LIVE
Loading latest headlines...

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০

রমজানের ২য় দশ দিন মাগফিরাত

বৃহস্পতিবার, মে ০৭, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

মুফতি মুহাম্মদ উল্লাহ রিজওয়ান ।।
পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশক অতিবাহিত হয়ে আজ থেকে শুরু হয়েছে মাগফিরাতের দশক। মহান রাব্বুল আলামীন মহিমান্বিত রমজান মাসে বান্দার জন্য রেখেছেন তিনটি সুবর্ণ সুযোগ।
রাসুল সা. ইরশাদ করেন, রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত লাভের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাত প্রাপ্তির।(মিশকাত শরীফ)
প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিই এই রমজান মাসে সারা বছরের নেকি ও পূণ্যের ঘাটতি পূরণের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে থাকেন। ইবাদতের মাধ্যমে রহমতের ১০ দিন অতিবাহিত করার পর মুমিন ব্যক্তিরা মাগফিরাত লাভের আশায় আল্লাহ পাকের দরবারে নিজেকে নতুন করে নিয়োজিত করে থাকেন।
বান্দা যেন তার সারা বছরের কৃত সব গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে, এই জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রমজান মাসের দ্বিতীয় দশককে মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভের দিন হিসেবে ধার্য করেছেন। মাগফিরাতের এই দশকে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রেখেছেন অফুরন্ত ক্ষমার ভাণ্ডার।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করে বলেন (হে নবী) বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম (গুনাহ) করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করেদিবেন। তিনি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা যুমার ৫৩)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন ? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল দয়ালু। (সুরা মায়িদা৭৪)।
আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের প্রভূর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল।’ (সূরা নূহ: ১০)।
হাদিস শরীফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ১০০ বার করে ইস্তেগফার করতেন। (তাবারানী, মুজামুল আওসাত)। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে আমার বান্দারা, তোমরা দিনরাত গুনাহ করে থাক। আমি তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেব। তোমরা ইস্তেগফার করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব। (মুসলিম শরীফ)।
তাছাড়া রাসূল সা. এ মাসে আমাদেরকে বেশি বেশি মাগফেরাত কামনা করার তাকীদও দিয়েছেন। যেমন, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুসরিত হোক, যার কাছে রমজান মাস এসে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারলো না। (সুনানে তিরমিযী)।
অন্য এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল, অথচ গুনাহমুক্ত হতে পারলো না, তবে তার জন্য অকল্যাণ। (মুসতাদরাকে হাকেম)
উক্ত আয়াত ও হাদিস সমূহ দ্বারা মহান আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সা. আমাদেরকে যেন এটাই আশ্বস্ত করেছেন যে, রমজানের রহমতের দশক শেষ হয়েছে তো কী হয়েছে, আল্লাহর রহমত তো ফুরিয়ে যায়নি, তোমাদের জন্য রমজানের দ্বিতীয় দশকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমার দিন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
সুতরাং তোমরা যদি যথাযথ এবাদত বন্দেগি করে রমজানের পরিপূর্ণ হক আদায় কর, তবে তামাদের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, কারণ আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
সুতরাং প্রত্যেক মুমিনেরই উচিত, মাগফিরাতের এই দশকে গুনাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করে, লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে এবং আর কখনো গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাওবা করা এবং গোনাহ মাফের জন্য চোখের পানি ফেলে তাঁর কাছে বেশি বেশি রোনাজারি করা। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন আমীন।
লেখক: ইমাম ও খতিব, উত্তর আদাবর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, মুহাম্মদপুর ঢাকা।


রমজানের রহমতের জন্য কোন দোয়া বা আমল বেশি বেশি করা যায়?

বৃহস্পতিবার, মে ০৭, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
প্রশ্ন : রমজান মাসে কোন দোয়া বা আমল আমরা বেশি বেশি করতে পারি?
উত্তর : রমজান মাস পুরোটাই মূলত রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আল্লাহর বান্দারা দোয়া করবে। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা রমজান মাসটাকে রহমতের জন্য ভরপুর করে দিয়েছেন। তাই আমরা আল্লাহতায়ালার কাছে রহমত চাইতে পারি এবং মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে পারি।
‘আল্লাহুম মাগফিরলি ওয়াতুব আলাইয়া’ ধরনের দোয়া করতে পারেন,যেগুলোতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা হয়েছে, অথবা আসতাগফিরুল্লাহা… ওয়াতুব ইলাইহে, অথবা যেগুলোতে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা রয়েছে, যেমন— লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদিরের মতো দোয়া করতে পারেন।
আর রাসুলুল্লাহ (সা.) শবে কদরের জন্য হজরত আয়েশাকে (রা.) যে দোয়াটি শিক্ষা দিয়েছেন, সেটি হচ্ছে— আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফু'উন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি।
এই সব দোয়ার মধ্যে মূলত ক্ষমার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এই ধরনের রেওয়ায়েতগুলো সামনে রেখে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এই সময়টা মূলত ক্ষমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই এই সময়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমার জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে পারেন। তবে দোয়ার জন্য শর্ত নয় যে দোয়া আরবিতে হতে হবে। আপনি দোয়া বাংলায় করতে পারেন, আরবিতেও করতে পারেন। যদি আরবি দোয়া আপনার জানা না থাকে, আপনি নিজের ভাষায় দোয়া করতে পারেন। সেটাও করা জায়েজ আছে। সে ক্ষেত্রে মাতৃভাষায় বুঝে দোয়া করা, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।


রমজানের রহমতের ১০দিন

বৃহস্পতিবার, মে ০৭, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স.) বলেন, ‘রমজানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমত নাজিলের, দ্বিতীয় দশদিন গোনাহ মাফ তথা মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশদিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত।’
পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাহে রমজানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিবৃত করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এটা এমন এক মাস যে প্রথম দশ দিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ। মাঝের দশ দিন ক্ষমা ও মার্জনা লাভের জন্য নির্ধারিত এবং শেষ দশদিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের উপায়রূপে নির্দিষ্ট। রোজাদারদের মাঝে এমন এক শ্রেণীর লোক আছেন যারা তাকওয়া ও পরহেজগারী সম্পন্ন এবং পাপ ও বর্জনীয় কাজকর্ম থেকে বেঁচে থাকার জন্য সর্বদাই যত্নবান। তারা সিয়াম সাধনার মাঝে কোনো ভুলত্রুটি হয়ে গেলে চেতনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তওবা ও এস্তাগফার করে নিজেদের সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত করে নেন। এ শ্রেণীর রোজাদারদের প্রতি রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রহমতের বারী বর্ষণ হতে থাকে। তারা যখন রোজার প্রথম দশদিন একান্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে অতিবাহিত করেন, তখন তারা আর সেই লোক থাকেন না। যেমনটি রোজা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ছিলেন। বরং তাদের মাঝে মুমিন সুলভ মহৎ গুণাবলী আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে যায়।
আমাদের মাঝে রমজানের প্রথম দশদিন শুরু হয়েছে। এ দশ দিন শেষ হতেই রমজানের রহমত বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আসবে মাগফিরাত ও নাজাতের দশদিন করে বাকি ২০ দিন। রমজানের যখন প্রথম দিন শুরু হয় তখন রহমতের দিন আরম্ভ হয়। আর বান্দা যখন সঠিক নিয়তে রোজা রাখে, রমজানের সব হকগুলো আদায় করে, সঠিকভাবে সংযমী হয়, হালাল রুজি দ্বারা সেহেরী খায়, হালাল রুজি দ্বারা ইফতার করে, কাউকে গালি না দেয়, কারো হক নষ্ট না করে, ঘুষ না খায়, এভাবে সারাদিন কাটিয়ে দেয় এবং এভাবে সব রমজানের রোজা রাখার নিয়ত করে- তার জন্য রহমত প্রথম রমজান থেকেই শুরু হয়। যা রমজানের শেষ পর্যন্ত সে রহমত অবধারিত থাকে। এছাড়াও তার জন্য দ্বিতীয় দশদিন শুরুর সঙ্গে মাগফিরাত আরম্ভ হয়ে যায় এবং তার গুণাহগুলো মাফ হতে থাকে।
হযরত সাহাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (স.) বলেন, ‘জান্নাতের মধ্যে রাইয়ান নামক এক দরজা আছে, এ দরজা দিয়ে কেবলমাত্র কেয়ামতের দিন রোজাদার লোকেরা প্রবেশ করতে পারবেন। ঘোষণা দেয়া হবে রোজাদার লোকেরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে, তাদের প্রবেশের পরপরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে।’
হাদিসে বর্ণিত, যখন আল্লাহপাক কাউকে ভালবাসেন তখন জিব্রাঈলকে (আ.) বলেন, ও আমার প্রিয় ব্যক্তি, সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাসো। জিব্রাঈল (আ.) তখন তাকে ভালোবাসতে থাকেন ও আসমানে ঘোষণা করে দেন যে, অমুক আল্লাহর প্রিয় বান্দা কাজেই তোমরা তাকে ভালোবাসতে থাক, তখন আসমানের বাসিন্দারা তাকে ভালোবাসতে থাকেন। অতঃপর জমিনবাসীর অন্তরে তার মহব্বত ঢেলে দেয়া হয় এবং সাধারণ নিয়মের ঊর্ধ্বে কাছে ও দূরের সবাই এমনকি সমুদ্রের বাসিন্দা ও নিবিড় জঙ্গলের বাসিন্দা পর্যন্তও তাকে ভালোবাসতে থাকে ও তার জন্য দোয়া করতে থাকে।
কুরআন মজিদে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা আমার ভালোবাসা পেতে হলে নবী করিম (স.) এর অনুসরণ কর।’
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের এক হাদিসে বলা হয়েছে, যারা রমজানের চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষদিন পর্যন্ত রোজা রেখেছে তারা সে দিনের মতই নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তাদের মাতা তাদেরকে নিষ্পাপরূপে জন্ম দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভ থেকে মানুষ যেভাবে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয় রমজানের ৩০ দিন রোজা পালন করলে সে তেমন নিষ্কলুষ হয়ে যাবে।’


ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png