবনু মাজাহ্ হা/১৪১২- হাদীসের শব্দাবলী তার, তা’লীকুর রাগীব। শায়খ আলবানী বলেন : হাদীস সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় রয়েছে : “কুবার মাসজিদে সলাত আদায় করা ‘উমরাহ্ করার সমতুল্য।” (ইবনু মাজাহ্ হা/১৪১১, আহমাদ হা/১৫৯৮১, ত্বাবারানী, হাকিম, তা’লীকুর রাগীব ২/১৩৮, ১৩৯। ইমাম হাকিম, ইমাম যাহাবী ও হাফিয ইরাক্বী বলেন। সানাদ সহীহ। শু’আইব আরনাউত্ব ও আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png