LIVE
Loading latest headlines...

রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০

সালাতের শুরুতে দো‘আ সমূহ

রবিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
 
সালাতের শুরুতে দো‘আ

সালাতের শুরুতে দো‘আ #১
 আরবিঃ
اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ 
اغْسِلْني مِنْ خَطَايَايَ، بِالثَّلْجِ وَالْماءِ وَالْبَرَدِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা বা-‘ইদ বাইনী ওয়া বাইনা খাত্বা-ইয়া-ইয়া কামা বা-‘আদতা বাইনাল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিব। আল্লা-হুম্মা নাক্বক্বিনী মিন খাত্বা-ইয়া-ইয়া কামা ইয়ুনাক্কাস্ ছাওবুল আবইয়াদু মিনাদ দানাসি। আল্লা-হুম্মাগসিলনী মিন খাত্বা-ইয়া-ইয়া বিস্‌সালজি ওয়াল মা-’ই ওয়াল বারাদ

অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনি আমার এবং আমার গুনাহসমূহের মধ্যে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করুন যেরূপ দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার গুনাহসমূহ থেকে এমন পরিষ্কার করে দিন, যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার পাপসমূহ থেকে বরফ, পানি ও মেঘের শিলাখণ্ড দ্বারা ধৌত করে দিন।
বুখারী ১/১৮১, নং ৭৪৪; মুসলিম ১/৪১৯, নং ৫৯৮।

সালাতের শুরুতে দো‘আ #২
আরবিঃسُبْحانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلاَ إِلَهَ غَيْرُك
উচ্চারণঃ সুবহা-নাকাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবা-রাকাসমুকা ওয়া তা‘আ-লা জাদ্দুকা ওয়া লা- ইলা-হা গাইরুকা
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনার প্রশংসাসহ আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আপনার নাম বড়ই বরকতময়, আপনার প্রতিপত্তি অতি উচ্চ। আর আপনি ব্যতীত অন্য কোনো হক্ব ইলাহ্‌ নেই।
মুসলিম, নং ৩৯৯; আর সুনান গ্রন্থকার চারজন। আবু দাউদ, নং ৭৭৫; তিরমিযী, নং ২৪৩; ইবন মাজাহ্‌, নং ৮০৬; নাসাঈ, নং ৮৯৯। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ১/৭৭; সহীহ ইবন মাজাহ্ ১/১৩৫।

 সালাতের শুরুতে দো‘আ #৩

আরবিঃ
 وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفَاً وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلاَتِي، وَنُسُكِي، وَمَحْيَايَ، وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ 
উচ্চারণঃ ওয়াজ্জাহ্‌তু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস্ সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানীফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না সালা-তী, ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রাব্বিল ‘আ-লামীন। লা শারীকা লাহু ওয়াবিযা-লিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীন।
 অনুবাদঃ যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন আমি একনিষ্টভাবে আমার মুখমণ্ডল তাঁর দিকেই ফিরালাম, আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী বা যাবতীয় ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ সৃষ্টিকুলের রব্ব আল্লাহ্‌র জন্য। তাঁর কোনো শরীক নেই। আর আমি এরই আদেশ প্রাপ্ত হয়েছি এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।
আরবিঃ
اللَّهُمَّ أَنْتَ المَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، أَنْتَ رَبِّي وَأَنَا عَبْدُكَ، ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذُنُوبِي جَمِيعَاً إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، وَاهْدِنِي لِأَحْسَنِ الأَخْلَاقِ لاَ يَهْدِي لِأَحْسَنِها إِلاَّ أَنْتَ، وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا، لاَ يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ 
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আনতাল মালিকু লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, আনতা রব্বী ওয়া আনা ‘আবদুকা। যালামতু নাফসী ওয়া‘তারাফতু বিযাম্বী। ফাগফির লী যুনূবী জামী‘আন ইন্নাহু লা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা। ওয়াহদিনী লিআহসানিল আখলা-ক্বি, লা ইয়াহ্‌দী লিআহ্‌সানিহা ইল্লা আনতা। ওয়াসরিফ ‘আন্নী সায়্যিআহা লা ইয়াসরিফু সায়্যিআহা ইল্লা আনতা।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনিই অধিপতি, আপনি ব্যতীত আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আপনি আমার রব্ব, আমি আপনার বান্দা। আমি আমার নিজের প্রতি অন্যায় করেছি এবং আমি আমার পাপসমূহ স্বীকার করছি। সুতরাং আপনি আমার সমুদয় গুনাহ মাফ করে দিন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করতে পারে না। আর আপনি আমাকে সর্বোত্তম চরিত্রের পথে পরিচালিত করুন, আপনি ছাড়া আর কেউ উত্তম চরিত্রের পথে পরিচালিত করতে পারে না। আর আপনি আমার থেকে আমার খারাপ চরিত্রগুলো দূরীভূত করুন, আপনি ব্যতীত আর কেউ সে খারাপ চরিত্রগুলো অপসারিত করতে পারে না।
আরবিঃ
لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ، وَالخَيْرُ كُلُّهُ بِيَـدَيْكَ، وَالشَّـرُّ لَيْسَ إِلَيْـكَ، أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ، تَبارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتوبُ إِلَيْكَ 
উচ্চারণঃ লাববাইকা ওয়া সা‘দাইকা ওয়াল-খাইরু কুল্লুহু বিয়াদাইকা, ওয়াশশাররু লাইসা ইলাইকা। আনা বিকা ওয়া ইলাইকা, তাবা-রাক্তা ওয়া তা‘আ-লাইতা। আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা 
অনুবাদঃ আমি আপনার হুকুম মানার জন্য সদা-সর্বদা হাজির, সকল কল্যাণই আপনার দু’ হাতে নিহিত। অকল্যাণ আপনার দিকে নয় (অর্থাৎ মন্দকে আপনার দিকে সম্পৃক্ত করা উচিত নয়, অথবা মন্দ দ্বারা আপনার নিকটবর্তী হওয়া যায় না, বা মন্দ আপনার দিকে উঠে না)। আমি আপনার দ্বারাই (প্রতিষ্ঠিত আছি, সহযোগিতা পেয়ে থাকি) এবং আপনার দিকেই (আমার সকল প্রবণতা, বা আমার প্রত্যাবর্তন)। আপনি বরকতময় এবং আপনি সুঊচ্চ। আমি আপনার নিকট ক্ষমা চাই এবং আপনার কাছে তাওবাহ্‌ করছি।


সালাতের শুরুতে দো‘আ #৪

আরবিঃ
 اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ، وَمِيْكَائِيلَ، وَإِسْرَافِيلَ، فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، عَالِمَ الغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ، اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقيمٍ 
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রববা জিব্রাঈলা  ওয়া মীকাঈলা ওয়া ইস্রা-ফীলা ফা-তিরাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশশাহা-দাতি। আনতা তাহকুমু বাইনা ইবা-দিকা ফীমা কা-নূ ফীহি ইয়াখতালিফূন। ইহদিনী লিমাখতুলিফা ফীহি মিনাল হাককি বিইযনিকা ইন্নাকা তাহ্‌দী তাশা-উ ইলা- সিরা-তিম মুস্তাকীম 
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! জিবরাঈল, মীকাঈল ও ইসরাফীলের রব্ব, আসমান ও যমীনের স্রষ্টা, গায়েব ও প্রকাশ্য সব কিছুর জ্ঞানী, আপনার বান্দাগণ যেসব বিষয়ে মতভেদে লিপ্ত আপনিই তার মীমাংসা করে দিবেন। যেসব বিষয়ে মতভেদ হয়েছে তন্মধ্যে আপনি আপনার অনুমতিক্রমে আমাকে যা সত্য সেদিকে পরিচালিত করুন। নিশ্চয় আপনি যাকে ইচ্ছা সরল পথ প্রদর্শন করেন।

সালাতের শুরুতে দো‘আ #৫

তিনবার বলবে,

আরবিঃ
 اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرَاً، اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيراً، اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيراً، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيراً، وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً 
উচ্চারণঃ আল্লা-হু আকবার কাবীরান, আল্লা-হু আকবার কাবীরান, আল্লা-হু আকবার কাবীরান, ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসীরান, ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসীরান। ওয়ালহামদু লিল্লা-হি কাসী-রান ওয়াসুবহা-নাল্লাহি বুকরাতাঁও ওয়া আসীলা
 অনুবাদঃ আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়। আর আল্লাহ্‌র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা, আল্লাহ্‌র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা, আল্লাহ্‌র জন্যই অনেক ও অজস্র প্রশংসা। সকালে ও বিকালে আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি

অতঃপর বলবে,

আরবিঃ أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ مِنْ نَفْخِهِ، وَنَفْثِهِ، وَهَمْزِهِ، 
উচ্চারণঃ আউযু বিল্লা-হি মিনাশ শায়তানি, মিন নাফখিহী ওয়ানাফসিহী ওয়াহামযিহী 
অনুবাদঃ আমি শয়তান থেকে আল্লাহ্‌র নিকট আশ্রয় চাই। আশ্রয় চাই তার ফুঁ তথা দম্ভ-অহংকার থেকে, তার থুতু তথা কবিতা থেকে ও তার চাপ তথা পাগলামি থেকেআবূ দাউদ ১/২০৩, নং ৭৬৪; ইবন মাজাহ্‌ ১/২৬৫, ৮০৭; আহমাদ, আহমাদ ৪/৮৫, নং ১৬৭৩৯। শাইখ শু‘আইব আল-আরনাউত তার মুসনাদের তাহকীকে এ হাদীসের সনদকে হাসান লি-গাইরিহি বলেছেন। আর আব্দুল কাদের আরনাউত ইবন তাইমিয়্যার ‘আল-কালেমুত তাইয়্যেব’ গ্রন্থের নং ৭৮, এর তাহকীক বলেন, এটি তার শাওয়াহেদ বা সমার্থবোধক হাদীসের দ্বারা সহীহ লি-গাইরিহী প্রমাণিত হয়। আর আলবানী তার সহীহুল কালেমিত তাইয়্যেব এর ৬২ নং এ হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ইমাম মুসলিম 

সালাতের শুরুতে দো‘আ #৬
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দো‘আটি রাতে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত পড়ার সময় বলতেন।
আরবিঃ
 اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ رَبُّ السَّمَواتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ لَكَ مُلْكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ مَلِكُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِউচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা নুরুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ামান ফীহিন্না ওয়া লাকাল হাম্‌দু। আনতা ক্বায়্যিমুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ামান ফীহিন্না, ওয়া লাকাল হামদু আনতা রববুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ামান ফীহিন্না, ওয়া লাকাল হাম্‌দু, লাকা মূলকুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ামান ফীহিন্না, ওয়া লাকাল হাম্‌দু, আনতা মা-লিকুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনার জন্যই সকল হামদ-প্রশংসা; আসমানসমূহ, যমীন ও এ-দুটির মাঝে যা কিছু আছে আপনিই এগুলোর নূর (আলো)। আর আপনার জন্যই সব প্রশংসা; আসমানসমূহ, যমীন ও এ-দুটির মাঝে যা আছে আপনিই এসবের রক্ষণাবেক্ষণকারী-পরিচালক। আর আপনার জন্যই সকল প্রশংসা; আসমানসমূহ, যমীন ও এ-দুটির মাঝে যা কিছু আছে আপনিই এসবের রব্ব। আর আপনার জন্যই সব প্রশংসা; আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’টির মাঝে যা আছে তার সার্বভৌমত্ব আপনারই। আর আপনার জন্যই সকল প্রশংসা; আসমানসমূহ ও যমীনের রাজা আপনিই।
আরবিঃ
 وَلَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ الْحَقُّ، وَوَعْدُكَ الْحَقُّ، وَقَوْلُكَ الْحَقُّ، وَلِقَاؤُكَ الْحَقُّ، وَالْجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ، وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدٌ حَقٌّ، وَالسّاعَةُ حَقٌّ 
উচ্চারণঃ ওয়া লাকাল হামদু, আনতাল হাক্কু, ওয়া ওয়া‘দুকাল হাক্কু, ওয়া ক্বাওলুকাল হাক্কু, ওয়া লিক্বা-উকাল হাক্কু, ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন, ওয়ান না-রু হাক্কুন, ওয়ান নাবিয়্যূনা হাক্কুন, ওয়া মুহাম্মাদুন হাক্কুন, ওয়াস্‌সা‘আতু হাক্কুন 
অনুবাদঃ আর আপনার জন্যই সকল প্রশংসা; আসমানসমূহ ও যমীনের রাজা আপনিই। আর আপনার জন্যই সকল প্রশংসা; আপনিই হক্ব, আপনার ওয়াদা হক্ব (বাস্তব ও সঠিক), আপনার বাণী হক্ব, আপনার সাক্ষাৎ লাভ হক্ব, জান্নাত হক্ব, জাহান্নাম হক্ব, নবীগণ হক্ব, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হক্ব এবং কিয়ামত হক্ব।

اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ، وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ، وَمَا أَعْلَنْتُ
 
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা লাকা আসলামতু, ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়াবিকা আ--মানতু, ওয়া ইলাইকা আনাবতু, ওয়া বিকা খা-সাম্‌তু, ওয়া ইলাইকা হা-কামতু, ফাগফির লী মা কাদ্দামতু, ওয়ামা আখখারতু, ওয়ামা আসরারতু, ওয়ামা আ‘লানতু, 
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনার কাছেই আত্মসমর্পণ করি, আপনার উপরই ভরসা করি, আপনার উপরই ঈমান আনি, আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করি, আপনার সাহায্যেই বা আপনার জন্যই শত্রুর সাথে বিবাদে লিপ্ত হই, আর আপনার কাছেই বিচার পেশ করি; অতএব ক্ষমা করে দিন আমার গুনাহসমূহ— যা পূর্বে করেছি, যা পরে করেছি, যা আমি গোপন করেছি আর যা প্রকাশ্যে করেছি। আপনি ব্যতীত আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই।
আরবিঃ
 أَنْتَ المُقَدِّمُ، وَأَنْتَ المُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 
উচ্চারণঃ আনতাল মুকাদ্দিমু ওয়া আন্তাল্ মুআখখিরু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা 
অনুবাদঃ আপনিই (কাউকে) করেন অগ্রগামী, আর আপনিই (কাউকে) করেন পশ্চাদগামী,
আরবিঃ
 أَنْتَ إِلَهِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 
উচ্চারণঃ আনতা ইলা-হী, লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা 
অনুবাদঃ আপনিই আমার ইলাহ। আপনি ব্যতীত আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই।


 

 


সূরা নাস

রবিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

সূরা নাস
মদীনায় অবতীর্ণ , আয়াত সখ্যাঃ ৬
--------------------------------------------
উচ্চারণ : ক্কুল আউজু বিরাব্বিন্নাস। মালিকিন্নাস। ইলা-হিন্নাস। মিন্‌শার্‌রিল ওয়াছ-ওয়াছিল খান্নাস। আল্লাযী ইউওয়াছবিছু ফিছুদুরিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস। 

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার, [সুরা নাস: ১]

مَلِكِ النَّاسِ
মানুষের অধিপতির, [সুরা নাস: ২]

إِلَهِ النَّاسِ
মানুষের মা’বুদের [সুরা নাস: ৩]

مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ
তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে, [সুরা নাস: ৪]

الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে [সুরা নাস: ৫]

مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। [সুরা নাস: ৬]





আন্তঃধর্মীয় বিবাহ আইনটি সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী একটি আইন।

রবিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে

আন্তঃ ধর্মীয় বিবাহ আইন ও কুরআনের বিধান
পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আমলে পারিবারিক আইন সংস্কারের নামে ইসলাম বিরোধী আন্তঃ ধর্মীয় বিবাহকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে 'বিশেষ বিবাহ আইন ২০০৭' শীর্ষক একটি নতুন আইন ইতিমধ্যে সংসদে পাশ হয়ে আইনে রূপান্তরিত হয়েছে।

আল্লাহর বিধানেই নারী-পুরুষ একে অপরের জন্য বৈধ হয় এবংআল্লাহর বিধানেই হারাম হয়।
আন্তঃধর্মীয় বিবাহ আইনটি সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী একটি আইন।
কারণ আল্লাহ তাআলা শিরক ও কুফরি করে এমন নারী-পুরুষের সাথে মুসলমান নারী-পুরুষের বিবাহ হারাম করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
وَلَا تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلَا تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُوا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُولَئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ وَيُبَيِّنُ آَيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
(তরজমা) তেমারা মুশরিক নারীদের বিয়ে করোনা যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাসী যে কোনো মুশরিক নারীর চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও এই মুশরিক নারীকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। আর তোমরা (তোমাদের নারীদের) মুশরিক পুরুষদের কাছে বিয়ে দিয়ো না। যতক্ষণ নাতারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাস যেকোনো মুশরিক পুরুষের চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও সেই মুশরিক পুরুষকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। কারণ তারা (মুশরিকরা) সকলে তো জাহান্নামের দিকে ডাকে আর আল্লাহ তার বিধানের মাধ্যমে জান্নাত ও মাগফিরাতের দিকে আহবান করেন। তিনি তার আয়াত সমূহ মানুষের উপকারার্থে স্পষ্টভাবে বর্ণনাকরেন, যাতে তারা তা অনুসরণ করতে পারে।-সূরাবাকারা (২) : ২২১
অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لَا هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ.. وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ
(তরজমা) হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদের নিকট ঈমানদার নারীগণ হিজরত করে আসে তখন তোমরা তাদের পরীক্ষা কর। আল্লাহ অধিক জ্ঞাত তাদের ঈমানের ব্যাপারে। এরপর তোমরা যদি জানতে পার,তারা (হিজরত করে আসা নারীগণ) মুমিন তাহলে তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফিরিয়ে দিও না। তারা (মুমিন নারীগণ) কাফেরদের জন্য বৈধ নয় এবংকাফেরগণও তাদের (মুমিন নারীদের) জন্য বৈধ নয় ...। আর তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না।-সূরা মুমতাহিনা (৬০) : ১০
উক্ত আয়াতদ্বয় দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে,কোনো মুসলিম নারী কোনো অমুসলিম পুরুষের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। অনুরূপভাবে কোনো মুসলিম ব্যক্তি কোনো কাফের, মুশরিক নারীকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে পারে না। অর্থাৎ মুসলিম-অমুসলিমের কোনো বিবাহ বৈধ হতে পারে না।
শুধু বিবাহ-শাদি নয়, কাফির-মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব,প্রেম-প্রীতি ও ভালবাসায় জড়িয়ে পড়া এবং যে কোনো ধরনের সম্পর্ক স্থাপনকেও আল্লাহ তাআলা কঠোর ভাবে নিন্দা করেছেন এবং তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ করেছেন-
لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آَبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ
(তরজমা) যে জাতি আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে তাদের আপনি কখনো দেখবেন না ওই সব লোকদের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে, যারাআল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে মোকাবেলারত। হোকতারা তাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বেরাদর কিংবা আত্মীয়-স্বজন, ওদের অন্তরে আল্লাহ ঈমানকে বদ্ধমূল করেছেন এবং তাদেরকে তার রূহ দ্বারা শক্তিশালী করেছেন।-সূরা মুজাদালা (৫৮) : ২২

ইহুদী-খৃস্টান নারীদের বিবাহ করা
বাকি থাকল ইহুদী-খৃস্টানদের প্রসঙ্গ। এক্ষেত্রে কোনো মুসলিম মেয়েকে তাদের ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়া তো এমনই হারাম যেমন মুশরিক মেয়েকে বিয়ে করা হারাম। তবে আহলে কিতাবের কোনো মেয়েকে কোনো মুসলিম পুরুষের জন্য বিয়ে করার বিষয়ে সূরা মায়েদা(আয়াত : ৫) শর্তসাপেক্ষে ছাড়ের বিধান রয়েছে। কিন্তুএ বিধানটি অনেকে ভুল বুঝে কিংবা ভুল প্রয়োগ করে।তাই এ বিষয়ে আলকাউসার রবীউস সানী ’২৮ হি., মে’০৭ ঈ. সংখ্যায় (পৃষ্ঠা : ০৯) বিস্তারিত একটি ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে। তা এখানে উদ্ধৃত হল :
‘‘মুসলিম ছেলেদের জন্য আহলে কিতাব মেয়েদেরকে বিবাহ করার বিষয়ে ইসলামী শরীয়তের হুকুম কয়েকভাগে বিভক্ত এবং বিভিন্ন শর্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যার দাবীদার। তাই বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে একটি ভূমিকাসহ কিছুটা বিস্তারিতভাবে জবাব পেশ করা হল।

ভূমিকা
অনেক মানুষকে বলতে শোনা যায় ‘মুসলমান ছেলেদের জন্য আহলে কিতাব মহিলাদের বিবাহ করা বৈধ।’ এটিএকটি ব্যাখ্যা বিহীন অসম্পূর্ণ কথা। কেউ কেউ একথাশুনে মনে করেন যে, যে কোনো ইহুদী-খৃস্টান মহিলাকে বিবাহ করা বৈধ। অথচ এ ধারণা নিতান্তই ভুল।
প্রকাশ থাকে যে, এ উত্তরপত্রে তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হবে। (১) বিবাহ ‘সংগঠিত’ হওয়া (২) বিবাহ ‘না জায়েয’হওয়া (৩) বিবাহ ‘অনুত্তম’ হওয়া। এ তিনটি শব্দেরসংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিম্নরূপ :

বিবাহ ‘সংগঠিত’ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, এ কাজসম্পাদনের পর ওই দম্পতির স্বামী-স্ত্রী সুলভ সম্পর্ক ব্যভিচার বলে গণ্য হবে না এবং তাদের সন্তান বৈধ বলে গণ্য হবে।

আর বিবাহ ‘না জায়েয’ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, কাজটি করা শরীয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ ও গোনাহের কাজ এবং তা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

আর বিবাহ ‘অনুত্তম’ বলে বুঝানো হয়েছে কাজটিসম্পূর্ণ অবৈধ না হলেও তা পরিত্যাজ্য এবং তা থেকে বেঁচে থাকা উচিত।

জেনে রাখা আবশ্যক যে, কোনো ইহুদী-খৃস্টান মহিলার সাথে বিবাহ শরীয়তের দৃষ্টিতে বিবাহ বলে গণ্য হওয়ার জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত রয়েছে। এদুটি শর্তের কোনোএকটি না পাওয়া গেলে সেটি বিবাহ বলেই গণ্য হবে না; বরং যিনা ও ব্যভিচার সাব্যস্ত হবে। তবে উভয় শর্ত পাওয়া গেলেই যে তাদেরকে বিবাহ করা বিনা দ্বিধায় নিঃশর্ত জায়েয ও বৈধ হয়ে যাবে বিষয়টি এমনও নয়;বরং বিবাহের পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বেই আরও কয়েকটি শর্তের উপস্থিতির ব্যাপারে আশ্বস্ত হওয়া আবশ্যক। যদি ওই শর্তগুলো না পাওয়া যায় তবে সেক্ষেত্রেও বিবাহ জায়েয হবে না। এর পরের কথা হল,এই শর্তগুলোও যথাযথ বিদ্যমান থাকলে বিবাহ তোজায়েয হয়ে যাবে, কিন্তু এ কাজ যে অবশ্যই মাকরূহ হবে তা তো বলাই বাহুল্য। ইসলামী শরীয়তে যেখানে মুসলিম নারীকে বিবাহ করার ক্ষেত্রেও নামাযী ওশরীয়তের অনুসারী নারীকে পছন্দ ও অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে সেখানে যে মহিলা ইসলামের কালিমাকেই মানে না (যদিও সে আহলে কিতাব হয়ে থাকুক এবং বিবাহ সহীহ হওয়ার নির্ধারিত শর্তসমূহও বিদ্যমান থাকুক) তাকে বিবাহ করা কি আদৌ পছন্দনীয় হতে পারে?এখানে ভুল বোঝাবুঝির মূল কারণ এই যে, প্রধান দুইশর্ত সাপেক্ষে আহলে কিতাব মহিলার সঙ্গে বিবাহ শুদ্ধ হওয়াকেই জায়েয হওয়া বলে মনে করা হয়। অথচ বিবাহ শুদ্ধ হলেই জায়েয হয় না; বরং জায়েয হওয়ারজন্য ভিন্ন শর্ত রয়েছে। সেদিকে লক্ষ করা হয় না।এরপর বিবাহ জায়েয হওয়ার শর্তাবলি বিদ্যমান থাকা অবস্থায় যে বিবাহ সম্পন্ন হয়, তাকে মাকরূহ বিহীন বিবাহ ধারণা করা হয়ে থাকে; অথচ এ ধারণা সহীহ নয়। এজন্য নিম্নে আহলে কিতাব মহিলাদের বিবাহকরা সম্পর্কিত ইসলামের নির্দেশনা সমূহ তিনটি স্তরে কিছুটা বিশ্লেষণের সাথে তুলে ধরা হল। বিষয়টি যথাযথ ভাবে বুঝে নেওয়া আবশ্যক।

এক. বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলি
প্রথমেই জানা দরকার যে, এ যুগের অধিকাংশ ইহুদী ওখৃস্টান আহলে কিতাব নাম ধারীরা আদম শুমারীতে ওই দুই ধর্মের লোক বলে সরকারি ভাবে রেজিষ্ট্রিকৃত হলেও মূলত তারা কোনো আসমানী কিতাব বা ধর্মে বিশ্বাসীনয়; বরং ঘোষিত বা অঘোষিত ভাবে জড়বাদী ওবস্ত্ত বাদী নাস্তিকই বটে। তাই কোনো নারীর শুধু সরকারী খাতায় ধর্মাবলম্বী বলে নিবন্ধিত হওয়া কিংবা ইহুদী বা খৃস্টান নামধারী হওয়াই তার সাথে মুসলমান পুরুষের বিবাহ সহীহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়; বরংবিবাহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত শর্তসমূহ পূর্বে যাচাইকরে নিতে হবে।

(১) মেয়েটি বস্ত্ত বাদী নাস্তিক না হতে হবে; বরং প্রকৃত অর্থে ইহুদী বা নাসারা তথা আহলে কিতাব হতে হবে। এজন্য তার মধ্যে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উপস্থিতি জরুরি।(ক) আল্লাহ তাআলার সত্তা ও অস্তিত্ব স্বীকার করা। (খ)ইহুদী হলে মুসা আ. ও তাওরাতের উপর আর খৃস্টানহলে ঈসা আ. ও ইঞ্জিলের উপর ঈমান থাকা।

(২) মেয়েটি পূর্ব থেকেই ইহুদী বা খৃস্টান ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে। মুরতাদ, অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে ইহুদীবা খৃস্টান হয়েছে এমন না হতে হবে। তাই কোনোমুরতাদের ইহুদী-খৃস্টান মেয়ের সাথেও মুসলমানপূরুষের বিবাহ সংগঠিত হওয়ার সুযোগ নেই।

এসব শর্ত কোনো ইহুদী বা খৃস্টান মেয়ের মধ্যে পাওয়াগেলে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী তাকে বিয়ে করলে বিবাহ শুদ্ধ বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ এ সকল শর্ত সাপেক্ষে বিবাহের আকদ করলে তাদের একত্রে থাকা ব্যভিচার হবে না; বরং তাদের মেলামেশা বৈধ ধরা হবে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, কেবল এ শর্তগুলো পাওয়াগেলেই তাদেরকে বিবাহ করা জায়েয তথা নিস্পাপ কাজ বলে গণ্য হবে; বরং সে জন্য দরকার আরও কয়েকটি শর্তের উপস্থিতি। যা পরবর্তী ধাপে বর্ণনা করাহচ্ছে। -আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩২৩-৩২৬;তাফসীরে রূহুল মাআনী ৪/৬৪; ফাতহুল কাদীর৩/১৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৫, ৪/২৫৫-২৫৬;বাদায়েউস্ সানায়ে ৬/১২৫-১২৬; বুহুস ১/৪১৫;তাফসীরে মাজহারী ৩/৪২

দুই.
বিবাহ জায়েয হওয়ার শর্তাবলি
(১) ইহুদী-খৃস্টান মেয়েকে বিবাহের আগে এই বিষয়েপ্রবল আস্থা থাকতে হবে যে, এই বিবাহে স্বামীর দ্বীন-ধর্মের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই; বরং এই বিবাহের পরও সে ঈমান ও দ্বীনের উপর অটল থাকতে পারবে ইনশাআল্লাহ।

(২) এই ব্যাপারেও নিশ্চিত ধারণা ও আস্থা থাকতে হবে যে, এই দম্পিতির যে সন্তানাদি জন্মগ্রহণ করবে (মা আহলে কিতাব হওয়ার কারণে) তাদের দ্বীন-ঈমান রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো বাধা শিক্ষা-দীক্ষা অনুযায়ী জীবন কাটাতে পারবে। পুরুষ অথবা তার ভবিষ্যত সন্তানদের ক্ষেত্রে উক্ত বিষয়ে কোনো আশঙ্কা থাকলে বিবাহ জায়েয হবে না।

(৩) বিবাহের আগে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে, যে রাষ্ট্রের মহিলাকে বিবাহ করার ইচ্ছা করছে সে রাষ্ট্রে সন্তানদেরকে মায়ের ধর্মের অনুসারী গণ্য করার আইন রয়েছে কি না। অর্থাৎ ‘মা অমুসলিম হলে সন্তানও অমুসলিম ধর্তব্য হবে’ এরকম আইন থাকলে সেখানে থেকে ওই মহিলাকে বিবাহ করা জায়েয হবে না।

(৪) তালাক বা স্বামীর ইন্তেকালের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে সন্তানরা ধর্মের দিক থেকে মায়ের অনুসারী গণ্য হবে এবং স্বামী বা স্বামীর ওয়ারিশরা তাদের নিতে পারবে না-এই ধরনের কোনো আইন যেদেশে রয়েছে সে দেশে অবস্থিত কোনো আহলে কিতাব মহিলাকেও বিবাহ করা জায়েয হবে না।

(৫) যদি আলামত-প্রমাণের মাধ্যমে স্পষ্টত বোঝা যায়যে, এই বিবাহের কারণে ইসলামী রাষ্ট্র বা মুসলমানদের কোনো ক্ষতি হবে তাহলে এ বিবাহ থেকে দূরে থাকাআবশ্যক।
উপরোক্ত শর্তগুলোর দিকে সূরা মায়েদার ৫নং আয়াতের শেষাংশে ইঙ্গিত রয়েছে। বিধর্মী রাষ্ট্রের ইহুদী-খৃস্টানদের মধ্যে যেহেতু সাধারণত উপরোক্তশর্তগুলো পাওয়া যায় না তাই ফুকাহায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই ফতোয়া দিয়েছেন যে, বিধর্মী রাষ্ট্রের কোনো আহলে কিতাব মহিলাকে বিবাহ করা মাকরূহে তাহরীমী; তথা না জায়েয ও গোনাহের কাজ। কোনো আহলে কিতাব মহিলা যদি ইসলামী রাষ্ট্রের অধিবাসী হয়ে থাকে এবং উপরোক্ত শর্তগুলো পরিপূর্ণভাবেপাওয়া যায় তাহলে বিবাহ যদিও সংঘটিত হয়ে যাবে কিন্তু তা হবে খুবই অনুত্তম কাজ। উপরোক্ত আলোচনার স্বপক্ষে কিছু নির্ভরযোগ্য দলীল প্রামাণ নিম্নে পেশ করা হল,
قال ابن عباس : لا يحل نساء أهل الكتاب إذا كانوا حربا.
প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা.বলেন, ‘আহলে কিতাব মহিলাগণ ‘হারবী’ তথা কাফের রাষ্ট্রের অধিবাসিনী হলে তাদের সাথে বিবাহ বন্ধন হালাল নয়।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস :১৬৪৩১

وتكره كتابية الحربية إجماعا، لانتفاح باب الفتنة من إمكان التعلق المستدعي للمقام معها في دار الحرب، و تعريض الولد على التخلق بأخلاف أهل الكفر.
সুপ্রসিদ্ধ ফক্বীহ আল্লামা ইবনে হুমাম রহ. (মৃত : ৮৬১হি.) বলেন, কাফের রাষ্ট্রের আহলে কিতাব মহিলাকে বিয়ে করা ফিকাহবিদদের সর্বসম্মতি ক্রমে মাকরূহে(তাহরীমী বা না জায়েয)। কারণ স্বামীকে কাফের রাষ্ট্রেতার সাথে বসবাস করতে হবে। ফলে সকল প্রকার ফিতনার দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যাবে এবং এতে সন্তানদেরকে কাফেরদের সমাজে তাদের মতো করে বেড়ে উঠতে বাধ্য করা হবে।-ফাতহুল কাদীর ৩/১৩৫

সুপ্রসিদ্ধ ফকীহ আল্লামা দারদীর রহ. বলেন, কাফের রাষ্ট্রের আহলে কিতাব মেয়েকে বিয়ে করা আরও কঠিন ভাবে নিন্দনীয়। কারণ মুসলিম রাষ্ট্রের আহলে কিতাব মহিলার চেয়ে এদের ক্ষমতা অনেক বেশিথাকে। ফলে মহিলাটি সন্তানদেরকে স্বীয় ধর্মের উপর লালিত পালিত করতে থাকবে এবং সন্তানের পিতাকেএ ব্যাপারে সে কোনো পরওয়াই করবে না।-আশশারহুস সাগীর ১/৪০৬

বিখ্যাত ফকীহ আল্লামা শারবীনী রহ. বলেন, কিন্তু যেসকল আহলে কিতাব মহিলা কাফের রাষ্ট্রে থাকে  তাদেরকে বিবাহ করা মাকরূহ (তাহরীমী)। তদ্রূপবি শুদ্ধ মতানুযায়ী মুসলমান দেশে বসবাস কারিনী আহলে কিতাব মহিলাকে বিয়ে করা দোষনীয়; ফিতনার আশঙ্কার কারণে। কিন্তু মুসলিম রাষ্ট্রের চেয়ে কাফের রাষ্ট্রের অধিবাসিনীকে বিয়ে করা অধিক গর্হিত কাজ।-মুগনীল মুহতাজ ৩/১৮৭



জামেয়া আজহারের প্রখ্যাত শায়খ আব্দুল্লাহ আলগুমারী রহ. বলেন, কাফের রাষ্ট্রের আহলে কিতাবমহিলাদেরকে বিয়ে করার বড় একটি খারাবী হল,সন্তানাদি মার মতোই খৃস্টান হয়ে যায়। কারণ পিতারমৃত্যু ঘটলে মা নিজের ধর্মের অনুসারী করেসন্তানদেরকে লালন করতে থাকে। আর যদি স্বামীতালাক দিয়ে দেয় তাহলে রাষ্ট্রীয় আইনে স্বামী সন্তাননিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায় না। ফলে সন্তানরা মারসাথে থেকে তার ধর্মেই দিক্ষিত হয়।-দফউশ্ শক ১৯

এরপর তিনি (শায়খ আব্দুল্লাহ) বেশ কিছু বাস্তবঘটনার উদাহরণ নিয়ে এসেছেন, যেগুলোতে দেখাগেছে যে, সন্তানরাও তাদের মায়ের ধর্মাবলম্বী হয়েই বড়হয়ে উঠেছে ও আহলে কিতাব হয়ে গেছে।
আরও দ্রষ্টব্য : আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩২৬;আহকামুল কুরআন, থানভী ১/৪০৪; তাফসীরেমাজহারী ৩/৪১; তাতার খানিয়া ৩/৭

তিন.
মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারিনী ইহুদী-খৃস্টানকে বিবাহের হুকুম
আহলে কিতাব নারী যদি মুসলমান রাষ্ট্রেবসবাস কারিনী হয় এবং তাদেরকে বিয়ে করলে স্বামী বা সন্তান বিধর্মী হওয়ার আশঙ্কা নাও থাকে তবুও সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদীন ও চার মাযহাবের ফেকাহ বিদগণ ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাদেরকে বিয়ে করা মাকরূহ বলেছেন।

সাহাবী হুযায়ফা রা. এক ইহুদী মহিলাকে বিয়ে করে ছিলেন। হযরত উমর রা. পত্র মারফত ওই মেয়েকে ছেড়ে দেওয়ার পারমর্শ দিলেন। তখন তিনি লিখে পাঠালেন, যদি তাকে বিয়ে করা হারাম হয়ে থাকে তাহলে আমি ছেড়ে দিব। উত্তরে হযরত উমর রা; জানালেন,আমি হারাম হওয়ার কথা বলি না, তবে আমার আশঙ্কা হয় এভাবে তাদের ব্যভিচারিনী দেরকেও বিবাহ করাশুরু হবে।-ইবনে আবি শাইবা, হা : ১৬৪১৭

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘হুযায়ফা রা. হযরত উমর রা.-এর শাসন আমলে এক ইহুদী মহিলাকে বিয়ে করেন। তখন উমর রা. তাকে বললেন, ‘তুমি ওই মেয়েকে তালাক দিয়ে দাও। কারণ সে হল অগ্নিকুন্ড।’-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১০০৫৭
এ ঘটনার কিছু দিন পর হযরত হুযায়ফা রা. ওইমেয়েকে তালাক দিয়ে দেন।
হযরত ত্বলহা রা. জনৈক ইহুদী মহিলাকে বিয়ে করলেখলিফা হযরত উমর রা. তাকে তালাক দিতে বাধ্যকরেন।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১০০৫৯

হযরত উমর রা.-এর যুগ স্বর্ণযুগের অন্তুর্ভুক্ত। তার প্রশাসনের অধীনে বসবাস কারিনী আহলে কিতাব মহিলার বিয়ের ব্যাপারে যদি তার এ অভিমত হয়ে থাকে তবে বর্তমান যুগে ইহুদী-খৃস্টান নারীদের অবস্থা দেখলে তিনি কি হুকুম দিতেন তা সহজেই অনুমেয়।

হযরত হাসান রা.কে একদা আহলে কিতাব মহিলাকে বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি এর জবাবে বলে ছিলেন, আহলে কিতাব মহিলাকে কেন বিবাহ করতে হবে? অথচ আল্লাহ তাআলা প্রচুর মুসলমান রমণী রেখেছেন।-রুহুল মাআনী ৪/৬৬

আল্লামা জাস্সাস রহ. তাদের নারীকে বিয়ে করা মাকরূহ হওয়ার আরেকটি কারণও বর্ণনা করেছেন যে,আল্লাহ তাআলার ইরশাদ (তরজমা) যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ কারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না।-সূরা আলমুজাদালাহ ২২
আর বিবাহ যে ভালোবাসা সৃষ্টি করে এটা তো বলাইবাহুল্য।-আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩২৬

এছাড়াও চার মাযহাবের ফকীহগণ ঐকমত্যের ভিত্তিতে মুসলিম দেশে বসবাসকারিনী আহলে কিতাব মহিলাদেরকেও বিয়ে করা মাকরূহ তথা অনুত্তম বলেছেন।-আদদুররুল মুখতার ৩/৪৫; ফাতহুল কাদীর৩/১৩২-১৩৬; আলমুগনী ৬/৫৯০; আলমুফাস্সাল৭/১৮-১৯; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩২৪;আহকামুল কুরআন থানভী ১/৪০৫

পুরো বিষয়টির জন্য আরও দেখা যেতে পারে :তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৩০; তাফসীরে কুরতুবী৩/৫১; মাআরিফুল কুরআন ৩/৬০-৬৪; আলমাবসুত৪/২১০; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১১০; আল বাহরুররায়েক ৩/১০৩; আননাহরুল ফায়েক ২/১৯৪; ফাতহুলকাদীর ৩/১৩৫-১৩৬; আলমুফাস্সাল ৭/১২-২৪;দাফউশ্শাক্কি ওয়াল ইরতিয়াব, আব্দুল্লাহ আলগুমারীরহ.।’’



বিবাহ সম্পর্কে অনেক সুন্দর একটি আলোচনা

রবিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে
আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
 

তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন তারা ‘ইবাদাতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ্‌ ক্ষমা ক’রে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য হতে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সলাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সবসময় সওম পালন করব এবং কক্ষনো বাদ দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা কি ঐ সব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহ্‌র কসম! আমি আল্লাহ্‌কে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সলাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি। [১] সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়। [২] [মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০১, আহমাদ ১৩৫৩৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৩)
ফুটনোটঃ
[১] যে কোন ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে ‘ইবাদাতের সময়, পরিমাণ, স্থান, অবস্থা ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবেগ তাড়িত হয়ে ফারযের মধ্যে যেমন কম বেশি করা যাবে না; তেমনি সুন্নাতের ক্ষেত্রেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশ বা তার ‘আমালের পরিবর্তন করা যাবে না। নফল ‘ইবাদাতেও কারো সময় থাকলে বা নিজের খেয়াল খুশি মত করা ইসলাম সমর্থিত নয়। ইসলামে সলাত, সওমের পাশাপাশি ঘুমানো, বিয়ে করা, বাণিজ্য করা ইত্যাদিও ‘ইবাদাতের মধ্যে গণ্য যদি তা সাওয়াবের আশায় এবং সঠিক নিয়মানুসারে পালন করা হয়।
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
[২] আল্লাহ তা’আলা মানুষকে যে প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও চাহিদা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে উপেক্ষা করে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়া তো দূরের কথা, মানুষ মানুষের স্তরেই থাকতে পারবে না। মানুষ অতিরিক্ত খাদ্য খেলে বা একেবারেই খাদ্য পরিত্যাগ করলে তার বেঁচে থাকা নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিবে। একাধারে সওম পালন করলেও একই অবস্থা দেখা দিবে। তাই আল্লাহর রসূল আমাদেরকে এমন শিক্ষা দিয়েছেন যাতে আমরা মানুষ হিসেবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক পন্থা অবলম্বন করলে দুর্ভোগ ও বিপর্যয় আসবে। খ্রীস্টান পাদ্রীদের অনুসৃত বৈরাগ্যবাদ ও দাম্পত্য জীবনের প্রতি লোক-দেখানো অনীহা তাদের অনেককেই যৌনাচারের ক্ষেত্রে পশুর স্তরে নামিয়ে দিয়েছে।
ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের একমাত্র বৈধ পন্থা হল বিবাহ। পরিবার গঠন, সংরক্ষণ ও বংশ-বিস্তারের জন্যই বিয়ে ছাড়া আর কোন বিধি সম্মত পথ নেই। এর মাধ্যমেই ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন পবিত্র ও কলুষমুক্ত হয়ে নৈতিকতার সর্বোচ্চ শিখরে উন্নীত হতে পারে। এ জন্যই ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করলে আল্লাহ্‌র চিরাচরিত বিধান এবং নবী - এর সুন্নাত হিসেবে বিয়ে করা ফরয আর এ অবস্থায় অর্থনৈতিক দিক থেকে সমর্থ না হলে সওম পালন করার বিধান দেয়া হয়েছে। আবার শারীরিক দিক থেকে সমর্থ হলে আর ব্যভিচারে লিপ্ত হবার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে করা মুসতাহাব। আর জৈবিক চাহিদা শূন্য হলে বিয়ে করা মুবাহ্‌। আবার এ অবস্থায় যদি মহিলার পক্ষ থেকে তার বিয়ের উদ্দেশ্যই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এরূপ স্বামীর শারীরিকভাবে সমর্থ নারীকে বিয়ে করা মাকরূহ।
কিন্তু যদি কেউ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রসূলের সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবিশ্বাসের কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।




ডাক্তার জাহাঙ্গির কবির স্যার এর ডায়েট চার্ট

রবিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২০ 0
বার দেখা হয়েছে



সর্ব প্রথম ডায়েবেটিস এর ঔষধ খাওয়া বন্ধ করতে হবে, তবে প্রেসারের ঔষধ খেতে পারবেন , তারপর বিসস্মিল্লাহ বলে কার্যক্রম শুরু করবেন ।
সময়
স্বাভাবিক দিন
রোজার দিন
সকাল ৫.০ টা (কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে)
ফজরের নামায পরে হাটতে বের হওয়া , ১ মিনিট অনেক জোড়ে দৌড় দিবেন যেন হার্ট বিট বেড়ে যায় , ১ মিনিট বিস্রাম নিবেন ,এভাবে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন, এই ব্যায়াম কে হীট এক্সসারসাইজ বলে ।
সেহেরীতে শুধু পানি , বেশি ইচ্ছা করলে একটা ডিম  বা একটা মাছের টুকরা খাওয়া যেতে পারে ।
ফজরের নামায পরে হাটতে বের হওয়া , ১ মিনিট অনেক জোড়ে দৌড় দিবেন যেন হার্ট বিট বেড়ে যায় , ১ মিনিট বিস্রাম নিবেন ,এভাবে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন, এই ব্যায়াম কে হীট এক্সসারসাইজ বলে ।
সকাল ৭.০ টা
১ গ্লাস লেবু পানি (হাল্কা কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খান)

সকাল ১০.০ টা
এক গ্লাস পানিতে ১ চামুচ আপেল /নারিকেল সিডের ভিনেগার উইথ দা মাদার  মিশিয়ে খেতে হবে,২ টি ডিম খাবেন , (ঘি দিয়ে , টমেটো  ভাজি করা/ সিদ্ধ )।

দুপুর ২.০টা
২-৩ টুকরা চর্বি যুক্ত মাছ তথা সামুদ্রিক মাছ , শবুজ শাক সবজি পরিমান মত , করলা ভাজি, শশা , দিনে ১ বার অথবা ২ বার হাল্কা লবন যুক্ত করে পানি পান করুন ।

বিকাল ৫.০টা
১ টা কচি ডাব , চিনি ও দুধ ছাড়া কফি, কফির সাথে মাখন বা নারিকেলের দুধ যুক্ত করতে পারেন,  মাখন দিয়ে বাদাম ভাজা খাবেন।
(রোজার দিন ইফতারের সময়)
১ টা কচি ডাব, চিনি ও দুধ ছাড়া কফি, কফির সাথে মাখন বা নারিকেলের দুধ যুক্ত করতে পারেন, মাখন দিয়ে বাদাম ভাজা খাবেন।
রাত ৮.০টা
২-৩ টুকরা চর্বি যুক্ত মাছ তথা সামুদ্রিক মাছ , শবুজ শাক সবজি পরিমান মত , করলা ভাজি, শশা ,  দেশি মুরগির মাংশ ২-৩ পিচ, হাল্কা লবন যুক্ত করে পানি পান করুন ।
২-৩ টুকরা চর্বি যুক্ত মাছ তথা সামুদ্রিক মাছ , শবুজ শাক সবজি পরিমান মত , করলা ভাজি, শশা, দেশি মুরগির মাংশ ২-৩ পিচ, হাল্কা লবন যুক্ত করে পানি পান করুন ।
রাত ১০.০ টা
রাত ৮.০ টার পর সকল প্রকার ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করবেন  এবং ঘুমিয়ে যেতে হবে ।
রাত ৮.০ টার পর সকল প্রকার ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করবেন  এবং ঘুমিয়ে যেতে হবে ।



যা যা খাবেন না  বা  খেতে পারবেন  না ।

  • ·         ভাত( শর্করা)
  • ·         রুটি (শর্করা)
  • ·         আলু (শর্করা)
  • ·         যে কোন প্রকার গোস্ত ( আপাতত ওজন , প্রেসার, ডায়াবেটিস স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত )
  • ·         যে কন প্রকার ফল ( সুগার আছে , স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত খাবেন না )
  • ·         দুধ ( দুধ থেকে উতপন্ন  ঘি , মাখন খেতে পারবেন )
  • ·         যে কন প্রকার সয়াবিন তেল
রান্নায় যা যা ব্যবহার করবেন  

  • ·         এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল তেল ।
  • ·         সরিষার তেল ।
  • ·         ঘি ।
  • ·         মাখন ।
  • ·         নারিকেল তেল ।
এইরকম করে ৭ দিন চলতে পারলে ইনশাআল্লাহ শরিরের তাপমাত্রা কমে যাবে , খুদা কম লাগবে , ওজন কমে যাবে । এবং শরীর তখন নিজে নিজে ভিতরের চর্বি / ফ্যাট গলিয়ে নিজের শক্তি অর্জনে সক্ষম  হবে ।
 ২-৩ দিন পর সকালের খাবার বন্ধ করতে হবে । সকালের নাস্তা দুপুর ১২.০ টায় খাবেন । আর ২ -৩ দিন পর দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮.০ টা  তথা ৬ ঘন্টার ভিতর খাওয়া দাওয়া করবেন । আর এই সময়ের ভিতর পানি , গ্রীন  টি , কফি খেতে পারেন । মাথা ঝিম ঝিম করলে মাথা ঘুরালে পানিতে লবন মিশিয়ে খাবেন ।
সর্বোত্তম হচ্ছে রোজা রাখা । সপ্তাহে ৫ দিন রোজা রাখা বাকি ২ দিন ওয়াটার ফাস্টিং করা তথা শারা দিন শুধু পানি খাওয়া যথা নিয়মে ইফতের ও রাতের খাবার খাওয়া ।







ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png