LIVE
Loading latest headlines...

শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

হুবাব ইবনুল মুনজির (রা)

শুক্রবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ 0
বার দেখা হয়েছে
হুবাব ইবনুল মুনজির (রা)


নাম হুবাব, ডাকনাম আবু ’উমার বা আবু ’আমর। পিতা মুনজির এবং মাতা শামূস বিনতু হাক্ক। মদীনার খাযরাজ গোত্রের সন্তান। আকাবার অন্যতম নাকীব এবং বিরে মা’উনার অনতম শহীদ আল-মুনজির ইবন ’আমর আস-সা’য়িদীর (রা) মামা। হানবীর মদীনায় হিজরাতের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেন।

রাসূলুল্লাহর (সা) সাথে বদর থেকে নিয়ে সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধে খাযরাজ গোত্রর ঝান্ডা তাঁরই হাতে ছিল। ইবন সা’দ বলেন: ‘তিনি যে বদর যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রায় ইজমা হয়ে গেছে। তবে মুহাম্মদ ইবন ইসহাক তাঁকে বদরীদর মধ্যে গণ্য করেননি। আমাদের মতে এটা তাঁর ভুল। কারণ, বদরে হুবারের কর্মকান্ড অতি প্রসিদ্ধ।’

বদরের কাছাকাছি পৌঁছে রাসূল (সা) শিবির স্থাপনের জন্য অবতরণ করলেন। হুবাব আরজ করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! এখানে শিবির স্থাপনের সিদ্ধান্ত কি আল্লাহর পক্ষ থেকে, না আপনার নিজের? রাসূল(সা) বললেন: আমার নিজের। হুবার বললেন: তাহলে এখানে নয়। আমাদেরকে শত্রুপক্ষের কাছাকাছি সর্বশেষ পানির কাছে নিয়ে চলুন। সেখানে আমরা একটি পানির হাউজ তৈরী করবো, পাত্র দিয়ে উঠিয়ে সেই পানি পান করবো, আর শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবো। এছাড়া অন্যসব কূপের পানি আমরা ঘোলা করে ফেলবো। অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, হুবাব বললেন: আমরা হচ্ছি যোদ্ধা সম্প্রদায়। আমার মত হচ্ছে, একটি মাত্র কূয়ো ছাড়া বাকি সবগুলি কূয়োর পানি ঘোলা করে ফেলা। যাতে কোন অবস্থানে আমাদের পানি কষ্ট না হয়। পক্ষান্তরে শত্রুরা পানির জন্য দিশেহারা হয়ে পড়ে।

হুবারের পরামর্শ দানের পর জিবরীল (আ) এসে রাসূলকে (সা) জানান যে, হুবারের মতটিই সঠিক। অত:পর রাসূল (সা) হুবাবকে ডেকে বলেন, তোমার মতটিই সঠিক। একথা বলে তিনি গোটা বাহিনী সরিয়ে নিয়ে বদরের কূয়োর ধারে অবতরণ করেন।

এই বদর যুদ্ধে রাসূল (সা) তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করেছিলেন, এ কারণে তিনি ‘জু’আর-রায়’ বা সিদ্ধান্ত দানকারী হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। ইমাম সা’য়ালাবী তাঁর সম্পর্কে বলেছেন: ‘বদরে তিনি ছিলেন পরার্মদাতা। রাসূল (সা) পরামর্শ গ্রহণ করেন। জিবরীল (আ) এসে বলেন: হুবাব যে মত পেশ করেছে তাই সঠিক। জাহিলী ’আমলেও তিনি অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত ও মতামত প্রদান করেছেন।’

মক্কায় যারা রাসূলুল্লাহকে (সা) সবচেয়ে বেশী উৎপীড়িত করেছিল নরাধম আবু কায়স ইবন আল-ফাকিহ তাদের অন্যতম। বদরে সে নিহত হয়। একটি বর্ণনা মতে হযরত হুবাবই তাকে হত্যা করেন। এ যুদ্ধে তিনি হযরত বিলালের (রা) উৎপীড়ক উমাইয়্যা ইবন খালাফের একটি উরু তরবারির আঘাতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তাছাড়া ’আম্মার ইবন ইযাসির ও তিনি একযোগে উমাইয়্যার ছেলে আলীকেও হত্যা করেন। এ যুদ্ধে তিনি খালিদ ইবন আল-আ’লামকে বন্দী করেন।


উহুদ যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনী এমন তোড়জোড় সহকারে মদীনার দিকি আসে যে, গোটা মদীনায় একটা শোরগোল পড়ে যায়। কুরাইশ বাহিনী মদীনার অনতিদূরে জুল হুলায়ফায় পৌঁছালে রাসূল (সা) দু’জন গুপ্তচর পাঠালেন এবং তাদের পিছনে হুবাবকেও পাঠালেন। তিনি শত্রু বাহিনীর মধ্যে ঘুরে ঘুরে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন এবং শত্রু বাহিনীর সংখ্যা সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা রাসূলুল্লাহকে (সা) দান করেন। এ যুদ্ধেও খাযরাজ গোত্রের ঝান্ডা ছিল তাঁর হাতে। অনেকের ধারণা, ঝান্ডা বাহক তিনি নন, বরং সা’দ ইবন ’উবাদা।

এই উহুদ যুদ্ধে যখন মুসলমানদের বিপর্যয় দেখা দেয় এবং মুসলিম বাহিনী হযরত রাসূলে কারীম (সা) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন যে ১৫ জন মুজাহিদ জীবন বাজি রেখে রাসূলুল্লাহকে (সা) ঘিরে রাখেন তাঁদের একজন ছিলেন এই হুবাব। এ যুদ্ধে তিনি মৃত্যুর জন্য বাই’য়াত করেছিলেন।

হযরত রাসূলে কারীম (সা) মদীনার ইহুদী গোত্র বনু কুরায়জা ও বনু নাদীরের বিষয়ে সাহাবীদের নিকট পরামর্শ চাইলে হুবার বলেন: আমরা তাদের বাড়ী ঘর ঘেরাও করে তাদের যাবতীয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলবো। রাসূল (সা) তাঁর মতই গ্রহণ করেন।

খাইবার যুদ্ধে খাযরাজ বাহিনীর একাংশের এবং হুনাইন যুদ্ধে গোটা খাযরাজ বাহিনীর ঝান্ডা বাহক ছিলেন তিনি। একটি বর্ণনা মতে তাবুক যুদ্ধের সময়ও রাসূল (সা) খাযরাজ বাহিনীর ঝান্ডা তাঁর হাতে তুলে দেন।

রাসূলুল্লাহর (সা) ইনতিকালের পর মদীনার আউস ও খাযরাজ সহ গোটা আনসার সম্প্রদায়ের লোকেরা মসজিদে নববীর অনতিদূরে সাকীফা বনী সা’য়িদা নামক স্থানে সমবেত হয়ে পরবর্তী খলীফা নির্বাচনের ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা শুরু করে। আনসার নেতা সা’দ ইবন ’উবাদার একটি ভাষণের পর তাঁরা প্রায় তাঁকেই খলীফা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। এদিকে আনসারদের এ সমাবেশের খবর আবু বকরের (সা) কানে গেল। তিনি ’উমারকে (রা) সাথে নিয়ে সেখানে ছুটে গেলেন। সেখানে খলীফা মুহাজির না আনসারদের মধ্য থেকে হবে, এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল বাক-বিতন্ডা হয়। এই বিতর্কে হযরত হুবাব ছিলেন হযরত আবু বকরের (রা) সাথে বিতর্কে লিপ্ত হন এবং দু’ পর্যায়ে দু’টি জ্বালামীয় ভাষণ দেন। হযরত আবু বকরের (রা) ভাষণ শেষ হলে হুবার উঠে দাঁড়ান এবং আনসারের সম্বোধন করে বলতে শুরু করেন:

‘ওহে আনসার সম্প্রদায়! তোমাদের এ অধিকার তোমরা হাত ছাড়া করো না। জনগণ তোমাদেরই সাথে আছে। তোমাদের চরিত্রের ওপর আঘাত হানতে কেউ দু:সাহসী হবে না। তোমাদের মতামত ছাড়া কেউ কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সক্ষম হবে না। তোমরা হচ্ছো সম্মানী ধনবান, সংখ্যাগুরু, অভিজ্ঞ, সাহসী ও বুদ্ধিমান। তোমরা কি সিদ্ধান্ত নেবে তা দেখার জন্য মানুষ তাকিয়ে আছে। তোমরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করোনা। বিভেদ সৃষ্টি করলে তোমাদের অধিকার হাতছাড়া হয়ে যাবে। তোমাদের প্রতিপক্ষ মুহাজিররা তোমাদের দাবী যদি না-ই মানে তাহলে আমাদের মধ্যে থেকে একজন এবং তাদের মধ্য থেকে একজন মোট দু’জন আমীর হবেন।’

হযরত হুবারের (রা) এই দুই আমীরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হযরত ’উমার (রা) বলে ওঠেন: ‘দূর! এক শিং এর ওপর দু’জনের অবস্থান অসম্ভব।’ ’উমারের (রা) বক্তব্য শেষ হলে তিনি আবার বলতে শরু করেন: তোমরা নিজেদের আধিকার শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো। এ ব্যাক্তির কথায় কান দিওনা। তাঁর কথা শুনলে তোমাদের এই ক্ষমতার অধিকার হাতছাড়া হয়ে যাবে। আমি আমার সম্প্রদায়ের আস্থাাভাজন ব্যক্তি এবং মানুষ আমার সিন্ধান্ত দ্বারা উপকৃত হয়। আল্লাহার কসম!  তোমরা চাইলে এ খিলাফতকে আমরা পাঁচ বছরের একটি উটের বাচ্চায় রুপান্তরিত করে ছাড়বো। তারপর তিনি মুহাজিরদের লক্ষ্য করে বলেনঃ ব্যাপারটি আপসাদের হাতে ছেড়ে দিতে আমরা কার্পণ্য করতাম না। যদি না আমাদের আশস্কা হাতো, যে সম্প্রদায়ের লোকদের পিতা ও ভ্রাতাদের আমরা হত্যা করেছি তারাই এটা হস্তগত করে নেই। তখন  তোমরা মরণই শ্রেয়ঃ অর্থ্যৎ ‘উমার (রা) আশ্বাস দিলেন এমনটি কক্ষনো হবেনা। আমাদের যাঁরা প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছেন তাঁদেরই একজনের হাত আমরা বাই‘য়াত করবো। যিনি তোমাদের ওপর কোনরকম অন্যায় অবিচার করবেন না’।

এত কিছু সত্ত্বেও তিনি উপস্থিত জনতাকে হযরত আবু বকরের (রা) হাতে বাই‘য়াত (আনুগত্যের শপথ) থেকে বিÍত রাখেতে পারলেন না। আনসারদের মধ্যে সর্ব প্রথম হযরত বাশীর ইবন সা‘দ (রা) আবু বকরের (রা) হাতে বাই‘য়াত করেন। তখন বাশীরকে লক্ষ্য করে হুবাব বলেন: তুমি নিজ সম্প্রদায়েরা বিরুদ্ধাচারণ করলে? তোমরা চাচাতো ভাইয়ের ইমারাত বা নেতৃত্বকে ঈর্ষা করলে? বাশীর জাবাব দিলেনঃ ‘তা নয়; বরং একটি সম্প্রদায়কে আল্লাহ যে অধিকার দিয়েছেন তা নিয়ে বিবাদ করা আমি পছন্দ করিনি’।

দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমারের (রা) খিলাফতকালে তিনি ইনতিকাল কনে। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল পঞ্চাস বছরের মত। বদর যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল তেত্রিশ বছর। হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে আবুত তুফাইল ‘আমের ইবন ওয়াসিল তাঁর ছাত্র। তিনি হুবাবের সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

কবিত্ব ছিল তৎকালীন আরবদের স্বাভাজাত গুণ। হযরত হুবাবের মদ্যেও এ গুণটি ছিল। তিনি কবিতা রচনা করেছেন। ইতিহাসের কোন কোন গন্থে তাঁর নাম কিছু পংক্তি হয়েছে। তাঁর কয়েকটি পংক্তির আনুবাদ নিম্নরুপ:

১.আল্লাহ তোমাদের দুজনের পিতামাতার ভলো করুন! তোমরা কি জাননা যে, মানুষ দু রকমের অন্ধ ও চক্ষুস্মান?

২.আমরা এবং মুহাম্মদের দুশমনরা –সকলেই সিংহ-পুরুষ। যাদের হুংকার সারা বিশ্বে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

৩.তাবে পার্থক্য এই যে, আমরা তাঁকে সাহায্য করেছি এবং আশ্রয় দিয়েছি। আমরা ছাড়া তাঁর আর কোন সাহায্যকারী নেই।


তিনি একজন তুখোড় বক্তা ছিলেন। তাঁর ভাষা ছিল বিশুদ্ধ ও অলস্কারপূর্ণ। সাকীফা বনী সা‘য়িদায় তিনি যে দুটি ভাষণ দিয়েছিলেন তা পাঠ করলে তাঁর বাগ্নিতা ও আলস্কারিতা সস্পর্কে ধরনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আনসাররা যে ভিলাঠতের ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম, যে কথাটি তিনি একটি অলঙ্কার মন্ডিত বাক্যে ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন: আল্লাহর কসম! তোমর যদি চাও তাহলে অবশ্যাই আমরা এ খিলাফতকে উপের সাথে তুলনা করেছেন। অর্থ্যৎ ইচ্ছা করলে আমরা যুদ্ধকে শক্তিশালী করতে পারি। তেমনিভাবে তিনি আনসারদের মধ্যে স্বীয় মর্যাদা ও স্থান বর্ণনা করেন এভাবে: আমি আনসারদের চর্মরোগ্রস্থ উটের শরীর চুলকাবার খুঁটি এবং তাদরে দীর্ঘ ও ফলবান বৃক্ষের ঠেস দাসেনর খুঁঠি বা প্রাচীর।


আরবে চর্মরোগগ্রস্ত উটের জন্য একটি খুটি বা কাঠ গেঁড়ে দেওয়া হতো যাতে সে গা চলকাতে পারে এবং এর মধ্যে সে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। তেমনিভাবে যে খেজুর গাছটি লম্বা বা ফলবান হওয়ার কারণে  উপড়ে পড়ার আশঙ্কা হতো, তাতে ঠেস দিয়ে একটি খুঁটি পুতে দেওয়া হতো অথবা একটি প্রচীর খাড়া করে দেওয়া হতো। হযরত হুবার নিজেরকে সেই খুঁটি ও প্রাচীরের সাথে তুলনা করেছেন।



পবিত্র জুমু‘আর দিনের বিস্তারিত নির্দেশনা ও ফযীলত

শুক্রবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ 0
বার দেখা হয়েছে


( *علماء حق* )

( *জুমু‘আর দিনের শ্রেষ্ঠত্বঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দিনসমূহের মধ্যে জুমু‘আর দিন সর্বোত্তম। এই দিন হযরত আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিন তাঁকে বেহেশতে দাখিল করা হয়েছে এবং এই দিন তাঁকে বেহেশত থেকে বের করে (পৃথিবীতে পাঠিয়ে) দেয়া হয়েছে এবং জুমু‘আর দিনই কিয়ামত কায়েম হবে। ( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫৪*)

( *জুমু‘আর দিন গোসল করাঃ*)

*হাদীস:* হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমু‘আর নামাযে যায় সে যেন গোসল করে।

( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৮৭৭,*)

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৪৪*)

( *জুমু‘আর দিন সুগন্ধি ব্যবহার ও মিসওয়াক করাঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাযি. বর্ণনা করেন, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জুমু‘আর দিন যেন প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি গোসল করে, মিসওয়াক করে এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সুগন্ধি ব্যবহার করে।

( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৮৮৮,*)

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৪৬*)

( *জুমু‘আর নামাযের ফযীলতঃ*)

*হাদীসঃ* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জুমু‘আর দিন এলে মসজিদের প্রত্যেক দরজায় ফেশেতাগণ বসে যান। তাঁরা একের পর এক আগমনকারীর নাম লিপিবদ্ধ করেন। যখন ইমাম (মিম্বরে) বসে পড়েন তখন তাঁরা নথিপত্র গুটিয়ে আলোচনা শোনার জন্য চলে আসেন। মসজিদে সর্বপ্রথম আগমনকারী ব্যক্তি উট দানকারীর সমতুল্য, তারপর আগমনকারী ব্যক্তি গরু দানকারীর সমতুল্য, তার পরের জন মেষ দানকারীর সমতুল্য, এর পরের জন মুরগী দানকারীর সমতুল্য এবং তারও পরে আগমনকারী ব্যক্তি ডিম দানকারীর সমতুল্য (সওয়াব লাভ করেন)।

*সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫০*

*হাদীসঃ* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন ফরয গোসলের মত ভালোভাবে গোসল করলো এবং নামাযের জন্য আগমন করলো, সে যেন একটি উট সদকা করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করলো, সে যেন একটি গাভী সদকা করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা সদকা করলো। যে চতুর্থ পর্যায়ে আগমন করলো, সে যেন একটি মুরগী সদকা করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি ডিম সদকা করলো। এরপর যখন ইমাম খুতবা প্রদানের জন্য বের হন, তখন ফেরেশতাগণ খুতবা শোনার জন্য হাযির হয়ে যান।  

( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৮৮১*)
  
*হাদীস:* হযরত আলী রাযি. একটি লম্বা হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ইমাম খুতবা দেয়া শুরু করলে যে ব্যক্তি চুপচাপ বসে শোনে সে দুইটি বিনিময় প্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি এত দূরে বসে যে, ইমামের খুতবা শুনতে পায় না, তবুও চুপ থাকে এবং অনর্থক কথা বা কাজ না করে, সে একটি বিনিময় প্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি এমন স্থানে বসে যেখান থেকে ইচ্ছা করলে ইমামের খুতবা শুনতে এবং তাঁকে দেখতে পায়, তবুও অনর্থক কথা বা কাজ করে এবং চুপ না থাকে, সে গুনাহগার হয়। হযরত আলী রাযি. বলেন, আমি হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমনই বলতে শুনেছি। 

( *সুনানে আবূ দাঊদ; হাদীস ১০৫১*)

( *জুমু‘আর দিনে ছয়টি আমলের বিশেষ ফযীলতঃ*)

*হাদীস:* হযরত আউস ইবনে আউস রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি,

১.জুমু‘আর নামাযের উদ্দেশ্যে ভালোভাবে গোসল করবে, 

২.ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে (আযানের অপেক্ষা না করে) মসজিদে যাবে, 

৩. পায়ে হেঁটে যাবে, বাহনে আরোহণ করবে না, 

৪. ইমামের কাছাকাছি বসবে, 

৫.মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে, 

৬.(খুতবা চলাকালীন) কোন কথা বলবে না বা কাজ করবে না,

সে জুমু‘আর নামাযে (যাওয়া-আসার) পথে প্রতি কদমে এক বছরের নফল রোযা ও এক বছরের নফল নামাযের সওয়াব পাবে।

 ( *সহীহ ইবনে খুযাইমা; হাদীস ১৭৫৮,*)

 ( *জামে’ তিরমিযী; হাদীস ৪৯৬,*) 

( *সুনানে আবূ দাঊদ; হাদীস ৩৪৫,*) 

( *সুনানে নাসায়ী; হাদীস ১৩৮৪*)

( *জুমু‘আর নামাযে গুনাহ মাফ হয়ঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি গোসল করে জুমু‘আর নামাযে এলো, তাউফীক অনুযায়ী নামায আদায় করলো, ইমামের খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকলো, এরপর ইমাম সাহেবের সাথে জুমু‘আর নামায আদায় করলো, তার দুই জুমু‘আর মধ্যবর্তী দিনসমূহ এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।

 ( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫৭*)

*হাদীস:* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায, এক জুমু‘আ থেকে আরেক জুমু‘আ এবং এক রমযান থেকে অন্য রমযান মধ্যকার সমস্ত গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হয়ে যাবে যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়। 

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ২৩৩*)

( *জুমু‘আর নামায ত্যাগকারীর প্রতি সতর্কবাণীঃ*)

*হাদীস:* হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. ও হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, তাঁরা হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর মিম্বরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, মানুষ যেন জুমু‘আর নামায ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ তা‘আলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দিবেন, এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। 

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৬৫*)

( *জুমু‘আর নামাযের জন্য মসজিদে গিয়ে কাউকে উঠিয়ে তার জায়গায় বসবে নাঃ*)

*হাদীস:*  হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন কেউ যেন তার ভাইকে তার বসার জায়গা থেকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে না বসে। *ইবনে জুরাইয রহ.* বলেন, আমি নাফে’ রহ. কে জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কি শুধু জুমু‘আর ব্যাপারে? তিনি বললেন, জুমু‘আ ও অন্যান্য নামাযের ব্যাপারেও। 

( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৯১১*)

*হাদীস:* হযরত জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জুমু‘আর দিন তোমাদের কেউ যেন তার ভাইকে তার জায়গা থেকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে না বসে। বরং এটা বলতে পারে, জায়গা করে দাও। -  

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ২১৭৮*)

( *জুমু‘আর দিন মসজিদে লোকজনের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে যাবে নাঃ*)

*হাদীস:* হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, জুমু‘আর দিন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলো তখন হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন। সে লোকজনের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে যেতে লাগলো। হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, বসে যাও। তুমি দেরী করে এসে লোকদের কষ্ট দিচ্ছ। -  

( *সুনানে আবূ দাঊদ; হাদীস ১১১৮,*)

 ( *সুনানে ইবনে মাজাহ; হাদীস ১১১৫*)

( *খুতবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসাঃ*)

*হাদীস:*  হযরত সামুরা ইবনে জুনদুব রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা যিকিরের জায়গায় (জুমু‘আর মসজিদ) হাযির হও এবং ইমামের কাছাকাছি বসো। কেননা যে দূরে দূরে থাকবে, সে জান্নাতী হলেও তার জান্নাতে প্রবেশ বিলম্বিত হবে।

   ( *সুনানে আবী দাঊদ; হাদীস ১১০৮*)

( *জুমু‘আর দিন খুতবা চলাকালীন চুপ থাকাঃ*)

*হাদীস:*  হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ইমামের খুতবা চলাকালে তুমি যদি তোমার সাথীকে বল, ‘চুপ করো’, তবে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে। 

( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৯৩৪,*) 

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫১*)

*হাদীস:* হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তাঁরা ইমাম বের হয়ে আসার পর *অর্থাৎ : মিম্বরে বসার পর কথা বলা ও নামায পড়াকে মাকরূহ বলতেন*। 

( *ত্বহাবী: ১/২৫৩, পৃষ্ঠা*)

 ( *মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক; হাদীস ৫১৭৫*)

( *জুমু‘আর আগে চার রাকা‘আত সুন্নাত ও পরে চার রাকা‘আত সুন্নাতঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ আব্দুর রহমান সুলামী রহ. থেকে বর্ণিত, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. আমাদেরকে *জুমু‘আর পূর্বে চার রাকা‘আত ও পরে চার রাকা‘আত নামায পড়ার নির্দেশ দিতেন*।

 ( *মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক; হাদীস ৫৫২৫*) 

*হাদীস:*  হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন জুমু‘আর নামায পড়ে সে যেন *জুমু‘আর ফরযের পর চার রাকা‘আত নামায পড়ে*। 

( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৮১*)

( *জুমু‘আর পরে চার রাকা‘আত সুন্নাত পড়ে আরো দুই রাকা‘আত পড়া উচিতঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ আব্দুর রহমান সুলামী রহ. বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. যখন আমাদের মাঝে (হুকুমতের পক্ষ থেকে) এলেন, *তখন তিনি জুমু‘আর পরে চার রাকা‘আত পড়তেন*। এরপর হযরত আলী রাযি. তাঁর খিলাফতকালে এসে *জুমু‘আর পরে দুই রক‘আত ও চার রাকা‘আত* ( *মোট ছয় রাকা‘আত* ) পড়তে লাগলেন। (বর্ণনাকারী বলেন, ) এটা আমাদের কাছে ভালো লাগলো। ফলে আমরা এটা গ্রহণ করলাম। 

( *ত্বহাবী; হাদীস ১৯৮০*)

*হাদীস :* হযরত আলী রাযি. থেকে অপর রেওয়াতে আছে, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা জুমু‘আর নামায পড়বে তারা যেন *ছয় রাকা‘আত পড়ে*। 

( *ত্বহাবী; হাদীস ১৯৭৮*)

( *জুমু‘আর দিন দু‘আ কবুলের সময় কোনটি:*)

*হাদীস:* হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমু‘আর দিন সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তাতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, তখন কোন মুসলমান বান্দা নামাযরত অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে কিছু প্রার্থনা করলে অবশ্যই তিনি তাকে তা দান করেন। তিনি নিজ হাত মুবারক দিয়ে ইশারা করলেন, সেই সময়টি অল্প। 

 ( *সহীহ বুখারী; হাদীস ৯৩৫,*)

 ( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫২*)

*মুসলিমের :* আরেকটি বর্ণনায় আছে, সেই সময়টি হচ্ছে ইমামের (মিম্বরে) বসা থেকে নামায শেষ হওয়ার মাঝামাঝি সময়।

 ( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮৫৩*)

*তিরমিযীর :* একটি বর্ণনায় আছে, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জুমু‘আর দিনের যে সময়ে আল্লাহর দরবারে দু‘আ কবুলের আশা করা যায়। সে সময়টিকে তোমরা আসরের পর থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত তালাশ করো। ইমাম আহমাদ রহ. বলেন, জুমু‘আর দিন কাঙ্ক্ষিত দু‘আ কবুলের সময় আসরের পর এবং সূর্য হেলে যাওয়ার পর। 

( *জামে’ তিরমিযী; হাদীস ৪৮৯*)

( *জুমু‘আর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করাঃ*)

*হাদীস:* হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, দুই জুমু‘আর মধ্যবর্তী সময়ে তাকে একটি আলোকিত নূর দেয়া হবে। 
 
 ( *মুসতাদরাকে হাকেম; হাদীস ৩৩৯২*)

*হাদীস:* হযরত আবূ দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে, তাঁকে আল্লাহ তা‘আলা দাজ্জালের ফিতনা থেকে হিফাযত করবেন।

 ( *সহীহ মুসলিম; হাদীস ৮০৯*)

( *জুমু‘আর দিন বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পড়াঃ*)

*হাদীস:* হযরত আউস ইবনে আউস রাযি. থেকে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দিনসমূহের মধ্যে জুমু‘আর দিন সর্বোত্তম। এই দিনে হযরত আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিন তাঁর ওফাত হয়, এই দিন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে, এই দিন সব সৃষ্টিজীব বেহুঁশ হয়ে যাবে। কাজেই এই দিনে তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দুরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়ে থাকে। হাদীসের বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দুরূদ আপনার কাছে কীভাবে পেশ করা হবে যখন আপনার দেহ মাটিতে মিশে যাবে? হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা‘আলা আম্বিয়ায়ে কিরামের দেহগুলোকে মাটির জন্য (বিনষ্ট করা) হারাম করে দিয়েছেন।   

( *সুনানে আবী দাঊদ; হাদীস ১০৪৭,*)

 ( *সুনানে ইবনে মাজাহ; হাদীস ১০৮৫,*)

 ( *সুনানে নাসায়ী; হাদীস ১৩৭৪*)

( *জুমু‘আর দিনের বিশেষ*)

 একটি দুরূদ শরীফ রয়েছে। আসরের নামাযের পর নিজ স্থানে বসে দুরূদ শরীফটি আশি বার পাঠ করা উচিত। যার ফযীলত এই যে, আমলকারীর আমলনামায় আশি বছরের ইবাদত-বন্দেগীর সওয়াব লেখা হয় এবং আশি বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।

  ( *আল কুরবাতু ইলা রব্বিল আলামীন বিস সলাতি আলান নাবিয়্যি সায়্যিদিল মুরসালীন, ইবনে বাশকুওয়াল; হাদীস ১০৬, ১১১ দুরূদটি হচ্ছে,*) 

*اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأٌمِّيِّ وَعَلى الِه وَسَلِّمْ تَسْلِيْمًا*

উল্লেখ্য, হাদীসটি যদিও দুর্বল রাবীর কারণে যয়ীফ। কিন্তু ফযীলতের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদীসের উপর আমল করার অবকাশ আছে। বিধায় আশা করা যায়, এই দুরূদ শরীফটি পাঠ করলে উক্ত সওয়াব পাওয়া যাবে।

*•••==•◐◉✦❀✺❀✦◉◑•==•••* 
   _*📋 নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_


জান্নাত লাভের জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত।

শুক্রবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ 0
বার দেখা হয়েছে


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ ثِيَابِ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا محمد بن بشار، وأبو هشام الرفاعي قالا حدثنا معاذ بن هشام، عن أبيه، عن عامر الأحول، عن شهر بن حوشب، عن أبي هريرة، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أهل الجنة جرد مرد كحل لا يفنى شبابهم ولا تبلى ثيابهم " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن غريب .

জান্নাতীদের পোশাক-পরিচ্ছদ।

২৫৪১. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার ও আবু হিশাম রিফাঈ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ জান্নাতীগণ লোমহীন ও শ্মশ্রুহীন এবং আয়ত কাজল টানা চোখ বিশিষ্ট হবেন। তাঁদের যৌবন শেষ হবে না কখনও এবং তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ পুরনো হবে না কখনও।

(আবু ঈসা বলেন) এ হাদীসটি হাসান-গারীব।

Abu Hurairah narrated from the Messenger of Allah (s.a.w) that he said:
"The people of Paradise are without body hair, Murd, with Kuhl(on their eyelids), their youth does not come to an end, and their clothes do not wear out."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৩৯ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৩৯)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)

বর্ণনাকারী: আবু হুরায়রা (রাঃ) (মৃত্যু ৫৭/৫৮/৫৯ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ طَيْرِ الجَنَّةِ

حدثنا عبد بن حميد، أخبرنا عبد الله بن مسلمة، عن محمد بن عبد الله بن مسلم، عن أبيه، عن أنس بن مالك، قال سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم ما الكوثر قال " ذاك نهر أعطانيه الله يعني في الجنة أشد بياضا من اللبن وأحلى من العسل فيها طير أعناقها كأعناق الجزر " . قال عمر إن هذه لناعمة . قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أكلتها أنعم منها " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن . ومحمد بن عبد الله بن مسلم هو ابن أخي ابن شهاب الزهري وعبد الله بن مسلم قد روى عن ابن عمر وأنس بن مالك .

জান্নাতের পাখি।

২৫৪৪. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ...... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কাউসার কি তিনি বললেনঃ এটি একটি নহর, যা আল্লাহ্ তাআলা আমাকে জান্নাতে দান করবেন। তা দুধ অপেক্ষা সাদা এবং মধু থেকেও সুমিষ্ট। এর মাঝে রয়েছে বহু পাখি। এগুলোর গর্দান হবে উটের র্গদানের মত। উমর (রাযিঃ) বললেন, এগুলো তো খুব মোটা-তাজা হবে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ এগুলোর আহারকারীরা আরো সুখী হবে।

এ হাদীসটি হাসান-গারীব। রাবী মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে মুসলিম হলেন ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) এর ভ্রাতুষ্পুত্র।

Anas bin Malik narrated that the Messenger of Allah (s.a.w) was asked:
"What is Al-Kawthar?" He said: "That is a river that Allah has given me"- that is, in Paradise- ’whiter than milk and sweeter than honey. In it are birds whose necks are like the necks of camels." ’Umar said: "Indeed this is plump and luxurious then." So the Messenger of Allah (s.a.w) said, "Those who consume it are more plumb than it."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪২ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪২)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) (মৃত্যু ৯৩ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي سِنِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا أبو هريرة، محمد بن فراس البصري حدثنا أبو داود، حدثنا عمران أبو العوام، عن قتادة، عن شهر بن حوشب، عن عبد الرحمن بن غنم، عن معاذ بن جبل، أن النبي صلى الله عليه وسلم قال " يدخل أهل الجنة الجنة جردا مردا مكحلين أبناء ثلاثين أو ثلاث وثلاثين سنة " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن غريب وبعض أصحاب قتادة رووا هذا عن قتادة مرسلا ولم يسندوه .

জান্নাতীদের বয়স।

২৫৪৭. আবু হুরায়রা মুহাম্মাদ ইবনে ফিরাস বসরী (রাহঃ) ..... মুআয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেনঃ জান্নাতীরা লোমহীন, শ্মশ্রুহীন, কাজলটানা চোখ বিশিষ্ট ত্রিশ বা তেত্রিশ বছরের যুবকরূপে জান্নাতে দাখিল হবে।

হাদীসটি হাসান-গারীব। কাতাদা (রাহঃ)-এর কোন কোন শিষ্য এ হাদীসটিকে কাতাদা (রাহঃ) থেকে মুরসালরূপে রিওয়ায়াত করেছেন। তাঁরা এটিকে মুসনাদ রূপে বর্ণনা করেন নি।

Mu’adh bin Jabal narrated that the Prophet (s.a.w) said:
"The people of Paradise shall enter Paradise without body hair, Murd, with Kuhl on their eyes, thirty years of age or thirty-three years."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৫)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)

বর্ণনাকারী: হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল (রাঃ) (মৃত্যু ১৮ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صَفِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا حسين بن يزيد الطحان الكوفي، حدثنا محمد بن فضيل، عن ضرار بن مرة، عن محارب بن دثار، عن ابن بريدة، عن أبيه، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أهل الجنة عشرون ومائة صف ثمانون منها من هذه الأمة وأربعون من سائر الأمم " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن . وقد روي هذا الحديث عن علقمة بن مرثد عن سليمان بن بريدة عن النبي صلى الله عليه وسلم مرسلا ومنهم من قال عن سليمان بن بريدة عن أبيه وحديث أبي سنان عن محارب بن دثار حسن . وأبو سنان اسمه ضرار بن مرة وأبو سنان الشيباني اسمه سعيد بن سنان وهو بصري وأبو سنان الشامي اسمه عيسى بن سنان هو القسملي .

জান্নাতীদের কাতার।

২৫৪৮. হুসাইন ইবনে ইয়াযীদ তাহসান কূফী (রাহঃ) ......... ইবনে বুরায়দা তার পিতা বুরায়দা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ জান্নাতীদের একশ’ বিশ কাতার হবে। এর মধ্যে আশি কাতার হবে এই উম্মতের আর বাকী সব উম্মত মিলিয়ে হবে চল্লিশ কাতার। - ইবনে মাজাহ

হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি আলকামা ইবনে মারছাদ-সুলাইমান ইবনে বুরায়দা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে মুরসাল রূপেও বর্ণিত আছে। কোন রাবী "সুলাইমান ইবনে বুরায়দা-তৎপিতা থেকে’’ বলে উল্লেখ করেছেন। মুহারিব ইবনে দিছার (রাহঃ) থেকে আবু সিনান (রাহঃ) এর রিওয়ায়াতটি হাসান। আবু সিনান (রাহঃ) এর নাম হল দিরার ইবনে মুররা। আবু সিনান (রাহঃ) এর নাম হল সাঈদ ইবনে সিনান। ইনি হলেন বসরী। আবু সিনান শামী (রাহঃ) এর নাম হল ঈসা ইবনে সিনান। ইতি হলেন কাসমালী।

Ibn Buraidah narrated from his father that the Messenger of Allah (s.a.w)said:
"The people of Paradise are a hundred and twenty rows, eighty of them are from this nation, and forty are from the rest of the nations."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৬ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৬)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: বুরাইদা আসলামী (রাঃ)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صَفِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا محمود بن غيلان، حدثنا أبو داود، أنبأنا شعبة، عن أبي إسحاق، قال سمعت عمرو بن ميمون، يحدث عن عبد الله بن مسعود، قال كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم في قبة نحوا من أربعين فقال لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم " أترضون أن تكونوا ربع أهل الجنة " . قالوا نعم . قال " أترضون أن تكونوا ثلث أهل الجنة " . قالوا نعم . قال " أترضون أن تكونوا شطر أهل الجنة إن الجنة لا يدخلها إلا نفس مسلمة ما أنتم في الشرك إلا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الأسود أو كالشعرة السوداء في جلد الثور الأحمر " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح . وفي الباب عن عمران بن حصين وأبي سعيد الخدري .

জান্নাতীদের কাতার।

২৫৪৯. মাহমুদ ইবনে গায়লান (রাহঃ) ..... অবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা প্রায় চল্লিশ জন লোক নবী (ﷺ) এর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা জান্নাতীদের এক-চতুর্থাংশ হলে কি তোমরা সন্তুষ্ট আছে? উপস্থিত সাহাবীরা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান্নাতীদের অধ্যেক হলে সন্তুষ্ট আছ? মুসলিম প্রাণ ছাড়া কেউ জান্নাতে দাখিল হতে পারবে না। মুশরিকদের তুলনায় তোমরা হলে একটি কাল ষাঁড়ের চামড়ায় কতগুলো সাদা লোমের মত বা একটি লাল ষাঁড়ের চামড়ায় গুটি কয়েক কাল লোমের মত।

ইবনে মাজাহ, বুখারি ও মুসলিম

হাদীসটি হাসান-সহীহ। এই বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন ও আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

’Abdullah bin Mas’ud narrated:
"We were in a tent with the Messenger of Allah (s.a.w), about forty of us when the Messenger of Allah (s.a.w) said to us: ’Would you be pleased to be a quarter of the people of Paradise?’ They said:’Yes.’ He said: ’Would you be pleased to be a third of the people of Paradise?’ They said: ’Yes.’ He said: ’Would you be pleased to be one half of the people of Paradise? Verily none shall enter Paradise except a Muslim soul. And you are not with relation to Shirk except like the white hair on the hide of a black bull or like the black hair on the hide of a red bull."

হাদীসের ব্যখ্যা:
এ হাদীছটি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক ভাষণের অংশবিশেষ। তিনি ভাষণটি দিয়েছিলেন মিনায় একটি চামড়ার তাঁবুতে। ভাষণের একপর্যায়ে তিনি জান্নাতবাসীদের মধ্যে অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এ উম্মতের হার বর্ণনা করছিলেন। তাতে অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এ উম্মতের হার পর্যায়ক্রমে এক-চতুর্থাংশ, এক-তৃতীয়াংশ ও অর্ধাংশ বর্ণনা করে সাহাবায়ে কেরামের কাছ থেকে জানতে চাচ্ছিলেন এতে তারা খুশি কি না। প্রতিবারই তারা নিজেদের খুশি হওয়ার কথা ব্যক্ত করছিলেন। তা খুশি হওয়ারই কথা। কেননা পৃথিবীতে কত হাজার হাজার নবী এসেছেন, তাতে কত হাজার হাজার উম্মত তৈরি হয়েছে। সেই অসংখ্য হাজার উম্মতের মধ্যে আমরাও একটি উম্মত। এ অবস্থায় আমরা যদি সর্বমোট জান্নাতবাসীর এক-চতুর্থাংশ হই, তাও তো বড় আশার কথা। সেখানে এক-তৃতীয়াংশ হলে খুশির কোনও সীমা থাকে না। কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের জন্য আরও বড় আশার বাণী অপেক্ষা করছিল। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবশেষে জানালেন যে, জান্নাতবাসীদের অর্ধেকই হবে তাঁর উম্মত।
জান্নাতবাসীদের মধ্যে কোনও কোনও নবীর অনুসারী সংখ্যা হবে দু'-চারজন। কারও শ' খানেক, কারও হাজার খানেক, কারও বা লাখ খানেক। যেমন এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন عرضت علي الأمم، فجعل النبي والنبيان يمرون معهم الرهط، والنبي ليس معه أحد، حتى رفع لي سواد عظيم، قلت: ما هذا؟ أمتي هذه؟ قيل: بل هذا موسى وقومه، قيل : أنظر إلى الأفق، فإذا سواد يملأ الأفق، ثم قيل لي : أنظر هاهنا وهاهنا في آفاق السماء، فإذا سواد قد ملأ الأفق، قيل : هذه أمتك “আমার সামনে উম্মতসমূহকে পেশ করা হল। দেখা গেল দু'-একজন নবী তাঁদের সঙ্গে ছোট ছোট দল নিয়ে যাচ্ছেন। কোনও নবী যাচ্ছেন একা। তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। একপর্যায়ে আমার সামনে একটি বড় দল তুলে ধরা হল। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? এরা কি আমার উম্মত? বলা হল, বরং এরা মূসা ও তাঁর কওম। তারপর আমাকে বলা হল, আকাশপ্রান্তে তাকান। দেখি কি এমন বিশাল এক দল, যারা আকাশপ্রান্ত ছেয়ে ফেলেছে। বলা হল, ওই দিকে তাকান,ওই দিকে তাকান। এভাবে আকাশের সকল প্রান্তে। দেখা গেল বিশাল বিশাল দল আকাশের সকল প্রান্ত ছেয়ে ফেলেছে। বলা হল, এরা আপনার উম্মত।
অপর এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন 
أهل الجنة عشرون ومائة صف، أمتي منهم ثمانون صفا 'জান্নাতবাসীগণ হবে একশ' বিশ কাতার। তার মধ্যে আশি কাতার আমার উম্মত।
এর দ্বারা বোঝা যায়, জান্নাতবাসীদের মধ্যে এ উম্মতের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি হবে। সম্ভবত আল্লাহ তা'আলার রহমতের দিকে তাকিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশা প্রকাশ করেন যে, তাঁর উম্মত জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হবে, তখন আল্লাহ তা'আলা তাঁর সে আশা পূর্ণ করে দেন, সঙ্গে বেশিও দেন। খুবসম্ভব এদিকে ইঙ্গিত করেই কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَى 
“অচিরেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে এত দেবেন যে, তুমি খুশি হয়ে যাবে।
প্রশ্ন হয়, তিনি এ কথাটি তো প্রথমেই জানাতে পারতেন, তার পরিবর্তে প্রথমে এক-চতুর্থাংশ ও তারপর এক-তৃতীয়াংশের কথা বললেন কেন? উত্তর হল, পর্যায়ক্রমে বললে তা অন্তরে বেশি রেখাপাত করে। তাছাড়া কাউকে কোনওকিছুর সবটা একসঙ্গে না দিয়ে কিছু কিছু করে দিলে দেওয়াটা হয় অনেকবার। তা গ্রহীতার প্রতি দাতার খাস দৃষ্টি ও বিশেষ মনোযোগের পরিচয় বহন করে। এর আরও বাড়তি ফায়দা হল, প্রতিবার সুসংবাদদান একটি স্বতন্ত্র নি'আমত। ফলে যতবার সুসংবাদ দেওয়া হবে, ততবার বান্দার পক্ষে পৃথক পৃথক কৃতজ্ঞতা আদায়ের সুযোগ হবে। কৃতজ্ঞতা আদায়ের সুযোগদানও একটি আলাদা নি'আমত বটে।
এ হাদীছে জান্নাতবাসীদের মধ্যে মুসলিম উম্মাহ'র সংখ্যা সর্বাপেক্ষা বেশি হওয়ার কথা জানানোর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে إن الجنة لا يدخلها إلا نفس مسلمة 
(জান্নাতে প্রবেশ করবে কেবলই মুসলিম ব্যক্তি)। অর্থাৎ কোনও কাফের ও মুশরিক জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জান্নাতে প্রবেশ করতে চাইলে অবশ্যই শিরক ও কুফর পরিহার করে আল্লাহর প্রতি, আখিরাতের প্রতি, নবী-রাসূল ও আসমানী কিতাবের প্রতি এবং এমন সবকিছুর প্রতি ঈমান আনতে হবে, যার প্রতি ঈমান আনার জন্য আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে হুকুম রয়েছে। কিন্তু দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই এ শর্ত পাওয়া যায় না।
সব কালেই কাফের-মুশরিকের সংখ্যা বেশি ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের সামনে এ কথা বলেছিলেন, সেই সাহাবায়ে কেরামের যমানায় জাযীরাতুল আরবের বাইরে সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষই ঈমান ও ইসলামের বাইরে ছিল। আজও পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই অমুসলিম। এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, জাহান্নামীদের তুলনায় জান্নাতবাসীর সংখ্যা হবে অতি নগণ্য। তা যে কতটা নগণ্য তা স্পষ্ট করার জন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃষ্টান্ত দেন যে
وما أنتم في أهل الشرك إلا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الأسود، أو كالشعرة السوداء في جلد الثور الأحمر 
‘আর অংশীবাদীদের (মুশরিকদের) মধ্যে তোমরা হলে কালো বলদের চামড়ায় সাদা পশমতুল্য অথবা (বললেন,) লাল বলদের চামড়ায় কালো পশমতুল্য। ‘অংশীবাদী' বলে সমস্ত অমুসলিমকে বোঝানো হয়েছে। অমুসলিমগণ কোনও না কোনওভাবে আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে শরীক করেই ফেলে। এমনকি যারা নাস্তিক, আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্ব স্বীকার করে না, প্রকারান্তরে তারা প্রকৃতিকে ঈশ্বর বানাচ্ছে। এটা তো শিরকই হল। যাহোক, এ দৃষ্টান্ত দ্বারা অমুসলিমদের তুলনায় মুসলিমদের সংখ্যা কত অল্প তা সহজেই অনুমান করা যায়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জান্নাত লাভের জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত। কোনও অমুসলিম জান্নাতে যাবে না। 
খ. আল্লাহ তা'আলা যখন আমাদেরকে মুসলিম বানিয়েছেন, তখন আমরা জান্নাত পাওয়ার জন্য আশাবাদী থাকতেই পারি।
গ. জান্নাতবাসীদের মধ্যে মুসলিম উম্মাহ'র সংখ্যা হবে সর্বাপেক্ষা বেশি। এ সুসংবাদ আমাদেরকে জান্নাতলাভের জন্য আশাবাদী করে তোলে।
ঘ. জান্নাতলাভের জন্য যেহেতু ঈমান ও ইসলাম শর্ত, তাই আমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে যাতে মৃত্যু পর্যন্ত ঈমান ও ইসলাম আঁকড়ে ধরে রাখতে পারি।

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৭ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৭)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) (মৃত্যু ৩২ হিজরী)


হাউযে কাউসার

শুক্রবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ 0
বার দেখা হয়েছে


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ الحَوْضِ

حدثنا أحمد بن محمد بن علي بن نيزك البغدادي، حدثنا محمد بن بكار الدمشقي، حدثنا سعيد بن بشير، عن قتادة، عن الحسن، عن سمرة، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " إن لكل نبي حوضا وإنهم يتباهون أيهم أكثر واردة وإني أرجو أن أكون أكثرهم واردة " . قال أبو عيسى هذا حديث غريب . وقد روى الأشعث بن عبد الملك هذا الحديث عن النبي صلى الله عليه وسلم مرسلا ولم يذكر فيه عن سمرة وهو أصح .

হাউযে কাউসার।

২৪৪৬. আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে নীযাক বাগদাদী (রাহঃ) ...... সামুরা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীরই একটি হাওয আছে। কার হাওযে কত বেশী পিপাসার্তের আগমন হবে এই নিয়ে তারা পরস্পর গৌরব করবেন। আমি আশা করি আমার হাওযেই সর্বাধিক সংখ্যক লোকের আগমন ঘটবে।

Samurah narrated the Messenger of Allah (s.a.w)said:
"Indeed there is a Hawd for every Prophet, and indeed they compete to see which of them has the most arriving at it. Indeed I hope that mine will be the one with the most arrival."

নোট:
হাদীসটি গারীব। আশআছ ইবনে আবদুল মালিক (রাহঃ) এ হাদীসটিকে হাসান (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে মুরসাল রূপে বর্ণনা করেছেন। এতে সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর উল্লেখ নাই। এটিই অধিক সহীহ।

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৪৪৩ (আন্তর্জাতিক নং ২৪৪৩)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রাঃ) (মৃত্যু ৫৮ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ أَوَانِي الحَوْضِ

حدثنا محمد بن إسماعيل، حدثنا يحيى بن صالح، حدثنا محمد بن المهاجر، عن العباس، عن أبي سلام الحبشي، قال بعث إلى عمر بن عبد العزيز فحملت على البريد . قال فلما دخل عليه قال يا أمير المؤمنين لقد شق على مركبي البريد . فقال يا أبا سلام ما أردت أن أشق عليك ولكن بلغني عنك حديث تحدثه عن ثوبان عن النبي صلى الله عليه وسلم في الحوض فأحببت أن تشافهني به . قال أبو سلام حدثني ثوبان عن النبي صلى الله عليه وسلم قال " حوضي من عدن إلى عمان البلقاء ماؤه أشد بياضا من اللبن وأحلى من العسل وأكاويبه عدد نجوم السماء من شرب منه شربة لم يظمأ بعدها أبدا أول الناس ورودا عليه فقراء المهاجرين الشعث رءوسا الدنس ثيابا الذين لا ينكحون المتنعمات ولا تفتح لهم السدد " . قال عمر لكني نكحت المتنعمات وفتح لي السدد ونكحت فاطمة بنت عبد الملك لا جرم أني لا أغسل رأسي حتى يشعث ولا أغسل ثوبي الذي يلي جسدي حتى يتسخ . قال أبو عيسى هذا حديث غريب من هذا الوجه . وقد روي هذا الحديث عن معدان بن أبي طلحة عن ثوبان عن النبي صلى الله عليه وسلم . وأبو سلام الحبشي اسمه ممطور وهو شامي ثقة .

হাউযে কাউসারের পাত্রের বর্ণনা।

২৪৪৭. মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) ..... আবু সাল্লাম হাবশী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার কাছে উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রাহঃ) (তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে) সংবাদ পাঠালেন। আমাকে খচ্চরে আরোহণ করতে হল। পরে তিনি যখন তার কাছে এলেন তখন বললেনঃ হে আমীরুল মু‘মিনীন, খচ্চরে আরোহণ করতে আমার বেশ কষ্ট হয়েছে।

তিনি বললেনঃ হে আবু সাল্লাম, আমি আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু আমার কাছে খবর পৌছেছে যে হাওযে কাউছার সম্পর্কে একটি হাদীস ছাওবান (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে আপনি বর্ণনা করে থাকেন সেটি আপনি আমার কাছে জবাণী শুনাবেন তাই আমি বহু পছন্দ করি।

আবু সাল্লাম (রাহঃ) বলেন, ছাওবান (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আমার হাওয হল আদন থেকে আম্মান আল-বালকা পর্যন্ত বড়। এর পানি দুধের চেয়েও সাদা এবং মধু থেকেও মিঠা আকাশের তারার সংখ্যার ন্যায় এর পানপাত্র। যে ব্যক্তি তা থেকে এক ঢোক পানি পান করবে পরে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। এতে সর্বপ্রথম পানি পান করতে আসবে দরিদ্র মুহাজিরগণ-যাদের মাথার চুল উস্কু-খুস্কু, কাপড় চোপড় ধুলিমলিন, যারা ধনবতী মহিলাদের পানি গ্রহণ করেনি, যাদের জন্য দরজা খোলা হয় না।

উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রাহঃ) বললেনঃ কিন্তু আমি তো ধনবতী মহিলা বিয়ে করেছি, আমার জন্য তো দ্বার খোলে দেওয়া হয়। (উমাইয়া খলীফা) আব্দুল মালিকের কন্যা ফাতিমাকে আমি বিয়ে করেছি (যা হোক) উস্কু খুস্কু না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার মাথা ধৌত করব না এবং আমার শরীরের কাপড়ও ময়লা না হওয়া পর্যন্ত ধৌত করব না।

Al-’Abbas narrated from Abu Sallam Al-Habashi who said:
"’Umar bin ’Abdul-’Aziz summoned me so I got a ride on a mule." [He said:] "When he entered upon him, he said: ’O Commander of the Beleivers! My riding mule was troublesome for me.’ So he said: ’O Abu Sallam!I did not want to trouble you, but a Hadith which you narrated-from Thawban, from the Prophet (s.a.w) about the Hawd-was conveyed to me,and I wanted you to narrate it directly to me."’Abu Sallam said: "Thawban narrated to me from The Messenger of Allah (s.a.w) who said ’My Hawd (is as large as) from ’Adan to ’Amman of Al-Balqa’, its water is whiter than milk and sweeter than honey. Its cups are as numerous as the stars, whoever drinks one drink from it, he will never be thirsty after that again. The first people to arrive at it are the poor among the Muhajirin with disheveled heads, dirty clothes, those whom the women of favor would not marry, nor would the doors be open for them.’ ’Umar said: ’But I have married a women of favor and the doors are open for me. I married Fatimah bint ’Abdul-Malik. I shall certainly not wash my head until it is disheveled, nor wash my garment which touches my body until it becomes dirty."

নোট:
হাদীসটি এ সূত্রে গারীব। মা‘দান ইবনে আবু তালহা-ছাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রেও নবী (ﷺ) থেকে হাদীসটি বর্ণিত আছে। আবু সাল্লাম হাবশী (রাহঃ) এর নাম হল মামতুর। তিনি শাম দেশের অধিবাসী এবং বিশ্বস্ত।

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৪৪৪ (আন্তর্জাতিক নং ২৪৪৪)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: বিবিধ


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ أَوَانِي الحَوْضِ

حدثنا محمد بن بشار، حدثنا أبو عبد الصمد العمي عبد العزيز بن عبد الصمد، حدثنا أبو عمران الجوني، عن عبد الله بن الصامت، عن أبي ذر، قال قلت يا رسول الله ما آنية الحوض قال " والذي نفسي بيده لآنيته أكثر من عدد نجوم السماء وكواكبها في ليلة مظلمة مصحية من آنية الجنة من شرب منها شربة لم يظمأ آخر ما عليه عرضه مثل طوله ما بين عمان إلى أيلة ماؤه أشد بياضا من اللبن وأحلى من العسل " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح غريب . وفي الباب عن حذيفة بن اليمان وعبد الله بن عمرو وأبي برزة الأسلمي وابن عمر وحارثة بن وهب والمستورد بن شداد . - وروي عن ابن عمر عن النبي صلى الله عليه وسلم قال " حوضي كما بين الكوفة إلى الحجر الأسود " .

হাউযে কাউসারের পাত্রের বর্ণনা।

২৪৪৮. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ..... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ)-কে বলেছিলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, হাওযের পাত্রের পরিমাণ কি? তিনি বললেনঃ যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, হাওযের পাত্র হবে জান্নাতের পাত্র এবং তার সংখ্যা হবে মেঘমুক্ত আধাঁর রাতের তারার চেয়েও বেশী। এ থেকে যে ব্যক্তি পানি পান করবে সে আর পিপাসার্ত হবে না। এর দৈর্ঘ্য-প্রস্ত সমান। তা হল আম্মান থেকে আয়লা পর্যন্ত বড়। এর পানি দুধ থেকেও সাদা এবং মধু থেকেও মিঠা।

Abu Dharr narrated:
"I said: ’O Messenger of Allah! What about the vessels of the Hawd?’ He said: ’By the one in Whose Hand is my soul! Its vessels number more than the stars of the heavens and the planets on a clear dark night. (They are) among the vessels of Paradise, whoever drinks from them, he will never be thirsty again. Its longest breadth is the same as its length, like that which is between ’Amman to Aylah, its water is whiter than milk and sweeter than honey.’"

নোট:
এ হাদীসটি হাসান-সহীহ-গারীব। এ বিষয়ে হুযাইফা ইবনে ইয়ামান, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর, আবু বারযা আসলামী, ইবনে উমর, হারিছা ইবনে ওয়াহব, মুস্তাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ আমার হাওয হল কুফা থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত বড়।

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৪৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ২৪৪৫)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত আবু যার গিফারী (রাঃ) (মৃত্যু ৩২ হিজরী)


ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png