LIVE
Loading latest headlines...

বুধবার, ১০ জুন, ২০২০

রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থভাবে সিয়াম সাধনা করব কিভাবে?

বুধবার, জুন ১০, ২০২০ 1
বার দেখা হয়েছে

চলছে পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস। রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি। এটি অবশ্যই একজন সুস্থ মুসলিম মানুষের জন্য ফরয কিন্তু অসুস্থ এবং ভ্রমণরত মানুষের জন্য এটি আবশ্যক নয়। তথাপি কিছু শারীরিক নিয়মাবলী মেনে স্থিতিশীল অসুস্থ ব্যক্তিরা ও রোজা রাখতে পারেন। তবে গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য রোজা না রাখাই উত্তম।কারণ, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের উচিৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী রোজা রাখা। দীর্ঘমেয়াদী রোগের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, লিভার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা কিছু বিশেষ স্বাস্থ্য পরামর্শ মেনে চললে সুস্থভাবে রোজা রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে  বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হল-

ডায়াবেটিস
রোজা রাখার ফলে এটি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তে চর্বির পরিমাণ কমে যাওয়া, খাদ্যনালী ও পাকস্থলীকে বিশ্রাম দেয়াসহ আরও অনেক উপকার করে। রোজা রাখার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খালি ও ভরা পেটে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ, লিপিড প্রোফাইল, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, লিভার ফাংশন ইত্যাদি পরীক্ষা করে যদি রিপোর্ট স্বাভাবিক আসে তবে নিয়ন্ত্রিত খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং জীবনযাপনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীও রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থভাবে এবং নির্বিঘ্নে রোজা রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন তা হল-
  • ভাজা পোড়া খাবার ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
  • প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা।
  • পরিমাণ মত নিয়ন্ত্রিত ডায়েট মেনে চলুন।
  • শাকসবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত  খাবার খাবেন।
ইনসুলিন ও ঔষধের মাত্রা সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ইফতার ও সেহরির মাঝামাঝি সময়ে নিয়মিত পথ্য গ্রহণ করুন। যেহেতু এখন কোভিড-১৯ মহামারী চলছে এবং তারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তাই, এ সময় একেবারেই ঘরের বাইরে বের হওয়া উচিৎ হবে না, তবে ঘরেই হালকা শরীর চর্চা করতে হবে। 

হৃদরোগ
যেসব রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল অর্থাৎ বারবার ওষুধ খেতে হয় না, বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট নেই তারা রোজা করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু ব্যপারে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে-

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাবার সময় এবং ডোজ পরিবর্তন করতে হবে।
ধূমপান সর্বদাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। রোজার বিধিনিষেধ মানার জন্য হলেও ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
নিয়মিত রোজা রাখার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
অবশ্যই ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার, চিনিযুক্ত খাবার বর্জন করে সহজপাচ্য, আঁশ জাতীয় খাবার, শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে। বিশেষ করে পানি খেতে হবে প্রচুর। এতে আপনার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্ত চাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 
গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা
রমজানে একটি দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তা বেড়ে যেতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত খাবার দাবারে অবশ্যই সহজপাচ্য, আঁশ জাতীয় খাবার, শাকসবজি, ফলমূল পানি খেতে হবে এবং ভাজা পোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবার তালিকায় অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, আনারস, রঙ্গিন শাক সবজি রাখুন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যাদের পেপটিক আলসার, পাকস্থলীর প্রদাহজনিত রোগ, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি আছে তারা রোজা রাখার মাধ্যমে উপকৃত হন। রোজা রাখার কারণে পাকস্থলীতে এসিড কম তৈরি হয়। নিয়মিত ওষুধ খাবেন এবং ধূমপান, চা, কফি পান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবেন।

নিম্ন রক্তচাপ

যাদের স্বভাবতই রক্তচাপ কম থাকে এবং কোন অসুবিধা অনুভব করেন না তাদের ক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে হঠাৎ রক্তচাপ বেশি কমে গেলে শারীরিক নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। রোজায় সবারই উচিৎ হবে একটি ব্যলেন্স ডায়েট নির্বাচন করা। এবং এতে অবশ্যই সঠিক মাত্রায় লবণ ও  বেশি পরিমাণে ফ্লুয়িড থাকতে হবে।

অন্যান্য
রমজানে অনেকেরই মাংসপেশিতে খিচুনি, অবসাদ ইত্যাদির সমস্যা দেখা দেয় তাদের পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এছাড়াও কিডনি ও লিভারের রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে হবে এবং ঔষধ সেবন করতে হবে। উপযুক্ত ডায়েট অনুসরণ করে খাবার খেতে হবে।

মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের রোজা না রাখাই উত্তম এবং এ ক্ষেত্রে ধর্মেও শিথিলতার বিধান রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারীতে ঘরে থাকুন এবং শারীরিক যে কোন সমস্যায় মায়াতে প্রশ্ন করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন অথবা ডিজিটাল সাবসক্রিপশন কিনে ডাক্তারের সাথে সরাসরি কথা বলুন।  সুস্থভাবে এবং নির্বিঘ্নে সিয়াম সাধনা পালনের জন্য মায়া আপনার পাশে রয়েছে। 


রোজা রাখার ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা - বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বুধবার, জুন ১০, ২০২০ 2
বার দেখা হয়েছে



মূলকথা:
ইনসুলিন রেজিসটেন্স কমিয়ে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।
রক্তচাপ, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল লেভেল সঠিক রেখে আপনার হৃৎপিণ্ডকে ভাল রাখতে সহায়তা করতে পারে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে এবং নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডারগুলি রোধ করতে পারে। ইসলামিক ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে পবিত্র মাস  হিসেবে বিবেচিত হয় রমজান মাস। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এসময় মুসলিমরা ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান এবং যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকেন। 

১,৪০০ বছর আগে মুসলমানদের রমজানে রোজা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছিল, প্রাচীন গ্রীকরা শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজকাল কিছু বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিকভাবে মানসিক ও শারীরিক উপকারীতা খুঁজে পাওয়ায় মানুষকে রোজা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা এসব বিষয়ে অনেক প্রশ্ন দেখতে পাচ্ছি। মায়ার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক রোজার অনেক উপকারীতার মধ্যে কয়েকটি এখানে তুলে ধরছি-

১। ইনসুলিন রেজিসটেন্স কমিয়ে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, একটানা রোজা রাখার ফলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস পেয়ে আপনার দেহের ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যায় , ফলে এটি আপনার রক্ত ​​প্রবাহ থেকে আপনার কোষে আরও দক্ষতার সাথে গ্লুকোজ স্থানান্তর করতে সহায়তা করে।

২। ওজন নিয়ন্ত্রণ
রোজা ওজন হ্রাস করার একটি নিরাপদ উপায় হতে পারে কারণ অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে বিরতিহীন রোজা – উপবাস অন্যান্য স্বাভাবিক ডায়েটিং এর চেয়ে শরীরের চর্বি পোড়াতে আরও বেশী কার্যকর।একটানা না খেয়ে থাকার ফলে দেহ শর্করার পরিবর্তে শক্তির প্রাথমিক উৎস হিসাবে চর্বিকে ব্যবহার করে।

৩। রোজা বিপাকীয় শক্তি বাড়ায়
রোজা আপনার পাচনতন্ত্রকে বিশ্রাম দেয় এবং এর ফলে এটি আরও কার্যকরভাবে ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। যদি আপনার হজম শক্তি দুর্বল হয়, তবে এটি খাদ্য বিপাকে এবং চর্বি পোড়াতে আপনার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। একটানা না খেয়ে থাকার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, আপনার পরিপাকতন্ত্র ভালভাবে কাজ করে এবং এভাবে আপনার বিপাকীয় শক্তিও বেড়ে যায়।

৪। রোজা ক্ষুধামন্দা রোধ করেঃ
একবার ভাবুনতো! আপনি যদি প্রতি ২-৪ ঘণ্টা পরপর খাবার খান তাহলে সত্যিকার অর্থে আপনার ক্ষুধা লাগবে কিভাবে?

রোজায় অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে আপনার শরীরে কিছু হরমোন নিঃসরণ হয় যা আপনাকে সত্যিকার ক্ষুধা অনুভব করতে সহায়তা করে। অতিরিক্ত মোটা যারা তারা খাওয়ার পরও অনেকসময় বুঝতে পারে না তাদের পেট ভর্তি হয়েছে নাকি।

রোজা রাখার ফলে শরীরের হরমোনগুলো সঠিক মাত্রায় নিঃসরণের ফলে ইফতারের পর আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার পেটভর্তি হয়েছে কিনা।

৫। রোজা আপনার খাদ্যাভাস ঠিক করে

যারা সঠিক খাদ্যাভাসের অভাবে ভুগছেন এবং যারা কাজ এবং অন্যান্য অগ্রাধিকারের কারণে সঠিক খাদ্যাভাস স্থাপন করতে অসুবিধা বোধ করছেন তাদের জন্য রোজা একটি সহায়ক অনুশীলন হতে পারে।

এর মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ক্যালরি বুঝে ডায়েট প্লান করে খাবার খেতে পারেন এবং বাকিটা সময় আপনি না খেয়ে থাকবেন। এর ফলে আপনার বাজে খাবার যেমন- ফাস্ট ফুড, স্নাক্স ইত্যাদি খাবার অভ্যাসটাও পরিবর্তিত হয়ে যাবে।

৬। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি
রোজা রাখার ফলে মস্তিষ্ক থেকে নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (বিডিএনএফ) নামক একটি প্রোটিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

বিডিএনএফ মস্তিষ্কের স্টেম সেলগুলিকে নতুন নিউরনে রূপান্তরিত করে সক্রিয় করতে, এবং স্নায়ুস্বাস্থ্যের উন্নতি করে এমন আরও অনেক কেমিক্যাল নিঃসরণ করে। এই প্রোটিন আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলিকে আলঝাইমার এবং পার্কিনসন রোগের সাথে সম্পর্কিত পরিবর্তনগুলি থেকেও রক্ষা করে। 

৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
রোজা রাখার ফলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কারণ এটি ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে, প্রদাহজনিত অসঙ্গতিগুলো দূর করে এবং শরীরে ক্যান্সার কোষ তৈরিতে বাঁধা প্রদান করে। 

রোজা রাখার ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গ বিশ্রাম নিতে পারে। ফলে রোগ প্রতিরোধে এরা আরও দ্রুত এন্টিবডি তৈরিতে ভুমিকা রাখে।

এছাড়াও, খালি পেটে এবং সতেজ মস্তিস্কে আপনি আপনার কাজ এবং আশেপাশের পরিবেশে আরও বেশি মনোযোগী হতে পারবেন। আপনি দীর্ঘমেয়াদী কোন রোগে আক্রান্ত থাকলে আমার আগের লেখাটি পড়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে রোজা রাখতে পারেন। এছাড়াও রোজায় সঠিক ডায়েট প্লান এবং শারীরিক ও মানসিক যে কোন সমস্যায় সমাধান পেতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ  নিন । রোজা রাখুন, সুস্থ থাকুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।  
 সংগ্রহ-মায়া 



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png