১. মুক্তি ও সাফল্যের অর্থ
আল কুরআনের দৃষ্টিতে মানব জীবন অখণ্ড এবং দুনিয়া ও আখিরাত পরিব্যাপ্ত। পার্থিব জীবনে মানুষের দৈহিক মৃত্যু হলেও মানুষের আত্মার মৃত্যু হয় না। মানব জীবনকে পরকালেও মৃত্যুহীন রাখা হবে।
মানুষের পার্থিব জীবন খুবই হ্রস্ব এবং স্বল্প সময়ের। অপরদিকে আখিরাতের জীবন অনন্ত, মৃত্যুহীন :
وَمَا هَـٰذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَهْوٌ وَلَعِبٌ ۚ وَإِنَّ الدَّارَ الْآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ
অর্থ: নিশ্চয়ই এই পৃথিবীর জীবন একটা খেল তামাশার সময় মাত্র। অথচ আখিরাতের জীবন চিরন্তন। -সূরা ২৯ আনকাবুত : আয়াত ৬৪।
কুরআন বলে, মানুষের এই পৃথিবীর ক্ষুদ্র জীবনটা হলো : প্রচেষ্টার, বিনিয়োগের, চাষবাষ ও বীজ বপনের। অপরদিকে আখিরাতের জীবন হলো : ফসল কাটার, ফল লাভের এবং ফল ভোগের।
পৃথিবীর জীবনে যার প্রচেষ্টা যেমন হবে, বিনিয়োগ যেমন হবে, যে ফলের বীজ সে বপন করবে, আখিরাতের জীবনে সেই রকম ফল ফসলই সে লাভ করবে এবং সেই ফল ফসলই সে ভোগ করবে।
তাই কুরআন বলে, পৃথিবীর ক্ষুদ্র জীবনটাকে চূড়ান্ত আবাস এবং ভোগের জায়গা বানিয়ো না, বরং আখিরাতের মুক্তি, সাফল্য ও সুফল লাভের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত রাখো। আখিরাতের জীবনের মুক্তি ও সাফল্যের লক্ষ্যে পৃথিবীর জীবনে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালাও, এর জন্যে ত্যাগ স্বীকার করো, এরি জন্যে জীবন লক্ষ্যকে একমুখী করে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাও, তবেই তুমি তোমার আখিরাতের সীমাহীন জীবনে মুক্তি ও সাফল্যের জয়মাল্যে ভূষিত হবে :
وَمَنْ أَرَادَ الْآخِرَةَ وَسَعَىٰ لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَـٰئِكَ كَانَ سَعْيُهُم مَّشْكُورًا
অর্থ : আর যারা আখিরাতের মুক্তি ও সাফল্যের সংকল্প করে এবং এর জন্যে যেমন চেষ্টা সাধনা করা দরকার তা করে যায়, তারা যদি মুমিন হয়, তাহলে এমন লোকদের চেষ্টা সাধনা (আল্লাহর নিকট) অবশ্যি কুবল হবে। -সূরা ১৭ বনি ইসরাইল : আয়াত ১৯।
ইসলাম বলে, মানুষের জীবন অবিনাশী। দৈহিক মৃত্যুর মাধ্যমে তার জীবনটা স্থানান্তরিত হয় মাত্র। পৃথিবীর জীবন তার গোটা জীবনের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। তাই পার্থিব জীবনের কল্যাণ প্রচেষ্টা যেমন তার জন্যে জরুরি, তেমনি, বরং তার চাইতে বেশি প্রচেষ্টা চালাতে হবে আখিরাতের অনন্ত জীবনের মুক্তি, সাফল্য ও কল্যাণের জন্যে। এ কারণেই কুরআন উভয় জগতের কল্যাণের জন্যে দোয়া করতে শিখিয়েছে :
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ : আমাদের প্রভু! এই জগতেও আমাদের কল্যাণ দাও এবং পরজগতেও আমাদের কল্যাণ দাও। আর জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদের মুক্তি দিও। -সূরা ২ আল বাকারা : আয়াত ২০১।
লক্ষ্য অর্জনের পথে মানুষ যতো কষ্টই করুক না কেন, তাতে রয়েছে আনন্দ ও প্রশান্তি। সুতরাং মুক্তি ও সাফল্যের অর্থ হলো :
১. পরকালের অনন্ত জীবনে আল্লাহর পাকড়াও এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি।
২. পরকালের অনন্ত জীবন আল্লাহর সন্তোষ আর জান্নাতের সুখ বিলাসের মধ্যে অবস্থানের সুযোগ লাভ।
৩. পৃথিবীর জীবনে সকলের দাসত্ব ও শৃঙ্খল পরিহার করে এক আল্লাহর দাস হিসেবে প্রশান্তির জীবন যাপন করা।
৪. এই বিশেষ ধরনের জীবন যাপনের কারণে এ পথে যেসব দুঃখ কষ্ট ও বিপদ মুসিবত আসে সেগুলোকে বৃহৎ মুক্তির লক্ষ্যে স্বাভাবিক বলে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়া। যেমন সন্তানের জন্যে মায়ের কষ্ট। প্রিয়জনের জন্যে প্রিয়জনের কষ্ট। এই ধরনের কষ্টের জন্যে দুঃখ থাকে না, থাকে হৃদয়ের প্রশান্তি।
মূলত এটাই মানুষের প্রকৃত শান্তি, মুক্তি, কল্যাণ ও সাফল্যের পথ।
২. কুরআন মুক্তির পথ দেখায়
মানুষের এই প্রকৃত শান্তি, মুক্তি, কল্যাণ ও সাফল্যের বার্তা নিয়েই নাযিল হয়েছে ইসলামের মূল সূত্র আল কুরআন :
قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ - يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلَامِ وَيُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ .
অর্থ : তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এক আলো এবং সুস্পষ্ট কিতাব। আল্লাহ এই কিতাবের মাধ্যমে ঐসব লোকদের শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টি সন্ধান করে এবং তিনি তাঁর নিজের মর্জিতে তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসেন। -সূরা ৫ আল মায়েদা : ১৫-১৬।
হাদিসে বলা হয়েছে :
عَنْ اَبِىْ اُمَامَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ص يَقُوْلُ : اِقْرَأُوا الْقُرْاٰنَ فَاِنَّه يَأْتِىْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيْعًا لاَصْحَابِه
অর্থ : আবি উমামা রা. বর্ণনা করেন, আমি রসূলুল্লাহ সা-কে বলতে শুনেছি: তোমরা কুরআন পাঠ করো। কিয়ামতের দিন কুরআন তার সাথিদের জন্যে মুক্তির সুপারিশকারী হিসেবে উপস্থিত হবে। -সহীহ মুসলিম।
عَنْ عَبْدِ اللهِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ اِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ مَأْدَبَةُ اللهِ فَاقْبَلُوْا مَأْدَبَتُه مَاسْتَطعْتُمْ ، اِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ حَبْلُ اللهِ وَالنُّوْرِ الْمُبِيْنِ وَالشِّفَاءِ النَّافِعِ ، عِصْمَةٌ لِمَنْ تَمَسَّكَ بِه ، وَنَجَاةٌ لِمَنْ اتَّبَعَه .
অর্থ : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন : অবশ্যি এই কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে (উপাদেয় আত্মিক মানসিক খাদ্যের) দস্তরখান। তাই তোমাদের সাধ্যানুযায়ী আল্লাহর দস্তরখান থেকে (জ্ঞান) আহরণ করে। অবশ্যি এই কুরআন আল্লাহর রজ্জু, অনাবিল আলো এবং কল্যাণময় প্রতিকারক। যে কুরআনকে শক্ত করে ধরবে কুরআন তাকে রক্ষা করবে। যে কুরআনকে অনুসরণ করবে সে তার জন্যে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তির উপায় হবে।’ -হাকিম।
ইসলাম মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করে। যারা এই জীবনে ইসলামের মূল সূত্র আল কুরআন পড়বে, বুঝবে, অনুসরণ করবে এবং কুরআনকে আঁকড়ে ধরবে, পরজীবনে কুরআন তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাবে, তাঁদের মুক্তির ব্যবস্থা করবে।
৩. কুরআন জীবন ও সমাজকে বদলে দেয়
কুরআন প্রসঙ্গে কুরআনের বাহক মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ সা.-এর একটি বাণী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন :
اِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ اَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخِرِيْنَ .
অর্থ : আল কুরআন এমন একটি কিতাব যার সাহায্যে আল্লাহ কারো উত্থান ঘটান এবং কারো পতন ঘটান। -সহীহ মুসলিম।
এর অর্থ কুরআন উত্থান পতনের নিয়ামক শক্তি। কুরআনকে ধারণ করলে কোনো জাতির উত্থান ঘটতে পারে। আবার কুরআনকে ছেড়ে দিলে কোনো জাতির পতন ঘটতে পারে। কথাটি ব্যক্তি এবং জাতির জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য।
পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষী, এই কুরআনই আরব উপত্যকার মেষ পালকদের বিশ্ববিজয়ী জাতির আসনে অধিষ্ঠিত করে দিয়েছিল। নিরক্ষর ক্রীতদাস, রাখাল, রাহাজন, মরু যাযাবর, গোত্রীয় কলহে বিধ্বস্ত এবং অজ্ঞতা ও অন্ধতায় নিমজ্জিত বিচ্ছিন্ন এক জনগোষ্ঠীকে এই কুরআনই শাশ্বত জ্ঞানে উদ্ভাসিত করে ঈমানের রজ্জুর নিবিড় বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ করে দিয়েছিল। এদেরকেই আল কুরআন জগত সেরা শাসক, দ্বিগি¦জয়ী সেনাপতি, অসীম সাহসী ন্যায় বিচারক, নির্ভীক দুঃসাহসী দূত, নিবেদিতপ্রাণ দায়ী ইলাল্লাহ এবং নির্যাতিত মানবতার প্রাণের বন্ধু বানিয়ে দিয়েছিল। এদেরকেই আল কুরআন বিশ্ব সেরা অধ্যাপক, দার্শনিক, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ, হাদিস বিশারদ, কুরআন ব্যাখ্যাতা, প্রকৌশলী ও সমরবিশারদ বানিয়ে দিয়েছিল। এরাই আবির্ভূত হয়েছিল মানবতার মুক্তিদূত হিসেবে।
এ কুরআন ইতিহাসের রোম সাম্রাজ্য ও পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়ে দিয়েছিল। এ কুরআনই পশ্চিমের রাবাত-কর্ডোভা থেকে পূর্বের ব্রুনাই-জাকার্তা পর্যন্ত এবং দক্ষিণ সাগরের সমগ্র উপকূল থেকে নিয়ে বরফে ঢাকা উত্তরাঞ্চলীয় দেশগুলোর মানব হৃদয়সমূহকে ঈমানের অনাবিল আলোতে উদ্ভাসিত করে তুলেছিল। সেই আলো ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ে সর্বখানে। এ কথাই কুরআনে বলা হয়েছে এভাবে :
اِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ يَهْدِىْ لِلَّتِىْ هِىَ اَقْوَمُ .
অর্থ : নিশ্চয়ই এই কুরআন সেই পথ দেখায়, যা সব চাইতে সঠিক এবং টেকসই। সূরা ১৭ ইসরা : আয়াত ৯।
৪. আল কুরআন সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা
কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয়, আল কুরআন সম্পর্কে আমাদের সমাজে কল্পনা প্রসূত বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন :১. কুরআন একটি ধর্মগ্রন্থ। কুরআন মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ।
২. ধর্মগ্রন্থ হিসেবে কুরআন পাঠ করা সওয়াবের কাজ।
৩. কুরআন বুঝা এবং শিক্ষা দেয়া আলেম ওলামার কাজ।
৪. কুরআন ধর্মীয় মাসলা মাসায়েলের কিতাব।
৫. কুরআন বুঝা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। সাধারণ মানুষের কুরআন বুঝার দরকার নেই, তাদের পক্ষে কুরআন বুঝা সম্ভব নয়।
৬. কুরআন মহাপবিত্র কিতাব। সবাই সব সময় এটি স্পর্শ করতে পারে না, করলে পাপ হয়। অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাযে বসে এটা তিলাওয়াত করতে হয়। সম্মানের সাথে জুযদানে মুড়িয়ে মাথার উপর রাখতে হয়।
৭. কুরআন নামাযে পড়তে হয়, মরা মানুষের জন্যে পড়তে হয়, শবিনায় পড়তে হয়, খতম করলে সওয়াব হয়।
৮.দোয়া, তাবিজ, ঝাড় ফুঁকে এ কিতাব ব্যবহার করলে উপকার হয়।
৯. কুরআনের তফসির করা সাধারণের জন্যে নিষেধ। বুযুর্গ এবং বড় বড় আলেম উলামারা এটা করবেন।
এগুলো কুরআনের ব্যাপারে প্রচলিত ভুল ও সংকীর্ণ ধারণা। তবে এসব ভুল ও অসম্পূর্ণ ধারণার পরিবর্তন সূচিত হয়েছে এবং পরিবর্তন হতে থাকবে ইনশাল্লাহ। কারণ সত্য প্রকাশিত হবেই।
৫. কুরআন পূর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থা
তাহলে প্রশ্ন হলো কুরআন কেমন গ্রন্থ? কি কাজের গ্রন্থ কুরআন?
আসলে কুরআনের একজন সচেতন পাঠক কুরআন পড়লেই বুঝতে পারেন, কুরআন মানুষের জীবন যাপনের এক পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা, পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা এবং মানুষের মুক্তির পথ। আল কুরআনে রয়েছে :
১. সৃষ্টিতত্ত্ব। জীবন তত্ত্ব।
২. স্রষ্টার পরিচয় এবং তাঁর প্রতি মানুষের কর্তব্যের বিবরণ।
৩. স্রষ্টার ইবাদত (উপাসনা) বিধি।
৪. আত্মোন্নয়ন বা মানবসম্পদ উন্নয়নের নির্দেশিকা (Human resource development guide) ও উন্নত নৈতিক গুণাবলীর বিবরণ।
৫. মানব জীবনের প্রকৃত সাফল্য ব্যর্থতার নির্দেশিকা।
৬. জীবন ব্যবস্থা। জীবন যাপনের ম্যানুয়েল।
৭ উপদেশ, সুসংবাদ ও সাবধানবাণী।
৮. হালাল ও হারামের বিবরণ।
৯. দাম্পত্য সম্পর্ক ও পারিবারিক বিধান।
১০. পারস্পরিক সম্পর্ক এবং দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিবরণ।
১১. উত্তরাধিকার বিধান।
১২. দাওয়াত ও তবলিগের নির্দেশ ও পদ্ধতি।
১৩. ন্যায়নীতির প্রসার ও অন্যায় দুর্নীতির প্রতিবিধান পদ্ধতি।
১৪. সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিধান।
১৫. আইন ও বিচার বিধান।
১৬. অর্থনৈতিক বিধান।
১৭. সমর বিধান।
১৮. বৈদেশিক সম্পর্ক বিধি।
১৯. ইতিহাস।
২০. সর্বপ্রকার বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্য।
২১. মানুষের মুক্তি ও সাফল্যের পথ নির্দেশ।
দেখুন, আল কুরআন সম্পর্কে মহান আল্লাহর কয়েকটি সুস্পষ্ট ঘোষণা:
مَا فَرَّطْنَا فِىْ الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ
অর্থ : আমি এই কিতাবে কোনো বিষয়ই বাদ দেইনি।-সূরা ৬ আনআম : আয়াত ৩৮।
وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِّكُلِّ شَيْءٍ
অর্থ : আমি তোমার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছি, যা প্রত্যেকটি বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনাদানকারী। -সূরা ১৬ নাহল : আয়াত ৮৯।
৬. আল কুরআন মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে জাগরণ সৃষ্টি করে
মুলত ইসলামের মূল উৎস আল কুরআন নাযিল হয়েছে মানব সমাজের মুক্তির লক্ষ্যে পরিবর্তন সাধন করতে। কুরআন বিপ্লব ঘটায় :
১. মানুষের চিন্তা, দৃষ্টিভংগি ও মনের মধ্যে (মানসিক বিপ্লব),
২. মানুষের চরিত্র, আচরণ ও জীবন পদ্ধতির মধ্যে (চারিত্রিক বিপ্লব),
৩. মানুষের সমাজ পদ্ধতি ও সমাজ কাঠামোর মধ্যে (সমাজ বিপ্লব) এবং
৪. মানুষের আইন, বিচার ও শাসন পদ্ধতির মধ্যে (রাষ্ট্র বিপ্লব)।
ইসলামের মূল উৎস আল কুরআন মানবতার মুক্তির বার্তা। এই বার্তা মুক্তির দুর্জয় আলোকচ্ছটা তীর্যক বেগে নিক্ষেপ করে মিথ্যা বাতিল ও অন্যায় অসত্যের গাত্রদেহে। এই আঘাতের অবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়ায় পরাভূত হয়ে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায় মিথ্যা বাতিলের বর্ণালি প্রাচীর। মহান আল্লাহ বলেন :
بَلْ نَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَى الْبَاطِلِ فَيَدْمَغُهُ فَإِذَا هُوَ زَاهِقٌ ۚ
অর্থ : বরং আমি সত্য (আল কুরআন) দিয়ে মিথ্যা-বাতিলের উপর আঘাত হানি। ফলে তা মিথ্যাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয় এবং তাতে তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। -সূরা ২১ আল আম্বিয়া : আয়াত ১৮।
মূলত কুরআন এই আঘাত হানে তার পাঠকের মন মস্তিষ্কে জমে থাকা বাতিল বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণার উপর। তার ভ্রান্ত ও বিকৃত চরিত্র ও আচরণের উপর। পর্যায়ক্রমে এ আঘাতের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বাতিল সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর। এরই পরিণতিতে মানুষ মুক্ত হয় সকল ধরনের ধ্বংসকর শৃঙ্খল থেকে। মানুষ পায় মুক্তির সাধ এবং প্রশান্ত চিত্তে এগিয়ে চলে সাফল্যের পথে।
৭. কুরআন দ্বারা মুক্তি ও সাফল্য লাভের শর্তাবলী
মুক্তি লাভ করা মানে- জীবনকে অজ্ঞতা, অনিশ্চয়তা, অশান্তি, নিরাপত্তাহীনতা, অপরাধ, শাস্তি ও ধ্বংস থেকে মুক্ত করে জ্ঞান, শান্তি, নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা, পবিত্রতা, প্রশান্তি ও সাফল্যের পথে পরিচালিত করা এবং ইহকালীন ও পরকালীন উভয় স্তরে জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করা। এর জন্যে প্রয়োজন পাঁচটি শর্ত পূরণ করা। সেগুলো হলো :
১. জ্ঞান (অর্থাৎ ধ্বংস ও মুক্তি এবং সাফল্য ও ব্যর্থতার পরিচয় ও পথ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান ও পথনির্দেশ লাভ করা)।
২. ঈমান (অর্থাৎ এক সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর নির্দেশিত বিষয়সমূহের প্রতি ঈমান আনা)।
৩. মুক্তির মরণপণ সংকল্প নিয়ে দুনির্বার গতিতে এগিয়ে চলা।
৪. পরিপূর্ণ জীবনকে মুক্তির পথে পরিচালিত করা।
৫. মুক্তি পথে পর্বতের মতো অটল অবিচল থাকা।
জীবনকে প্রকৃত মুক্তি ও সাফল্যের পথে পরিচালিত করার প্রক্রিয়া এটাই। এ প্রসঙ্গে দেখুন আল্লাহর বাণী :
أَفَمَن يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَىٰ ۚ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ .
অর্থ : তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে তোমার কাছে যা (যে কিতাব, জীবন ব্যবস্থা) নাযিল হয়েছে, যে ব্যক্তি তা সত্য বলে জানে, সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য- যে এ ব্যাপারে অজ্ঞ-অন্ধ? উপদেশ তো বুদ্ধিমান লোকেরাই গ্রহণ করে। -সূরা ১৩ আর রা’দ : আয়াত ১৯।
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ .
অর্থ : তোমরা মুখ করো পূর্ব কি পশ্চিম দিকে, তা কোনো প্রকৃত পুণ্যের ব্যাপার নয়। বরং প্রকৃত পুণ্যের কাজ হলো ঐ ব্যক্তির কাজ, যে ঈমান আনে আল্লাহর প্রতি, আখিরাতের প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি আল কিতাবের প্রতি এবং নবীগণের প্রতি। -সূরা ২ আল বাকারা : আয়াত ১৭৭।
مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا .
অর্থ : মুমিনদের কিছু লোক আল্লাহর সাথে কৃত অংগিকার পূর্ণ করেছে, তাদের কিছু লোক শাহাদত বরণ করেছে আর কিছু লোক প্রতীক্ষায় রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের নীতি পরিবর্তন করে নাই। -সূরা ৩৩ আহযাব : আয়াত ২৩।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ .
অর্থ : হে ঈমানদারগণ, তোমরা পূর্ণরূপে ইসলামে দাখিল হও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। -সূরা ২ আল বাকারা : আয়াত ২০৮।
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلاَئِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ .
অর্থ : যে সব লোক ঘোষণা করলো : ‘আল্লাহ আমাদের রব’ এবং তারা এ কথার উপর অটল হয়ে থাকলো, নিঃসন্দেহে তাদের জন্যে ফেরেশতা নাযিল হয়ে থাকে এবং তাদের বলতে থাকে, ভয় পেয়ো না, চিন্তা করো না; আর সেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে সন্তুষ্ট হও, তোমাদের নিকট যার ওয়াদা করা হয়েছে। -সূরা ৪১ হামিম-আস্ সাজদা : আয়াত ৩০।
وَالَّذِينَ اجْتَنَبُوا الطَّاغُوتَ أَن يَعْبُدُوهَا وَأَنَابُوا إِلَى اللَّهِ لَهُمُ الْبُشْرَىٰ ۚ فَبَشِّرْ عِبَادِ .
অর্থ : যারা তাগুতের দাসত্ব প্রত্যাখ্যান করলো এবং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করলো, তাদের জন্যে সুসংবাদ, কাজেই হে নবী! সুসংবাদ দাও আমার এই দাসদের। -সূরা ৩৯ যুমার : আয়াত ১৭।
৮. ইসলামের অনুসারীদের পার্থিব মুক্তি ও সাফল্য
এ প্রসঙ্গে কুরআন মজিদ সাক্ষ্য দিচ্ছে :
الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
অর্থ : যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকর দ্বারা (আল্লাহর স্মরণ ও কুরআন দ্বারা) প্রশান্তি লাভ করে, আর জেনে রাখো আল্লাহর যিকর দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে থাকে। -সূরা ১৩ রা’দ : আয়াত ২৮।
يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ .
অর্থ : যারা ঈমান আনে, আল্লাহ এক সুপ্রমাণিত ঘোষণার মাধ্যমে তাদেরকে ইহকাল এবং পরকালে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখেন। -সূরা ১৪ ইবরাহিম : আয়াত ২৭।
الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُم بِظُلْمٍ أُولَـٰئِكَ لَهُمُ الْأَمْنُ وَهُم مُّهْتَدُونَ
অর্থ : যারা ঈমান আনে, এবং ঈমানের সাথে কোনো প্রকার শিরকের সংমিশ্রণ ঘটায় না, তাদের জন্যে রয়েছে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা, মূলত তারাই সঠিক পথের লোক। -সূরা ৬ আল আনআম : আয়াত ৮২।
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً
অর্থ : পুরুষ বা নারী যে-ই মুমিন অবস্থায় আমলে সালেহ করবে, অবশ্যি আমরা তাকে দান করবো (এই পৃথিবীতে) এক সুন্দর জীবন। -সূরা ১৬ : ৯৭।
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَىٰ آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ
অর্থ : জনপদের অধিবাসিরা যদি ঈমান আনতো এবং তাকওয়া অবলম্বন করতো, তবে আমি আসমান ও যমিনের প্রাচুর্যের দ্বার খুলে দিতাম। -সূরা ৭ : আয়াত ৯৬।
৯. ইসলামের অনুসারীদের পরকালীন মুক্তি ও সাফল্য
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيْم
অর্থ : মুমিন পুরুষ ও নারীদের সাথে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, তাদের তিনি এমন জান্নাতসমূহ দান করবেন, যেগুলোর নিচে ঝরণাধারাসমূহ বহমান থাকবে এবং যেখানে তারা চিরকাল থাকবে। ঐ চির সবুজ বাগানে তাদের থাকার জন্যে থাকবে সুন্দর আবাস। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করবে, এটাই বড় সাফল্য। -সূরা ৯ তাওবা : আয়াত ৭২।
بَلَىٰ قَدْ جَاءَتْكَ آيَاتِي فَكَذَّبْتَ بِهَا وَاسْتَكْبَرْتَ وَكُنتَ مِنَ الْكَافِرِينَ - وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ تَرَى الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى اللَّهِ وُجُوهُهُم مُّسْوَدَّةٌ ۚ أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِّلْمُتَكَبِّرِينَ - وَيُنَجِّي اللَّهُ الَّذِينَ اتَّقَوْا بِمَفَازَتِهِمْ لَا يَمَسُّهُمُ السُّوءُ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ .
অর্থ : কিয়ামতের দিন আল্লাহর কিতাব আমান্যকারীদের বলা হবে : আমার আয়াতসমূহ তোমার কাছে এসেছিল। কিন্তু তুমি তা মানতে অস্বীকার করেছিলে এবং তুমি অহংকার করেছিলে। আর তুমি কাফিরদের দলভুক্ত হয়েছিলে। আল্লাহর প্রতি যারা মিথ্যারোপ করেছে, তুমি কিয়ামতের দিন দেখবে, তাদের চেহারা কালো। অহংকারীদের জন্যে কি দোযখে যথেষ্ট যায়গা নেই? যারা তাদের সফলতার জন্যে সতর্ক জীবন যাপন করেছে, সেদিন তাদেরকে আল্লাহ নাজাত দিবেন। তাদেরকে কোনো মন্দই স্পর্শ করবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না। -সূরা ৩৯ যুমার : আয়াত ৫৯-৬১।
فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
অর্থ : তাদের আমলের বদলা হিসেবে তাদের জন্যে চোখ জুড়ানোর মতো যা কিছু লুকিয়ে রাখা হয়েছে তা কোনো মানুষই জানে না। -সূরা ৩২ সাজদাহ : ১৭।
أَفَمَن يَعْلَمُ أَنَّمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ الْحَقُّ كَمَنْ هُوَ أَعْمَىٰ ۚ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ - الَّذِينَ يُوفُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَلَا يَنقُضُونَ الْمِيثَاقَ - وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ وَيَخَافُونَ سُوءَ الْحِسَابِ - وَالَّذِينَ صَبَرُوا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً وَيَدْرَءُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ أُولَـٰئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ - جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا وَمَن صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ ۖ وَالْمَلَائِكَةُ يَدْخُلُونَ عَلَيْهِم مِّن كُلِّ بَابٍ - سَلَامٌ عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْ ۚ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ .
অর্থ : তোমার প্রতি তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে যে কিতাব নাযিল হয়েছে, তাকে যে সত্য বলে জানে, সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে, যে অন্ধ? বুঝের লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে। যারা আল্লাহর সাথে কৃত অংগিকার পূর্ণ করে এবং কখনো অংগিকার /চুক্তি/প্রতিশ্রুতি ভংগ করেনা; যারা সেইসব সম্পর্ক অটুট অক্ষুণ রাখে, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক অটুট রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, তারা তাদের প্রভুকে ভয় করে এবং (আখিরাতের) মন্দ হিসাবের ভয়ে ভীত থাকে। তাছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের লক্ষ্যে তারা সবর অবলম্বন করে, সালাত কায়েম করে, আমার প্রদত্ত রিযিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করে এবং মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিরোধ করে। এদের জন্যেই রয়েছে শুভ পরিণতি। তাহলো চিরস্থায়ী জান্নাত। তাতে আরো প্রবেশ করবে তাদের পরিশুদ্ধ জীবন যাপনকারী পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তান সন্তুতি। সকল দরজা দিয়ে সেখানে ফেরেশতা তাদের কাছে ছুটে আসবে। বলবে: “আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, কারণ আপনারা সবর করেছিলেন। আপনাদের পরিণতির ঘর কতো চমৎকার।” -সূরা ১৩ আর রা’দ : আয়াত ১৯-২৪।
* * *