LIVE
Loading latest headlines...

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০

'মুহররম মাস'- এ মাস ঘিরে লোক জনের মাঝে কিছু বিভ্রান্ত কথা রয়েছে - ইসলাম কি বলে?

সোমবার, আগস্ট ৩১, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

 উত্তরআলহামদু লিল্লাহ।.

 
'মুহররম' মাসে তথা যে মাসটি চন্দ্র বছরের প্রথম মাস; সে মাসে বিয়ে করতে বা বিয়ের প্রস্তাব দিতে কোন অসুবিধা নাই। এটি মাকরূহও নয়; হারামও নয়। এ সংক্রান্ত অনেক দলিলের কারণে:

এক:
বৈধতা ও দায়মুক্ততার মূল বিধানের ভিত্তিতে; যে ক্ষেত্রে এমন কোন দলিল উদ্ধৃত হয়নি যা মূল বিধানকে পরিবর্তন করতে পারে। আলেমদের মাঝে মতৈক্যপূর্ণ একটি নীতি হল: "অভ্যাস ও কর্মগুলোর মূল বিধান হল বৈধতা; যতক্ষণ না নিষিদ্ধতার দলিল উদ্ধৃত হয়"। যেহেতু কুরআন-হাদিসে, আলেমদের ইজমা-কিয়াসে এবং সলফে সালেহীনদের উক্তিতে এমন কিছু উদ্ধৃত হয়নি যা 'মুহররম' মাসে বিয়ে করতে বাধা দেয়; সুতরাং মূল বৈধতার বিধানের উপর আমল করা হবে ও ফতোয়া দেওয়া হবে।

দুই:
বৈধতার পক্ষে আলেমগণের ইজমা রয়েছে; নিদেন পক্ষে সেটা ইজমা সুকুতী (নিরবতামূলক ইজমা)। যেহেতু আমরা সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, গ্রহণযোগ্য ইমাম এবং আমাদের যামানা পর্যন্ত তাদের অনুসরণকারী পূর্বসূরি ও উত্তরসূরি এমন কোন আলেম পাইনি যিনি 'মুহররম' মাসে বিয়ে করাকে বা বিয়ের প্রস্তাব দেয়াকে' হারাম বলেছেন কিংবা মাকরূহ বলেছেন।

যে ব্যক্তি এ মাসে বিয়ে করা থেকে বারণ করেন তার কথা বাতিল ও অশুদ্ধ হওয়ার জন্য দলিল হিসেবে এটাই যথেষ্ট যে এটি এমন ফতোয়া যেটার পক্ষে কোন দলিল নাই এবং কোন আলেমের বক্তব্য নাই।

তিন:
'মুহররম' মাস একটি সম্মানিত ও মর্যাদাবান মাস। এ মাসের ফযিলতের ব্যাপারে উদ্ধৃত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "রমযান মাসের পর সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে মুহররম মাসের রোযা।"[সহিহ মুসলিম (১১৬৩)]

যে মাসকে আল্লাহ্‌নিজের দিকে সম্বোধিত করেছেন (شهر الله المحرم-আল্লাহ্‌র মুহররম মাস) এবং যে মাসে রোযা রাখা অন্য মাসে রোযা রাখার চেয়ে অধিক সওয়াবপূর্ণ এমন মাসে এ ধরণের কাজের ক্ষেত্রে বরকত ও মর্যাদা সন্ধান করা যুক্তিযুক্ত। এমন মাসে বিষাদগ্রস্ত থাকা, বিয়ে করতে ভয় পাওয়া ও বিয়ে করাকে অশুভ মনে করা ঠিক নয়; যা হচ্ছে জাহেলী কুসংস্কার।

চার:
যদি কেউ এই বলে দলিল দিতে চায় যে, এ 'মুহররম' মাস হচ্ছে এমন মাস যে মাসে হুসাইন বিন আলী (রাঃ) শাহাদাত বরণ করেছেন; যেমনটি কিছু রাফেযিরা করে থাকে; তাহলে তাকে বলা হবে: নিঃসন্দেহে তাঁর শাহাদাতের দিন ইসলামের ইতিহাসে একটি অপূরণীয় ক্ষতির দিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেটা সেই দিনে বিয়ে করা বা বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হারাম হওয়াকে আবশ্যক করে না। আমাদের শরিয়তে প্রতি বছর বিষাদকে নবায়ন করা ও শোককে এভাবে জারী রাখা যাতে করে সেটা আনন্দের প্রকাশককে বাধাগ্রস্ত করে এমন কিছু নাই।

যারা এমন বক্তব্য দিচ্ছেন আমাদের এ অধিকার রয়েছে যে, তাদেরকে জিজ্ঞেস করব: যেই দিন রাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারা গেছেন সেই দিন কি উম্মতে মুসলিমার উপর এর চেয়ে বড় মুসীবত অবতীর্ণ হয়নি! তাহলে সেই গোটা রবিউল আউয়াল মাসে কেন বিয়ে করা হারাম করা হয় না?! কোন সাহাবী থেকে, নবী পরিবারের কোন সদস্য থেকে কিংবা তাদের পরবর্তী কোন আলেম থেকে এটি হারাম হওয়া বা মাকরূহ হওয়ার মর্মে কোন উদ্ধৃতি বর্ণিত হল না কেন!!

এভাবে আমরা যদি যেই দিনই কোন নবী পরিবারের সদস্য বা অন্যদের মধ্য থেকে কোন বড় ইমামের মৃত্যুতে বা শাহাদাতের প্রেক্ষিতে আমরা শোককে নবায়ন করতে থাকি তাহলে আনন্দ ও খুশির দিন ও মাসগুলো সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং মানুষ এমন সংকটে পড়ে যাবে যা থেকে উত্তরণের শক্তি তাদের নাই। কোন সন্দেহ নাই ধর্মীয় ক্ষেত্রে নতুন প্রবর্তনের অনিষ্ট সর্বপ্রথম প্রবর্তনকারীদের উপরে বর্তায়; যারা শরিয়তের বরখেলাফ করে এবং শরিয়ত পরিপূর্ণ হওয়া ও আল্লাহ্‌র মনোনীত হওয়া সত্ত্বেও তারা এতে সংশোধনী দিতে আসে।

কোন কোন ঐতিহাসিক উল্লেখ করেছেন যে, যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম এ অভিমত প্রকাশ করেছেন; বরং সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি মুহররম মাসের শুরুতে শোকাবহ দৃশ্যগুলো নবায়ন করার প্রথা চালু করেছেন তিনি হচ্ছেন- শাহ ইসমাইল আস-সাফাভী (৯০৮-৯৩০হিঃ)। ঠিক যেমনটি উল্লেখ করেছেন ড. আলী আল-ওয়ারদি "লামহাতুন ইজতিমাইয়্যা ফি তারিখিল ইরাক্ব" গ্রন্থে (১/৫৯): শাহ ইসমাইল শিয়া মতবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে কেবল ভীতি প্রদর্শনের মধ্যে ক্ষান্ত থাকেনি; বরং আরও একটি মাধ্যম গ্রহণ করেছেন। সেটা হচ্ছে প্রচারণা ও তুষ্টকরণের মাধ্যম। তিনি হুসাইন (রাঃ) এর হত্যা-বার্ষিকী উদযাপনের নির্দেশ দেন ঠিক যে পদ্ধতিতে বর্তমানে পালিত হচ্ছে সে পদ্ধতিতে। ইতিপূর্বে হিজরী চতুর্থ শতকে বাগদাদে বুওয়াইহিদ (Buwayhid) রাজাগণ এ অনুষ্ঠান উদযাপন করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাদের পরবর্তীতে এটি উপেক্ষিত হয় এবং এর গুরুত্ব হ্রাস পায়। অবশেষে এলেন শাহ ইসমাইল। তিনি এ অনুষ্ঠানের আরও উন্নয়ন করেন, এর সাথে তাযিয়া (শোক)-র বৈঠকগুলো যুক্ত করেন; যাতে করে এ অনুষ্ঠান দিলের উপর শক্তিশালী প্রভাব তৈরী করে। এ কথা বললেও ঠিক হবে যে: ইরানে শিয়া মতবাদের বিস্তার লাভে এটাই ছিল প্রধান চালিকাশক্তি। কেননা এর মধ্যে বিষাদ ও কান্নার বহিঃপ্রকাশ, ব্যাপক হারে পতাকা উড়ানো ও তবলা বাজানো ইত্যাদি কর্মগুলো অন্তরের গভীরে বিশ্বাসকে প্রোথিত করে এবং হৃদয়ের প্রচ্ছন্ন তন্ত্রীগুলোর উপর আঘাত হানে।"[সমাপ্ত]

পাঁচ:
কোন কোন ঐতিহাসিক ফাতিমা (রাঃ) এর সাথে আলী (রাঃ) এর বিবাহ হিজরী তৃতীয় সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিমতকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন:
"ইবনে মানদা" রচিত 'আল-মারিফা' গ্রন্থ থেকে বাইহাকী উদ্ধৃত করেছেন যে, আলী (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) কে বিয়ে করেছেন হিজরতের এক বছর পর এবং তার সাথে ঘর সংসার শুরু করেছেন অন্য বছর। অতএব, আলী (রাঃ) ফতিমা (রাঃ) এর সাথে বাসর করেছেন তৃতীয় হিজরীর প্রথম দিকে।"["আল-বিদায়া আন্‌-নিহায়া" (৩/৪১৯) থেকে সমাপ্ত]

এ মাসয়ালায় আরও কিছু কথাবার্তা রয়েছে। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ হল কোন আলেম মুহররম মাসে বিয়ে করার বিপক্ষে বলেননি। বরং যে ব্যক্তি মুহররম মাসে বিয়ে করবে তার জন্য আমীরুল মুমেনীন আলী (রাঃ) ও তাঁর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কণ্যা সাইয়্যেদা ফাতিমা (রাঃ) এর বিবাহের উত্তম আদর্শ রয়েছে।           

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।



প্রশ্ন: মুহররম মাসে অধিক রোজা রাখা কি সুন্নত? অন্য মাসের উপর এ মাসের কি কোন বিশেষত্ব আছে?

সোমবার, আগস্ট ৩১, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

 


আলহামদু লিল্লাহ।.
আরবী মাসগুলোর প্রথম মাস হচ্ছে- মুহররম। এটি চারটি হারাম মাসের একটি। আল্লাহ তাআলা বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট, লওহে মাহফুজে (বছরে) মাসের সংখ্যা বারটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি হারাম (সম্মানিত)। এটাই সরল বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।”[সূরা তওবা, আয়াত: ৩৬]

সহিহ বুখারি (৩১৬৭) ও সহিহ মুসলিম (১৬) এ আবু বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন: “আল্লাহ আসমান-জমিন সৃষ্টিকালে সময়কে ঠিক যেভাবে সৃষ্টি করেছেন এখন সময় সে অবস্থায় ফিরে এল। বছর হচ্ছে- বার মাস। এর মধ্যে চার মাস- হারাম (নিষিদ্ধ)। চারটির মধ্যে তিনটি ধারাবাহিক: যুলক্বদ, যুলহজ্জ ও মুহররম। আর হচ্ছে- (মুদার গোত্রের) রজব মাস; যেটি জুমাদাল আখেরা ও শাবান মাস এর মধ্যবর্তী।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, রমজানের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা হচ্ছে মুহররম মাসের রোজা। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “রমজানের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা হচ্ছে- আল্লাহর মাস ‘মুহররম’ এর রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামায হচ্ছে- রাত্রিকালীন নামায।”[সহিহ মুসলিম (১১৬৩)]

হাদিসে: ‘আল্লাহর মাস’ বলে মাসকে আল্লাহর সাথে সম্বন্ধিত করা হয়েছে মাসটির মর্যাদা তুলে ধরতে। আল-ক্বারী বলেন: হাদিস থেকে বাহ্যতঃ মনে হচ্ছে- গোটা মুহররম মাস (রোজা রাখা) উদ্দেশ্য। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি রমজান ছাড়া আর কোন মাসের গোটা সময় রোজা রাখেননি। তাই এ হাদিসের এ অর্থ গ্রহণ করতে হবে যে, মুহররম মাসে অধিক রোজা রাখার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে; গোটা মাস রোজা রাখা নয়।

আল্লাহই ভাল জানেন।



আশুরার ঘটনাবলী মর্মকথা এবং আমল

সোমবার, আগস্ট ৩১, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

 

 মানবজাতির সূচনালগ্ন থেকেই নানা ঘটনাপ্রবাহের ঐতিহ্য বহন করছে পবিত্র মহররম মাস। বিশেষ করে ঐতিহাসিক কারবালার রক্তঝরা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহররম মাস আরও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। ১০ মহররম ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে শাহাদতের অমিয় সুধা পান করেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.)।

কারবালার সূত্রপাত: ইসলামের ইতিহাসে কারবালার ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর মোতাবেক ৬১ হিজরির ১০ মহররম ফুরাত নদীর তীরে ইরাকের তৎকালীন রাজধানী কুফার ২৫ মাইল উত্তরে কারবালার মরুপ্রান্তরে এক মর্মন্তুদ ‘কারবালা’ সংঘটিত হয়েছিল। ওইদিন হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) নরপিশাচ সিমারের হাতে শাহাদাতবরণ করেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় হজরত হোসাইন (রা.) অল্পসংখ্যক সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে জালিম শাসক ইয়াজিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন কারবালা প্রান্তরে। সেদিন মরুভূমির উত্তপ্ত বালুকারাশি রক্তে রক্তাক্ত হয়েছিল। জালিম শাসক ইয়াজিদ চেয়েছিল মুসলিমজাহানের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে হজরত হোসাইনের (রা.) স্বীকৃতি আদায় করে নিতে। যদি হোসাইন (রা.) ইয়াজিদকে মুসলিম জাহানের খলিফা হিসেবে মেনে নিতেন এবং তার কাছে মাথানত করতেন তাহলে সেই ‘কারবালা’ আর হতো না। কিন্তু হোসাইন (রা.) ইয়াজিদকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেননি এবং তার কাছে মাথা নত করেননি। তিনি জালিম শাসকের প্রতি আনুগত্য তথা সমর্থন দেয়ার চেয়ে শহিদ হওয়াই শ্রেয় মনে করেছিলেন। তাই অন্যায়-অসত্য এবং স্বৈরাচারী শাসকের কাছে তিনি মাথা নত করেননি।

আশুরার গুরুত্ব: মহররম মাসে বহু স্মরণীয় ও যুগান্তকারী ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় বিভিন্ন দিক দিয়ে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। মহররমের দশম দিবসে অর্থাৎ আশুরার দিনে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর মধ্যে ১. আকাশ, জমিন, পাহাড়-পর্বত সব কিছুর সৃষ্টি। ২. আদম (আ.) কে সৃষ্টি । ৩. নূহ (আ.) এর মহাপ্লাবন শেষে জুদি পাহাড়ে অবতরণ। ৪. হজরত ইবরাহিম (আ.) এর নমরুদের প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুন্ড থেকে মুক্তিলাভ। ৫. দীর্ঘ ১৮ বছর রোগ ভোগের পর হজরত আইয়ুব (আ.) এর দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ। ৬. হজরত সুলাইমান (আ.) কে পৃথিবীর একচ্ছত্র রাজত্বদান। ৭. হজরত ইউনুস (আ.) কে ৪০ দিন পর দজলা নদীতে মাছের পেট থেকে উদ্ধার। ৮. হজরত মুসা (আ.) কে ফেরাউনের কবল থেকে রক্ষা। ৯. হজরত ঈসা (আ.) এর পৃথিবীতে আগমন এবং জীবিতাবস্থায় আসমানে উত্তোলন। ১০. হজরত ইদ্রিস (আ.) কে আসমানে উত্তোলন। ১১. হজরত দাউদ (আ.) কে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা। ১২. গাজওয়ায়ে খায়বার বিজয় অর্জন। ১৩. মাদায়েন এবং কাদিসিয়ার যুদ্ধে বিজয় অর্জন। ১৪. প্রথম মানব হজরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা এবং একই দিনে তাঁর জান্নাতে প্রবেশ। ১৫. হজরত আদম (আ.) কে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় প্রেরণ এবং গুনাহ মার্জনার পর বিবি হাওয়া (আ.) এর সাথে আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমতে পুনঃসাক্ষাৎ লাভ। ১৬. হজরত ইয়াকুব (আ.) কর্তৃক হারানো পুত্র হজরত ইউসুফ (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ লাভ। ১৭. সর্বশ্রেষ্ঠ ও প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর মক্কা শরিফ থেকে হিজরত করে মদিনা শরিফে আগমন। ১৮. হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার ৭৭ ঘনিষ্ঠজনের স্বৈরশাসক ইয়াজিদের সৈন্য কর্তৃক কারবালা প্রান্তরে নির্মমভাবে শহাদতবরণ। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১/১৩২, উসদুল গাবাহ, ১/২১ ফাতহুল বারী, ৪/২৯১ আর রাহিকুল মাখতুম ১/৬৮)।

আশুরার আমল: আশুরার কারণে মহররম মাসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালার প্রিয় মাস মহররম। মহান আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে বিধান ও গণনা হিসেবে মাস হলো বারোটি আসমান ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। সুতরাং এ মাসে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না। (সূরা তাওবাহ : ৩৬)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, দেখলেন মদীনার ইয়াহুদীরা আশুরার দিবসে রোজা পালন করছে। তাদেরকে রোজা রাাখার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তারা বললো, এই দিনটি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই দিনে আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.) এবং তার সম্প্রদায় বনী ইসরাইলকে ফেরআউনের কবল থেকে মুক্ত করেছেন এবং তার উপর বিজয় দান করেছেন। আর তারই শুকরিয়া হিসেবে এদিনে মুসা (আ.) রোজা রেখেছিলেন। তাই আমরাও এই দিনে রোজা রাখি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, মুসা (আ.) এর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তোমাদের চেয়ে আমিই বেশি হকদার। তারপর তিনি নিজেও রোজা রাখলেন এবং সাহাবিগণকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম : ২৬৫৩)। তবে ইয়াহুদিরা আশুরা উপলক্ষে একদিন রোজা রাখে। তাদের রোজার সাথে যেন মুসলমানদের রোজার সাদৃশ্য না হয়, তাই মুসলমানরা আশুরার রোজার সাথে ৯ অথবা ১১ তারিখে আরো একটি রোজা বৃদ্ধি করে মোট দুইটি রোজা রাখবে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রমজানের রোজার পর সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ রোজা হলো মহররমের রোজা। (তিরমিজি : ২৪৩৮)। হজরত মুয়াবিয়া (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, আশুরার রোজা তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়নি বটে, কিন্তু আমি এই দিন রোজা রাখবো। যার ইচ্ছা হয় সে এই রোজা রাখতে পারো এবং ইচ্ছে হলে তা ছাড়তেও পারো। (বুখারি : ১৮৬৫)।



১০-ই মহররম / পবিত্র আশুরার তাৎপর্য ও ফযীলত”

সোমবার, আগস্ট ৩১, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
১০-ই মহররম / পবিত্র আশুরার তাৎপর্য ও ফযীলত”

>>—> মতাদর্শে হিজরী ৬১ সনের ১০ মহররম ঐতিহাসিক কারবালার প্রান্তরে অত্যাচারী শাসক ইয়াজিদের বাহিনী কর্তৃক হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ)- কে যে নির্মম ভাবে শহীদ করা হয়, সেই হৃদয় বিদারক মর্মান্তিক ঘটনা স্মরণেই পালিত হয় আশুরা। মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। আরবি ‘আশারা’ অর্থ দশ। সেই সুবাদে ওই তারিখ আশুরা বলে উল্লেখিত হয়ে আসছে।

তাৎপর্য
আল্লাহ পাক এ তারিখে আসমান, জমিন, লওহে কলম সৃষ্টি করেছেন এবং এই ১০ মহররম মহাপ্রলয় বা কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।
আল্লাহ তায়ালা আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)- কে ১০ মহররম দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ঈমানের মহা কঠিন পরীক্ষা দিতে নমরুদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ১০ মহররম।

১০ মহররম খোদাদ্রোহী ফেরাউন বিপুল সেনাবাহিনী নিয়ে নীল দরিয়ার অতল তলে ডুবে মরে আর হযরত মুসা (আঃ) বনি ইসরাইলদের নিয়ে পানির ওপর দিয়ে পার হয়ে যান।
হযরত ইউনুছ (আঃ) ৪০ দিন মাছের পেটে অবস্থানের পর ১০ মহররম নাজাত পেয়েছিলেন।
হযরত নূহ (আঃ) ৪০ দিনের মহাপ্লাবনের পর ১০ মহররম নৌকা থেকে বেলাভূমিতে অবতরণ করেন।
হযরত ঈসা (আঃ) ইহুদিদের অত্যাচার, নির্যাতন শূলদণ্ড থেকে মুক্তি লাভের জন্য সশরীরে চতুর্থ আসমানে উপস্থিত হন ১০ মহররম।
হযরত ইয়াকুব (আঃ) তাঁর হারানো ছেলে হজরত ইউসুফ (আঃ)- কে ফিরে পান এবং দৃষ্টিশক্তি আবার ফিরে পান ১০ মহররম।
ধৈর্য, সহনশীলতার মূর্ত প্রতীক হযরত আয়ুব (আঃ) ১৮ বছর কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত থেকে আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় ১০ মহররম আকস্মিকভাবে আরোগ্য লাভ করেন।

কাবাঘরের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল এবং ঐতিহাসিক কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা সংগঠিত হয়, যা বিশ্বের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা।

এই দিনের নেক আমল / নামাজ
> হযরত আলী (রা:) হতে বর্ণিত: রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে ব্যাক্তি মহররমের দশম রাত্র জেগে এবাদত করবে, আল্লাহ তাকে উত্তম জীবন দান করবেন।

> গাউছুল আজম হযরত আব্দুল কাদের জ্বীলানী (রহ:) বলেন, যে ব্যাক্তি মহররমের দশম রাত্র জেগে এবাদত করবে, তার মৃত্যু হবে কষ্টহীন এবং আরামের।

নামাজের কতিপয় নিয়ম
বুযুর্গনে দ্বীনদের মতে আশুরার রাত্রে ২ রাকাত নামাজ আছে। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহা একবার এবং সুরা এখলাস তিন বার। এভাবে যে দুই রাকাত নামাজ পড়বে আল্লাহতায়ালা তার কবরকে রওশন (আলোকিত) করে দেবেন।
এক নিয়তে চার রাকাত নফল নামাজ যার প্রত্যেক রাকাতে একবার সুরা ফাতেহা এবং পঞ্চাশ বার সুরা এখলাস। এভাবে যে ব্যাক্তি ৪ রাকাত নামাজ পড়বে আল্লাহ তায়ালা তার পঞ্চাশ বছর পূর্বের ও পরের সব গোনাহ মাফ করে দিবেন।

> হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন এক নিয়তে চার রাকাত নফল নামাজ যার প্রত্যেক রাকাতে একবার সুরা ফাতেহা, তিন বার সুরা এখলাস, এবং এক বার আয়তুল কুরসী। এভাবে নামাজ শেষে ১০০ বার সুরা এখলাস পাঠ। এভাবে নামাজ আদায় করলে গুনাহ মাফ হবে এবং জান্নাতের অসীম নেয়ামত হাসেল হবে। রাহাতুল কুলুব গ্রন্থে একবার সুরা ফাতেহা, ১০ বার সুরা এখলাস এবং ৩ বার আয়াতুল কুরসী পড়ার কথা বলা হয়েছে।

-(রাহাতুল কুলুব-পৃষ্ঠা ২২৫)
গুনিয়াতুত ত্বালেবিন গ্রন্থে ১০০ রাকাত নফল নামাজের কথা বলা হয়েছে। দুই দুই রাকাত করে, প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহা ১ বার এবং সুরা এখলাস ১০ বার। এভাবে ১০০ রাকাত নামাজ আদায় করলে সেই ব্যাক্তির উপরে ৭০টি রহমতের নাযিল করবেন। যার মধ্যে সর্ব নিম্নটি হলো গোনাহ মাফ।

রোযা
> আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, রমজানের রোযার পরে, সবচেয়ে উত্তম রোযা হলো মহররম মাসের (আশুরার) রোযা এবং ফরজ নামাজের পরে সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো রাত্রীকালীন (তাহাজ্জুদ) নামাজ !

-(মুসলিম শরীফ)

মহররম মাসের অন্যান্য বিশেষত্ব
পবিত্র ‘মহররম’ মাসের ৩০ দিনে বিশ্বের ইতিহাসে এমনসব ঘটনার অবতারণা ঘটেছে, যার দিকে দৃষ্টিপাত করলে হতবাক না হয়ে পারা যায় না। এই মাসের ১ম তারিখটি বছরের প্রারম্ভ বলে স্বীকৃত। ৯ ও ১০ তারিখে রোজা রাখার কথা হাদীস শরীফে ঘোষিত হয়েছে। ১০ তারিখে আশুরা বা কারবালা বার্ষিকী পালিত হয়। এই তারিখে ইমাম হযরত হুসাইন ইবনে আলী (রা:) খলীফা ইয়াজীদ ইবনে মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কারবালা প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন। ১৬ তারিখে বাইতুল মোকাদ্দাসকে কিবলা মনোনয়ন করা হয়েছিল। এই মাসের ১৭ তারিখ আবরাহার হস্তি বাহিনী মক্কার উপকণ্ঠে ছাউনী গেড়েছিল। বিশেষ করে আশুরার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ দিনে হযরত আদম (আ:) দুনিয়ার বুকে পদার্পণ করেছিলেন। হযরত নূহ (আ:)- এর সময়কার মহাপ্লাবনের শুরু এবং শেষও ছিল আশুরার দিনে। হযরত মুসা (আ:) তাওরাত কিতাব লাভ করেছিলেন এই দিনে এবং অভিশপ্ত ফেরাউনের ধ্বংসও সাধিত হয়েছিল এইদিনে। হযরত ইব্রাহীম (আ:) পাপিষ্ঠ নমরূদের অনলকু- হতে নিষ্কৃতি লাভ করেছিলেন এই দিনে। হযরত ইউসুফ (আ:) অন্ধকার কূপ হতে এইদিনে উদ্ধার লাভ করেছিলেন। হযরত ঈসা (আ:) কে আল্লাহ পাক চতুর্থ আসমানে উঠিয়ে নিয়েছিলন এই দিনে। হযরত আইয়ুব (আ:) এর আরোগ্য লাভের দিনটি ছিল আশুরা। এই দিনে হযরত ইউনূস (আ:) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিনেই হযরত ইদ্রিস (আ:) সশরীরে জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন। আবার এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। এতসব ঘটনার চিত্র যে মাস স্বীয় বুকে ধারণ করে আছে এর গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য যে অপরিসীম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত ‘মহররম’ হচ্ছে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী মাস। ‘আবহমানকাল ধরে চলছে মিথ্যার সাথে সত্যের লড়াই। সৃষ্টির ইতিহাসে এ দুইয়ের বৈরিতা চিরন্তন। তা যেমন শক্ত তেমনি শক্তিশালী। এ দ্বন্দ্ব কখনো মুছে যাওয়ার নয়, কিংবা নয় থেমে থাকারও। সত্যের সাথে শত্রুতা ঘোষণা করেই হয় মিথ্যার জন্ম। আর মিথ্যাকে প্রতিহত করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে আসে সত্য।’ এভাবেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিজয় মাল্য লাভে ধন্য হয়। মাহে ‘মহররম’ এই শিক্ষাই দিয়ে যায় বারবার।

কুরআন-হাদীসের আলোকে মহররম মাস

কুরআন মাজীদে ও হাদীস শরীফে মহররম মাস সম্পর্কে যা এসেছে তা হল, এটা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ মাস। কুরআনের ভাষায় এটি ‘আরবাআতুন হুরুম’-অর্থাৎ চার সম্মানিত মাসের অন্যতম। এ মাসে রোযা রাখার প্রতি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

> হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমযানের পর আল্লাহর মাস মহররমের রোযা হল, সর্বশ্রেষ্ঠ।’
-{সহীহ মুসলিম :: ২/৩৬৮; জামে তিরমিযী :: ১/১৫৭}

> হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোযা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’
-[সহীহ বুখারী :: ১/২১৮]

> হযরত আলী (রা:) কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিল, রমযানের পর আর কোন মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোযা রাখার আদেশ করেন ? তিনি বললেন, এই প্রশ্ন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তাঁর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘রমযানের পর যদি তুমি রোযা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখ ! কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন।’

-(জামে তিরমিযী :: ১/১৫৭)

> অন্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোযার কারণে আল্লাহ অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’

-{সহীহ মুসলিম :: ১/৩৬৭; জামে তিরমিযী :: ১/১৫৮}

> আশুরার রোযা সম্পর্কে এক হাদীসে আছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোযা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ।’

-(মুসনাদে আহমদ :: ১/২৪১)

> হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে ৯ তারিখেও অবশ্যই রোযা রাখব।’

-[সহীহ মুসলিম :: ১/৩৫৯]

মহররম মাসের অপসংস্কৃতি ও বিধি-নিষেধ

মহররম মাস এলেই এক শ্রেণীর মানুষ তাজিয়া, শোকগাঁথা পাঠ, শোক পালন, মিছিল বের করা, শোক প্রকাশ্যে নিজের শরীরকে রক্তাক্ত করা প্রভৃতি কাজ করে থাকেন। এ ধরনের কোনো রেওয়াজ ইসলামের কোথাও বর্ণিত হয়নি। এসব রসম-রেওয়াজের কারণে এ মাসটিকেই অশুভ মাস মনে করার একটা প্রবণতা অনেক মুসলমানের মধ্যেও লক্ষ করা যায়।
এগুলো অনৈসলামিক ধারণা ও কুসংস্কার। মোটকথা, এ মাসের করণীয় বিষয়গুলো ; তওবা- ইস্তেগফার, নফল রোযা এবং অন্যান্য নেক আমল। এসব বিষয়ে যত্নবান হওয়া এবং সব ধরনের কুসংস্কার ও গর্হিত রসম-রেওয়াজ থেকে বেঁচে কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক চলাই মুসলমানের একান্ত কর্তব্য।
বলাবাহুল্য, উম্মতের জন্য এই শোক সহজ নয়। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরই তো শিক্ষা- ‘নিশ্চয়ই চোখ অশ্রুসজল হয়, হৃদয় ব্যথিত হয়, তবে আমরা মুখে এমন কিছু উচ্চারণ করি না যা আমাদের রবের কাছে অপছন্দনীয়।’

অন্য হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই যারা মুখ চাপরায়, কাপড় ছিড়ে এবং জাহেলি যুগের কথাবার্তা বলে।’

## অতএব শাহাদাতে হুসাইন (রা:) কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়া এবং সব ধরনের জাহেলি রসম-রেওয়াজ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য।



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png