LIVE
Loading latest headlines...

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২০

সহীহ মুসলিম অধ্যায়ঃ ৬ মুসাফিরদের সালাত ও তার কসর ১৪৫৫ - ১৭২১


১.অধ্যায়ঃ
মুসাফিরদের সলাত এবং তার ক্বস্‌র (সংক্ষিপ্ত করা)

১৪৫৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ فُرِضَتِ الصَّلاَةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ فَأُقِرَّتْ صَلاَةُ السَّفَرِ وَزِيدَ فِي صَلاَةِ الْحَضَرِ ‏.‏

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী 'আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বাড়িতে কিংবা সফরে যে কোন অবস্থায় প্রথমে সলাত দু' দু' রাক‘আত করে ফর্‌জ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সফরের সলাত দু' রাক‘আত ঠিক রাখা হলেও বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাতের রাক‘আত সংখ্যা বৃদ্ধি করা দেয়া হয়েছে। (ই. ফা. ১৪৪০ , ই. সে. ১৪৫০)

[বিঃদ্রঃ হাদিস নং ১৪৫৫ দুইবার এসেছে, তাই প্রথমটি হাদিস নং ১৪৫৪ এর সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হল।]

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فَرَضَ اللَّهُ الصَّلاَةَ حِينَ فَرَضَهَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَتَمَّهَا فِي الْحَضَرِ فَأُقِرَّتْ صَلاَةُ السَّفَرِ عَلَى الْفَرِيضَةِ الأُولَى ‏.‏

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী 'আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সলাত ফরয করার সময় আল্লাহ তাআলা দু ' রাক‘আত করে ফরয করেছিলেন। তবে পরে বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাতে বৃদ্ধি করে পূর্নাঙ্গ করা হয়েছে এবং সফরকালীন সলাত পূর্বের মত দু' রাক‘আতই রাখা হয়েছে। (ই. ফা. ১৪৪১, ই. সে. ১৪৫১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৭
وَحَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ الصَّلاَةَ، أَوَّلَ مَا فُرِضَتْ رَكْعَتَيْنِ فَأُقِرَّتْ صَلاَةُ السَّفَرِ وَأُتِمَّتْ صَلاَةُ الْحَضَرِ ‏.‏ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَقُلْتُ لِعُرْوَةَ مَا بَالُ عَائِشَةَ تُتِمُّ فِي السَّفَرِ قَالَ إِنَّهَا تَأَوَّلَتْ كَمَا تَأَوَّلَ عُثْمَانُ ‏.‏

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

প্রথমে সলাত ফর্‌য হয়েছিল দু’ রাক‘আত করে। পরবর্তী সময়ে সফরকালীন সলাত দু’ রাক‘আত ঠিক রাখা হয়েছে কিন্ত বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাত পূর্ণাঙ্গ (অর্থাৎ চার রাক‘আত) করা হয়েছে।
বর্ণনাকারী যুহরী বলেছেনঃ আমি ‘উরওয়াহ্‌কে জিজ্ঞেস করলাম-তাহলে কী কারণে ‘আয়িশা (রাঃ) সফরকালীন সলাত পুরো আদায় করতেন? জবাবে ‘উরওয়াহ্‌ বললেনঃ ‘আয়িশাহ্‌ ‘উসমানের ব্যাখ্যার মতো এ হাদীসটির ব্যাখ্যা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৪২,ই.সে ১৪৫২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي عَمَّارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَابَيْهِ، عَنْ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، قَالَ قُلْتُ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ‏{‏ لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا، مِنَ الصَّلاَةِ إِنْ خِفْتُمْ أَنْ يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا‏}‏ فَقَدْ أَمِنَ النَّاسُ فَقَالَ عَجِبْتُ مِمَّا عَجِبْتَ مِنْهُ فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ صَدَقَةٌ تَصَدَّقَ اللَّهُ بِهَا عَلَيْكُمْ فَاقْبَلُوا صَدَقَتَهُ ‏"‏ ‏.‏

ইয়া’লা ইবনু উমাইয়্যাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ আমি ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাবকে জিজ্ঞেস করলাম যে,আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ “কাফিররা তোমাদেরকে কষ্ট দিবে এ আশঙ্কা থাকলে সলাত ক্বস্‌র করে আদায় করতে তোমাদের কোন দোষ হবে না”-(সূরাহ্‌ আন্‌ নিসা ৪:১০১)। কিন্ত এখন তো লোকেরা নিরাপত্তা লাভ করেছেন। (সুতরাং এখন ক্বস্‌র সলাত আদায় করার প্রয়োজন কী?) এ কথা শুনে ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব বললেনঃ তুমি যে কারনে বিস্মিত হয়েছ আমিও ঠিক একই কারণে বিস্মিত হয়েছিলাম (অর্থাৎ আমিও ক্বস্‌র সলাত আদায়ের কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছিলাম না)। তাই উক্ত বিষয়ে আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ এটি তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সদাক্বাহ্‌ বা দান। সুতরাং তোমরা তাঁর দেয়া সদাক্বাহ্‌ গ্রহণ কর। (ই.ফা. ১৪৪৩,ই.সে ১৪৫৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَابَيْهِ، عَنْ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، قَالَ قُلْتُ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ إِدْرِيسَ ‏.‏

ইয়া’লা ইবনু উমাইয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাবকে জিজ্ঞেস করলাম। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীস বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৪৪,ই.সে ১৪৫৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَأَبُو الرَّبِيعِ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ فَرَضَ اللَّهُ الصَّلاَةَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم فِي الْحَضَرِ أَرْبَعًا وَفِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ وَفِي الْخَوْفِ رَكْعَةً ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমাদের নাবীর জবানীতে আল্লাহ তা’আলা বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাত চার রাক‘আত, সফরের সলাত দু’ রাক‘আত এবং ভীতিকর অবস্থানকালীন সলাত এক রাক‘আত ফারয্‌ করেছেন। (ই.ফা. ১৪৪৫, ই.সে ১৪৫৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬১
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، جَمِيعًا عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مَالِكٍ، - قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا قَاسِمُ بْنُ مَالِكٍ الْمُزَنِيُّ، - حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ عَائِذٍ الطَّائِيُّ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ إِنَّ اللَّهَ فَرَضَ الصَّلاَةَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمُسَافِرِ رَكْعَتَيْنِ وَعَلَى الْمُقِيمِ أَرْبَعًا وَفِي الْخَوْفِ رَكْعَةً ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জবানীতে মুসাফিরের সলাত দু’ রাক‘আত, মুকীম বা বাড়ীতে অবস্থানকালীন সলাত চার রাক‘আত এবং ভীতিকর অবস্থায় সলাত এক রাক‘আত ফরয করেছেন। (ই.ফা. ১৪৪৬, ই.সে ১৪৫৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ مُوسَى بْنِ سَلَمَةَ الْهُذَلِيِّ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ كَيْفَ أُصَلِّي إِذَا كُنْتُ بِمَكَّةَ إِذَا لَمْ أُصَلِّ مَعَ الإِمَامِ ‏.‏ فَقَالَ رَكْعَتَيْنِ سُنَّةَ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

মূসা ইবনু সালামাহ্‌ আল হুযালী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি মাক্কায় অবস্থানকালে যদি ইমামের পিছনে সলাত আদায় না করি তাহলে কীভাবে সলাত আদায় করব। জবাবে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস বললেন, দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করবে। এটি আবুল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত। (ই.ফা. ১৪৪৭, ই.সে ১৪৫৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৩
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ مِنْهَالٍ الضَّرِيرُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا أَبِي جَمِيعًا، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ ‏.‏

ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানদে অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৪৮, ই.সে ১৪৫৭-ক)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৪
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِي طَرِيقِ مَكَّةَ - قَالَ - فَصَلَّى لَنَا الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ وَأَقْبَلْنَا مَعَهُ حَتَّى جَاءَ رَحْلَهُ وَجَلَسَ وَجَلَسْنَا مَعَهُ فَحَانَتْ مِنْهُ الْتِفَاتَةٌ نَحْوَ حَيْثُ صَلَّى فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ ‏.‏ قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا لأَتْمَمْتُ صَلاَتِي يَا ابْنَ أَخِي إِنِّي صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ ثُمَّ صَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ ‏{‏ لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ‏}‏ ‏.‏

‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি মাক্কার কোন একটি পথে ‘আসিম ইবনু ‘উমার-এর সাথে চলছিলাম। এ সময় তিনি আমাদের সাথে করে যুহরের সলাত আদায় করলেন এবং মাত্র দু’ রাক‘আত আদায় করলেন। তারপর তিনি তাঁর কাফিলার মধ্যে ফিরে আসলেন। আমরাও তাঁর সাথে ফিরে আসলাম। তিনি সেখানে বসে পড়লে আমরাও তাঁর সাথে বসে পড়লাম। এ সময় যে স্থানে তিনি সলাত আদায় করেছিলেন সে স্থানে তাঁর দৃষ্টি পড়লে কিছু সংখ্যক লোককে সেখানে দাঁড়ানো দেখতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা ওখানে কী করছে? আমি বললাম, তারা সুন্নাত পড়ছে। তিনি এ কথা শুনে বললেনঃ ভাতিজা, আমাদেরকে যদি সুন্নাত আদায় করতে হ’ত তাহলে আমি ফরয সলাত ও পূর্ণ আদায় করতাম। আমি সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে থেকে দেখেছি আমৃত্যু তিনি দু’ রাক’আতের অধিক আদায় করেননি। আমি সফরে আবূ বাক্‌রের সাথে থেকে দেখেছি আল্লাহ তাকে ওফাত দান না করা পর্যন্ত তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। আমি সফরে ‘উমারের সাথে দেখেছি তিনি দু’রাক‘আত সলাতই আদায় করেছেন। মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরনের উত্তম নমুনা রয়েছে”-(সূরাহ আল আহ্‌যাব ৩৩ : ২১)। (ই.ফা. ১৪৪৯,ই.সে ১৪৫৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، قَالَ مَرِضْتُ مَرَضًا فَجَاءَ ابْنُ عُمَرَ يَعُودُنِي قَالَ وَسَأَلْتُهُ عَنِ السُّبْحَةِ، فِي السَّفَرِ فَقَالَ صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي السَّفَرِ فَمَا رَأَيْتُهُ يُسَبِّحُ وَلَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا لأَتْمَمْتُ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى ‏{‏ لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ‏}‏

হাফস্‌ ইবনু ‘আসিম থেকে (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি সাংঘাতিকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লাম। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার আমাকে দেখতে আসলেন। সে সময় আমি তাঁকে সফরে সুন্নাত সলাত আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন- আমি সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গী হয়েছি। কিন্ত কখনো তাঁকে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতে দেখেনি। আর আমি যদি সফরে সুন্নাত সলাত আদায় করতাম তাহলে ফরয সলাত ও পূর্ণ করে আদায় করতাম। কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ ‘‘আল্লাহর রসূলের জীবনে তোমাদের অনুসরণের জন্য উত্তম নীতিমালা রয়েছে”-(সূরাহ্‌ আল আহ্‌যাব ৩৩ : ২১)। (ই.ফা. ১৪৫০, ই.সে ১৪৫৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৬
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، وَأَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، وَهُوَ ابْنُ زَيْدٍ ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، كِلاَهُمَا عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى الظُّهْرَ بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا وَصَلَّى الْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হাজ্জের সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহ্‌ থেকে যুহরের সলাত চার রাক‘আত আদায় করে রওয়ানা হয়েছিলেন এবং যুল-হুলায়ফাতে পৌছে ‘আস্‌রের সলাত দু’ রাক‘আত আদায় করেছিলেন। (ই.ফা. ১৪৫১, ই.সে ১৪৬০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ مَيْسَرَةَ، سَمِعَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا وَصَلَّيْتُ مَعَهُ الْعَصْرَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সফরে আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাদীনায় যুহরের সলাত চার রাক‘আত আদায় করে বের হয়েছি এবং যুল-হুলায়ফাতে পৌছে তাঁর সাথে ‘আস্‌রের সলাত মাত্র দু’ রাক‘আত আদায় করেছি। (ই.ফা. ১৪৫২, ই.সে ১৪৬১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৮
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، كِلاَهُمَا عَنْ غُنْدَرٍ، - قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، غُنْدَرٌ - عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَزِيدَ الْهُنَائِيِّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ قَصْرِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا خَرَجَ مَسِيرَةَ ثَلاَثَةِ أَمْيَالٍ أَوْ ثَلاَثَةِ فَرَاسِخَ - شُعْبَةُ الشَّاكُّ - صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ‏.‏

ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু ইয়াযীদ আল হুনায়ী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে সফররত অবস্থায় সলাতে ক্কস্‌র করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তিন মাইল অথবা তিন ফারসাখ দূরত্বের সফরে বের হতেন তখনই দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু ইয়াযীদ আল হুনায়ী তিন মাইল দূরত্বের কথা বলেছেন, না তিন ফারসাখ দূরত্বের কথা বলেছেন তাতে শু’বার সন্দেহ রয়েছে। (ই.ফা. ১৪৫৩, ই.সে ১৪৬২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৯
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ مَهْدِيٍّ، - قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، - حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُمَيْرٍ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ شُرَحْبِيلَ بْنِ السِّمْطِ إِلَى قَرْيَةٍ عَلَى رَأْسِ سَبْعَةَ عَشَرَ أَوْ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ مِيلاً فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ‏.‏ فَقُلْتُ لَهُ فَقَالَ رَأَيْتُ عُمَرَ صَلَّى بِذِي الْحُلَيْفَةِ رَكْعَتَيْنِ فَقُلْتُ لَهُ فَقَالَ إِنَّمَا أَفْعَلُ كَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُ ‏.‏

জুবায়র ইবনু নুফায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুরাহ্‌বীল ইবনু আস্‌ সিম্‌ত্ব (রাঃ)-এর সাথে সতের বা আঠার মাইল দূরবর্তী এক গ্রামে গেলাম। তিনি সেখানে (চার রাক’আতের পরিবর্তে) দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। আমি তাঁকে কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেলনঃ আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যা করতে দেখেছি তাই করে থাকি। (ই.ফা. ১৪৫৪, ই.সে ১৪৬৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭০
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ وَقَالَ عَنِ ابْنِ السِّمْطِ، وَلَمْ يُسَمِّ شُرَحْبِيلَ وَقَالَ إِنَّهُ أَتَى أَرْضًا يُقَالُ لَهَا دَوْمِينُ مِنْ حِمْصَ عَلَى رَأْسِ ثَمَانِيَةَ عَشَرَ مِيلاً ‏.‏

শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

শু’বাহ্ (রহঃ) এ সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি (শু’বাহ্) শুরাহবীল না বলে মুহাম্মাদ ইবনুস্ সিম্ত্ব (রহঃ) উল্লেখ করেছেন। তিনি তার বর্ণিত হাদীসে এতটুকু কথা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তিনি হিম্স-এর আঠার মাইল দূরবর্তী “দূমীন” নামে পরিচিত একটি স্থানে উপনীত হলেন। (ই.ফা. ১৪৫৫, ই.সে ১৪৬৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ حَتَّى رَجَعَ ‏.‏ قُلْتُ كَمْ أَقَامَ بِمَكَّةَ قَالَ عَشْرًا ‏.‏

আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (বিদায় হাজ্জের সফরে) আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাদীনাহ্‌ থেকে মাক্কার দিকে বের হলাম। (এ সফরে) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সব ওয়াক্তের সলাতই দু’ রাক‘আত করে আদায় করেছেন এবং মাদীনায় ফিরে এসেছেন। বর্ণনাকারী ইসহাক্ব ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া বর্ণনা করেছেন- আমি আনাস ইবনু মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি মাক্কায় ক’দিন পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন? জবাবে আনাস ইবনু মালিক বললেনঃ দশদিন। (ই.ফা. ১৪৫৬, ই.সে ১৪৬৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭২
وَحَدَّثَنَاهُ قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ هُشَيْمٍ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হুশায়ম বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৫৭,ই.সে ১৪৬৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস


১৪৭৩
وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ خَرَجْنَا مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى الْحَجِّ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ مِثْلَهُ ‏.

ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু আবূ ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমরা মাদীনাহ্‌ থেকে হাজ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম …। এরপর তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। (ই.ফা. ১৪৫৮, ই.সে ১৪৬৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৪
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، جَمِيعًا عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ وَلَمْ يَذْكُرِ الْحَجَّ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে তিনি হাজ্জের কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৪৫৯, ই.সে ১৪৬৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২. অধ্যায়ঃ
মিনায় সলাত ক্বস্‌র করা

১৪৭৫
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، وَهُوَ ابْنُ الْحَارِثِ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى صَلاَةَ الْمُسَافِرِ بِمِنًى وَغَيْرِهِ رَكْعَتَيْنِ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ رَكْعَتَيْنِ صَدْرًا مِنْ خِلاَفَتِهِ ثُمَّ أَتَمَّهَا أَرْبَعًا ‏.

সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) তাঁর পিতা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার-এর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি মিনা এবং অন্যান্য স্থানে মুসাফিরের মতো দু’ রাক‘আত করে সলাত আদায় করেছিলেন। আর আবূ বকর, ‘উমার তাদের খিলাফাত যুগে এবং ‘উসামান তাঁর খিলাফাতের প্রথম দিকে সফরকালের সলাত দু’ রাক‘আত করে আদায় করেছেন এবং পরবর্তী সময়ে পূর্ণ চার রাক‘আত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৪৬০,ই.সে ১৪৬৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৬
وَحَدَّثَنَاهُ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، ح وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، جَمِيعًا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ بِمِنًى ‏.‏ وَلَمْ يَقُلْ وَغَيْرِهِ ‏.

যুহ্‌রী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এতে ‘মিনাতে' কথাটি উল্লেখ করেছেন। তবে ‘অন্যান্য স্থানে’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৪৬১, ই.সে ১৪৭০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ وَأَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ وَعُمَرُ بَعْدَ أَبِي بَكْرٍ وَعُثْمَانُ صَدْرًا مِنْ خِلاَفَتِهِ ثُمَّ إِنَّ عُثْمَانَ صَلَّى بَعْدُ أَرْبَعًا ‏.‏ فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا صَلَّى مَعَ الإِمَامِ صَلَّى أَرْبَعًا وَإِذَا صَلاَّهَا وَحْدَهُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (বিদায় হাজ্জের সময়) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিনাতে (ফরয সলাত চার রাক’আতের পরিবর্তে) দু’ রাক‘আত আদায় করেছেন। পরে আবূ বাক্‌র তাঁর খিলাফাতকালে তাই করেছেন। আবূ বাক্‌রের পর ‘উমারও তাই করেছেন। কিন্ত পরে চার রাক‘আত আদায় করেছেন। সুতরাং, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইমামের পিছনে সলাত আদায় করলে চার রাক‘আত আদায় করতেন। কিন্ত যখন তিনি একাকী সলাত আদায় করতেন দু’ রাক‘আত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৬২, ই.সে ১৪৭১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৮
وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ الْمُثَنَّى، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَهُوَ الْقَطَّانُ ح وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ ‏.

’উবায়দুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৬৩, ই.সে ১৪৭২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৯
وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، سَمِعَ حَفْصَ بْنَ عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى صَلاَةَ الْمُسَافِرِ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ ثَمَانِيَ سِنِينَ أَوْ قَالَ سِتَّ سِنِينَ ‏.‏ قَالَ حَفْصٌ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُصَلِّي بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَأْتِي فِرَاشَهُ ‏.‏ فَقُلْتُ أَىْ عَمِّ لَوْ صَلَّيْتَ بَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ ‏.‏ قَالَ لَوْ فَعَلْتُ لأَتْمَمْتُ الصَّلاَةَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজ্জের সময় মিনাতে অবস্থানকালে মুসাফিরের ন্যায় দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। অতঃপর আবূ বাক্‌র, ‘উমার এবং ‘উসমানও তাঁদের খিলাফাতকালে আট বছর অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহে) ছয় বছর যাবৎ তাই করেছেন। হাফস্‌ বর্ণনা করেছেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার মিনাতে অবস্থানকালে সলাত দু’ রাক‘আত আদায় করতেন এবং পরে তাঁর বিছানায় চলে আসলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা, আপনি আরও দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলে ভাল হ’ত। তিনি বললেনঃ আমার যদি এরূপ করতে হ’ত তাহলে আমি ফরয সলাত পূর্নাঙ্গ করে (চার রাক‘আত) আদায় করতাম। (ই.ফা. ১৪৬৪, ই.সে ১৪৭৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮০
وَحَدَّثَنَاهُ يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَقُولاَ فِي الْحَدِيثِ بِمِنًى ‏.‏ وَلَكِنْ قَالاَ صَلَّى فِي السَّفَرِ ‏.

শু‘বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণিত। তবে তারা তাঁদের বর্ণিত হাদীসে মিনাতে অবস্থাকালে কথাটি উল্লেখ করেননি। বরং বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে এভাবে সলাত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৪৬৫, ই.সে ১৪৭৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ، يَقُولُ صَلَّى بِنَا عُثْمَانُ بِمِنًى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فَقِيلَ ذَلِكَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ فَاسْتَرْجَعَ ثُمَّ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّيْتُ مَعَ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّيْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ بِمِنًى رَكْعَتَيْنِ فَلَيْتَ حَظِّي مِنْ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ رَكْعَتَانِ مُتَقَبَّلَتَانِ ‏.

'আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, 'উসমান মিনাতে অবস্থানকালে আমাদের সাথে নিয়ে ফারয্‌ সলাত চার রাক‘আত আদায় করলেন। বিষয়টি 'আবদুল্লাহ ইবনু মাস'ঊদকে অবহিত করা হলে তিনি ''ইন্না- লিল্লা-হি ওয়া ইন্না- ইলাই-হি র-জিঊন'' পরলেন। পরে তিনি বললেনঃ আমি মিনাতে অবস্থানকালে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে দু' রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। আবূ বাক্‌র সিদ্দীকের সাথেও দু' রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। আমি মিনাতে অবস্থানকালে 'উমার ইবনুল খাত্ত্বাবের সাথেও দু' রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। চার রাক'আতের পরিবর্তে দু' রাক‘আত সলাতই যদি আমার জন্য মাকবূল হ'ত তাহলে কতই না ভাল হ'ত। (ই.ফা. ১৪৬৬, ই. সে. ১৪৭৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، وَابْنُ، خَشْرَمٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا عِيسَى، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ ‏.

আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ্ ও আবূ কুরায়ব, ‘উসমান ইবনু আবূ শায়বাহ্, ইসহাক্ব ও ইবনু খশ্রাম (রহঃ) ….. সকলেই আ’মাশ থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৬৭, ই.সে ১৪৭৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَقُتَيْبَةُ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ، قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ وَهْبٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى - آمَنَ مَا كَانَ النَّاسُ وَأَكْثَرَهُ - رَكْعَتَيْنِ ‏.

হারিসাহ্‌ ইবনু ওয়াহ্‌ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মিনাতে অবস্থানকালে আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। অথচ লোকজন নিরাপদ ও আতঙ্কহীন ছিল। (ই.ফা. ১৪৬৮,ই.সে ১৪৭৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي حَارِثَةُ بْنُ وَهْبٍ الْخُزَاعِيُّ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِنًى وَالنَّاسُ أَكْثَرُ مَا كَانُوا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ ‏.‏ قَالَ مُسْلِمٌ حَارِثَةُ بْنُ وَهْبٍ الْخُزَاعِيُّ هُوَ أَخُو عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ لأُمِّهِ ‏.

হারিসাহ্‌ ইবনু ওয়াহ্‌ব আল খুযা‘ঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বিদায় হাজ্জের সময় মিনাতে অবস্থানকালে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে সলাত আদায় করেছি। তিনি তখন দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছিলেন। তখন তাঁর পিছনে বহু সংখ্যক লোক ছিল।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেনঃ হারিসাহ্‌ ইবনু ওয়াহ্‌ব খুযা‘ঈ ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাবের ভাই। তারা একই মায়ের গর্ভজাত সন্তান। (ই.ফা. ১৪৬৯, ই.সে ১৪৭৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩. অধ্যায় :
বর্ষণমুখর দিনে গৃহে সলাত আদায়

১৪৮৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، أَذَّنَ بِالصَّلاَةِ فِي لَيْلَةٍ ذَاتِ بَرْدٍ وَرِيحٍ فَقَالَ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُ الْمُؤَذِّنَ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةٌ بَارِدَةٌ ذَاتُ مَطَرٍ يَقُولُ ‏ "‏ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ ‏"‏ ‏.

নাফি ‘ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন ঝড় ও শীতের রাতে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) সলাতে আযান দিলেন। আযানে তিনি বললেনঃ তোমরা যার যার বাড়ীতে সলাত আদায় করে নাও। পরে তিনি বললেন যে, শীতের রাত অথবা মেঘাচ্ছন্ন রাত হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুয়ায্‌যিনকে এ কথা ঘোষণা করতে আদেশ দিতেনঃ ‘তোমরা বাড়ীতে সলাত আদায় কর।‘ (ই.ফা. ১৪৭০, ই.সে ১৪৭৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ نَادَى بِالصَّلاَةِ فِي لَيْلَةٍ ذَاتِ بَرْدٍ وَرِيحٍ وَمَطَرٍ فَقَالَ فِي آخِرِ نِدَائِهِ أَلاَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ الْمُؤَذِّنَ إِذَا كَانَتْ لَيْلَةٌ بَارِدَةٌ أَوْ ذَاتُ مَطَرٍ فِي السَّفَرِ أَنْ يَقُولَ أَلاَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণিতঃ

তিনি শীত ও ঝড়-বৃষ্টি কবলিত এক রাতে সলাতের আযান দিলেন। তিনি তার আযানে শেষে উচ্চৈঃস্বরে বলেন, শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানস্থলে সলাত আদায় করে নাও। শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানস্থলে সলাত আদায় করে নাও। অতঃপর তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফররত অবস্থায় শীত বা বর্ষণমুখর রাতে মুয়ায্‌যিনকে নির্দেশ দিতেন, সে যেন বলে, শোন! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে সলাত আদায় করে নাও। (ই.ফা. ১৪৭১, ই.সে ১৪৭৯-ক)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৭
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ نَادَى بِالصَّلاَةِ بِضَجْنَانَ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِهِ وَقَالَ أَلاَ صَلُّوا فِي رِحَالِكُمْ ‏.‏ وَلَمْ يُعِدْ ثَانِيَةً أَلاَ صَلُّوا فِي الرِّحَالِ ‏.‏ مِنْ قَوْلِ ابْنِ عُمَرَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার তিনি ‘যজনান’ নামক স্থানে সলাতের আযান দিলেন। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। তবে এতটুকু কথা অধিক বর্ণনা করলেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার বললেনঃ তোমরা যার যার অবস্থান স্থলেই সলাত আদায় করে নাও। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার-এর কথা, “তোমরা যার যার অবস্থান স্থলেই সলাত আদায় করে নাও” কথাটি দ্বিতীয়বার বললেন না। (ই.ফা. ১৪৭২, ই.সে. ১৪৮০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَمُطِرْنَا فَقَالَ ‏ "‏ لِيُصَلِّ مَنْ شَاءَ مِنْكُمْ فِي رَحْلِهِ ‏"‏ ‏.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এক সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গী ছিলাম। ইতোমধ্যে বৃষ্টি হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কেউ চাইলে নিজের জায়গাতে অবস্থান করে সেখানেই সলাত আদায় করে নিতে পারো। (ই.ফা. ১৪৭৩, ই.সে. ১৪৮১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৮৯
وَحَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ، صَاحِبِ الزِّيَادِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ لِمُؤَذِّنِهِ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ إِذَا قُلْتَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ فَلاَ تَقُلْ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ قُلْ صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ - قَالَ - فَكَأَنَّ النَّاسَ اسْتَنْكَرُوا ذَاكَ فَقَالَ أَتَعْجَبُونَ مِنْ ذَا قَدْ فَعَلَ ذَا مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي إِنَّ الْجُمُعَةَ عَزْمَةٌ وَإِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أُحْرِجَكُمْ فَتَمْشُوا فِي الطِّينِ وَالدَّحْضِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক বৃষ্টিঝরা দিনে তিনি মুয়াযযিনকে বললেনঃ আজকের আযানে যখন তুমি “আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লা-হ” বলে শেষ করবে তার পরে কিন্তু “হাইয়্যা ‘আলাস সলা-হ” বলবে না। বরং বলবে, “সল্লু ফী বুয়ূতিকুম” অর্থাৎ- তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই সলাত আদায় করে নাও।
হাদীসের বর্ণনা কারী (‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস) বলেছেনঃ এরূপ করা লোকজন পছন্দ করল না বলে মনে হ’ল। তা দেখে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস বললেনঃ তোমরা এ কাজকে আজগুবি মনে করছ? অথচ যিনি আমার চেয়ে উত্তম তিনি এরূপ করেছেন। জুমু’আর সলাত আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তোমরা কাদাযুক্ত পিচ্ছিল পথে কষ্ট করে চলবে তা আমি পছন্দ করিনি। (ই.ফা. ১৪৭৪, ই.সে. ১৪৮২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯০
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ - عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ، قَالَ خَطَبَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ فِي يَوْمٍ ذِي رَدْغٍ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ وَلَمْ يَذْكُرِ الْجُمُعَةَ وَقَالَ قَدْ فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي ‏.‏ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ أَبُو كَامِلٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، بِنَحْوِهِ ‏.

‘আবদুল হামীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস (রহঃ) - কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, এক বৃষ্টিঝরা দিনে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস আমাদের সামনে বক্তৃতা করলেন। এতটুকু বর্ণনা করে তিনি পূর্বোক্ত ইবনু ‘উলাইয়্যাহ্‌ বর্ণিত। তিনি বলেছেন, হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি জুম’আর দিনের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন, যিনি আমার চেয়ে উত্তম অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন।
আবূ কামিল বলেছেনঃ হাম্মাদ ‘আসিম-এর মাধ্যমে ‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪৭৫, ই.সে. ১৪৮৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯১
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، - هُوَ الزَّهْرَانِيُّ - حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، - يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ - حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، وَعَاصِمٌ الأَحْوَلُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ فِي حَدِيثِهِ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ‏.

আইয়ূব ও 'আসিম আল-আহ্ওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি পূর্বোক্ত হাদীসের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৪৭৬, ই.সে. ১৪৮৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯২
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ، صَاحِبُ الزِّيَادِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ، قَالَ أَذَّنَ مُؤَذِّنُ ابْنِ عَبَّاسٍ يَوْمَ جُمُعَةٍ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ ‏.‏ فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ وَقَالَ وَكَرِهْتُ أَنْ تَمْشُوا فِي الدَّحْضِ وَالزَّلَلِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক বৃষ্টিঝরা জুমু‘আর দিনে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস-এর (নিযুক্ত) মুয়াযযিন আযান দিলেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি ইবনু ‘উলাইয়্যাহ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু বর্ণনা করলেন। তিনি (‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস) বললেনঃ তোমরা কর্দম্ময় ও পিচ্ছিল পথে চলবে তা আমার পছন্দ হয়নি। (ই.ফা. ১৪৭৭, ই.সে. ১৪৮৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৩
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، كِلاَهُمَا عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَمَرَ مُؤَذِّنَهُ - فِي حَدِيثِ مَعْمَرٍ - فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ ‏.‏ بِنَحْوِ حَدِيثِهِمْ وَذَكَرَ فِي حَدِيثِ مَعْمَرٍ فَعَلَهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي ‏.‏ يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) বৃষ্টিঝরা জুমু’আর দিনে তার (নিযুক্ত) মুয়ায্‌যিনকে আযান দেয়ার আদেশ দিলেন।
মা’মার-এর হাদীসে রয়েছে, বৃষ্টিঝরা জুমু’আর দিনে উক্ত বর্ণনাকারীর অনুরূপ এবং মা’মার-এর বর্ণিত হাদীসে এ কথাও আছে যে, যিনি আমার চেয়ে উত্তম অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন। (ই.ফা. ১৪৭৮, ই.সে. ১৪৮৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৪
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِسْحَاقَ الْحَضْرَمِيُّ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، - قَالَ وُهَيْبٌ لَمْ يَسْمَعْهُ مِنْهُ - قَالَ أَمَرَ ابْنُ عَبَّاسٍ مُؤَذِّنَهُ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ فِي يَوْمٍ مَطِيرٍ ‏.‏ بِنَحْوِ حَدِيثِهِمْ ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস (রহঃ) এর মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) বৃষ্টিঝরা জুমুআর দিনে তার (নিযুক্ত) মুয়াজ্জিনকে আযান দেয়ার আদেশ দিলেন। এভাবে তিনি অন্য বর্ণনাকারীদের অনুরূপ বর্ণনা করলেন। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৪৭৯, ইসলামীক সেন্টার ১৪৮৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৪. অধ্যায়ঃ
সফরে সওয়ারী জন্তুর উপর নাফ্‌ল সলাত আদায় বৈধ, তারটি মুখটি যেদিকে হোক না কেন

১৪৯৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي سُبْحَتَهُ حَيْثُمَا تَوَجَّهَتْ بِهِ نَاقَتُهُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সওয়ারীর মুখ যেদিকেই থাক না কেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সওয়ারীর পিঠে বসে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৮০, ই.সে. ১৪৮৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৬
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ بِهِ ‏.
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উটের মুখ যেদিকেই থাকুক না কেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উটের পিঠে বসেই নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৮১, ই.সে. ১৪৮৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৭
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَهُوَ مُقْبِلٌ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الْمَدِينَةِ عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُ كَانَ وَجْهُهُ - قَالَ - وَفِيهِ نَزَلَتْ ‏{‏ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ‏}

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা থেকে মাদীনায় আসার পথে যে দিকেই তাঁর মুখ হোক না কেন সওয়ারীতে বসে সলাত আদায় করতেন। এ ব্যাপারেই আয়াত (অর্থ) “তোমরা যেদিকেই মুখ ফিরাবে সেটিই আল্লাহ্‌র দিক” – (সূরাহ আল বাক্বারাহ ২ : ১১৫) অবতীর্ণ হয়। (ই.ফা. ১৪৮২, ই.সে. ১৪৯০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৮
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، وَابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي كُلُّهُمْ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ ابْنِ مُبَارَكٍ وَابْنِ أَبِي زَائِدَةَ ثُمَّ تَلاَ ابْنُ عُمَرَ ‏{‏ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ‏}‏ وَقَالَ فِي هَذَا نَزَلَتْ ‏.

আবূ কুরায়ব, ইবনু নুমায়র (রহঃ) ...... সকলে ‘আবদুল মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইবনুল মুবারাক ও ইবনু আবূ যায়িদাহ্ বর্ণিত হাদীসে এ কথা উল্লেখিত হয়েছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) “তোমরা যেদিকেই মুখ করনা কেন সবই আল্লাহ্‌র দিক” – (সূরাহ আল বাক্বারাহ ২ : ১১৫)। এ আয়াতটি তিলওয়াত করে বললেন, এ আয়াতটি এ ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়। (ই.ফা. ১৪৮৩, ই.সে. ১৪৯১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪৯৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى حِمَارٍ وَهُوَ مُوَجِّهٌ إِلَى خَيْبَرَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি গাধার পিঠে আরোহণ করে খায়বারের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করতে দেখেছি। (ই.ফা. ১৪৮৪, ই.সে. ১৪৯২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০০
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّهُ قَالَ كُنْتُ أَسِيرُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ بِطَرِيقِ مَكَّةَ - قَالَ سَعِيدٌ - فَلَمَّا خَشِيتُ الصُّبْحَ نَزَلْتُ فَأَوْتَرْتُ ثُمَّ أَدْرَكْتُهُ فَقَالَ لِي ابْنُ عُمَرَ أَيْنَ كُنْتَ فَقُلْتُ لَهُ خَشِيتُ الْفَجْرَ فَنَزَلْتُ فَأَوْتَرْتُ ‏.‏ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ أَلَيْسَ لَكَ فِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُسْوَةٌ فَقُلْتُ بَلَى وَاللَّهِ ‏.‏ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُوتِرُ عَلَى الْبَعِيرِ ‏.

সা‘ঈদ ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমারের সাথে মাক্কার পথ ধরে চলছিলাম। ভোর হয়ে যাচ্ছে মনে করে একসময় সওয়ারী থেকে নেমে বিত্‌র এর সলাত আদায় করলাম এবং পড়ে তাঁর কাছে গিয়ে পৌছলাম। তখন 'আবদুল্লাহ ইবনে 'উমার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, ফাজ্‌রের সময় হয়ে যাচ্ছে দেখে সওয়ারী থেকে নেমে বিত্‌র এর সলাত আদায় করলাম। এ কথা শুনে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার বললেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবনে কি তোমার অনুসরণের জন্য উত্তম আদর্শ নেই। আমি বললাম, আল্লাহ্‌র শপথ! তা অবশ্যই আছে। তিনি বললেন, উটের পিঠে বসেই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্‌র সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৮৫, ই.সে. ১৪৯৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى رَاحِلَتِهِ حَيْثُمَا تَوَجَّهَتْ بِهِ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ كَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُ ذَلِكَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সওয়ারীর মুখ যেদিকেই থাক না কেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সফরে) সওয়ারীর পিঠে সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৮৬, ই.সে. ১৪৯৪)
'আবদুল্লাহ ইবনু দীনার বলেছেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমারও এরূপ করতেন। (অর্থাৎ সফরে তিনি সওয়ারীর পিঠে আরোহণরত অবস্থায় নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন। সওয়ারী কোন্‌ দিকে মুখ করে চলছে তাতে কোন দোষ আছে বলে মনে করতেন না।)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০২
وَحَدَّثَنِي عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُوتِرُ عَلَى رَاحِلَتِهِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সওয়ারীর উপর বসেই বিত্‌র সলাত আদায় করতেন। (ই. ফা. ১৪৮৭, ই. সে. ১৪৯৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৩
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُسَبِّحُ عَلَى الرَّاحِلَةِ قِبَلَ أَىِّ وَجْهٍ تَوَجَّهَ وَيُوتِرُ عَلَيْهَا غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يُصَلِّي عَلَيْهَا الْمَكْتُوبَةَ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সওয়ারী যে দিকেই মুখ করে চলুক না কেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর বসে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন এবং সওয়ারীর উপরেই বিত্‌র সলাত আদায় করতেন। তবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর ফরয সলাত আদায় করতেন না। (ই.ফা. ১৪৮৮, ই.সে. ১৪৯৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৪
وَحَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي السُّبْحَةَ بِاللَّيْلِ فِي السَّفَرِ عَلَى ظَهْرِ رَاحِلَتِهِ حَيْثُ تَوَجَّهَتْ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আমির ইবনু রবী'আহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি সফররত অবস্থায় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের বেলা নফল সলাত সওয়ারীর পিঠে বসে যেদিকে সওয়ারীর মুখ ছিল সেদিকে মুখ করে আদায় করতে দেখেছেন। (ই.ফা. ১৪৮৯, ই.সে. ১৪৯৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ تَلَقَّيْنَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حِينَ قَدِمَ الشَّامَ فَتَلَقَّيْنَاهُ بِعَيْنِ التَّمْرِ فَرَأَيْتُهُ يُصَلِّي عَلَى حِمَارٍ وَوَجْهُهُ ذَلِكَ الْجَانِبَ - وَأَوْمَأَ هَمَّامٌ عَنْ يَسَارِ الْقِبْلَةِ - فَقُلْتُ لَهُ رَأَيْتُكَ تُصَلِّي لِغَيْرِ الْقِبْلَةِ ‏.‏ قَالَ لَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُهُ لَمْ أَفْعَلْهُ ‏.

আনাস ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) যখন শাম (যা বর্তমানে সিরিয়া) থেকে (অথবা শামে) আসলেন, তখন আমরা তাঁর সাথে আইনুত্ তাম্‌র নামক স্থানে সাক্ষাৎ করলাম। তখন দেখলাম তিনি একটি গাধার পিঠে বসে ঐ দিকে মুখ করে সলাত আদায় করছেন। বর্ণনাকারী হুমাম ক্বিবলার বাম দিকে ইশারা করে দেখালেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, আমি আপনাকে ক্বিবলাহ্ ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে সলাত আদায় করতে দেখলাম যে, তিনি বললেনঃ যদি আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এরূপ করতে না দেখতাম তাহলে আমিও এরূপ করতাম না। (ই.ফা. ১৪৯০, ই.সে. ১৪৯৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৫. অধ্যায়ঃ
সফরে দু' ওয়াক্তের সলাত একত্রে (এক ওয়াক্তে) আদায় জায়িয

১৫০৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا عَجِلَ بِهِ السَّيْرُ جَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন সফরে দ্রুত চলতে হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিব এবং 'ইশার সলাত একসাথে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৯১, ই.সে. ১৪৯৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ جَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بَعْدَ أَنْ يَغِيبَ الشَّفَقُ وَيَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ جَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.

নাফি' (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কোন সফরে 'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) -কে দ্রুত পথ চলতে হলে সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশের লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পর তিনি মাগরিব এবং 'ইশার সলাত একত্র করে আদায় করতেন। এ ব্যাপারে তিনি বলতেনঃ সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যখন দ্রুত চলতে হ'ত তখন তিনি মাগরিব এবং 'ইশার সলাত একসাথে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৯২, ই.সে. ১৫০০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৮
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَمْرٌو النَّاقِدُ كُلُّهُمْ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَجْمَعُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ ‏.

সালিম ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) -এর মাধ্যমে তাঁর পিতার থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ('আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার) বলেছেনঃ আমি দেখেছি সফরে দ্রুত পথ চলার প্রয়োজন হলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিব এবং 'ইশার সলাত একসাথে আদায় করে নিতেন। (ই.ফা. ১৪৯৩, ই.সে. ১৫০২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫০৯
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَعْجَلَهُ السَّيْرُ فِي السَّفَرِ يُؤَخِّرُ صَلاَةَ الْمَغْرِبِ حَتَّى يَجْمَعَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি সফরে কখনো রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দ্রুত চলতে মাগরিব এবং 'ইশার সলাত দেরী করে একসাথে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৯৪, ই.সে. ১৫০৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১০
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ، - يَعْنِي ابْنَ فَضَالَةَ - عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ أَنْ تَزِيغَ الشَّمْسُ أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى وَقْتِ الْعَصْرِ ثُمَّ نَزَلَ فَجَمَعَ بَيْنَهُمَا فَإِنْ زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ أَنْ يَرْتَحِلَ صَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ رَكِبَ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার পূর্বেই যদি তিনি সফরে রওয়ানা হতেন তাহলে 'আস্‌রের সলাতের সময় পর্যন্ত দেরী করতেন এবং তারপর কোথাও থেমে যুহর ও 'আস্‌রের সলাত একসাথে আদায় করতেন। কিন্তু রওয়ানা হওয়ার পূর্বেই যদি সূর্য ঢলে পড়ত তাহলে তিনি যুহরের সলাত আদায় করে তারপর যাত্রা করতেন। (ই.ফা. ১৪৯৫, ই.সে. ১৫০৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১১
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ بْنُ سَوَّارٍ الْمَدَايِنِيُّ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلِ بْنِ خَالِدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فِي السَّفَرِ أَخَّرَ الظُّهْرَ حَتَّى يَدْخُلَ أَوَّلُ وَقْتِ الْعَصْرِ ثُمَّ يَجْمَعُ بَيْنَهُمَا ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে থাকাকালীন দু'ওয়াক্ত সলাত একসাথে আদায় করতে মনস্থ করলে যুহর সলাত আদায় করতে বিলম্ব করতেন। পরে 'আস্‌রের ওয়াক্ত শুরু হলে তিনি যুহর ও 'আস্‌রের সলাত এক সাথে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৯৬, ই.সে. ১৫০৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১২
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي جَابِرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا عَجِلَ عَلَيْهِ السَّفَرُ يُؤَخِّرُ الظُّهْرَ إِلَى أَوَّلِ وَقْتِ الْعَصْرِ فَيَجْمَعُ بَيْنَهُمَا وَيُؤَخِّرُ الْمَغْرِبَ حَتَّى يَجْمَعَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْعِشَاءِ حِينَ يَغِيبُ الشَّفَقُ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সফররত অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন তাড়াহুড়ো থাকলে 'আস্রের সময় পর্যন্ত যুহরের সলাত আদায় করতে দেরী করতেন এবং 'আস্রের প্রাথমিক সময়ে যুহর ও 'আস্রের সলাত একসাথে আদায় করতেন। আর এ অবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের সলাত ও দেরী করে পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভা অন্তর্হিত হওয়ার সময় মাগরিব ও 'ইশার সলাত একসাথে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৪৯৭, ই.সে. ১৫০৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৬. অধ্যায়ঃ
আবাসে দু' ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায়

১৫১৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ سَفَرٍ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীতিকর অবস্থা কিংবা সফররত অবস্থা ছাড়াই এবং 'আস্‌রের সলাত একসাথে এবং মাগরিব ও 'ইশার সলাত একসাথে আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৪৯৮, ই.সে. ১৫০৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৪
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، وَعَوْنُ بْنُ سَلاَّمٍ، جَمِيعًا عَنْ زُهَيْرٍ، - قَالَ ابْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، - حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا بِالْمَدِينَةِ فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ سَفَرٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ فَسَأَلْتُ سَعِيدًا لِمَ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ كَمَا سَأَلْتَنِي فَقَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أَحَدًا مِنْ أُمَّتِهِ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সফররত বা ভীতিকর অবস্থা ছাড়াই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় অবস্থানকালে যুহর এবং 'আস্‌রের সলাত একসাথে আদায় করেছেন।
আবুয্ যুবায়র বলেছেনঃ (এ হাদীস শুনে) আমি সা‘ঈদ ইবনু যুবায়রকে জিজ্ঞেস করলাম যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন? তিনি বললেনঃ তুমি যেন আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমিও তেমনি 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-কে (বিষয়টি) জিজ্ঞেস করেছিলাম। জবাবে তিনি আমাকে বলেছিলেন, এ দ্বারা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইচ্ছা ছিল তাঁর উম্মাতের মনে যেন কোন প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে। [২৭] (ই.ফা. ১৪৯৯, ই.সে. ১৫০৮)

[২৭] এ মর্মে দু'টি উল্লেখযোগ্য মত হ'ল- (১) এ হাদীস অসুস্থতাজনিত অবস্থার উপর প্রযোজ্য-এটা আহমাদ বিন হাম্বাল ও কাজী হুসায়ন (রহঃ)-এর অভিমত। (২) ইবনু সীরীন এবং কতক মালিকী ও শাফি'ঈ বিদ্বানের মতে অভ্যাসে পরিণত না করে একান্ত প্রয়োজনে যুহর, 'আস্‌র একত্রে এবং মাগরিব 'ইশা একত্রে আদায় করা এ হাদীস অনুপাতে জায়িয।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৫
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، - يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ - حَدَّثَنَا قُرَّةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ بَيْنَ الصَّلاَةِ فِي سَفْرَةٍ سَافَرَهَا فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ فَجَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ سَعِيدٌ فَقُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ قَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাবূক যুদ্ধকালে কোন এক সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একাধিক) সলাত একসাথে করেছিলেন। সুতরাং তিনি যুহর এবং 'আস্‌র আর মাগরিব ও 'ইশার সলাত একত্রে আদায় করেছিলেন।
সা‘ঈদ ইবনু যুহায়র বর্ণনা করেছেন- আমি 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাসকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তিনি কী কারণে এরূপ করেছিলেন জবাবে সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র বললেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উম্মাতকে বাধ্য করতে বা কষ্ট দিতে চাননি। (ই.ফা. ১৫০০, ই.সে. ১৫০৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، عَامِرٍ عَنْ مُعَاذٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ فَكَانَ يُصَلِّي الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا ‏.

মু'আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা তাবূক অভিযানে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। (এ সফরে) তিনি যুহর ও 'আস্‌র এবং মাগরিব ও 'ইশার সলাত একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫০১, ই.সে. ১৫১০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، - يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ - حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ وَاثِلَةَ أَبُو الطُّفَيْلِ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، قَالَ جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَبَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ فَقُلْتُ مَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ قَالَ فَقَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তাবূক অভিযানকালে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আস্‌রের সলাত এবং মাগরীব ও ‘ইশার সলাত একসাথে আদায় করেছেন। আবূ তূফায়ল বর্ণনা করেছেনঃ আমি মু’আয ইবনু জাবালকে জিজ্ঞেস করলাম, কী কারণে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন? জবাবে মু’আয ইবনু জাবাল বললেন- তিনি তাঁর উম্মাতকে বাধ্যবাধকতার মধ্যে ফেলতে বা কষ্ট দিতে চাননি (এ কারণেই তিনি এরূপ করেছেন)। (ই.ফা. ১৫০২, ই.সে. ১৫১১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِالْمَدِينَةِ فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ مَطَرٍ ‏.‏ فِي حَدِيثِ وَكِيعٍ قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ لِمَ فَعَلَ ذَلِكَ قَالَ كَىْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ قِيلَ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا أَرَادَ إِلَى ذَلِكَ قَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাদীনায় অবস্থানরত কোন ভীতিকর পরিস্থিতি কিংবা বৃষ্টি-বাদল ছাড়াই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর, ‘আস্‌র, মাগরিব এবং ‘ইশার সলাত আদায় করেছেন।
(ওয়াকী’ বর্ণিত হাদীসে) এ কথার উল্লেখ রয়েছে যে, সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র বলেছেন- আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললাম, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন এজন্যে যাতে তাঁর উম্মাতের কোন কষ্ট না হয়।
তবে আবূ মু’আবিয়াহ্‌ বর্ণিত হাদীসে আছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -কে বলা হ’ল- রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী উদ্দেশে এরূপ করেছেন? জবাবে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস বললেনঃ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চেয়েছেন তাঁর উম্মাতের যেন কোন কষ্ট না হয়। (ই.ফা. ১৫০৩ ই.সে. ১৫১২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫১৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثَمَانِيًا جَمِيعًا وَسَبْعًا جَمِيعًا ‏.‏ قُلْتُ يَا أَبَا الشَّعْثَاءِ أَظُنُّهُ أَخَّرَ الظُّهْرَ وَعَجَّلَ الْعَصْرَ وَأَخَّرَ الْمَغْرِبَ وَعَجَّلَ الْعِشَاءَ ‏.‏ قَالَ وَأَنَا أَظُنُّ ذَاكَ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
  তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে আট রাক‘আত (ফারয্‌) সলাত এবং একত্রে সাত রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। আমি বললামঃ হে আবুশ্‌ শা’সা! আমার মনে হয় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সলাত দেরী করে শেষ ওয়াক্তে এবং ‘আস্‌রের সলাত প্রথমভাগে আদায় করেছেন। আর তেমনি মাগরিবের সলাত দেরী করে এবং ‘ইশার সলাত প্রথমভাগে আদায় করেছেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমিও তাই মনে করি। (ই.ফা. ১৫০৪,ই.সে. ১৫১৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২০
وَحَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِالْمَدِينَةِ سَبْعًا وَثَمَانِيًا الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাদীনায় অবস্থানরত অবস্থায় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাত রাক‘আত ও আট রাক‘আত সলাত একত্রে আদায় করেছেন। অর্থাৎ যুহর ও ‘আস্‌রের আট রাক‘আত একসাথে এবং মাগরিব ও ‘ইশার সাত রাক‘আত এক সাথে আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৫০৫, ই.সে. ১৫১৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২১
وَحَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْخِرِّيتِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ خَطَبَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ يَوْمًا بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَبَدَتِ النُّجُومُ وَجَعَلَ النَّاسُ يَقُولُونَ الصَّلاَةَ الصَّلاَةَ - قَالَ - فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ لاَ يَفْتُرُ وَلاَ يَنْثَنِي الصَّلاَةَ الصَّلاَةَ ‏.‏ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَتُعَلِّمُنِي بِالسُّنَّةِ لاَ أُمَّ لَكَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَقِيقٍ فَحَاكَ فِي صَدْرِي مِنْ ذَلِكَ شَىْءٌ فَأَتَيْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ فَسَأَلْتُهُ فَصَدَّقَ مَقَالَتَهُ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন ‘আস্‌রের সলাতের পর ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস আমাদের সামনে বক্তব্য পেশ করতে থাকলেন। এ অবস্থায় সূর্য ডুবে গেল এবং তারকারাজি দৃষ্টিগোচর হতে থাকল। তখন লোকজন বলতে শুরু করল, সলাত! সলাত! (অর্থাৎ সলাতের সময় চলে যাচ্ছে, সলাত আদায় করুন)। ‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব বলেনঃ এ সময় বানূ তামীম গোত্রের একজন লোক তাঁর কাছে আসল এবং শান্ত ও বিরত না হয়ে বারবার আস্‌ সলাত (সলাত! সলাত!) বলে চলল। তা দেখে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ তোমার সর্বনাশ হোক! তুমি কি আমাকে সুন্নাত (রসূলের পদ্ধতি) শিখাচ্ছ? পরে তিনি বললেনঃ আমি দেখেছি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আস্‌রের সলাত এবং মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একত্র করে আদায় করেছেন।

‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব বলেন, এ কথা শুনে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জাগল। তাই আমি আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। (ই.ফা. ১৫০৬, ই.সে. ১৫১৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২২
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُدَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ الْعُقَيْلِيِّ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ لاِبْنِ عَبَّاسٍ الصَّلاَةَ فَسَكَتَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ الصَّلاَةَ ‏.‏ فَسَكَتَ ثُمَّ قَالَ الصَّلاَةَ فَسَكَتَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لاَ أُمَّ لَكَ أَتُعَلِّمُنَا بِالصَّلاَةِ وَكُنَّا نَجْمَعُ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব আল ‘উক্বায়লী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলল- সলাতের সময় হয়েছে, সলাত আদায় করুন। কিন্তু তিনি চুপ করে রইলেন। সে আবার বলল- সলাত আদায় করুন। তিনি এবারও চুপ করে থাকলেন। লোকটি পুনরায় বলল- সলাতের সময় হয়েছে, সলাত আদায় করুন। এবার ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেনঃ তুমি আমাকে সলাত সম্পর্কিত ব্যাপারে শিখাচ্ছ? আমরা তো রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে দু’ওয়াক্ত সলাত একসাথে আদায় করতাম। (ই.ফা. ১৫০৭, ই.সে. ১৫১৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৭. অধ্যায়ঃ
সলাত শেষে ডানে-বামে ফেরার বৈধতা

১৫২৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لاَ يَجْعَلَنَّ أَحَدُكُمْ لِلشَّيْطَانِ مِنْ نَفْسِهِ جُزْءًا لاَ يَرَى إِلاَّ أَنَّ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَنْصَرِفَ إِلاَّ عَنْ يَمِينِهِ أَكْثَرُ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْصَرِفُ عَنْ شِمَالِهِ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমাদের মধ্য হতে কেউ যেন তার পক্ষ থেকে শাইত্বনের জন্য কোন অংশ নির্ধারণ না করে। অর্থাৎ সে যেন এরূপ মনে না করে যে, সলাত শেষে ডান দিকে ছাড়া অন্য কোন দিকে মুখ ফিরানো যাবে না। কেননা আমি অধিকাংশ সময় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাম দিকে মুখ ফিরাতে দেখেছি। (ই.ফা. ১৫০৮, ই.সে. ১৫১৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

ইসহাক্ব ইবনু ইব্রাহীম, ‘আলী ইবনু খশ্রাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন উভয়ে আ’মাশ থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫০৯, ই.সে. ১৫১৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২৫
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ السُّدِّيِّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا كَيْفَ أَنْصَرِفُ إِذَا صَلَّيْتُ عَنْ يَمِينِي أَوْ عَنْ يَسَارِي قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَكْثَرُ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِينِهِ ‏.

ইসমা‘ঈল ইবনু ‘আবদুর রহমান আস্‌ সুদ্দী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি সলাত শেষ করে কোন্‌ দিকে মুখ ফিরাব- ডানে না বাঁয়ে? তিনি বললেনঃ আমি অধিকাংশ সময় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি (সলাত শেষ করে) ডান দিকে মুখ ফিরাতেন। (ই.ফা. ১৫১০, ই.সে ১৫১৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِينِهِ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সলাত শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডানদিকে (মুখ) ফিরাতেন। (ই.ফা. ১৫১১, ই.সে. ১৫২০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৮.অধ্যায়ঃ
(মুক্তাদীর) ইমামের ডানপাশে থাকা মুস্তাহাব হওয়া

১৫২৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ ابْنِ الْبَرَاءِ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينِهِ يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ - قَالَ - فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ ‏ "‏ رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ - أَوْ تَجْمَعُ - عِبَادَكَ ‏"‏ ‏.

বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে সলাত আদায় করতাম তখন পিছনে তাঁর ডান দিকে দাঁড়ানো পছন্দ করতাম যাতে তিনি ঘুরে বসলে আমাদের দিকে মুখ করে বসেন। বারা ইবনু ‘আযিব বলেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, “হে আমার রব! যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে পুনরায় জীবিত করবে; অথবা বলেছেন, একত্রিত করবে সেদিনের 'আযাব থেকে আমাকে রক্ষা কর।” (ই.ফা. ১৫১২, ই.সে. ১৫২১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫২৮
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ ‏.

মিস‘আর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন- তবে এ সানাদে বর্ণিত হাদীসটিতে তিনি “আমাদের দিকে ঘুরে বসেন” কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫১৩,ই.সে. ১৫২২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৯. অধ্যায়ঃ
মুয়ায্‌যিন ইক্বামাত দেয়া শুরু করলে নাফ্‌ল সলাত শুরু করা মাকরূহ

১৫২৯
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَرْقَاءَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে ফরয সলাত ছাড়া অন্য সলাতের নিয়্যাত করা যাবে না। (ই.ফা. ১৫১৪, ই.সে ১৫২৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩০
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ وَابْنُ رَافِعٍ قَالاَ حَدَّثَنَا شَبَابَةُ حَدَّثَنِي وَرْقَاءُ بِهَذَا الإِسْنَادِ

মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও ইবনু রাফি’ (রহঃ) শাবাবাহ্ (রহঃ) হতে, তিনি ওয়ারক্বা (রহঃ) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ১৪১৫, ই.সে. ১৫২৩-ক)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩১
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ، يَقُولُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফরয সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে তখন উক্ত ফরয ব্যতীত অন্য কোন সলাত আদায় করা যাবে না। (ই.ফা. ১৫১৬, ই.সে. ১৫২৩-খ)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩২
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ إِسْحَاقَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

যাকারিয়্যা ইবনু ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫১৭, ই.সে. ১৫২৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩৩
وَحَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِهِ ‏.‏ قَالَ حَمَّادٌ ثُمَّ لَقِيتُ عَمْرًا فَحَدَّثَنِي بِهِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছে। হাম্মাদ বর্ণনা করেছেন- অতঃপর আমি ‘উমার ইবনু খাত্ত্বাবের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করে শুনালেন। তবে তিনি হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ১৫১৮, ই.সে. ১৫২৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِرَجُلٍ يُصَلِّي وَقَدْ أُقِيمَتْ صَلاَةُ الصُّبْحِ فَكَلَّمَهُ بِشَىْءٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَلَمَّا انْصَرَفْنَا أَحَطْنَا نَقُولُ مَاذَا قَالَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ لِي ‏ "‏ يُوشِكُ أَنْ يُصَلِّيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ أَرْبَعًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ الْقَعْنَبِيُّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَالِكٍ ابْنُ بُحَيْنَةَ عَنْ أَبِيهِ ‏.‏ قَالَ أَبُو الْحُسَيْنِ مُسْلِمٌ وَقَوْلُهُ عَنْ أَبِيهِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ خَطَأٌ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক বুহায়নাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন ফাজ্‌রের সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাতরত জনৈক ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে কিছু বললেন যা আমরা বুঝতে পারলাম না। সলাত শেষে আমরা তাকে ঘিরে ধরলাম। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কী বললেন? সে বলল, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ মনে হচ্ছে কেউ ফাজ্‌রের সলাত চার রাক‘আত আদায় করছে। ক্বা’নাবী বর্ণনা করেছেন- ‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক ইবনু বুহায়নাহ্‌ তার পিতা বুহায়নাহ্‌ থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইমাম মুসলিম বলেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক তার পিতা বুহাইনাহ্‌ থেকে বর্ণনা করেন ক্বা’নাবীর এ উক্তি ভুল। (ই.ফা. ১৫১৯, ই.সে. ১৫২৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ بُحَيْنَةَ، قَالَ أُقِيمَتْ صَلاَةُ الصُّبْحِ فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يُصَلِّي وَالْمُؤَذِّنُ يُقِيمُ فَقَالَ ‏ "‏ أَتُصَلِّي الصُّبْحَ أَرْبَعًا ‏"‏ ‏.

ইবনু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন ফাজ্‌রের সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, মুয়ায্‌যিন ইক্বামাত দিচ্ছে আর সে লোকটি সলাত আদায় করছে। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি কি ফাজ্‌রের (ফরয ) সলাত চার রাক‘আত আদায় করবে? (ই.ফা. ১৫২০, ই.সে. ১৫২৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ، ح وَحَدَّثَنِي حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ يَعْنِي ابْنَ زِيَادٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كُلُّهُمْ عَنْ عَاصِمٍ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ، قَالَ دَخَلَ رَجُلٌ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي صَلاَةِ الْغَدَاةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فِي جَانِبِ الْمَسْجِدِ ثُمَّ دَخَلَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا سَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَا فُلاَنُ بِأَىِّ الصَّلاَتَيْنِ اعْتَدَدْتَ أَبِصَلاَتِكَ وَحْدَكَ أَمْ بِصَلاَتِكَ مَعَنَا ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মাসজিদে আসল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সময় ফাজ্‌রের সলাত আদায় করেছিলেন। লোকটি মাসজিদের এক পাশে গিয়ে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সলাতে শামিল হ’ল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফেরার পর তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে অমুক! তুমি কোন্‌ দু’ রাক‘আত সলাতকে ফরয সলাতরূপে গণ্য করলে? একাকী যে দু’রাক‘আত আদায় করলে সে দু’রাক‘আতকে, না আমাদের সাথে যে দু’ রাক‘আত আদায় করলে সে দু’ রাক‘আতকে? [২৮] (ই.ফা ১৫২১, ই.সে. ১৫২৮)

[২৮] ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস ইক্বামাতের পর কোন সলাত আদায় না করার দলীল যদিও ইমামের সাথে সলাতে গিয়ে মিলিত হতে পারে এবং যে ব্যক্তি বলে প্রথম বা দ্বিতীয় রাক‘আত ইমামের সাথে পেলে সুন্নাত আদায় করা যাবে- এ হাদীস তার বক্তব্যকে প্রত্যাখান করছে।
(সুফ্‌লিন শারহে নাবাবী-১ম খন্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১০. অধ্যায়ঃ
মাসজিদে প্রবেশের সময় কি বলবে

১৫৩৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ، - أَوْ عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ، - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ‏.‏ وَإِذَا خَرَجَ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ مُسْلِمٌ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ يَحْيَى يَقُولُ كَتَبْتُ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ كِتَابِ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ ‏.‏ قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ يَحْيَى الْحِمَّانِيَّ يَقُولُ وَأَبِي أُسَيْدٍ ‏.

আবু উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মাসজিদে প্রবেশ করবে তখন বলবেঃ ''আল্ল-হুম্মাফ তাহ্‌লী আব্‌ওয়া-বা রহ্‌মাতিক” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি তোমার অনুগ্রহের দরজা আমার জন্য খুলে দাও)। যখন বের হয়ে যাবে, তখন বলবে- ''আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্‌আলুকা মিন ফায্‌লিক” (অর্থাৎ- আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থী)।
ইমাম মুসলিম বলেছেনঃ আমি ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আমি সুলায়মান ইবনু হিলালের একটি গ্রন্থ থেকে এ হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেছি। তিনি আরো বলেছেন যে, ইয়াহ্‌ইয়া আল্‌ হিমানী আবূ উসায়দ থেকে বর্ননা করেছেন। (ই.ফা. ১৫২২, ই.সে. ১৫২৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৩৮
وَحَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ سُوَيْدٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ، أَوْ عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

’আব্দুল মালিক ইবনু সা‘ঈদ ইবনু সুওয়াইদ আল আনসারী (রাঃ) এবং আবূ হুমায়দ অথবা আবূ উসায়দ (রাঃ) এর মাধ্যমে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫২৩, ই.সে. ১৫৩০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১১. অধ্যায়ঃ
দু’ রাক‘আত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় মুস্তাহাব এবং দু’ রাক‘আত আদায়ের পুর্বে বসা মাকরুহ এবং এটা সর্বাবস্থায় পালনীয়

১৫৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ ‏"‏ ‏.

আবু ক্বাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মাসজিদে প্রবেশ করলে বসার আগেই যেন দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে। (ই.ফা. ১৫২৪, ই.সে. ১৫৩১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ يَحْيَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمِ بْنِ خَلْدَةَ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، صَاحِبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ بَيْنَ ظَهْرَانَىِ النَّاسِ - قَالَ - فَجَلَسْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تَجْلِسَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَأَيْتُكَ جَالِسًا وَالنَّاسُ جُلُوسٌ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَإِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ ‏"‏ ‏.

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহাবী আবু ক্বাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকজনের মধ্যে বসে আছেন। সুতরাং আমিও গিয়ে বসে পড়লাম। এ দেখে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ সবার আগে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে তোমার কি অসুবিধা ছিল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি দেখলাম আপনি বসে আছেন এবং আরো অনেক লোক বসে আছে (তাই আমিও বসে আদায় করেছি)। তিনি বললেন, তোমরা কেউ কোন সময় মাসজিদে প্রবেশ করলে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় না করে বসবে না। (ই.ফা. ১৫২৫, ই.সে. ১৫৩২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ جَوَّاسٍ الْحَنَفِيُّ أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ لِي عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم دَيْنٌ فَقَضَانِي وَزَادَنِي وَدَخَلْتُ عَلَيْهِ  الْمَسْجِدَ فَقَالَ لِي ‏ "‏ صَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল। তিনি আমাকে তা পরিশোধ করে দিলেন এবং অধিক পরিমানেই দিলেন। আমি একদিন মাসজিদে তার কাছে গেলে তিনি আমাকে বললেনঃ দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে নাও। (ই.ফা. ১৫২৬, ই.সে. ১৫৩৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১২. অধ্যায়ঃ
সফরে থেকে ফিরে এসে প্রথমে মাসজিদে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করা মুস্তাহাব

১৫৪২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَارِبٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ اشْتَرَى مِنِّي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ أَمَرَنِي أَنْ آتِيَ الْمَسْجِدَ فَأُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি উট কিনে ছিলেন। অতঃপর তিনি মাদীনায় আগমন করলে আমাকে মাসজিদে এসে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে বললেন। (ই.ফা. ১৫২৭, ই.সে. ১৫৩৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، - يَعْنِي الثَّقَفِيَّ - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ فَأَبْطَأَ بِي جَمَلِي وَأَعْيَى ثُمَّ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلِي وَقَدِمْتُ بِالْغَدَاةِ فَجِئْتُ الْمَسْجِدَ فَوَجَدْتُهُ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ قَالَ ‏"‏ الآنَ حِينَ قَدِمْتَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَدَعْ جَمَلَكَ وَادْخُلْ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَدَخَلْتُ فَصَلَّيْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে গিয়েছিলাম। (ফিরে আসার সময়) আমার উটটি বেশ দেরি করলো। সেটি বেশ ক্লান্ত শ্রান্তও হয়ে পড়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার আগেই এসে পৌছেছিলেন। আর আমি পরদিন সকালে পৌছলাম। আমি মাসজিদে এবং সেখানে মাসজিদের দরজায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেলাম। তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলেলেনঃ তুমি এখন এসে পৌছলে? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এখন উটটি রেখে মাসজিদে দু রাক‘আত সলাত আদায় করে নাও। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বলেছেনঃ এরপর আমি মাসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করে আসলাম। (ই.ফা. ১৫২৮, ই.সে. ১৫৩৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ يَعْنِي أَبَا عَاصِمٍ، ح وَحَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالاَ جَمِيعًا أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، وَعَنْ عَمِّهِ، عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ إِلاَّ نَهَارًا فِي الضُّحَى فَإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيهِ ‏.

কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিবাভাগে বেশ কিছু বেলা করা ব্যতীত সফর থেকে ফিরে আসতেন না। সফর থেকে ফিরে তিনি প্রথমেই মাসজিদে যেতেন এবং সেখানে তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর সেখানে কিছুক্ষন বসতেন। (ই.ফা. ১৫২৯, ই.সে. ১৫৩৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৩. অধ্যায়ঃ
যুহার সলাত মুস্তাহাব আর তার সর্বনিম্ন (রাক’আতের পরিমান) হচ্ছে দু’ রাক‘আত, আর সম্পুর্ন হচ্ছে আট রাক‘আত, মধ্যম পরিমান হচ্ছে চার অথবা ছয় রাক‘আত এবং এগুলো রক্ষনাবেক্ষন করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান

১৫৪৫
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ هَلْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى قَالَتْ لاَ إِلاَّ أَنْ يَجِيءَ مِنْ مَغِيبِهِ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্‌কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি চাশ্‌তের সলাত আদায় করতেন? জবাবে তিনি বললেনঃ না, তিনি সলাতুয্‌ যুহা আদায় করতেন না। তবে যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন তখন আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩০, ই.সে. ১৫৩৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৬
وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ الْقَيْسِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى قَالَتْ لاَ إِلاَّ أَنْ يَجِيءَ مِنْ مَغِيبِهِ

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্‌কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহা বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতেন। জবাবে তিনি বললেনঃ না, তবে তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন তখন আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩১, ই.সে. ১৫৩৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي سُبْحَةَ الضُّحَى قَطُّ ‏.‏ وَإِنِّي لأُسَبِّحُهَا وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيَدَعُ الْعَمَلَ وَهُوَ يُحِبُّ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ خَشْيَةَ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ النَّاسُ فَيُفْرَضَ عَلَيْهِمْ ‏.

’আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কখনো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে 'যুহা' বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে দেখিনি। তবে আমি নিজে চাশ্‌তের সলাত আদায় করে থাকি। অনেক কাজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করা সত্বেও এ আশংকায় তা করতেন না যে, লোকজন সে অনুযায়ী কাজ করলে তা ফরয করে দেয়া হতে পারে। (ই.ফা. ১৫৩২, ই.সে. ১৫৩৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৮
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي الرِّشْكَ - حَدَّثَتْنِي مُعَاذَةُ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ - رضى الله عنها - كَمْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي صَلاَةَ الضُّحَى قَالَتْ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ وَيَزِيدُ مَا شَاءَ ‏.

মু’আযাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত কয় রাক‘আত আদায় করতেন? জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, তিনি ‘যুহা’ বা চাশতের সলাত সাধারণতঃ চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং অনেক সময় ইচ্ছামত আরো বেশী আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩৩, ই.সে. ১৫৪০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَزِيدَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ وَقَالَ يَزِيدُ مَا شَاءَ اللَّهُ ‏.

মুহাম্মাদ ইবনু জা’ফার ও শু’বাহ্ থেকে বর্ণিতঃ

ইয়াযীদ থেকে একই সানাদে অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তবে ইয়াযীদ তার বর্ননায় “মা-শা-আল্ল-হু” (আল্লাহ যা চান) কথাটি উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৫৩৪, ই.সে. ১৫৪১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫০
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةَ، حَدَّثَتْهُمْ عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى أَرْبَعًا وَيَزِيدُ مَا شَاءَ اللَّهُ ‏.

’আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় বেশীও আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩৫, ই.সে. ১৫৪২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫১
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ، بَشَّارٍ جَمِيعًا عَنْ مُعَاذِ بْنِ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৩৬, ই.সে. ১৫৪৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ مَا أَخْبَرَنِي أَحَدٌ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى إِلاَّ أُمُّ هَانِئٍ فَإِنَّهَا حَدَّثَتْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ بَيْتَهَا يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى صَلاَةً قَطُّ أَخَفَّ مِنْهَا غَيْرَ أَنَّهُ كَانَ يُتِمُّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرِ ابْنُ بَشَّارٍ فِي حَدِيثِهِ قَوْلَهُ قَطُّ ‏.

’আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একমাত্র উম্মু হানী ছাড়া আর কেউ-ই আমাকে এ কথা বলেন নি যে, সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘যুহা’ বা চাশতের সলাত আদায় করতে দেখেছে। উম্মু হানী বর্ণনা করেছেন যে, মক্কা বিজয়ের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে গিয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। (তিনি এ কথাও বলেছেন যে,) আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আর কখনো এত সংক্ষিপ্ত করে সলাত আদায় করতে দেখিনি। তবে তিনি রুকু’ ও সাজদাহ্‌গুলো পূর্ণরূপে আদায় করছিলেন। ইবনু বাশ্‌শার তার বর্ণিত হাদীসে ‘কাত্‌তু’ (কখনো) শব্দটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫৩৭, ই.সে. ১৫৪৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৩
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ، قَالَ سَأَلْتُ وَحَرَصْتُ عَلَى أَنْ أَجِدَ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ يُخْبِرُنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبَّحَ سُبْحَةَ الضُّحَى فَلَمْ أَجِدْ أَحَدًا يُحَدِّثُنِي ذَلِكَ غَيْرَ أَنَّ أُمَّ هَانِئٍ بِنْتَ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَتْنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى بَعْدَ مَا ارْتَفَعَ النَّهَارُ يَوْمَ الْفَتْحِ فَأُتِيَ بِثَوْبٍ فَسُتِرَ عَلَيْهِ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ لاَ أَدْرِي أَقِيَامُهُ فِيهَا أَطْوَلُ أَمْ رُكُوعُهُ أَمْ سُجُودُهُ كُلُّ ذَلِكَ مِنْهُ مُتَقَارِبٌ - قَالَتْ - فَلَمْ أَرَهُ سَبَّحَهَا قَبْلُ وَلاَ بَعْدُ ‏.‏ قَالَ الْمُرَادِيُّ عَنْ يُونُسَ ‏.‏ وَلَمْ يَقُلْ أَخْبَرَنِي ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস ইবনু নাওফাল (রহঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এমন কোন লোকের সন্ধান পেতে আমি খুবই আকাঙ্ক্ষী ছিলাম এবং এ ব্যাপারে লোকদের জিজ্ঞেসও করতাম যে, এমন কেউ আমাকে এ মর্মে জ্ঞাত করতে পারবে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘সলাতুয যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করেছেন। তবে একমাত্র আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী ছাড়া আর কাউকেই এমন পাইনি যে, আমাকে এ ব্যাপারে কিছু অবহিত করতে পেরেছে। তিনি (উম্মু হানী) আমাকে জানিয়েছেন যে, মক্কা বিজয়ের দিন সুর্যোদয়ের পর বেলা কিছু বাড়লে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে আসলেন। একটি কাপড় আনা হল এবং তা দিয়ে পর্দা করে দিলে তিনি গোসল করলেন। তারপর সলাতে দাড়ালেন এবং আট রাক‘আত আদায় করলেন। উম্মু হানী (রাঃ) বলেছেন- এ সলাতে তার ক্বিয়াম (দাঁড়ানো) দীর্ঘতর ছিল, না রুকু’ দীর্ঘতর ছিল, না সাজদাহ্‌ দীর্ঘতর ছিল তা আমি জানিনা। তবে ক্বিয়াম, রুকু’ ও সাজদাহ্‌ সবগুলোই মনে হয় এক রকমের দীর্ঘ ছিল। উম্মু হানী (রাঃ) বলেছেনঃ এর আগে কিংবা পরে আর কখনো আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ‘সলাতুয্‌ যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে দেখিনি। হাদীসটির বর্ণনাকারী মুরাদী এটি ইউনুস থেকে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘আখবারানী’ অর্থাৎ ‘ইউনুস আমাকে বলেছেন’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫৩৮, ই.সে. ১৫৪৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي النَّضْرِ، أَنَّ أَبَا مُرَّةَ، مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أُمَّ هَانِئٍ بِنْتَ أَبِي طَالِبٍ، تَقُولُ ذَهَبْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ وَفَاطِمَةُ ابْنَتُهُ تَسْتُرُهُ بِثَوْبٍ - قَالَتْ - فَسَلَّمْتُ فَقَالَ ‏"‏ مَنْ هَذِهِ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ أُمُّ هَانِئٍ بِنْتُ أَبِي طَالِبٍ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَرْحَبًا بِأُمِّ هَانِئٍ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ قَامَ فَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ مُلْتَحِفًا فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ ‏.‏ فَلَمَّا انْصَرَفَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ زَعَمَ ابْنُ أُمِّي عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ أَنَّهُ قَاتِلٌ رَجُلاً أَجَرْتُهُ فُلاَنُ بْنُ هُبَيْرَةَ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ قَدْ أَجَرْنَا مَنْ أَجَرْتِ يَا أُمَّ هَانِئٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ أُمُّ هَانِئٍ وَذَلِكَ ضُحًى ‏.

উম্মু হানী (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস আবূ মুর্‌রাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তিনি আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন। (তিনি বলেছেন) মক্কা বিজয়ের বছরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গিয়ে দেখলাম, তিনি গোসল করছেন আর তাঁর কন্যা ফাত্বিমাহ্‌ একটি কাপড় দিয়ে তাঁকে পর্দা করে রেখেছেন। উম্মু হানী বলেন- আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তখন তিনি জানতে চাইলেন, কে? আমি বললামঃ আমি আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী। তিনি (খুশীতে) বললেনঃ উম্মু হানীকে স্বাগতম। অতঃপর গোসল শেষ করে তিনি সলাতে দাড়াঁলেন এবং একটি মাত্র কাপড় গায়ে জড়িয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। সলাত শেষে আমি তাঁকে বললামঃ হে আল্লাহর রসুল! আমার ভাই ‘আলী ইবনু আবু ত্বলিব বলেছেনঃ তিনি আবু হুরায়রাহ্‌ (রাঃ)-এর পুত্র অমুককে হত্যা করে ছাড়বেন অথচ আমি তাকে নিরাপত্তা দিয়েছি। সব শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে উম্মু হানী! তুমি যাকে নিরাপত্তা দান করেছ আমিও তাকে নিরাপত্তা দান করেছি। উম্মু হানী বর্ণনা করেছেনঃ এ ঘটনা ছিল ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সময়ের। (ই.ফা. ১৫৩৯, ই.সে. ১৫৪৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৫
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى عَقِيلٍ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي بَيْتِهَا عَامَ الْفَتْحِ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ قَدْ خَالَفَ بَيْنَ طَرَفَيْهِ ‏.

উম্মু হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মক্কা বিজয়ের বছর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে একটি কাপড় গায়ে জড়িয়ে তার দু’ প্রান্ত দু’ দিকে উঠিয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৫৪০, ই.সে. ১৫৪৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، - وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ - حَدَّثَنَا وَاصِلٌ، مَوْلَى أَبِي عُيَيْنَةَ عَنْ يَحْيَى بْنِ عُقَيْلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ الدُّؤَلِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ "‏ يُصْبِحُ عَلَى كُلِّ سُلاَمَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا مِنَ الضُّحَى ‏"‏ ‏.

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি দিন শুরু হওয়ার সাথে সাথে তোমাদের প্রত্যেকের প্রতিটি অস্থি-বন্ধনী ও গিঁটের উপর সদাক্বাহ্‌ ওয়াজিব হয়। সুতরাং প্রতিটি তাসবীহ্‌ অর্থাৎ ‘সুবহানাল্ল-হ’ বলা সদাক্বাহ্‌ হিসেবে গন্য হয়। প্রতিটি তাহমীদ অর্থাৎ ‘আলহম্‌দুলিল্লা-হ’ বলা তার সদাক্বাহ্‌ হিসেবে গন্য হয়। প্রতিটি ‘আল্ল-হু আকবর’ তার জন্য এবং ‘নাহী আনিল মুনকার’ অর্থাৎ খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার প্রতিটি প্রয়াসও তার জন্য অনুরুপ সদাক্বাহ বলে গন্য হয়। তবে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের মাত্র দু রাক‘আত সলাত যদি সে আদায় করে তাহলে তা এ সবগুলোর সমকক্ষ হতে পারে। (ই.ফা. ১৫৪১, ই.সে. ১৫৪৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৭
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبُو التَّيَّاحِ، حَدَّثَنِي أَبُو عُثْمَانَ النَّهْدِيُّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَىِ الضُّحَى وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَرْقُدَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু [অর্থাৎ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আমাকে তিনটি কাজ করতে উপদেশ দিয়েছেন। সেগুলো হ’ল – প্রতি মাসে তিনটি করে সওম (রোযা) পালন করতে, ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে এবং ঘুমানোর পূর্বে বিত্‌র সলাত আদায় করতে। (ই.ফা. ১৫৪২, ই.সে.১৫৪৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৮
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبَّاسٍ الْجُرَيْرِيِّ، وَأَبِي، شِمْرٍ الضُّبَعِيِّ قَالاَ سَمِعْنَا أَبَا عُثْمَانَ النَّهْدِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِهِ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) -এর মাধ্যমে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৪৩, ই.সে.১৫৫০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৫৯
وَحَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ مَعْبَدٍ، حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُخْتَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الدَّانَاجِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو رَافِعٍ الصَّائِغُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ ‏.‏ فَذَكَرَ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু আবুল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজ করতে আদেশ করেছেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি আবূ হুরায়রাহ্ থেকে আবূ ‘উসমান বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.১৫৪৪, ই.সে.১৫৫১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬০
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ أَوْصَانِي حَبِيبِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ لَنْ أَدَعَهُنَّ مَا عِشْتُ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَصَلاَةِ الضُّحَى وَبِأَنْ لاَ أَنَامَ حَتَّى أُوتِرَ ‏.

আবুদ্ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি কাজ করতে আদেশ করেছেন। আমার জীবদ্দশায় তা কখনো পরিত্যাগ করব না। (তিনি আমাকে আদেশ করেছেন) প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন করতে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে আর বিত্‌র সলাত আদায় করার আগে না ঘুমাতে। (ই.ফা.১৫৪৫, ই.সে.১৫৫২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৪. অধ্যায়ঃ
ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত সুন্নাত, তার জন্য উৎসাহ দান, সেটা সংক্ষেপে ও সর্বদা আদায় করা এবং এতে যে ক্বিরাআত পাঠ মুস্তাহাব।

১৫৬১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ حَفْصَةَ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا سَكَتَ الْمُؤَذِّنُ مِنَ الأَذَانِ لِصَلاَةِ الصُّبْحِ وَبَدَا الصُّبْحُ رَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تُقَامَ الصَّلاَةُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উম্মুল মু‘মিনীন হাফসাহ্ তাকে বললেন যে, ফাজ্‌রের সলাতের আযানের পর মুয়ায্‌যিন যখন থেমে যেত এবং ভোরের আলো প্রকাশ পেত তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয সলাতের ইক্বামাত দেয়ার পূর্বে সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৪৬, ই.সে.১৫৫৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬২
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، رُمْحٍ عَنِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَيُّوبَ، كُلُّهُمْ عَنْ نَافِعٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ كَمَا قَالَ مَالِكٌ ‏.

হাফ্‌সাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাজ্‌র উদিত হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হালকা করে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা.১৫৪৭,ই.সে.১৫৫৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৩
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ لاَ يُصَلِّي إِلاَّ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ‏.


হাফ্‌সাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাজ্‌র উদিত হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হালকা করে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা.১৫৪৮, ই.সে.১৫৫৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৪
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

শু‘বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.১৫৪৯, ই.সে. ১৫৫৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَخْبَرَتْنِي حَفْصَةُ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَضَاءَ لَهُ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ‏.

হাফ্‌সাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের আলো প্রকাশিত হওয়ার পর দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৫০, ই.সে.১৫৫৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৬
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ إِذَا سَمِعَ الأَذَانَ وَيُخَفِّفُهُمَا ‏.

‘আয়িশাহ্‌হ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আযান শোনার পর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন আর তা সংক্ষিপ্ত আদায় করতেন। (ই.ফা.১৫৫১, ই.সে.১৫৫৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৭
وَحَدَّثَنِيهِ عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيٌّ يَعْنِي ابْنَ مُسْهِرٍ، ح وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرٍ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَابْنُ نُمَيْرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَاهُ عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَفِي حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ ‏.

‘আলী ইবনু হুজ্‌র, আবূ কুরায়ব, আবূ বকর ও ইবনু নুমায়র, 'আম্‌র আন্ নাক্বিদ (রহঃ) ..... সকলে হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে আবূ উসামাহ্ বর্ণিত হাদীসে “যখন ফজরের উদিত হলো” কথাটি উল্লেখ আছে। (ই.ফা.১৫৫২, ই.সে.১৫৫৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৮
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءِ وَالإِقَامَةِ مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ ‏

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের সলাতের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়ে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা.১৫৫৩, ই.সে. ১৫৬০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৬৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَمْرَةَ، تُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا كَانَتْ تَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَيُخَفِّفُ حَتَّى إِنِّي أَقُولُ هَلْ قَرَأَ فِيهِمَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত এত সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করতেন যে, আমি বলতাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি সলাতের দু’ রাক‘আতে সূরাহ্ ফাতিহাহ্ পড়েছেন? (ই.ফা.১৫৫৪, ই.সে. ১৫৬১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْصَارِيِّ، سَمِعَ عَمْرَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ أَقُولُ هَلْ يَقْرَأُ فِيهِمَا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ফাজ্‌রের সময় অর্থাৎ ভোর হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত আদায় করতেন। সলাত দু’ রাক‘আত এত সংক্ষিপ্ত হ’ত যে, আমার মনে প্রশ্ন জাগত- তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি সলাতে সূরাহ্ ফাতিহাহ্ পড়েছেন? (ই.ফা.১৫৫৫, ই.সে.১৫৬২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭১
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَطَاءٌ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ عَلَى شَىْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ أَشَدَّ مُعَاهَدَةً مِنْهُ عَلَى رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الصُّبْحِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের (ফরয সলাতের) পূর্বের দু’ রাক‘আত সুন্নাত আদায় করার প্রতি যত কঠোরভাবে খেয়াল রাখতেন অন্য কোন নাফ্‌ল সলাতের প্রতি ততখানি রাখতেন না। (ই.ফা.১৫৫৬, ই.সে. ১৫৬৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ جَمِيعًا عَنْ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، - قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا حَفْصٌ، - عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي شَىْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ أَسْرَعَ مِنْهُ إِلَى الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত নাফল্‌ সলাতের জন্য আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যত ব্যস্ততা প্রকাশ করতে দেখেছি অন্য কোন নাফ্‌ল সলাতের জন্য ততটা ব্যস্ততা প্রকাশ করতে দেখিনি। (ই.ফা.১৫৫৭, ই.সে.১৫৬৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ رَكْعَتَا الْفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ‏"‏ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত দুন্‌ইয়া ও তার সব কিছুর থেকে উত্তম। (ই.ফা.১৫৫৮, ই.সে. ১৫৬৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৪
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ قَالَ أَبِي حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ زُرَارَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي شَأْنِ الرَّكْعَتَيْنِ عِنْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ ‏ "‏ لَهُمَا أَحَبُّ إِلَىَّ مِنَ الدُّنْيَا جَمِيعًا ‏"‏ ‏.

ইয়াহ্ইয়া ইবনু হাবীব (রহঃ) ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের দু’ রাক‘আত সলাত সম্পর্কে বলেছেন যে, ঐ দু’ রাক‘আত সলাত আমার কাছে সারা দুন্ইয়ার সব কিছু থেকে অধিক প্রিয়। (ই.ফা.১৫৫৯, ই.সে. ১৫৬৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৫
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ يَزِيدَ، - هُوَ ابْنُ كَيْسَانَ - عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ ‏{‏ قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ‏}‏ وَ ‏{‏ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ‏}

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দূ’ রাক‘আত সলাতে (আরবী) পড়েছেন। (ই.ফা.১৫৬০, ই.সে.১৫৬৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৬
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا الْفَزَارِيُّ، - يَعْنِي مَرْوَانَ بْنَ مُعَاوِيَةَ - عَنْ عُثْمَانَ بْنِ حَكِيمٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ يَسَارٍ، أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فِي الأُولَى مِنْهُمَا ‏{‏ قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا‏}‏ الآيَةَ الَّتِي فِي الْبَقَرَةِ وَفِي الآخِرَةِ مِنْهُمَا ‏{‏ آمَنَّا بِاللَّهِ وَاشْهَدْ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ‏}

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত সুন্নাত সলাতের প্রথম রাক‘আতে সূরাহ বাক্বারার (আরবী)-(সূরাহ্ বাক্বারাহ্ ২:১৩৬) আয়াতটি এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে (আরবী) (সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান ৩:৬৪) আয়াতটি পড়তেন। (ই.ফা. ১৫৬১, ই.সে. ১৫৬৮)।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ ‏{‏ قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا‏}‏ وَالَّتِي فِي آلِ عِمْرَانَ ‏{‏ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ‏}

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দু’রাক‘আত সুন্নাত সালাতে (সূরা বাক্বারার আয়াত) (আরবী) (সূরা বাক্বারা ২:১৩৬) আয়াতটি এবং দ্বিতীয় রাক’আতে (আরবী) (সূরাহ আল ’ইমরান ৩:৬৪) আয়াতটি পড়তেন। (ই.ফা. ১৫৬২, ই.সে.১৫৬৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৭৮
وَحَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ حَكِيمٍ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ مَرْوَانَ الْفَزَارِيِّ ‏.

‘উসমান ইবনু হাকীম (রহঃ) মারওয়ান আল ফাযার থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা ১৫৬৩, ই. সে. ১৫৭০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫. অধ্যায়ঃ
ফার্‌যের পূর্বে ও পরে নিয়মিত সুন্নাতের ফাযীলাত এবং তার সংখ্যার বিবরণ

১৫৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ، - يَعْنِي سُلَيْمَانَ بْنَ حَيَّانَ - عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَنْبَسَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ، فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ بِحَدِيثٍ يُتَسَارُّ إِلَيْهِ قَالَ سَمِعْتُ أُمَّ حَبِيبَةَ تَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ مَنْ صَلَّى اثْنَتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِي يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ بُنِيَ لَهُ بِهِنَّ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ فَمَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ وَقَالَ عَنْبَسَةُ فَمَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ أُمِّ حَبِيبَةَ ‏.‏ وَقَالَ عَمْرُو بْنُ أَوْسٍ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ عَنْبَسَةَ ‏.‏ وَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ سَالِمٍ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ ‏.

‘আম্‌র ইবনু আওস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে রোগে ‘আমবাসাহ ইবনু আবূ সুফ্‌ইয়ান মৃত্যুবরণ করেছেন-সে রোগ শয্যায় থাকাকালে তিনি আমার কাছে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যা খুবই খুশীর বা আনন্দের। তিনি বলেছেন: আমি উম্মু হাবীবাহ্‌কে বলতে শুনেছি; তিনি বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, দিন ও রাতে যে ব্যক্তি মোট ১২ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত আদায় করে তার বিনিময়ে জান্নাতে ঐ ব্যক্তির জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। উম্মু হাবীবাহ্‌ বলেছেন: আমি যে সময়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এ সলাত সম্পর্কে শুনেছি তখন থেকে আর কখনো তা আদায় করা পরিত্যাগ করিনি। ‘আম্‌বাসাহ ইবনু আবূ সুফ্‌ইয়ান বলেছেন: এ সলাত সম্পর্কে যখন আমি উম্মু হাবীবার কাছে শুনেছি; তখন থেকে আর ঐ সলাত গুলো কখনো পরিত্যাগ করিনি। ‘আম্‌র ইবনু আওস বলেছেনঃ যে সময়ে এ সলাত সম্পর্কে আমি ‘আম্‌বাসাহ্‌ ইবনু আবূ সুফ্‌ইয়ান- এর নিকট থেকে শুনেছি সে সময় থেকে আর কখনো তা পরিত্যাগ করিনি। নু’মান ইবনু সালিম বলেছেন: যে সময় আমি এ হাদীসটি ‘আম্‌র ইবনু আওস- এর নিকট থেকে শুনেছি তখন থেকে কখনো আর তা পরিত্যাগ করিনি। (ই.ফা. ১৫৬৪, ই.সে.১৫৭১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮০
حَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏ "‏ مَنْ صَلَّى فِي يَوْمٍ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ سَجْدَةً تَطَوُّعًا بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.

নু’মান ইবনু সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে, (হাদীসটি হ’ল) যে ব্যক্তি দিনে ১২ রাক‘আত নফল (সুন্নাত) সলাত আদায় করে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হয়।[২৯]( ই.ফা. ১৫৬৫, ই.সে.১৫৭২)

[২৯] এ ১২ রাক‘আত হলঃ যুহরের পূর্বে ৪ রাক‘আত ও পরে ২ রাক‘আত, মাগরিবের পরে ২ রাক‘আত, ’ইশার পরে ২ রাক‘আত এবং ফাজ্রের পূর্বে ২ রাক‘আত মোট ১২ রাক‘আত। যুহরের পর ৪ রাক‘আত আদায় করা সম্বন্ধে উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) থেকে হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি যুহরের পূর্বে ৪ রাক‘আত ও পরে ৪ রাক‘আত হিফাযাত করে আদায় করে যাবে আল্লাহ জাহান্নামকে তার জন্য হারাম করে দিয়েছেন। (আবূ দাউদ, তিরমিযী, মুসলিম শারহে নাবাবী- ১ম খন্ড ২৫১ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮১
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يُصَلِّي لِلَّهِ كُلَّ يَوْمٍ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً تَطَوُّعًا غَيْرَ فَرِيضَةٍ إِلاَّ بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ أَوْ إِلاَّ بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ فَمَا بَرِحْتُ أُصَلِّيهِنَّ بَعْدُ ‏.‏ وَقَالَ عَمْرٌو مَا بَرِحْتُ أُصَلِّيهِنَّ بَعْدُ ‏.‏ وَقَالَ النُّعْمَانُ مِثْلَ ذَلِكَ ‏.

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি। (তিনি বলেছেন) কোন মুসলিম বান্দা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে প্রতিদিন ফার্য ছাড়াও আরো ১২ রাক‘আত নাফ্‌ল সলাত আদায় করে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। উম্মু হাবীবাহ্‌ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন- এরপর আর কখনো এ সলাত সমূহ আদায় করতে বিরত থাকিনি। আর ‘আমর ইবনু আওস বলেছেন-পরবর্তী সময়ে কখনো আমি এ সলাত আদায় করতে বিরত হই না। নু’মান ইবনু সালিমও অনুরূপ কথাই বলেছেন। (ই.ফা. ১৫৬৬, ই.সে. ১৫৭৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮২
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ بِشْرٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ الْعَبْدِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ النُّعْمَانُ بْنُ سَالِمٍ أَخْبَرَنِي قَالَ سَمِعْتُ عَمْرَو بْنَ أَوْسٍ، يُحَدِّثُ عَنْ عَنْبَسَةَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ تَوَضَّأَ فَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ ثُمَّ صَلَّى لِلَّهِ كُلَّ يَوْمٍ ‏"‏ ‏.‏ فَذَكَرَ بِمِثْلِهِ ‏.

উম্মু হাবীবাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন মুসলিম বান্দা যদি উত্তমরূপে ওযু করে আল্লাহর উদ্দেশে প্রতিদিন সলাত আদায় করে- এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ( ই.ফা. ১৫৬৭ , ই.সে.১৫৭৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৩
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، - وَهُوَ ابْنُ سَعِيدٍ - عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ الظُّهْرِ سَجْدَتَيْنِ وَبَعْدَهَا سَجْدَتَيْنِ وَبَعْدَ الْمَغْرِبِ سَجْدَتَيْنِ وَبَعْدَ الْعِشَاءِ سَجْدَتَيْنِ وَبَعْدَ الْجُمُعَةِ سَجْدَتَيْنِ فَأَمَّا الْمَغْرِبُ وَالْعِشَاءُ وَالْجُمُعَةُ فَصَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِهِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে যুহরের পূর্বে দু’ রাক‘আত, পরে দু’ রাক‘আত, মাগরিবের সালাতের পর দু’ রাক‘আত, ’ইশার সালাতের পর দু’ রাক‘আত এবং জুমু’আর সালাতের পর দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। তবে মাগরিব, ‘ইশা ও জুমু’আর সালাতের পরের দু’ রাক‘আত সলাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে তাঁর বাড়ীতে আদায় করেছি। (ই.ফা. ১৫৬৮, ই.সে. ১৫৭৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬. অধ্যায়ঃ
দাঁড়িয়ে ও বসে নাফ্‌ল সলাত আদায় এবং একই রাক’আতের অংশ বিশেষ দাঁড়িয়ে ও অংশ বিশেষ বসে আদায় করার বৈধতা

১৫৮৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ تَطَوُّعِهِ فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي فِي بَيْتِي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا ثُمَّ يَخْرُجُ فَيُصَلِّي بِالنَّاسِ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَكَانَ يُصَلِّي بِالنَّاسِ الْمَغْرِبَ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَيُصَلِّي بِالنَّاسِ الْعِشَاءَ وَيَدْخُلُ بَيْتِي فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَكَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ تِسْعَ رَكَعَاتٍ فِيهِنَّ الْوِتْرُ وَكَانَ يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً قَائِمًا وَلَيْلاً طَوِيلاً قَاعِدًا وَكَانَ إِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِمٌ وَإِذَا قَرَأَ قَاعِدًا رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَاعِدٌ وَكَانَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাফ্‌ল সলাত সম্পর্কে ‘আয়িশাহ্‌কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃরসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের (ফার্য সালাতের ) পূর্বে আমার ঘরে চার রাক‘আত নাফ্‌ল আদায় করতেন। তারপর গিয়ে মাসজিদে লোকদের সাথে সলাত আদায় করতেন। পরে ঘরে এসে আবার দু’ রাক‘আত নাফ্‌ল আদায় করতেন। অত:পর লোকজনের সাথে মাগরিবের সলাত আদায় করতেন এবং ঘরে এসে দু’ রাক‘আত নাফ্‌ল আদায় করতেন। আবার ‘ইশার সলাত লোকজনের সাথে আদায় করে আমার ঘরে এসে দু’ রাক‘আত নাফ্‌ল আদায় করতেন। আর রাতের বেলা বিত্রসহ নয় রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন, আবার দীর্ঘ সময় বসে বসেও নাফ্‌ল সলাত আদায় করতেন। যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে ক্বিরআত পড়তেন তখন দাঁড়িয়েই রুকূ’ ও সিজদাহ করতেন। আবার যখন বসে ক্বিরআত করতেন তখন রুকূ’ ও সিজদাহ বসেই করতেন। আর ফাজ্‌রের সময় বা ভোর হলেও দু’ রাক‘আত নাফ্‌ল আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৬৯. ই.সে.১৫৭৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ بُدَيْلٍ، وَأَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا رَكَعَ قَائِمًا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا رَكَعَ قَاعِدًا ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা দীর্ঘ সময় সলাত আদায় করতেন। যখন তিনি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করতেন তখন দাঁড়িয়েই রুকূ’ আদায় করতেন। আর যখন বসে সলাত আদায় করতেন তখন বসেই রুকূ’ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭০, ই. সে. ১৫৭৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ بُدَيْلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ كُنْتُ شَاكِيًا بِفَارِسَ فَكُنْتُ أُصَلِّي قَاعِدًا فَسَأَلْتُ عَنْ ذَلِكَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً قَائِمًا ‏.‏ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি পারস্যে অবস্থানকালীন সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমি বসে বসে সলাত আদায় করতাম। পরে আমি ‘আয়িশাহ্‌কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃরসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা দীর্ধ সময় পর্যন্ত সলাত আদায় করতেন। এরপর তিনি উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করলেন। ( ই. ফা. ১৫৭১, ই.সে. ১৫৭৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ الْعُقَيْلِيِّ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً قَائِمًا وَلَيْلاً طَوِيلاً قَاعِدًا وَكَانَ إِذَا قَرَأَ قَائِمًا رَكَعَ قَائِمًا وَإِذَا قَرَأَ قَاعِدًا رَكَعَ قَاعِدًا ‏.

‘আবদুল্লাহ্ ইবনু শাক্বীক্ব আল ‘উক্বায়লী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাত্রিকালীন সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে এবং দীর্ঘ সময় বসে সলাত আদায় করতেন। যখন তিনি দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত পড়তেন তখন দাঁড়িয়েই রুকু’ করতেন এবং যখন বসে ক্বিরাআত পড়তেন তখন বসেই রুকু’ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭২, ই.সে. ১৫৭৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৮
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ الْعُقَيْلِيِّ، قَالَ سَأَلْنَا عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ الصَّلاَةَ قَائِمًا وَقَاعِدًا فَإِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ قَائِمًا رَكَعَ قَائِمًا وَإِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ قَاعِدًا رَكَعَ قَاعِدًا ‏.

‘আবদুল্লাহ্ ইবনু শাক্বীক্ব আল ‘উক্বায়লী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর (নাফ্‌ল) সলাত সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিকাংশ সলাতই দাঁড়িয়ে এবং বসে আদায় করতেন। যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে সলাত শুরু করতেন তখন দাঁড়িয়েই রুকু’ করতেন। আর যখন বসে সলাত শুরু করতেন তখন বসেই রুকু’ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭৩, ই.সে. ১৫৮০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৮৯
وَحَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، أَخْبَرَنَا حَمَّادٌ يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي شَىْءٍ مِنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ جَالِسًا حَتَّى إِذَا كَبِرَ قَرَأَ جَالِسًا حَتَّى إِذَا بَقِيَ عَلَيْهِ مِنَ السُّورَةِ ثَلاَثُونَ أَوْ أَرْبَعُونَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَهُنَّ ثُمَّ رَكَعَ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কখনো রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের সলাতে বসে কিছু পড়তে (ক্বিরাআত করতে) দেখিনি। তবে পরবর্তী সময়ে তিনি বৃদ্ধ হয়ে পড়লে বসে বসেই ক্বিরাআত করতেন এবং শেষের সূরার ত্রিশ কিংবা চল্লিশ আয়াত যখন অবশিষ্ট থাকত তখন দাঁড়িয়ে ঐ আয়াতগুলো পড়তেন এবং রুকু’ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭৪, ই.সে ১৫৮১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯০
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، وَأَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي جَالِسًا فَيَقْرَأُ وَهُوَ جَالِسٌ فَإِذَا بَقِيَ مِنْ قِرَاءَتِهِ قَدْرُ مَا يَكُونُ ثَلاَثِينَ أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ ثُمَّ يَفْعَلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নাফ্‌ল সলাত বসে আদায় করতেন তখন বসে বসেই ক্বিরাআত পড়তেন। এভাবে যখন আনুমানিক ত্রিশ অথবা চল্লিশ আয়াত পর্যন্ত পড়তে অবশিষ্ট থাকত তখন তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত করতেন। অতঃপর রুকু’ ও সিজদাহ্ করতেন। পরে দ্বিতীয় রাক‘আতে পুনরায় অনুরূপ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭৫, ই.সে. ১৫৮২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي هِشَامٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ إِنْسَانٌ أَرْبَعِينَ آيَةً ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাফ্‌ল সলাতে বসে ক্বিরাআত পড়তেন। অতঃপর রুকু’ করতে মনস্থ করলে উঠে এতটুকু সময় পর্যন্ত দাঁড়ালেন, যে সময়ের মধ্যে একজন লোক চল্লিশ আয়াত পর্যন্ত পড়তে পারে। (ই.ফা. ১৫৭৬, ই.সে. ১৫৮৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯২
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ كَيْفَ كَانَ يَصْنَعُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الرَّكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ قَالَتْ كَانَ يَقْرَأُ فِيهِمَا فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ فَرَكَعَ ‏.

‘আলক্বামাহ্ ইবনু ওয়াক্বক্বাস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রাতের বেলার দু‘ রাকআত সলাত বসে কীভাবে আদায় করতেন জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু‘ রাক‘আত সলাতে ক্বিরাআত পড়তেন। তারপর রুকু’ করার সময় উঠে দাঁড়িয়ে রুকু’ করতেন। (ই.ফা. ১৫৭৭, ই.সে. ১৫৮৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ هَلْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَهُوَ قَاعِدٌ قَالَتْ نَعَمْ بَعْدَ مَا حَطَمَهُ النَّاسُ ‏.

‘আবদুল্লাহ্ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বসে সলাত আদায় করতেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, লোকজন তাকে বৃদ্ধ করে দেয়ার পর আদায় করতেন।[৩০] (ই.ফা. ১৫৭৮, ই.সে. ১৫৮৫)

[৩০] মানবতার কল্যাণ সাধনে তাদের যাবতীয় কর্মকান্ড, ভারবহন ও তত্ত্বাবধান করতে করতে তিনি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। (মুসলিম শারহে নাবাবী-১ম খন্ড ২৫২ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৪
وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ ‏.‏ فَذَكَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

‘আবদুল্লাহ্ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৭৯, ই.সে. ১৫৮৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، أَنَّ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَمُتْ حَتَّى كَانَ كَثِيرٌ مِنْ صَلاَتِهِ وَهُوَ جَالِسٌ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুর পূর্বে বেশীর ভাগ সলাত বসে বসে আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮০, ই.সে. ১৫৮৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৬
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَحَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ زَيْدٍ، قَالَ حَسَنٌ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنِي الضَّحَّاكُ بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا بَدَّنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَثَقُلَ كَانَ أَكْثَرُ صَلاَتِهِ جَالِسًا ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বয়স যখন বেশী হয়ে শরীর ভারী হয়ে গিয়েছিল তখন তিনি অধিকাংশ সলাত বসে বসে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৮১, ই.সে. ১৫৮৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ السَّهْمِيِّ، عَنْ حَفْصَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي سُبْحَتِهِ قَاعِدًا حَتَّى كَانَ قَبْلَ وَفَاتِهِ بِعَامٍ فَكَانَ يُصَلِّي فِي سُبْحَتِهِ قَاعِدًا وَكَانَ يَقْرَأُ بِالسُّورَةِ فَيُرَتِّلُهَا حَتَّى تَكُونَ أَطْوَلَ مِنْ أَطْوَلَ مِنْهَا ‏.

হাফ্‌সাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কখনো বসে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতে দেখিনি। পরবর্তী সময়ে তাঁর ওয়াফাতের এক বছর পূর্বে তাঁকে বসে নাফ্‌ল সলাত আদায় করতে দেখেছি। তিনি অতি উত্তমরূপে স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে সূরাহ্ পড়তেন। এ কারণে তার সলাত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে যেত। (ই.ফা. ১৫৮২, ই.সে. ১৫৮৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৮
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، جَمِيعًا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّهُمَا قَالاَ بِعَامٍ وَاحِدٍ أَوِ اثْنَيْنِ ‏.

আবুত্ ত্বহির, হারমালাহ্, ইসহাক্ব ইবনু ইব্রাহীম ও ‘আব্‌দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) ..... সবাই যুহরী থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তারা উভয়ে (ইবনু ইউসুফ ও মা‘মার) “এক বছর অথবা দু’বছর পূর্বে” কথাটি উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮৩, ই.সে. ১৫৯০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৫৯৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ حَسَنِ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ سِمَاكٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي جَابِرُ بْنُ سَمُرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَمُتْ حَتَّى صَلَّى قَاعِدًا ‏.

জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে সলাত না আদায় করে (অর্থাৎ বসে সলাত আদায়ের মত বার্ধক্যে পৌছার পূর্বে) মারা যাননি। (ই.ফা. ১৫৮৪,ই.সে. ১৫৯১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০০
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يَسَافٍ، عَنْ أَبِي يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ حُدِّثْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ صَلاَةُ الرَّجُلِ قَاعِدًا نِصْفُ الصَّلاَةِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَتَيْتُهُ فَوَجَدْتُهُ يُصَلِّي جَالِسًا فَوَضَعْتُ يَدِي عَلَى رَأْسِهِ فَقَالَ مَا لَكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو قُلْتُ حُدِّثْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَّكَ قُلْتَ ‏"‏ صَلاَةُ الرَّجُلِ قَاعِدًا عَلَى نِصْفِ الصَّلاَةِ ‏"‏ ‏.‏ وَأَنْتَ تُصَلِّي قَاعِدًا قَالَ ‏"‏ أَجَلْ وَلَكِنِّي لَسْتُ كَأَحَدٍ مِنْكُمْ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ বসে সলাত আদায় করলে তা অর্ধেক সলাতের সমকক্ষ। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আম্‌র বর্ণনা করেছেন, এরপর একদিন আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গিয়ে দেখলাম তিনি বসে সলাত আদায় করেছেন। আমি তাঁর মাথার উপর হাত রাখলাম। তিনি বললেনঃ হে আবদূল্লাহ্ ইবনু ‘আম্‌র! কী ব্যাপার? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আপনি বলেছেনঃ কেউ বসে সলাত আদায় করলে তা অর্ধেক সলাতের সমান হয়। কিন্তু এখন দেখেছি আপনি নিজেই বসে সলাত আদায় করছেন। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ , তবে আমি তোমাদের কারো মত না।[৩১] (ই.ফা. ১৫৮৫, ই.সে. ১৫৯২)

[৩১] ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, এ মর্মে উলামাদের বক্তব্য হল-নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একান্ত স্বতন্ত্র কতক বিশেষত্বের মধ্যে এটিও একটি ছিল যে, দাঁড়িয়ে নাফ্‌ল সলাত আদায় করার ক্ষমতা থাকা স্বত্ত্বেও তাঁর বসে সলাত আদায়ের সমান সাওয়াব লাভ হত। (মুসলিম শারহে নাবাবী-১ম খন্ড ২৫৩ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০১
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ جَمِيعًا عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، كِلاَهُمَا عَنْ مَنْصُورٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَفِي رِوَايَةِ شُعْبَةَ عَنْ أَبِي يَحْيَى الأَعْرَجِ، ‏.

আবূ বাকর ইবনু শায়বাহ্, মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার, ইবনুল মুসান্না (রহঃ) ..... উভয়ে মানসূর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে শু’বাহ্ (রহঃ) ইয়াহ্ইয়া আল আ‘রাজ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮৬, ই.সে. ১৫৯৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭. অধ্যায়ঃ
রাতের সলাত, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাতের সলাতের রাক‘আত সংখ্যা, বিত্‌র সলাত এক রাক’আত এবং এক রাক’আত সলাত আদায় সহীহ্ সাব্যস্ত

১৬০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي بِاللَّيْلِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْهَا بِوَاحِدَةٍ فَإِذَا فَرَغَ مِنْهَا اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُؤَذِّنُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা এগার রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তার মধ্যে এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করতেন। সলাত শেষ করে তিনি ডান পাশে ফিরে শুতেন। অতঃপর ভোরে মুয়ায্‌যিন আসলে তিনি (উঠে) সংক্ষিপ্তভাবে দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৮৭, ই.সে. ১৫৯৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৩
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِيمَا بَيْنَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلاَةِ الْعِشَاءِ - وَهِيَ الَّتِي يَدْعُو النَّاسُ الْعَتَمَةَ - إِلَى الْفَجْرِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُسَلِّمُ بَيْنَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ وَيُوتِرُ بِوَاحِدَةٍ فَإِذَا سَكَتَ الْمُؤَذِّنُ مِنْ صَلاَةِ الْفَجْرِ وَتَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ وَجَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُؤَذِّنُ لِلإِقَامَةِ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সলাত ও ফাজ্‌রের সলাতের মধ্যবর্তী সময়ে এগার রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। এর মধ্যে এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করতেন এবং প্রতি দু‘রাকআতে সালাম ফিরাতেন। ‘ইশার সলাত কে লোকজন ঐ সময়ে ‘আতামাহ্’ বলত। মুয়ায্‌যিন আযান দিয়ে শেষ করলে এবং ফাজ্‌রের সময় স্পষ্ট হয়ে উঠলে মুয়ায্‌যিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসত। তখন তিনি সংক্ষিপ্তভাবে দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। এরপর ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন। পরে মুয়ায্‌যিন পুনরায় ইক্বামাতের জন্য আসত (তখন উঠে তিনি সলাত আদায় করতেন)। (ই.ফা. ১৫৮৮, ই. সে ১৫৯৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৪
وَحَدَّثَنِيهِ حَرْمَلَةُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ وَسَاقَ حَرْمَلَةُ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ وَتَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ وَجَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرِ الإِقَامَةَ ‏.‏ وَسَائِرُ الْحَدِيثِ بِمِثْلِ حَدِيثِ عَمْرٍو سَوَاءً ‏.‏

ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে হারমালাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে- “ফজরের সময় স্পষ্ট হয়ে উঠলে মুয়াজ্জিন তাঁর কাছে আসত” কথাটি উল্লেখ করেননি। আর তিনি ইক্বামাতের কথাও উল্লেখ করেননি। এছাড়া হাদীসের অবশিষ্ট অংশ তিনি ‘আম্‌র ইবনু হারিস বর্ণিত হাদীসের মতো হুবহু বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৮৯, ই.সে. ১৫৯৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً يُوتِرُ مِنْ ذَلِكَ بِخَمْسٍ لاَ يَجْلِسُ فِي شَىْءٍ إِلاَّ فِي آخِرِهَا ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। এর মধ্যে পাঁচ রাক‘আত আদায় করতেন বিত্‌র এবং এতে একেবারে শেষে ছাড়া কোন বৈঠক করতেন না। (ই.ফা. ১৫৯০, ই.সে. ১৫৯৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَأَبُو أُسَامَةَ كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.

আবু বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ্ এবং আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... সকলে হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৯১, ই.সে. ১৫৯৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৭
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً بِرَكْعَتَىِ الْفَجْرِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা ফাজ্‌রের দু‘রাকআত সুন্নাতসহ তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯২, ই.সে. ১৫৯৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَمَضَانَ قَالَتْ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا فَقَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ فَقَالَ ‏ "‏ يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَىَّ تَنَامَانِ وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي ‏"‏ ‏.

আবূ সালামাহ্ ইবনু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রমাযান মাসের (রাতের) সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে কিংবা অন্য কোন সময়ে রাতের বেলা এগার রাক‘আতের বেশী সলাত আদায় করতেন না। প্রথম চার রাক‘আত তিনি এমনভাবে আদায় করতেন যে, তার সৌন্দর্য সম্পর্কে আর কি জিজ্ঞেস করবে? তারপর চার রাক‘আত তিনি এত সুন্দর করে আদায় করতেন যে, তার সৌন্দর্য সম্পর্কে ও দীর্ঘতা সম্বন্ধে আর কি জিজ্ঞেস করবে? এরপর তিনি আরো তিন রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে আমি জিজ্ঞেস করলাম যে, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বিত্‌র সলাত আদায়ের পূর্বেই ঘুমাতেন? জবাবে তিনি বললেন, হে ‘আয়িশাহ্‌! আমার চোখ দুটি ঘুমায় কিন্তু আমার হৃদয়-মন ঘুমায় না। (ই.ফা. ১৫৯৩, ই.সে. ১৬০০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬০৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي ثَمَانَ رَكَعَاتٍ ثُمَّ يُوتِرُ ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ قَامَ فَرَكَعَ ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَيْنَ النِّدَاءِ وَالإِقَامَةِ مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ ‏.

আবূ সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর (রাতের) সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তের রাক‘আত আদায় করতেন। প্রথমে তিনি আট রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর বিত্‌র আদায় করতেন। সবশেষে বসে বসে আরো দু‘ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। পরে রুকু করার সময় উঠে দাঁড়িয়ে রুকু’ করতেন। অতঃপর ফাজ্‌রের সলাতের আযান ও ইক্বামাতের মধ্যবর্তী সময়েও দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৪, ই.সে. ১৬০১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১০
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، ح وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ بِشْرٍ الْحَرِيرِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ، - يَعْنِي ابْنَ سَلاَّمٍ - عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِهِمَا تِسْعَ رَكَعَاتٍ قَائِمًا يُوتِرُ مِنْهُنَّ ‏.

আবূ সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

 তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। ..... পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করলেন। তবে তাদের উভয়ের বর্ণিত হাদীসে দাঁড়িয়ে নয় রাক‘আত সলাত আদায় করার কথা উল্লেখ আছে এবং তার মধ্যে বিতরের সলাত ও অন্তর্ভূক্ত আছে। (ই.ফা. ১৫৯৫, ই.সে. ১৬০২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১১
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي لَبِيدٍ، سَمِعَ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ أَتَيْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ أَىْ أُمَّهْ أَخْبِرِينِي عَنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالَتْ كَانَتْ صَلاَتُهُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ وَغَيْرِهِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً بِاللَّيْلِ مِنْهَا رَكْعَتَا الْفَجْرِ ‏.

আবূ সালামাহ্ (রাঃ} থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আম্মাজান! আমাকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সলাত সম্পর্কে অবহিত করুন তো। তিনি বললেনঃ রমাযান ও অন্যান মাসে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত সহ রাতের বেলা মোট তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৬, ই.সে. ১৬০৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১২
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا حَنْظَلَةُ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، تَقُولُ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ عَشَرَ رَكَعَاتٍ وَيُوتِرُ بِسَجْدَةٍ وَيَرْكَعُ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَتِلْكَ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাতের এক বেলা রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। আর এক রাক‘আত বিত্‌র এবং দু’ রাক‘আত ফাজ্‌রের সুন্নাতসহ মোট তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৭, ই.সে. ১৬০৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৩
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَأَلْتُ الأَسْوَدَ بْنَ يَزِيدَ عَمَّا حَدَّثَتْهُ عَائِشَةُ، عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ يَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ وَيُحْيِي آخِرَهُ ثُمَّ إِنْ كَانَتْ لَهُ حَاجَةٌ إِلَى أَهْلِهِ قَضَى حَاجَتَهُ ثُمَّ يَنَامُ فَإِذَا كَانَ عِنْدَ النِّدَاءِ الأَوَّلِ - قَالَتْ - وَثَبَ - وَلاَ وَاللَّهِ مَا قَالَتْ قَامَ - فَأَفَاضَ عَلَيْهِ الْمَاءَ - وَلاَ وَاللَّهِ مَا قَالَتِ اغْتَسَلَ ‏.‏ وَأَنَا أَعْلَمُ مَا تُرِيدُ - وَإِنْ لَمْ يَكُنْ جُنُبًا تَوَضَّأَ وُضُوءَ الرَّجُلِ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ صَلَّى الرَّكْعَتَيْنِ ‏.

আবূ ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে ‘আস্‌ওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ-এর কাছে বর্ণিত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের প্রথমভাগে ঘুমাতেন এবং শেষভাগে জাগতেন। এ সময় যদি স্ত্রীদের সাহচর্য লাভের প্রয়োজন হ'ত তাহলে তা পূরণ করতেন এবং এরপর আবার ঘুমাতেন। ফাজ্‌রের আযানের সময় (তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে) তিনি ত্বরিতে উঠতেন। আল্লাহর শপথ! তিনি [আয়িশাহ্‌ (রাঃ)] বলেননি যে, তিনি গোসল করতেন। তার উদ্দেশ্য আকাঙ্খা আমি ভাল করেই জানতাম। তিনি নাপাক না হয়ে থাকলে কোন লোক শুধু সলাতের জন্য যেভাবে ওযূ করে থাকে সেভাবে ওযূ করতেন এবং তারপর ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৯৮, ই.সে. ১৬০৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا عَمَّارُ بْنُ رُزَيْقٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ حَتَّى يَكُونَ آخِرَ صَلاَتِهِ الْوِتْرُ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা যে সলাত আদায় করতেন তাতে সর্বশেষে আদায় করতেন বিত্‌র সলাত। (ই. ফা. ১৫৯৯, ই.সে. ১৬০৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৫
حَدَّثَنِي هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ عَمَلِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ كَانَ يُحِبُّ الدَّائِمَ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ أَىَّ حِينٍ كَانَ يُصَلِّي فَقَالَتْ كَانَ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ قَامَ فَصَلَّى ‏.

মাসরূক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর 'আমাল সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়মিত ‘আমালকে পছন্দ করতেন। মাসরূক্ব বলেন, আমি তাঁকে আবার জিজ্ঞেস করলাম : তিনি সলাত আদায় করতেন কোন্‌ সময়? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তিনি যখন মোরগের ডাক শুনতেন তখন উঠে সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬০০, ই.সে. ১৬০৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ بِشْرٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا أَلْفَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم السَّحَرُ الأَعْلَى فِي بَيْتِي - أَوْ عِنْدِي - إِلاَّ نَائِمًا ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার ঘরে অথবা আমার কাছে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় সব সময় ‘সুবহে কাযিব’ (সাহরীর শুরু) এর সময় হয়ে যেত। (ই.ফা. ১৬০১, ই.সে. ১৬০৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَإِنْ كُنْتُ مُسْتَيْقِظَةً حَدَّثَنِي وَإِلاَّ اضْطَجَعَ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফাজ্‌রের দু’ রাক‘আত নাফ্‌ল (সলাত) আদায় করার পর আমি জাগ্রত থাকলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে কথাবার্তা বলতেন। অন্যথায় শুয়ে পড়তেন। (ই.ফা. ১৬০২, ই.সে. ১৬০৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৮
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي عَتَّابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ ‏.

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৩, ই.সে. ১৬১০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬১৯
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ تَمِيمِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فَإِذَا أَوْتَرَ قَالَ ‏ "‏ قُومِي فَأَوْتِرِي يَا عَائِشَةُ ‏"‏ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা সলাত আদায় করতেন। তাঁর বিত্‌র পড়া শেষ হয়ে গেলে তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বলতেন : হে ‘আয়িশাহ্‌! ওঠো এবং বিত্‌র পড়। (ই.ফা. ১৬০৪, ই.সে. ১৬১১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২০
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي صَلاَتَهُ بِاللَّيْلِ وَهِيَ مُعْتَرِضَةٌ بَيْنَ يَدَيْهِ فَإِذَا بَقِيَ الْوِتْرُ أَيْقَظَهَا فَأَوْتَرَتْ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রাতের বেলা সলাত আদায় করতেন তখন ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁর সামনে তাড়াতাড়ি শুয়ে থাকতেন। সলাত শেষে যখন তাঁর শুধুমাত্র বিত্‌র পড়া বাকি থাকত তখন তিনি ‘আয়িশাহ্‌ কে জাগিয়ে দিতেন। আর তিনি [আয়িশাহ্‌ (রাঃ)] তখন উঠে বিত্‌র আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬০৫,ই.সে.১৬১২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي يَعْفُورٍ، - وَاسْمُهُ وَاقِدٌ وَلَقَبُهُ وَقْدَانُ - ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَ أَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، كِلاَهُمَا عَنْ مُسْلِمٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সারা রাতের যে কোন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্‌র আদায় করেছেন। এমন কি কোন কোন সময় রাতের শেষভাগেও তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্‌র সলাত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৬, ই.সে. ১৬১৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ وَثَّابٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَوَّلِ اللَّيْلِ وَأَوْسَطِهِ وَآخِرِهِ فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সারা রাতের যে কোন অংশে রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্‌র সলাত আদায় করেছেন। তিনি রাতের প্রথমভাগে, মধ্যভাগে, শেষভাগে এবং এমনি ভোরে বিত্‌র আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৭, ই.সে. ১৬১৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৩
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ، - قَاضِي كِرْمَانَ - عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُلَّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَانْتَهَى وِتْرُهُ إِلَى آخِرِ اللَّيْلِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সারা রাতের মধ্যে যে কোন সময় রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিত্‌রের সলাত আদায় করেছেন। এমনকি তিনি শেষ রাতেও বিত্‌র আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৬০৮, ই.সে. ১৬১৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৮. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালীন সলাত- আর যে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ে

১৬২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ، فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلاَحِ وَالْكُرَاعِ وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ‏"‏ أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ رَاجَعَ امْرَأَتَهُ وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَالَ عَائِشَةُ ‏.‏ فَأْتِهَا فَاسْأَلْهَا ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهَا فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا فَقَالَ مَا أَنَا بِقَارِبِهَا لأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلاَّ مُضِيًّا ‏.‏ - قَالَ - فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهَا فَأَذِنَتْ لَنَا فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا ‏.‏ فَقَالَتْ أَحَكِيمٌ فَعَرَفَتْهُ ‏.‏ فَقَالَ نَعَمْ ‏.‏ فَقَالَتْ مَنْ مَعَكَ قَالَ سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ ‏.‏ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ وَقَالَتْ خَيْرًا - قَالَ قَتَادَةُ وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قُلْتُ بَلَى ‏.‏ قَالَتْ فَإِنَّ خُلُقَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ الْقُرْآنَ ‏.‏ - قَالَ - فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلاَ أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَىْءٍ حَتَّى أَمُوتَ ثُمَّ بَدَا لِي فَقُلْتُ أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالَتْ أَلَسْتَ تَقْرَأُ ‏{‏ يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ‏}‏ قُلْتُ بَلَى ‏.‏ قَالَتْ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ فَقَامَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ حَوْلاً وَأَمْسَكَ اللَّهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَىْ عَشَرَ شَهْرًا فِي السَّمَاءِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ ‏.‏ - قَالَ - قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالَتْ كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيَتَسَوَّكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهَا إِلاَّ فِي الثَّامِنَةِ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يَنْهَضُ وَلاَ يُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَىَّ فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَخَذَ اللَّحْمَ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ صَنِيعِهِ الأَوَّلِ فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَىَّ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى صَلاَةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا وَكَانَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً وَلاَ أَعْلَمُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ وَلاَ صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ وَلاَ صَامَ شَهْرًا كَامِلاً غَيْرَ رَمَضَانَ ‏.‏ - قَالَ - فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسِ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا فَقَالَ صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ أَقْرَبُهَا أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ ‏.‏ - قَالَ - قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ حَدِيثَهَا ‏.‏

যুরারাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির (রহঃ) আল্লাহর পথে (আজীবন) লড়াই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। তাই তিনি মাদীনায় আগমন করলেন। তিনি চাচ্ছিলেন এ উদ্দেশে তিনি তার জমি-জমা বিক্রি করে তা দ্বারা অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধের ঘোড়া কিনবেন এবং রোমান অর্থাৎ খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে আমৃত্যু জিহাদ করবেন। তাই মদীনায় এসে তিনি মাদীনাহ্‌বাসী কিছু লোকের সাথে সাক্ষাৎ করলে তারা তাঁকে ঐরূপ করতে নিষেধ করলেন। তারা তাকে এ কথাও জানালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় ছয়জন লোকের একটি দল এ একই করতে চাইলে আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা করতে নিষেধ করেছিলেন : আমার জীবন ও কর্মে কি তোমাদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ নেই? তারা (মাদীনাহ্‌বাসী) যখন তাকে এ কথাটি শুনালেন তখন তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলেন (রুজ‘আত করলেন) এবং কিছু লোককে এ ব্যাপারে সাক্ষী রাখলেন। কেননা এ কাজের (জিহাদের) জন্য তিনি তার স্ত্রীকে ত্বলাক দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস-এর কাছে এসে তাঁকে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্‌র সলাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস তাঁকে বললেনঃ রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্‌র সলাত সম্পর্কে পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী জানে আমি এমন একজন লোকের সন্ধান কি তোমাকে দিব না? তিনি (সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির) বললেনঃতিনি কে? ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আব্বাস বললেনঃ তিনি হলেন ‘আয়িশা (রাঃ)। তার কাছে গিয়ে তুমি জিজ্ঞেস করবে, তারপর তোমাকে দেয়া তাঁর জবাব আমাকে এসে জানাবে। আমি তখন তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলাম। প্রথমে আমি হাকীম ইবনু আফ্‌লাহ-র কাছে গেলাম। আমি তাকে আমার সাথে তাঁর (‘আয়িশাহ্‌) এ দু’ দলের ব্যাপারে কোন কিছু বলতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্ত তিনি তা না শুনে বরং একটি পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির বলেনঃ তখন আমি তাঁকে ক্বসম দিয়ে যেতে বললাম। তাই তিনি যেতে রাজি হলেন। আমরা ‘আয়িশা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাঁকে অবহিত করলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দান করলেন। আমরা তাঁর কাছে গেলে তিনি হাকীম আফ্‌লাহ কে চিনতে পারলেন। তাই বললেনঃ আরে , এ যে হাকীম? তিনি (হাকীম ইবনু আফ্‌লাহ) বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : তোমার সাথে কে আছে? তিনি বললেন ” সা‘দ ইবনু হিশাম (ইবনু আমির)। তিনি প্রশ্ন করলেন। কোন্‌ হিশাম? হাকীম ইবনু আফ্‌লাহ বললেনঃ আমিরের পুত্র হিশাম। এ কথা শুনে তিনি তার প্রতি খুব স্নেহপ্রবণ হলেন এবং তার ব্যাপারে ভাল মন্তব্য করলেন। ক্বাতাদাহ্ বর্ণনা করলেন : আফ্‌লাহ উহুদের যু্দ্ধে শাহীদ হয়েছিলেন। এরপর আমি বললাম : হে উম্মুল মু‘মিনীন! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আখলাক্ব সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। এ কথা শুনে তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি কুরআন পড় না? আমি বললাম হ্যাঁ, পড়ি। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আখলাক্ব তো ছিল কুরআন। সা‘দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির বলেছেনঃ আমি তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম উঠে চলে আসি এবং মৃত্যু পর্যন্ত এ ব্যাপারে আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করি। কিন্তু আমার মনে আবার একটি নতুন ধারণা জাগল। তাই আমি বললাম : আমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাতের ইবাদাত (ক্বিয়ামুল লায়ল) সম্পর্কে কিছু অবহিত করুন। তিনি এবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন : তুমি কি সুরাহ্ “ইয়া আইয়ুহাল মুযযা্‌ম্‌মিল” পড় না? আমি বললাম-হ্যাঁ পড়ি। তিনি বললেন ” মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ এ সূরার প্রথমভাগে “ক্বিয়ামুল লায়ল” বা রাতের ‘ইবাদাত বন্দেগী ফরয করে দিয়েছেন। তাই এক বছর পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ রাতের বেলা ‘ইবাদাত করেছেন। মহান আল্লাহ বারো মাস পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ আসমানে ঠেকিয়ে রেখেছিলেন (অর্থাৎ বারো মাস পর্যন্ত এ সূরার শেষাংশ অবতীর্ণ করেননি)। অবশেষে (বারো মাস পরে) এ সূরার শেষে আল্লাহ তা‘আলা রাতের ‘ইবাদাতের হুকুম লঘু করে আয়াত অবতীর্ণ করলেন। আর এ কারণে রাত জেগে ‘ইবাদাত যেখানে ফরয ছিল সেখানে তা নাফ্‌ল বা ঐচ্ছিক হয়ে গেল। সা‘দ ইবনু হিশাম বলেনঃ আমি বললাম, হে উম্মূল মুমিনীন! রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্‌র সলাত সম্পর্কে আমাকে কিছু অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ আমরা তাঁর জন্য মিসওয়াক এবং ওযূর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। অতঃপর রাতের বেলা মহান আল্লাহ যখন চাইতেন তখন তাঁকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি উঠে মিসওয়াক করতেন। ওযূ করতেন এবং নয় রাক‘আত (বিত্‌র) সলাত আদায় করতেন। এতে অষ্টম রাক‘আত ছাড়া বসতেন না। এ বৈঠকে তিনি আল্লাহকে স্মরণ করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন এবং তার কাছে প্রার্থনা করতেন। অতঃপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যে আমরা তা শুনতে পেতাম। এবার সালাম ফিরানোর পর ঘরে বসেই তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর বললেনঃ হে বৎস! এ এগার রাক‘আত সলাত তিনি রাতে আদায় করতেন। পরবর্তীতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বয়স বেড়ে গিয়েছিল এবং শরীরও কিছুটা মাংসল হয়ে গিয়েছিল তখন তিনি সাত রাক‘আত বিত্‌র আদায় করতেন। এক্ষেত্রেও তিনি শেষের দু’ রাক‘আত সলাত পূর্বের মতো করেই আদায় করতেন : হে বৎস! এভাবে তিনি নয় রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন সলাত আদায় করলে তা সর্বদা নিয়মিত আদায় করা পছন্দ করতেন। যখন ঘুমের প্রাবল্য বা ব্যথা-বেদনার কারণে তিনি রাতে ‘ইবাদাত (সলাত আদায়) করতে পারতেন না, তখন দিনের বেলা বারো রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রাতে পুরো কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করেছেন বা সকাল পর্যন্ত সারা রাত আদায় করেছেন কিংবা রমাযান মাস ছাড়া সারা মাস সিয়াম (রোযা) পালন করেছেন এমনটি আমি কখনো দেখিনি। সা'দ ইবনু হিশাম ইবনু 'আমির বর্ণনা করেছেন পরে আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এসে ‘আয়িশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তিনি সঠিক বলেছেন। আমি যদি তাঁর কাছে থাকতাম বা তাঁর কাছে যেতাম তাহলে নিজে তাঁর মুখ থেকে হাদীসটি শুনতে পেতাম। সা‘দ ইবনু হিশাম বললেনঃ আমার যদি জানা থাকত যে, আপনি তাঁর কাছে যান না, তাহলে আপনাকে আমি তাঁর কথা বলতাম না। (ই.ফা. ১৬০৯, ই.সে. ১৬১৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثُمَّ انْطَلَقَ إِلَى الْمَدِينَةِ لِيَبِيعَ عَقَارَهُ ‏.‏ فَذَكَرَ نَحْوَهُ ‏.‏

সা'দ ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তার স্ত্রীকে ত্বলাক্ব দিয়ে নিজের জমিজমা বিক্রি করার জন্য মদীনায় আসলেন ..... পুর্বোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬১০, ই.সে. ১৬১৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّهُ قَالَ انْطَلَقْتُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَسَأَلْتُهُ عَنِ الْوِتْرِ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِقِصَّتِهِ وَقَالَ فِيهِ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قُلْتُ ابْنُ عَامِرٍ ‏.‏ قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ عَامِرٌ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ ‏.‏

সা'দ ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে তাঁকে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিত্‌র সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর তিনি হাদীসটি হুবহু পূর্বে বর্ণিত হাদীসের মতো বর্ণনা করলেন। তবে এতে তিনি এ কথাও বর্ণনা করেছেন যে, আয়িশাহ্‌ (রাঃ) বললেনঃ কোন্‌ হিশাম? তখন আমি বললাম 'আমির-এর পুত্র হিশাম। এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ 'আমির কত উত্তম মানুষ ছিলেন। তিনি উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত লাভ করেছিলেন। (ই.ফা. ১৬১১, ই.সে. ১৬১৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৭
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامٍ، كَانَ جَارًا لَهُ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ، طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ‏.‏ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سَعِيدٍ وَفِيهِ قَالَتْ مَنْ هِشَامٌ قَالَ ابْنُ عَامِرٍ ‏.‏ قَالَتْ نِعْمَ الْمَرْءُ كَانَ أُصِيبَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ ‏.‏ وَفِيهِ فَقَالَ حَكِيمُ بْنُ أَفْلَحَ أَمَا إِنِّي لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لاَ تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا أَنْبَأْتُكَ بِحَدِيثِهَا ‏.

যুরারাহ্ ইবনু আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সা’দ ইবনু হিশাম (রহঃ) ছিলেন তাঁর প্রতিবেশী। তিনি যুরারাহ্‌কে স্বীয় স্ত্রীকে ত্বলাক দেয়ার কথা জানালেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি সা‘ঈদ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস বর্ণনা করলেন যাতে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, ‘আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন : কোন্ হিশাম-এর কথা বলছ? তখন হাকীম ইবনু আফ্‌লাহ বললেনঃ‘আমিরের পুত্র হিশামের কথা বলছি। এ কথা শুনে ‘আয়িশাহ্‌ বলে উঠলেন- ‘আমির কত ভাল লোক ছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে উহুদ যুদ্ধে শারীক হয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। এ হাদীসে এ কথাও বর্ণিত হয়েছে যে, হাকীম ইবনু আফ্‌লাহ বললেনঃযদি আমার জানা থাকত যে, আপনি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে যান না তাহলে আমি আপনাকে তার সম্পর্কে বলতাম না। (ই.ফা. ১৬১২, ই.সে. ১৬১৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৮
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، قَالَ سَعِيدٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا فَاتَتْهُ الصَّلاَةُ مِنَ اللَّيْلِ مِنْ وَجَعٍ أَوْ غَيْرِهِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ব্যথা-বেদনা বা অন্য কোন কারণে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাত্রিকালীন কোন সলাত ক্বাযা হয়ে গেলে দিনের বেলা তিনি বারো রাক‘আত সলাত আদায় করে নিতেন। (ই,ফা. ১৬১৩, ই.সে.১৬২০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬২৯
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، - وَهُوَ ابْنُ يُونُسَ - عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا عَمِلَ عَمَلاً أَثْبَتَهُ وَكَانَ إِذَا نَامَ مِنَ اللَّيْلِ أَوْ مَرِضَ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً ‏.‏ قَالَتْ وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ لَيْلَةً حَتَّى الصَّبَاحِ وَمَا صَامَ شَهْرًا مُتَتَابِعًا إِلاَّ رَمَضَانَ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন 'আমাল বা কাজ করলে তা সর্বদা অর্থাৎ নিয়মিতভাবে করতেন। আর রাতের বেলা ঘুমিয়ে পড়লে বা অসুস্থ হলে পরিবর্তে দিনের বেলা বারো রাক‘আত সলাত আদায় করে নিতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কখনো ভোর পর্যন্ত সারারাত জেগে ইবাদাত করতে বা রমাযান মাস ছাড়া এক নাগাড়ে পুরো মাস সিয়াম পালন করতে দেখেনি। (ই.ফা. ১৬১৪, ই.সে. ১৬২১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، وَعُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَاهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ الْقَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ أَوْ عَنْ شَىْءٍ مِنْهُ فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلاَةِ الْفَجْرِ وَصَلاَةِ الظُّهْرِ كُتِبَ لَهُ كَأَنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.

‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ তার (রাতের বেলার) অযীফাহ্ বা করণীয় কাজ কিংবা তার কিছু অংশ করতে ভুলে গেলে তা যদি সে ফাজ্‌র ও যুহরের সলাতের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে আদায় করে নেয় তাহলে তা এমনভাবে তার জন্য লিখে নেয়া হবে যেন সে তা রাতের বেলায়ই সম্পন্ন করেছে। (ই.ফা. ১৬১৫, ই.সে. ১৬২২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৯. অধ্যায়ঃ
যখন উটের বাচ্চা গরম অনুভব করে (দিনের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়) তখনই সলাতুল আও্ওয়াবীন (চাশ্তের সলাতের সময়)

১৬৩১
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ - عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ الْقَاسِمِ الشَّيْبَانِيِّ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ، رَأَى قَوْمًا يُصَلُّونَ مِنَ الضُّحَى فَقَالَ أَمَا لَقَدْ عَلِمُوا أَنَّ الصَّلاَةَ فِي غَيْرِ هَذِهِ السَّاعَةِ أَفْضَلُ ‏.‏ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ صَلاَةُ الأَوَّابِينَ حِينَ تَرْمَضُ الْفِصَالُ ‏"‏ ‏.

ক্বাসিম আশ্ শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যায়দ ইবনু আর্‌ক্বাম (রাঃ) একদল লোককে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে দেখে বললেনঃ এখন তো লোকজন জেনে নিয়েছে যে , এ সময় ব্যতীত অন্য সময় সলাত আদায় করা উত্তম বা সর্বাধিক মর্যাদার। কেননা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘সলাতুল আওয়াবীন’ বা আল্লাহকে অধিক স্মরনকারী বান্দাদের সলাতের সময় হল তখন, যখন সূর্যতাপে উটের বাচ্চাদের পা গরম হয়ে যায়। (ই.ফা. ১৬১৬, ই.সে. ১৬২৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩২
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى أَهْلِ قُبَاءٍ وَهُمْ يُصَلُّونَ فَقَالَ ‏ "‏ صَلاَةُ الأَوَّابِينَ إِذَا رَمِضَتِ الْفِصَالُ ‏"‏ ‏.

যায়দ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুবাবাসীদের এলাকায় গেলেন। সে সময় তারা সলাত আদায় করছিলেন। এ দেখে তিনি বললেনঃ ‘সলাতুল আও্ওয়াবীন’ বা চাশ্‌তের সলাতের উত্তম সময় হ'ল যখন সূর্যতাপে বালু গরম হাওয়ার কারণে উটের বাচ্চাগুলো পা উত্তপ্ত হতে শুরু করে। (ই.ফা. ১৬১৭, ই.সে. ১৬২৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২০. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালের সলাত দু' দু' রাক‘আত, আর রাত্রির শেষে এক রাক‘আত বিতর

১৬৩৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ صَلَّى رَكْعَةً وَاحِدَةً تُوتِرُ لَهُ مَا قَدْ صَلَّى ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ রাতের সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। যখন ভোর হওয়ার সম্ভাবনা দেখবে তখন এক রাক‘আত সলাত আদায় করে নিবে। যে সলাত আদায় করেছে এভাবে তা বিতরে পরিণত হবে। (ই.ফা. ১৬১৮, ই.সে. ১৬২৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ فَقَالَ ‏ "‏ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ بِرَكْعَةٍ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে রাতের (নাফ্‌ল) সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন-রাতের সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। তবে ভোর হয়ে আসছে দেখলে এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করে নিবে। (ই.ফা. ১৬১৯, ই.সে. ১৬২৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৫
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَحُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ حَدَّثَاهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ قَالَ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ صَلاَةُ اللَّيْلِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خِفْتَ الصُّبْحَ فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একদিন) জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল-হে আল্লাহর রসূল! রাতের সলাত কীভাবে আদায় করতে হবে? জবাবে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রাতের সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। অতঃপর যখন ভোর হয়ে আসছে বলে মনে করবে তখন এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করবে। (ই.ফা. ১৬২০, ই.সে. ১৬২৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৬
وَحَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، وَبُدَيْلٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ السَّائِلِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ صَلاَةُ اللَّيْلِ قَالَ ‏ "‏ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا خَشِيتَ الصُّبْحَ فَصَلِّ رَكْعَةً وَاجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِكَ وِتْرًا ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ وَأَنَا بِذَلِكَ الْمَكَانِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَدْرِي هُوَ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! রাতের সলাত কিভাবে আদায় করতে হবে? আমি সে সময় প্রশ্নকারী ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাঝে (দাঁড়িয়ে) ছিলাম। জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ দু’ রাক‘আত দু’ রাকআত সলাত আদায় করবে। আর বিত্‌র পড়ে তোমার সলাত শেষ করবে। (‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার বলেন) এক বছর পর জনৈক ব্যক্তি তাকে একই প্রশ্ন করল। আমি জানি না এ ব্যক্তি পূর্বের প্রশ্নকারী সে ব্যক্তি না অন্য আরেক ব্যক্তি। এবারও আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পাশে একই স্থানে ছিলাম। তিনি তাকে পূর্বের মতই জবাব দিলেন। (ই.ফা. ১৬২১, ই.সে. ১৬২৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৭
وَحَدَّثَنِي أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، وَبُدَيْلٌ، وَعِمْرَانُ بْنُ حُدَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، وَالزُّبَيْرُ بْنُ الْخِرِّيتِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَأَلَ رَجُلٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَذَكَرَا بِمِثْلِهِ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِهِمَا ثُمَّ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَلَى رَأْسِ الْحَوْلِ وَمَا بَعْدَهُ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল। এতটুকু বর্ণনা করার পর উভয়ে (আবূ কামিল ও মুহাম্মাদ ইবনু ‘উবায়দ আল গুবারী) পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। তবে তাদের বর্ণিত হাদীসে ‘অতঃপর এক বছর পরে তাঁকে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল’ এবং এর পরের কথাগুলোর উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ১৬২২, ই.সে. ১৬২৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৮
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَسُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ جَمِيعًا عَنِ ابْنِ أَبِي زَائِدَةَ، - قَالَ هَارُونُ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، - أَخْبَرَنِي عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ بَادِرُوا الصُّبْحَ بِالْوِتْرِ ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভোর হওয়ার পূর্বেই বিত্‌র আদায় কর। (ই.ফা. ১৬২৩, ই.সে. ১৬৩০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৩৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ مَنْ صَلَّى مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِهِ وِتْرًا فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ بِذَلِكَ ‏.

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলায় নাফ্‌ল সলাত আদায় করবে সে যেন বিত্‌র সলাত সর্বশেষে আদায় করবে। কেননা, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবেই সলাত আদায় করতে আদেশ করতেন। (ই.ফা. ১৬২৪, ই.সে. ১৬৩১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪০
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের রাতের সলাত বিত্‌র দিয়ে শেষ কর। (ই.ফা. ১৬২৫, ই.সে. ১৬৩২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪১
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَقُولُ مَنْ صَلَّى مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِهِ وِتْرًا قَبْلَ الصُّبْحِ كَذَلِكَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُهُمْ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কেউ রাতের বেলা সলাত আদায় করলে সে যেন ফাজ্‌রের পূর্বে শেষ সলাত হিসেবে বিত্‌র আদায় করে নেয়। কেননা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে (সাহাবীগণকে) এভাবে (সলাত আদায় করতে) আদেশ করতেন। (ই.ফা. ১৬২৬, ই.সে. ১৬৩৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪২
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو مِجْلَزٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ الْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ রাতে বিত্‌র সলাতের সময়। আর বিত্‌র সলাত এক রাক‘আত মাত্র (অথবা শেষ রাতে বিত্‌র সলাত এক রাক‘আত আদায় করবে)। (ই.ফা. ১৬২৭, ই.সে. ১৬৩৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৩
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ الْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিত্‌র সলাত রাতের শেষাংশে এক রাক‘আত মাত্র আদায় করতে হয়। (ই.ফা. ১৬২৮, ই.সে. ১৬৩৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৪
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنِ الْوِتْرِ، فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.‏ وَسَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ رَكْعَةٌ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‏"‏ ‏.

আবূ মিজলায (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু 'আব্বাস ('আবদুল্লাহ) (রাঃ)-কে বিত্‌র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : এক রাক‘আত সলাত রাতের শেষ ভাগে আদায় করতে হবে। তিনি (আবূ মিজলায) আরো বলেছেনঃ আমি একইভাবে ইবনু ‘উমার ('আবদুল্লাহ) (রাঃ)-কেও বিষয়টি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনিও বলেছিলেন : আমি রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি বিত্‌র সলাত এক রাক‘আত, (সলাত ) রাতের শেষ ভাগে আদায় করতে হবে। (ই.ফা. ১৬২৯, ই.সে. ১৬৩৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَجُلاً نَادَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ أُوتِرُ صَلاَةَ اللَّيْلِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ صَلَّى فَلْيُصَلِّ مَثْنَى مَثْنَى فَإِنْ أَحَسَّ أَنْ يُصْبِحَ سَجَدَ سَجْدَةً فَأَوْتَرَتْ لَهُ مَا صَلَّى ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو كُرَيْبٍ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ ‏.‏ وَلَمْ يَقُلِ ابْنِ عُمَرَ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উচ্চৈঃস্বরে ডাকল। তিনি তখন মাসজিদে ছিলেন। সে বলল : হে আল্লাহর রসূল! আমি রাতের সলাত কীভাবে বিত্‌র বা বেজোড় সলাত আদায় করব? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ কেউ রাতে (নাফ্‌ল) সলাত আদায় করলে দু‘রা ’আত দু‘ রাক‘আত করে আদায় করবে। অতঃপর ভোর হওয়ার আভাস পেলে এক রাক‘আত সলাত আদায় করে নিবে। এ এক রাক‘আত সলাতই সে যত সলাত আদায় করছে সেগুলোকে বিত্‌র বা বেজোড় করে দিবে।
আবূ কুরায়ব তার বর্ণনায় 'আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ)-এর নাম উল্লেখ না করে ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৬৩০, ই.সে. ১৬৩৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৬
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، وَأَبُو كَامِلٍ قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ قُلْتُ أَرَأَيْتَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ أَأُطِيلُ فِيهِمَا الْقِرَاءَةَ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ - قَالَ - قُلْتُ إِنِّي لَسْتُ عَنْ هَذَا أَسْأَلُكَ ‏.‏ قَالَ إِنَّكَ لَضَخْمٌ أَلاَ تَدَعُنِي أَسْتَقْرِئُ لَكَ الْحَدِيثَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ وَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ كَأَنَّ الأَذَانَ بِأُذُنَيْهِ ‏.‏ قَالَ خَلَفٌ أَرَأَيْتَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ وَلَمْ يَذْكُرْ صَلاَةِ ‏.

আনাস ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ফাজ্‌রের সলাতের পূর্বের দু‘ রাক‘আত সলাতে আমি কিরাআত দীর্ঘায়িত করে থাকি-এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী? তিনি বললেনঃরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা নাফ্‌ল সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করতেন এবং এক রাক‘আত বিত্‌র বা বেজোড় আদায় করতেন। আনাস ইবনু সীরীন বলেন-এ সময় আমি বললাম : আমি তো আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করছি না। (আমার এ কথা বলার পর) তিনি বললেনঃতুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি! তুমি কি আমাকে হাদীসটা (পুরো) বলতে দিবে না।! রসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা নাফ্‌ল সলাত দু‘ দু‘ রাক‘আত করে আদায় করতেন এবং পরে এক রাক‘আত বিত্‌র বা বেজোড় আদায় করতেন। আর ফাজ্‌রের সলাতের পুর্বে দু‘ রাক‘আত নাফ্‌ল এমনভাবে আদায় করতেন যেন তিনি ‘ইক্বামাত' বা তাকবীর শুনতে পাচ্ছেন।
খালাফ ইবনু হিশাম তাঁর বর্ণনাতে “ফাজ্‌রের পূর্বের দু‘ রাক‘আত সলাত সম্পর্কে আপনার মতামত কী” কথাটি উল্লেখ করেছেন। তিনি ‘সলাত’ শব্দটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৩১, ই.সে. ১৬৩৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৭
وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ ‏.‏ بِمِثْلِهِ وَزَادَ وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‏.‏ وَفِيهِ فَقَالَ بَهْ بَهْ إِنَّكَ لَضَخْمٌ ‏.

আনাস ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “আমি আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম” ..... পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। তবে তার বর্ণনাতে তিনি এতটুকু কথা অধিক বলেছেন যে, আর তিনি রাতের শেষভাগে এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করতেন। তাঁর বর্ণনাতে এ কথাও উল্লেখ আছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার বললেনঃ আরে থামো থামো! তুমি তো মোটা বুদ্ধির লোক দেখছি। (ই.ফা. ১৬৩২, ই.সে. ১৬৩৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ حُرَيْثٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى فَإِذَا رَأَيْتَ أَنَّ الصُّبْحَ يُدْرِكُكَ فَأَوْتِرْ بِوَاحِدَةٍ ‏"‏ ‏.‏ فَقِيلَ لاِبْنِ عُمَرَ مَا مَثْنَى مَثْنَى قَالَ أَنْ يُسَلِّمَ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের সলাত (নাফ্‌ল সলাত ) দু’ রাক‘আত করে আদায় করবে। তবে যখন দেখবে যে, সকাল হয়ে যাচেছ তখন এক রাক‘আত বিত্‌র আদায় করবে। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল-দু‘ দু‘ রাক‘আত কীভাবে আদায় করতে হবে? তিনি বললেনঃ প্রতি দু‘ রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাবে। (ই.ফা.১৬৩৩, ই.সে. ১৬৪০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৪৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ أَوْتِرُوا قَبْلَ أَنْ تُصْبِحُوا ‏"‏ ‏.

আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভোর (ফাজ্‌র) হবার পূর্বেই বিত্‌র সলাত আদায় কর। (ই.ফা. ১৬৩৪,ই.সে. ১৬৪১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫০
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو نَضْرَةَ الْعَوَقِيُّ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ، أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُمْ، سَأَلُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْوِتْرِ فَقَالَ ‏ "‏ أَوْتِرُوا قَبْلَ الصُّبْحِ ‏"‏ ‏.

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিত্‌র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফাজ্‌রের ওয়াক্তের পূর্বেই বিত্‌র আদায় করে নাও। (ই.ফা. ১৬৩৫, ই.সে. ১৬৪২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২১.অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি এ আশঙ্কা করে যে, সে শেষ রাত্রে (ঘুম থেকে) জাগ্রত হতে পারবে না, সে যেন রাতের প্রথম অংশেই তা আদায় করে নেয়।

১৬৫১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ خَافَ أَنْ لاَ يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ فَإِنَّ صَلاَةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ مَحْضُورَةٌ ‏.

জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে কারো আশঙ্কা হলে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই ('ইশার সলাতের পর) বিত্‌র আদায় করে নেয়। আর কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে আগ্রহী থাকে (অর্থাৎ শেষ রাতে জাগতে পারবে বলে নিশ্চিত হতে পারে) তাহলে সে যেন শেষভাগে বিত্‌র আদায় করে নেয়। কেননা, শেষ রাতের সলাতে (মালাকগণের) উপস্থিতি থাকে। আর এটাই সর্বোত্তম ব্যবস্থা। হাদীসটি বর্ণনাকারীর আবূ মু‘আবিয়াহ্ (আরবী) শব্দের পরিবর্তে (আরবী) শব্দ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৬৩৬, ই.সে. ১৬৪৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫২
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، - وَهُوَ ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ - عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ أَيُّكُمْ خَافَ أَنْ لاَ يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ ثُمَّ لْيَرْقُدْ وَمَنْ وَثِقَ بِقِيَامٍ مِنَ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ مِنْ آخِرِهِ فَإِنَّ قِرَاءَةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَحْضُورَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যদি শেষ রাতে জাগতে পারবে না বলে আশঙ্কা করে তাহলে বিত্‌র সলাত আদায় করে ঘুমাবে। আর যার শেষরাতে জাগতে পারার আত্মবিশ্বাস বা নিশ্চয়তা আছে সে শেষ রাতে বিত্‌র আদায় করবে। কেননা শেষ রাতের কুরআন পাঠে মালায়িকাহ্ উপস্থিত থাকে। আর এটা সর্বাপেক্ষা উত্তমও বটে। (ই.ফা. ১৬৩৭, ই.সে. ১৬৪৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২২. অধ্যায়ঃ
ঐ সলাত সর্বোত্তম যাতে ক্বিরাআত লম্বা করা হয়

১৬৫৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَاصِمٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَفْضَلُ الصَّلاَةِ طُولُ الْقُنُوتِ ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সলাতে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত পড়া হয় সে সলাতই সর্বোত্তম সলাত। (ই.ফা. ১৬৩৮, ই.সে. ১৬৪৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫৪
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الصَّلاَةِ أَفْضَلُ قَالَ ‏ "‏ طُولُ الْقُنُوتِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : কোন্ সলাত সবচেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন : দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে যে সলাত আদায় করা হয় সে সলাত সবচেয়ে উত্তম। আবূ বাক্‌র ইবনু আবূ শায়বাহ্ বলেছেন যে, হাদীসটি আবূ মু‘আবিয়াহ্ আ‘মাশের নিকট থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৩৯, ই.সে. ১৬৪৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৩. অধ্যায়ঃ
রাতে এমন একটি সময় রয়েছে যে সময় দু‘আ কবূল হয়

১৬৫৫
وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لاَ يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : সারা রাতের মধ্যে এমন একটি বিশেষ সময় আছে যে সময়ে কোন মুসলিম আল্লাহর কাছে দুন্ইয়া ও আখিরাতের কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে তিনি তাকে তা দান করেন। আর ঐ বিশেষ সময়টি প্রত্যেক রাতেই থাকে। (ই.ফা. ১৬৪০, ই.সে. ১৬৪৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫৬
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِنَّ مِنَ اللَّيْلِ سَاعَةً لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের মধ্যে একটি বিশেষ সময় আছে, সে সময় কোন মুসলিম বান্দা যদি আল্লাহর কাছে কোন কল্যাণ প্রার্থনা করে তাহলে তিনি তাকে তা দান করেন। (ই.ফা. ১৬৪১, ই.সে. ১৬৪৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৪.অধ্যায়ঃ
শেষ রাতে যিক্‌র ও প্রার্থনা করা এবং দু‘আ কবূল হওয়ার আলোচনা

১৬৫৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، وَعَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ وَمَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থাকে তখন আমাদের প্রতিপালক মহান ও কল্যাণময় আল্লাহ দুন্‌ইয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন : কে এমন আছ, যে এখন আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিব। এখন কে এমন আছ যে, আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। আর কে এমন আছ, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। (ই.ফা. ১৬৪২, ই.সে. ১৬৪৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫৮
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيُّ - عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ يَنْزِلُ اللَّهُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا كُلَّ لَيْلَةٍ حِينَ يَمْضِي ثُلُثُ اللَّيْلِ الأَوَّلُ فَيَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الْمَلِكُ مَنْ ذَا الَّذِي يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ ذَا الَّذِي يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ ذَا الَّذِي يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ فَلاَ يَزَالُ كَذَلِكَ حَتَّى يُضِيءَ الْفَجْرُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ প্রত্যেক রাতে যখন রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয় তখন আল্লাহ তা‘আলা দুন্‌ইয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন-আমিই একমাত্র বাদশাহ্! কে এমন আছ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে এমন আছ আমার কাছে প্রার্থনা করবে, আমি তাকে দান করব। কে এমন আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব, ফাজ্‌রের আলো ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা এরূপ বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৩, ই.সে. ১৬৫০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৫৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا مَضَى شَطْرُ اللَّيْلِ أَوْ ثُلُثَاهُ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ هَلْ مِنْ سَائِلٍ يُعْطَى هَلْ مِنْ دَاعٍ يُسْتَجَابُ لَهُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَنْفَجِرَ الصُّبْحُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের অর্ধেক অথবা দু‘ তৃতীয়াংশ অতিক্রম হলে মহান ও বারাকাতময় আল্লাহ দুন্‌ইয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন : কোন প্রার্থনাকারী আছে কি যাকে দেয়া হবে? কোন আহ্বানকারী আছে কি যার আহ্বানে সাড়া দেয়া হবে? কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি, যাকে ক্ষমা করা হবে? আল্লাহ তাআলা ভোর প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এরূপ বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৪, ই.সে. ১৬৫১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬০
حَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا مُحَاضِرٌ أَبُو الْمُوَرِّعِ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ مَرْجَانَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ يَنْزِلُ اللَّهُ فِي السَّمَاءِ الدُّنْيَا لِشَطْرِ اللَّيْلِ أَوْ لِثُلُثِ اللَّيْلِ الآخِرِ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ أَوْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ ‏.‏ ثُمَّ يَقُولُ مَنْ يُقْرِضُ غَيْرَ عَدِيمٍ وَلاَ ظَلُومٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ مُسْلِمٌ ابْنُ مَرْجَانَةَ هُوَ سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَمَرْجَانَةُ أُمُّهُ

ইবনু মারজানাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রাতের অর্ধেকের সময় অথবা শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে মহান আল্লাহ দুন্‌ইয়ার আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন : কে আছে আহ্বানকারী? (আহ্বান কর) আমি তার আহবানে সাড়া দান করব। কে আছে প্রার্থনাকারী? (প্রার্থনা কর) আমি দান করব। এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলতে থাকেন : এমন সত্তাকে কে কর্জ দিবে যিনি কখনো ফকির বা দরিদ্র হবেন না বা যুল্‌ম করতে পারেন না? [৩২] ইমাম মুসলিম বলেছেনঃ ইবনু মারজানাহ্ হলেন সা‘ঈদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। মারজানাহ্ তার মায়ের নাম। (ই.ফা. ১৬৪৫, ই.সে. ১৬৫২)

[৩২] কর্জ বলতে সদাক্বাহ, সলাত , সওম, যিকর এবং আল্লাহ তা‘আলার অন্যান্য আনুগত্যমূলক কাজসমূহ বুঝানো হয়েছে। এ সবের নাম মহান আল্লাহ কর্জ বলে অভিহিত করেছেন, আপন বান্দাদের প্রতি স্নেহ প্রকাশার্থে এবং উৎসাহ দানের জন্য যেন তারা আনুগত্যমূলক কাজসমূহ চালিয়ে যায়; কেননা প্রীতি ও প্রেমের সম্পর্ক থাকলেই কর্জ দান করা হয়। এক্ষেত্রে বান্দা নিশ্চিতরূপেই নিজ প্রদেয় কর্জ ফিরে পাবে বিধায় যেন সন্তষ্টিচিত্তে ‘আমাল চালিয়ে যায়। (মুসলিম শারহে নাবাবী-১ম খন্ড ২৫৮ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ‏"‏ ثُمَّ يَبْسُطُ يَدَيْهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ مَنْ يُقْرِضُ غَيْرَ عَدُومٍ وَلاَ ظَلُومٍ ‏"‏ ‏.

সা‘দ ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সা‘দ ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) থেকে এই একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এতে তিনি অতিরিক্ত এতটুকু বর্ণনা করেছেন যে, অতঃপর মহান ও বারাকাতময় আল্লাহ নিজের দু‘হাত প্রসারিত করে বলেনঃ যিনি কখনো দরিদ্র হবেন না, কিংবা যুলম করেন না এমন সত্তাকে ঋন দেয়ার জন্য কে আছ? (ই.ফা. ১৬৪৬, ই.সে. ১৬৫৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، وَأَبُو بَكْرٍ ابْنَا أَبِي شَيْبَةَ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ - وَاللَّفْظُ لاِبْنَىْ أَبِي شَيْبَةَ - قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَغَرِّ أَبِي مُسْلِمٍ، يَرْوِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَأَبِي، هُرَيْرَةَ قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ يُمْهِلُ حَتَّى إِذَا ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الأَوَّلُ نَزَلَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ هَلْ مِنْ تَائِبٍ هَلْ مِنْ سَائِلٍ هَلْ مِنْ دَاعٍ حَتَّى يَنْفَجِرَ الْفَجْرُ ‏"‏ ‏.

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা অবকাশ দেন বা দেরী করেন না। এভাবে যখন রাতের প্রথম এক তৃতীয়াংশ অতিক্রম হয়ে যায় তখন তিনি দুন্ইয়ার আকাশে নেমে এসে বলতে থাকেন : কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি (যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আর আমি তাকে ক্ষমা করব)? কোন তাওবাহ্‌কারী আছে কি (যে তাওবাহ্‌ করবে আর আমি তার তাওবাহ্‌ ক্ববুল করব)? কোন প্রার্থনাকারী আছে কি (যে প্রার্থনা করবে আর আমি তার প্রার্থনা ক্ববূল করব)? কোন আহ্বানকারী আছে কি(আমি যার আহ্বানে দিব)? এভাবে ফাজ্‌রের ওয়াক্ত পর্যন্ত তিনি বলতে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৪৭,ই.সে. ১৬৫৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৩
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ غَيْرَ أَنَّ حَدِيثَ، مَنْصُورٍ أَتَمُّ وَأَكْثَرُ ‏.

শু‘বাহ্-এর মাধ্যমে আবূ ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে মানসূর (রহঃ) বর্ণিত হাদীসটি পূর্ণাঙ্গ ও বেশী স্পষ্ট। (ই.ফা. ১৬৪৮, ই.সে. ১৬৫৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৫. অধ্যায়ঃ
রমাযানে তারাবীহ সলাত আদায় করা প্রসঙ্গে উৎসাহ প্রদান করা

১৬৬৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি রমাযান মাসে ঈমানের সাথে ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে তারাবীহ পড়ে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (ই.ফা. ১৬৪৯, ই.সে. ১৬৫৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৫
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرَغِّبُ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَأْمُرَهُمْ فِيهِ بِعَزِيمَةٍ فَيَقُولُ ‏ "‏ مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏"‏ ‏.‏ فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ كَانَ الأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ فِي خِلاَفَةِ أَبِي بَكْرٍ وَصَدْرًا مِنْ خِلاَفَةِ عُمَرَ عَلَى ذَلِكَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৃঢ় বা কঠোরভাবে নির্দেশ না দিয়ে রমাযান মাসের তারাবীহ পড়তে উৎসাহিত করে বলতেন: যে ব্যক্তি ঈমানসহ ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে রমাযান মাসের তারাবীহ পড়ল তার পূর্বের সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুবরণ করলেন। তখনও এ অবস্থা চলছিল (অর্থাৎ মানুষকে তারাবীহ পড়তে নির্দেশ না দিয়ে শুধু উৎসাহিত করা হত)। আবূ বকর (রাঃ) এর খিলাফতকালে এবং ‘উমার (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথম দিকেও এ নীতি কার্যকর ছিল। (ই.ফা. ১৬৫০, ই.সে. ১৬৫৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৬
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমাযান মাসে ঈমান ও একান্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে সিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে ঈমানসহ ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে সলাত আদায় করবে তারও পূর্ববর্তী সব পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (ই.ফা. ১৬৫১, ই.সে. ১৬৫৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنِي وَرْقَاءُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ فَيُوَافِقُهَا - أُرَاهُ قَالَ - إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতে জাগরণ করতে গিয়ে তা পেয়ে গেল, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। (রাবী বলেন) আমার মনে হয় তিনি ‘ঈমান ও সাওয়াবের আশায়’ কথাটি বলেছেন। (ই.ফা. ১৬৫২, ই.সে. ১৬৫৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي الْمَسْجِدِ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ ثُمَّ صَلَّى مِنَ الْقَابِلَةِ فَكَثُرَ النَّاسُ ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ ‏ "‏ قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ فَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে সলাত আদায় করলেন। তাঁর সাথে কিছু সংখ্যক লোকও সলাত আদায় করল। পরের রাতেও তিনি মাসজিদে সলাত আদায় করলেন। লোকজন সংখ্যায় অনেক বেশী হয়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতেও অনেক লোক এসে একত্র হ‘ল। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর তাদের সাথে যোগ দিলেন না। সকাল বেলা তিনি সবাইকে বললেনঃ (গত রাতে) তোমরা যা করেছ তা আমি দেখেছি। তবে শুধু এ আশঙ্কায় আমি তোমাদের সাথে যোগদান করিনি যে, তোমাদের ওপর তা ফরয করে দেয়া হতে পারে। তিনি (‘আয়িশাহ্‌) বলেছেনঃ ঘটনাটি রমাযান মাসে সংঘটিত হয়েছে। (ই.ফা. ১৬৫৩, ই.সে. ১৬৬০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৬৯
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ فَصَلَّى فِي الْمَسْجِدِ فَصَلَّى رِجَالٌ بِصَلاَتِهِ فَأَصْبَحَ النَّاسُ يَتَحَدَّثُونَ بِذَلِكَ فَاجْتَمَعَ أَكْثَرُ مِنْهُمْ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي اللَّيْلَةِ الثَّانِيَةِ فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ فَأَصْبَحَ النَّاسُ يَذْكُرُونَ ذَلِكَ فَكَثُرَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ فَخَرَجَ فَصَلَّوْا بِصَلاَتِهِ فَلَمَّا كَانَتِ اللَّيْلَةُ الرَّابِعَةُ عَجَزَ الْمَسْجِدُ عَنْ أَهْلِهِ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَطَفِقَ رِجَالٌ مِنْهُمْ يَقُولُونَ الصَّلاَةَ ‏.‏ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى خَرَجَ لِصَلاَةِ الْفَجْرِ فَلَمَّا قَضَى الْفَجْرَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ تَشَهَّدَ فَقَالَ ‏ "‏ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ لَمْ يَخْفَ عَلَىَّ شَأْنُكُمُ اللَّيْلَةَ وَلَكِنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ صَلاَةُ اللَّيْلِ فَتَعْجِزُوا عَنْهَا ‏"‏ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাড়ী থেকে মাসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করলেন, অনেক লোকও তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। পরদিন লোকজন এ ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করল। সুতরাং ঐ দিন রাতে আরো বেশী লোক (মাসজিদে) একত্রিত হ‘ল। ঐ দ্বিতীয় রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে তাদের মাঝে উপস্থিত হলেন। সবাই তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। পরদিনও লোকজন এ ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করল। সুতরাং তৃতীয় রাতে লোকের সংখ্যা আরো বেড়ে গেল। রাতেও তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে তাদের মাঝে গেলেন। লোকজন তাঁর সাথে সলাত আদায় করল। কিন্তু চতুর্থ রাতে লোক সংখ্যা এত বেশী হ‘ল যে, মাসজিদে জায়গা সংকুলান হ‘ল না। কিন্তু রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে আসলেন না। তাঁদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক সলাত বলে ডাকতে শুরু করল। কিন্তু তিনি ঐ রাতে আর বের হলেন না। বরং ফাজ্‌রের ওয়াক্তে বের হলেন। ফাজ্‌রের সলাত শেষ করে তিনি লোকদের দিকে ঘুরলেন, তাশাহ্‌হুদ পড়লেন, তারপর “আম্মাবাদ” বলে শুরু করলেন। তিনি বললেনঃ গতরাতে তোমাদের ব্যাপারটা আমার অজানা নয়। কিন্তু আমি আশঙ্কা করেছিলাম যে, রাতের এ সলাতটি তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হতে পারে। আর তোমরা তা পালন করতে অক্ষম হয়ে পড়বে। (ই.ফা. ১৬৫৪, ই.সে. ১৬৬১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدَةُ، عَنْ زِرٍّ، قَالَ سَمِعْتُ أُبَىَّ بْنَ كَعْبٍ، يَقُولُ - وَقِيلَ لَهُ إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ مَنْ قَامَ السَّنَةَ أَصَابَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ - فَقَالَ أُبَىٌّ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ إِنَّهَا لَفِي رَمَضَانَ - يَحْلِفُ مَا يَسْتَثْنِي - وَوَاللَّهِ إِنِّي لأَعْلَمُ أَىُّ لَيْلَةٍ هِيَ ‏.‏ هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي أَمَرَنَا بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِيَامِهَا هِيَ لَيْلَةُ صَبِيحَةِ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَأَمَارَتُهَا أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فِي صَبِيحَةِ يَوْمِهَا بَيْضَاءَ لاَ شُعَاعَ لَهَا ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস'উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সারা বছর রাত জেগে সলাত আদায় করবে সে ক্বদরের রাত প্রাপ্ত হবে। এ কথা শুনে উবাই ইবনু ক্বা'ব বললেনঃ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই সে মহান আল্লাহর ক্বসম! নিশ্চিতভাবে লায়লাতুল ক্বদর রমাযান মাসে। এ কথা বলতে তিনি ক্বসম করলেন কিন্তু ইন-শা-আল্লাহ বললেন না (অর্থাৎ তিনি নিশ্চিতভাবেই বুঝলেন যে, রমাযান মাসের মধ্যেই ‘লায়লাতুল ক্বদর’ আছে)। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ আল্লাহর কসম! কোন্‌ রাতটি ক্বদ্‌রের রাত তাও আমি জানি। সেটি হ'ল এ রাত, যে রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কে সলাত আদায় করতে আদেশ করেছেন। সাতাশ রমাযান তারিখের সকালের পূর্বের রাতটিই সে রাত। আর ঐ রাতের আলামাত বা  লক্ষন হ'ল-সে রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে কিন্তু সে সময় (উদয়ের সময়) তার কোন তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (ই.ফা. ১৬৫৫, ই.সে. ১৬৬২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَةَ بْنَ أَبِي لُبَابَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ أُبَىٌّ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَاللَّهِ إِنِّي لأَعْلَمُهَا وَأَكْثَرُ عِلْمِي هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِيَامِهَا هِيَ لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ - وَإِنَّمَا شَكَّ شُعْبَةُ فِي هَذَا الْحَرْفِ - هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي أَمَرَنَا بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَ وَحَدَّثَنِي بِهَا صَاحِبٌ لِي عَنْهُ ‏.

উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘লাইলাতুল ক্বদ্‌র’ বা ক্বদ্‌রের রাত সম্পর্কে বলেনঃ আল্লাহর ক্বসম! আমি রাতটি সম্পর্কে জানি এবং এ ব্যাপারে আমি যা জানি তা হচ্ছে, যে রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সলাত আদায় করতে আদেশ করেছেন সেটিই অর্থাৎ সাতাশ তারিখের রাতই ক্বদ্‌রের রাত। হাদীসটির ঐ অংশ সম্পর্কে যে রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সলাত আদায় করতে আদেশ করেছেন।
শু‘বাহ্ সন্দেহ পোষন করেছেন। বর্ণনাকারী শু‘বাহ্ বলেছেনঃ আমার এক বন্ধু (‘আবদাহ্ ইবনু আবূ লুবাবাহ্ ) তার থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৫৬, ই.সে. ১৬৬৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭২
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ إِنَّمَا شَكَّ شُعْبَةُ ‏.‏ وَمَا بَعْدَهُ ‏.

শু‘বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন। তবে শু‘বাহ্ এ বর্ণনাতে সন্দেহ পোষন করেছেন এবং এর পরের কথাগুলো উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৫৭, ই.সে. ১৬৬৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৬. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালীণ সলাতে দু‘আ ও ক্বিয়াম

১৬৭৩
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمِ بْنِ حَيَّانَ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ لَيْلَةً عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ فَأَتَى حَاجَتَهُ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ ثُمَّ نَامَ ثُمَّ قَامَ فَأَتَى الْقِرْبَةَ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ وَلَمْ يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ فَتَمَطَّيْتُ كَرَاهِيَةَ أَنْ يَرَى أَنِّي كُنْتُ أَنْتَبِهُ لَهُ فَتَوَضَّأْتُ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَتَتَامَّتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ فَأَتَاهُ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ فَقَامَ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ وَكَانَ فِي دُعَائِهِ ‏ "‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وَتَحْتِي نُورًا وَأَمَامِي نُورًا وَخَلْفِي نُورًا وَعَظِّمْ لِي نُورًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ كُرَيْبٌ وَسَبْعًا فِي التَّابُوتِ فَلَقِيتُ بَعْضَ وَلَدِ الْعَبَّاسِ فَحَدَّثَنِي بِهِنَّ فَذَكَرَ عَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشَعَرِي وَبَشَرِي وَذَكَرَ خَصْلَتَيْنِ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এক রাতে আমার খালা মায়মূনাহ্-এর [রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীর] ঘরে কাটালাম। (আমি দেখলাম) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা উঠলেন এবং প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে এসে মুখমন্ডল এবং দু‘হাত ধুলেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমালেন। পরে পুনরায় উঠে মশকের পাশে গেলেন এবং এর বন্ধন খুলে ওযূ করলেন। ওযূতে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মধ্যমপন্থা অবলম্বন করলেন (অর্থাৎ ওযূ করতে খুব যত্নও নিলেন না আবার একেবারে খুব হালকাভাবেও ওযূ করলেন না)। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেশী পানি ব্যবহার করলেন না। তবে পূর্ণাঙ্গ ওযূ করলেন। তারপর দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করলেন। আমি সে সময় উঠলাম এবং তাঁর কাজকর্ম দেখার জন্য জেগে ছিলাম বা সতর্কভাবে তা লক্ষ্য করছিলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা যেন না ভেবে বসেন তাই আড়মোড়া ভাঙ্গলাম। এবার আমি ওযূ করলাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করতে দাঁড়ালেন, অতঃপর আমিও তাঁর বা পাশে দাঁড়ালাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আমার হাত ধরে ঘুরিয়ে এনে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। এভাবে রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর রাতের সলাত তের রাক‘আত শেষ হল। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি (ঘুমের মধ্যে তাঁর) নাক ডাকতে শুরু করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বভাবতঃ যখনই ঘুমাতেন তখন নাক ডাকত। পরে বিলাল (রাঃ) তাঁকে সলাতের কথা বলে গেলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আল্ল-হুমাজ্‘আল ফী ক্বল্‌বী নূরাওঁ ওয়া ফী বাসারী নূরাওঁ, ওয়া ফী সাম‘ঈ নূরাওঁ ওয়া আই ইয়ামীনী নূরাওঁ, ওয়া 'আই ইয়াসা-রী নূরাওঁ, ওয়া ফাওক্বী নূরাওঁ, ওয়া তাহতী নূরাওঁ, ওয়া আমা-মী নূরাওঁ, ওয়া খল্‌ফী নূরাওঁ, ওয়া ‘আযযিম্‌লী নূরা”-(অর্থাৎ হে আল্লাহ ! তুমি আমার হৃদয়ে আলো দান কর, আমার চোখে আলো দান কর, আমার কানে বা শ্রবণ শক্তিতে আলো দান কর। আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাঁ দিকে আলো দান কর, আমার উপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর, আমার সামনে আলো দান কর, আমার পিছনে আলো দান কর এবং আমার আলোকে বিশাল করে দাও।) বর্ণনাকারী কুরায়ব বলেছেনঃ তিনি এরূপ আরো সাতটি কথা বলেছিলেন যা আমি ভূলে গিয়েছি। হাদীসের বর্ণনাকারী সালামাহ্ ইবনু কুহায়ল বলেনঃ এরপর আমি ‘আব্বাস (রাঃ) এর এক পুত্রের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি ঐগুলো (অবশিষ্ট সাতটি) আমার কাছে বর্ণনা করলেন। তাতে তিনি উল্লেখ করলেন : আমার স্নায়ুতন্ত্রীসমূহে, আমার শরীরের গোশতে , আমার রক্তে, আমার চুলে এবং আমার গাত্রচর্মে আলো দান কর। এছাড়াও তিনি আরো দুটি বিষয় উল্লেখ করে বললেনঃ এ দুটিতে তিনি আলো চেয়েছেন। (ই.ফা. ১৬৫৮,ই.সে. ১৬৬৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، بَاتَ لَيْلَةً عِنْدَ مَيْمُونَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ - وَهِيَ خَالَتُهُ - قَالَ فَاضْطَجَعْتُ فِي عَرْضِ الْوِسَادَةِ وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِي طُولِهَا فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى انْتَصَفَ اللَّيْلُ أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدِهِ ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُورَةِ آلِ عِمْرَانَ ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى ‏.‏ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِي وَأَخَذَ بِأُذُنِي الْيُمْنَى يَفْتِلُهَا فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَوْتَرَ ثُمَّ اضْطَجَعَ حَتَّى جَاءَ الْمُؤَذِّنُ فَقَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি একদিন উম্মুল মুমিনীন মায়মুনাহ্ (রাঃ) এর ঘরে রাত কাটালেন। মায়মূনাহ্ (রাঃ) তাঁর খালা। তিনি বলেছেন, আমি বিছানাতে আড়াআড়িভাবে শুলাম। এরপরে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। রাতের অর্ধেকের কিছু পূর্বে অথবা অর্ধেকের কিছু পর তিনি জেগে উঠলেন এবং মুখমন্ডলের উপর হাত রগড়িয়ে ঘুমের আলস্য দূর করতে থাকলেন। এরপর সূরাহ্‌ আ-লি ‘ইমরান এর শেষ দশটি আয়াত পাঠ করলেন এবং (ঘরে) ঝুলানো একটি মশকের পাশে গিয়ে উত্তমরূপে ওযূ করলেন। অতঃপর তিনি উঠে সলাত আদায় করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন : তখন আমিও উঠে দাঁড়ালাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা যা করেছিলেন আমিও তাই করলাম। তারপর তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপর রাখলেন আর আমার ডান কান ধরে মোচড়াতে থাকলেন।[৩৩] তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর আরো দু’ রাকআত সলাত আদায় করলেন। পরে আরো দু’ রাক‘আত, এরপর আরো দু’ রাক‘আত এবং পরে আরো দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। আর সর্বশেষে বিত্‌র পড়লেন।[৩৪] তারপর শুয়ে পড়লেন। অবশেষে মুয়ায্‌যিন এসে সলাত সম্পর্কে অবহিত করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে সংক্ষেপে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং তারপর বাড়ী থেকে (মাসজিদে) গিয়ে ফাজ্‌রের সলাত আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৬৫৯, ই.সে. ১৬৬৬)

[৩৩] নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু 'আব্বাস (রাঃ)-এর কান মলেছিলেন তার তন্দ্রা দূর করার জন্য কিংবা মামুর বা মুক্তাদী হিসেবে ডান পাশে দাঁড় করানোর জন্য। (মুসলিম শরহে নাবাবী- ১ম ২৬০ পৃষ্ঠা)
[৩৪] এ হাদীসের বর্ণনানুযায়ী রাতের সলাত বিত্‌রসহ তের রাক‘আত আদায় করা যায়। পাঁচ সালামে দশ রাক‘আত, অতঃপর বিতরের নিয়্যাত করে দু’ রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাবে। আর এগার রাক‘আত আদায় করলে পাঁচ সালামে দশ রাক‘আত পড়ে এক রাক‘আত বিত্‌র অথবা চার সালামে আট রাক‘আত আর তিন রাক‘আত বিত্‌র এক সালামেও আদায় করতে পারবে। এ সকল নিয়মে রাতের সলাত এ অধ্যায়ের সবগুলো হাদীসের উপর ‘আমাল হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْفِهْرِيِّ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ثُمَّ عَمَدَ إِلَى شَجْبٍ مِنْ مَاءٍ فَتَسَوَّكَ وَتَوَضَّأَ وَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ وَلَمْ يُهْرِقْ مِنَ الْمَاءِ إِلاَّ قَلِيلاً ثُمَّ حَرَّكَنِي فَقُمْتُ ‏.‏ وَسَائِرُ الْحَدِيثِ نَحْوُ حَدِيثِ مَالِكٍ ‏.

মাখরামাহ্ ইবনু সুলাইমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এতে তিনি এতটুকু অতিরিক্ত বলেছেন, এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি পুরনো মশকের কাছে গেলেন এবং মিসওয়াক করে ওযূ করলেন। তিনি বেশী পানি খরচ না করেই উত্তমরূপে ওযূ করলেন তারপর আমাকে ঝাঁকুনি দিলেন। তখন আমি উঠলাম। এরপর তিনি হাদীসের অবশিষ্ট অংশটুকু মালিক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করলেন। (ই.ফা. ১৬৬০, ই.সে. ১৬৬৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৬
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ نِمْتُ عِنْدَ مَيْمُونَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا تِلْكَ اللَّيْلَةَ فَتَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَصَلَّى فِي تِلْكَ اللَّيْلَةِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ نَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ ثُمَّ أَتَاهُ الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ ‏.‏ قَالَ عَمْرٌو فَحَدَّثْتُ بِهِ بُكَيْرَ بْنَ الأَشَجِّ فَقَالَ حَدَّثَنِي كُرَيْبٌ بِذَلِكَ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী মাইমূনাহ্‌র (খালা) ঘরে আমি ঘুমালাম আর সেই রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ঘরে ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর ঘরে রাত্রি যাপন করলেন। রাতে তিনি ওযূ করে সলাত আদায় করতে দাঁড়ালে আমিও তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমাকে ধরে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করালেন। ঐ রাতে তিনি তের রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং তারপর ঘুমালেন। ঘুমের মধ্যে তিনি নাক ডাকলেন। আর তিনি যখনই ঘুমাতেন নাক ডাকত। পরে মুয়াযযিন তাঁর কাছে আসলেন তিনি (মাসজিদে) চলে গেলেন এবং নতুন ওযূ না করেই সলাত আদায় করলেন। হাদীসের বর্ণনাকারী 'আম্‌র বলেছেন, আমি বুকায়র ইবনুল আশাজ্জ-এর কাছে এ হাদীস বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ আমার কাছেও তিনি হাদীসটি অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৬১, ই.সে. ১৬৬৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، أَخْبَرَنَا الضَّحَّاكُ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ لَيْلَةً عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ فَقُلْتُ لَهَا إِذَا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَيْقِظِينِي ‏.‏ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ الأَيْسَرِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَجَعَلَنِي مِنْ شِقِّهِ الأَيْمَنِ فَجَعَلْتُ إِذَا أَغْفَيْتُ يَأْخُذُ بِشَحْمَةِ أُذُنِي - قَالَ - فَصَلَّى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ احْتَبَى حَتَّى إِنِّي لأَسْمَعُ نَفَسَهُ رَاقِدًا فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন রাতে আমি আমার খালা মায়মূনাহ্ বিনতু হারিস-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম। আমি তাঁকে বললাম, রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রাতে) যখন উঠবেন তখন আপনি আমাকে জাগিয়ে দিবেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠলে আমিও উঠলাম এবং তাঁর বাম পাশে দিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমার হাত ধরে তাঁর ডান পাশে নিলেন। পরে যখনই আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছিলাম তখন তিনি আমার কানের নিম্নভাগ ধরে টান দিচ্ছিলেন। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস বলেন-তিনি এগার রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। এরপর তিনি শুয়ে থাকলেন। আমি তাঁর নাক ডাকানোর শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। অতঃপর ফাজ্‌রের সময় স্পষ্ট হয়ে গেলে তিনি সংক্ষিপ্তাকারে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। (ই.ফা. ১৬৬২, ই.সে. ১৬৬৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، - عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ بَاتَ عِنْدَ خَالَتِهِ مَيْمُونَةَ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأَ مِنْ شَنٍّ مُعَلَّقٍ وُضُوءًا خَفِيفًا - قَالَ وَصَفَ وُضُوءَهُ وَجَعَلَ يُخَفِّفُهُ وَيُقَلِّلُهُ - قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ جِئْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخْلَفَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَصَلَّى ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ أَتَاهُ بِلاَلٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلاَةِ فَخَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ وَلَمْ يَتَوَضَّأْ ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ وَهَذَا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً لأَنَّهُ بَلَغَنَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَنَامُ عَيْنَاهُ وَلاَ يَنَامُ قَلْبُهُ ‏.

আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর খালা [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী] মায়মুনাহ্‌-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলেন। রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে ঝুলিয়ে রাখা একটি পুরনো মশক থেকে পানি নিয়ে হালকাভাবে ওযূ করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাসের আযাদকৃত ক্রীতদাস কুরায়ব বলেছেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস বলেন, তখন আমিও উঠলাম এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা যা করেছিলেন আমিও তাই করলাম এবং পরে গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে তাঁর পিছন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে ডান পাশে নিয়ে দাঁড় করালেন। এরপর সলাত আদায় করে তিনি শয্যা গ্রহণ করলেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাকও ডাকলেন। পরে বিলাল এসে তাঁকে সলাতের সময়ের কথা জানালে তিনি গিয়ে ফাজ্‌রের সলাত আদায় করলেন। কিন্তু নতুন ওযূ করলেন না। হাদীসের বর্ণনাকারী সুফ্‌ইয়ান বলেছেন, এ ব্যবস্থা শুধু (ঘুমানোর পর নতুন ওযূ না করে সলাত আদায় করা) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য নির্দিষ্ট। কেননা আমরা এ কথা জানি যে, তাঁর চোখ দুটি ঘুমায় কিন্তু হৃদয় মন ঘুমায় না। (ই.ফা. ১৬৬৩, ই.সে. ১৬৭০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، - وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ - حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ فِي بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَبَقَيْتُ كَيْفَ يُصَلِّي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - قَالَ - فَقَامَ فَبَالَ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ وَكَفَّيْهِ ثُمَّ نَامَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الْقِرْبَةِ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ صَبَّ فِي الْجَفْنَةِ أَوِ الْقَصْعَةِ فَأَكَبَّهُ بِيَدِهِ عَلَيْهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا حَسَنًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي فَجِئْتُ فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ - قَالَ - فَأَخَذَنِي فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَتَكَامَلَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ نَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكُنَّا نَعْرِفُهُ إِذَا نَامَ بِنَفْخِهِ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ فَصَلَّى فَجَعَلَ يَقُولُ فِي صَلاَتِهِ أَوْ فِي سُجُودِهِ ‏ "‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ شِمَالِي نُورًا وَأَمَامِي نُورًا وَخَلْفِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وَتَحْتِي نُورًا وَاجْعَلْ لِي نُورًا أَوْ قَالَ وَاجْعَلْنِي نُورًا ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদা আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে রাত্রিযাপন করলাম আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কীভাবে সলাত আদায় করেন তার প্রতি লক্ষ্য রাখলাম। তিনি (আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস) বলেছেনঃ (রাতে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে প্রস্রাব করলেন এবং মুখমন্ডল ও দু’ হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। পরে আবার উঠে মশকের পাশে গেলেন, এর বাঁধন খুললেন এবং বড় থালা বা কাষ্ঠ নির্মিত প্লেটে পানি ঢাললেন। পরে হাত দিয়ে তা নীচু করলেন এবং দু’ ওযুর মাঝামাঝি উত্তম ওযূ করলেন (অর্থাৎ অত্যধিক যত্নের সাথে ওযূ করলেন না, আবার খুব হালকাভাবেও করলেন না)। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করতে দাঁড়ালে আমিও উঠে গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ধরে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। মোট তের রাক‘আত সলাত দ্বারা তাঁর সলাত শেষ হল। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন নাক ডাকতে শুরু করল। আমরা নাক ডাকানোর আওয়াজ শুনে তাঁর ঘুমানো বুঝতে পারতাম। তারপর সলাতের জন্য (মাসজিদে) চলে গেলেন এবং সলাত আদায় করলেন। সলাতের মধ্যে অথবা সিজদায় গিয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বলে দু‘আ করতে থাকলেন “আল্ল-হুম্মাজ্’আল ফী ক্বলবী নূরাওঁ ওয়া ফী সাম’ঈ নূরাওঁ ওয়া ফী বাসারী নূরাওঁ ওয়া ‘আই ইয়ামীনী নূরাওঁ ওয়া ‘আন্ শিমালী নূরাওঁ ওয়া আমা-মী নূরাওঁ ওয়া খলফী নূরাওঁ ওয়া ফাওক্বী নূরাওঁ ওয়া তাহ্‌তী নূরাওঁ ওয়াজ ‘আল্‌লী নূরান্‌ আও ক্ব-লা ওয়াজ্‘আলনী নূরা-” -(অর্থাৎ- হে আল্লাহ ! তুমি আমার হৃদয়-মনে আলো দান কর, আমর শ্রবণ শক্তিতে আলো দান কর, আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাম দিকে আলো দান কর, আমার উপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর এবং আমার জন্য আলো সৃষ্টি কর। অথবা তিনি বললেনঃ আমাকে আলোতে পরিণত করে দাও।) (ই.ফা. ১৬৬৪, ই.সে. ১৬৭১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮০
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، ‏.‏ قَالَ سَلَمَةُ فَلَقِيتُ كُرَيْبًا فَقَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كُنْتُ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ غُنْدَرٍ ‏.‏ وَقَالَ ‏ "‏ وَاجْعَلْنِي نُورًا ‏"‏ ‏.‏ وَلَمْ يَشُكَّ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনাহ্-এর কাছে ছিলাম। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে আসলেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি গুনদার (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু উল্লেখ করলেন। এতে তিনি “ওয়াজ্’আলনী নূরান” অর্থাৎ আমাকে আলো বানিয়ে দাও কথাটি বলতে কোনরূপ সন্দেহ প্রকাশ করলেন না। (ই.ফা. ১৬৬৫, ই.সে. ১৬৭২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮১
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম। অতঃপর পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করেন কিন্তু হাতের কব্জিদ্বয় ও মুখমন্ডল ধোয়ার কথা উল্লেখ করেননি। বর্ণনাতে তিনি বলেছেনঃ পরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মশকের পাশে গেলেন, এটির বাঁধন খুললেন এবং দু‘ ওযূর মাঝামাঝি ওযূ করলেন। এরপর বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর আবার উঠে মশকের পাশে গিয়ে ওটির বন্ধন খুললেন এবং ওযূ যেমনটি হওয়া দরকার তেমনি করলেন। আর তিনি আমাকে এতে বলেছেন, “আ’যিম্‌ লী নূরান ” অর্থাৎ ‘(হে আল্লাহ!) আমার আলোকে বড় করে দাও।’ তবে এতে তিনি “ওয়াজ্‘আলনী নূরান” অর্থাৎ- ‘আমাকে নূর বা আলো বানিয়ে দাও’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৬৬৬, ই.সে. ১৬৭৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ أَبِي رِشْدِينٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ ‏.‏ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ وَلَمْ يَذْكُرْ غَسْلَ الْوَجْهِ وَالْكَفَّيْنِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ثُمَّ أَتَى الْقِرْبَةَ فَحَلَّ شِنَاقَهَا فَتَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ ثُمَّ أَتَى فِرَاشَهُ فَنَامَ ثُمَّ قَامَ قَوْمَةً أُخْرَى فَأَتَى الْقِرْبَةَ فَحَلَّ شِنَاقَهَا ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا هُوَ الْوُضُوءُ وَقَالَ ‏"‏ أَعْظِمْ لِي نُورًا ‏"‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ ‏"‏ وَاجْعَلْنِي نُورًا ‏"‏ ‏.

কুরায়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে (তাঁর ঘরে) রাত্রি যাপন করলেন। তিনি বলেছেনঃ রাতের বেলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে একটি মশকের পাশে গেলেন এবং তা থেকে পানি ঢেলে ওযূ করলেন। এতে তিনি অধিক পানি ব্যবহার করলেন না বা ওযূ সংক্ষিপ্তও করলেন না। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি হাদীসটি পূর্বের হাদীসটির অনুরূপ বর্ণনা করলেন। তবে এতে তিনি এ কথাও বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ রাতে ঊনিশটি কথা বলে দু'আ করলেন।
সালামাহ্ ইবনু কুহায়ল বলেছেন-কুরায়ব ঐ কথাগুলো সব আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। আমি তার বারোটি মাত্র মনে রাখতে পেরেছি আর অবশিষ্টগুলো ভুলে গিয়েছি। তিনি তাঁর দুআয় বলেছিলেন ” “হে আল্লাহ ! তুমি আমার জন্য আমার হৃদয় মনে আলো দান কর, আমার জিহ্বা বা বাকশক্তিতে আলো দান কর। আমার শ্রবণশক্তিতে আলো দান কর, আমার দৃষ্টিশক্তিতে আলো দান কর, আমার উপর দিকে আলো দান কর, আমার নীচের দিকে আলো দান কর, আমার ডান দিকে আলো দান কর, আমার বাঁ দিকে আলো দান কর, আমার সামনে আলো দান কর, আমার পিছন দিকে আলো দান কর, আমার নিজের মধ্যে আলো সৃষ্টি করে দাও এবং আমার আলোকে বিশালতা দান কর। (ই,ফা. ১৬৬৭, ই.সে. ১৬৭৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৩
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنِي شَرِيكُ بْنُ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ رَقَدْتُ فِي بَيْتِ مَيْمُونَةَ لَيْلَةَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا لأَنْظُرَ كَيْفَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ - قَالَ - فَتَحَدَّثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ وَفِيهِ ثُمَّ قَامَ فَتَوَضَّأَ وَاسْتَنَّ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একরাতে আমার খালা [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী] মায়মূনাহ্-এর ঘরে ঘুমালেন। উক্ত রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে কিভাবে সলাত আদায় করেন তা দেখা ছিল আমার উদ্দেশ্য। 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস বলেছেনঃ তিনি তাঁর স্ত্রীর সাথে কিছুক্ষন কথাবার্তা বললেন এবং তারপর ঘুমিয়ে পড়লেন। .......এতটুকু বলার পর পূর্ব বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে এতে এতটুকু কথা অধিক আছে যে, তিনি উঠে ওযূ ও মিসওয়াক করলেন। (ই.ফা. ১৬৬৮, ই.সে. ১৬৭৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৪
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ رَقَدَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَيْقَظَ فَتَسَوَّكَ وَتَوَضَّأَ وَهُوَ يَقُولُ ‏{‏ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لأُولِي الأَلْبَابِ‏}‏ فَقَرَأَ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَأَطَالَ فِيهِمَا الْقِيَامَ وَالرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ثُمَّ انْصَرَفَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ سِتَّ رَكَعَاتٍ كُلَّ ذَلِكَ يَسْتَاكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيَقْرَأُ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلاَثٍ فَأَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ فَخَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ وَهُوَ يَقُولُ ‏"‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي لِسَانِي نُورًا وَاجْعَلْ فِي سَمْعِي نُورًا وَاجْعَلْ فِي بَصَرِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ خَلْفِي نُورًا وَمِنْ أَمَامِي نُورًا وَاجْعَلْ مِنْ فَوْقِي نُورًا وَمِنْ تَحْتِي نُورًا ‏.‏ اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نُورًا ‏"

আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন রাতে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে উঠে মিসওয়াক ও ওযূ করলেন। এ সময় তিনি (কুরআন মাজীদের এ আয়াতগুলো) পড়ছিলেন : (আরবি) “আসমান ও জমিনের সৃষ্টি কৌশলে এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে আগমন নির্গমনে সুধী ও জ্ঞানীজনদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে”- (সূরাহ্‌ আলি ইমরান ৩ : ১৯০)। এভাবে তিনি সূরার শেষ পর্যন্ত পড়লেন। এরপর উঠে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিয়াম, রুকু ও সিজদাহ্ দীর্ঘায়িত করলেন এবং শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাক ডেকে ঘুমালেন। তিনবার তিনি এরূপ করলেন এবং এভাবে তিনি ছয় রাক‘আত সলাত আদায় করলেন প্রত্যেক বার তিনি মিসওয়াক করলেন, ওযূ করলেন এবং এ আয়াতগুলো পড়লেন। সর্বশেষে তিন রাক‘আত বিত্‌র পড়লেন। অতঃপর মুয়ায্‌যিন আযান দিলে তিনি সলাতের জন্য (মাসজিদে ) চলে গেলেন। তখন তিনি এ বলে দুআ করেছিলেন: “আল্ল-হুম্মআজ্’আল ফী ক্বলবী নূরাওঁ ওয়াফী লিসা-নী নূরাওঁ ওয়াজ’আল ফী সাম’ঈ নূরাওঁ ওয়াজ্‌’আল ফী বাসারী নূরাওঁ ওয়াজ্‌’আল মিন খলফী নূরাওঁ ওয়ামিন আমা-মী নূরাওঁ ওয়াজ্‌’আল মিন ফাওক্বী নূরাওঁ ওয়ামিন তাহ্‌তী নূরান্‌, আল্ল-হুম্মা আ’ত্বিনী নূরা-” অর্থাৎ হে আল্লাহ আমার হৃদয় মনে আলো (নূর) সৃষ্টি করে দাও, আমার দৃষ্টিশক্তিতে আলো সৃষ্টি করে দাও, আমার পিছন দিকে আলো সৃষ্টি করে দাও, আমার সামনের দিকে আলো সৃষ্টি করে দাও , আমার উপর দিক থেকে আলো সৃষ্টি করে দাও এবং আমার নীচের দিক থেকেও আলো সৃষ্টি করে দাও। হে আল্লাহ ! আমাকে নূর বা আলো দান কর।) (ই.ফা. ১৬৬৯, ই.সে. ১৬৭৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৫
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ ذَاتَ لَيْلَةٍ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مُتَطَوِّعًا مِنَ اللَّيْلِ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْقِرْبَةِ فَتَوَضَّأَ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ لَمَّا رَأَيْتُهُ صَنَعَ ذَلِكَ فَتَوَضَّأْتُ مِنَ الْقِرْبَةِ ثُمَّ قُمْتُ إِلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ فَأَخَذَ بِيَدِي مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ يَعْدِلُنِي كَذَلِكَ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ إِلَى الشِّقِّ الأَيْمَنِ ‏.‏ قُلْتُ أَفِي التَّطَوُّعِ كَانَ ذَلِكَ قَالَ نَعَمْ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একরাতে আমি আমার খালা [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী] মায়মুনাহ্ এর কাছে (তাঁর ঘরে) রাত্রি যাপন করলাম। রাতের বেলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাফ্‌ল সলাত আদায় করতে উঠলেন। তিনি মশকের পাশে গিয়ে ওযূ করলেন এবং তারপর সলাত আদায় করতে দাঁড়ালেন। তাঁকে এরূপ করতে দেখে আমিও উঠে মশকের পানি দিয়ে ওযূ করলাম। তারপর তাঁর বাম পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিঠের দিক থেকে আমার হাত ধরে সোজা তাঁর পিঠের দিকে দিয়ে নিয়ে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। হাদীসের বর্ণনাকারী ‘আত্বা বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি নাফ্‌ল সলাত আদায়কালে এরূপ করেছিলেন। জবাবে তিনি ('আবদুল্লাহ ইবনু 'আব্বাস) বললেনঃ হ্যাঁ। (ই.ফা. ১৬৭০, ই.সে. ১৬৭৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৬
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ قَيْسَ بْنَ سَعْدٍ، يُحَدِّثُ عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَعَثَنِي الْعَبَّاسُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَبِتُّ مَعَهُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ فَقَامَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَتَنَاوَلَنِي مِنْ خَلْفِ ظَهْرِهِ فَجَعَلَنِي عَلَى يَمِينِهِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমার পিতা ‘আব্বাস আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পাঠালেন। সেদিন আমার খালা মায়মূনাহ্-এর ঘরে ছিলেন। উক্ত রাতে আমি তাঁর সাথে কাটালাম। রাতে তিনি সলাত আদায় করতে উঠলে আমিও উঠলাম এবং গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে তাঁর পিছন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। (ই.ফা. ১৬৭১, ই.সে. ১৬৭৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৭
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ ‏.‏ نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ جُرَيْجٍ وَقَيْسِ بْنِ سَعْدٍ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদিন আমার খালা মায়মুনাহ্‌-এর ঘরে রাত্রি যাপন করলাম। এ পর্যন্ত বর্ণনা করার পর বর্ণনা কারী ইবনু জুরায়জ ও ক্বায়স ইবনু সা’দ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। (ই. ফা. ১৬৭২, ই.সে. ১৬৭৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। ই.ফা. ১৬৭৩,ই.সে. ১৬৮০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস


১৬৮৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَهُ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّهُ قَالَ لأَرْمُقَنَّ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اللَّيْلَةَ فَصَلَّى ‏.‏ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ أَوْتَرَ فَذَلِكَ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ‏.

যায়দ ইবনু খালিদ আল জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাতে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সলাত দেখব। রাতের বেলা প্রথমে তিনি সংক্ষিপ্ত ভাবে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর অনেক অনেক দীর্ঘায়িত করে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। তারপর দু’রাক‘আত সলাত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’ রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘ ছিল। এরপর দু’ রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’ রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘায়িত ছিল। এরপর দু’ রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’ রাক‘আত থেকে কম দীর্ঘায়িত ছিল। পরে আরো দু’রাক‘আত আদায় করলেন যা পূর্বের দু’ রাক‘আত থেকেও কম দীর্ঘায়িত ছিল। এরপর বিত্‌র অর্থাৎ এক রাক‘আত সলাত আদায় করলেন এবং এভাবে মোট তের রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। (ই.ফা. ১৬৭৪ ই.সে. ১৬৮১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯০
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ الْمَدَائِنِيُّ أَبُو جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَشْرَعَةٍ فَقَالَ ‏ "‏ أَلاَ تُشْرِعُ يَا جَابِرُ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ بَلَى - قَالَ - فَنَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَشْرَعْتُ - قَالَ - ثُمَّ ذَهَبَ لِحَاجَتِهِ وَوَضَعْتُ لَهُ وَضُوءًا - قَالَ - فَجَاءَ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ خَالَفَ بَيْنَ طَرَفَيْهِ فَقُمْتُ خَلْفَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। এক সময়ে আমরা এক (পানির কিনারে) ঘাটে গিয়ে পৌছলাম। তিনি আমাকে জিঞ্জেস করলেনঃ জাবির তুমি কি ঘাট পার হবে না? আমি বললাম, হ্যাঁ। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপর পারে গিয়ে অবতরণ করলে আমি ও পার হলাম। (জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বর্ণনা করেছেন যে,) এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে গেলে আর আমি তাঁর ওযুর পানি প্রস্তত করে রাখলাম। (তিনি বর্ণনা করেছেন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে ওযু করলেন এবং একখানা মাত্র কাপড় গায়ে জড়িয়ে সালাতে দাঁড়ালেন। কাপড় খানার আচল বিপরীত দিকের দু’ কাধে দিলেন। তখন আমি গিয়ে তাঁর পিছনে দাড়ালাম। কিন্তু তিনি আমার কান ধরে তাঁর ডান পাশে খাড়া করে দিলেন। (ই.ফা. ১৬৭৫, ই.সে. ১৬৮২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ جَمِيعًا عَنْ هُشَيْمٍ، - قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، - أَخْبَرَنَا أَبُو حُرَّةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ لِيُصَلِّيَ افْتَتَحَ صَلاَتَهُ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে সলাত আদায় করতে উঠলে সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাক‘আত (প্রথম দু’ রাক‘আত) সলাত শুরু করতেন। (ই.ফা. ১৬৭৬, ই.সে. ১৬৮৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إذا قام من الليل يصلي افتتح صلاته بركعتين خفيفتين

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ রাতের সলাত আদায় করতে শুরু করলে সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’ রাক‘আত সলাত দিয়ে শুরু করে। (ই.ফা. ১৬৭৭. ই.সে. ১৬৮৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ، عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ ‏ "‏ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيَّامُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَقَوْلُكَ الْحَقُّ وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَأَخَّرْتُ وَأَسْرَرْتُ وَأَعْلَنْتُ أَنْتَ إِلَهِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাতের বেলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সলাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ বলে দু’আ করতেনঃ “আল্লা-হুম্মা লাকাল হাম্‌দু আন্‌তা নূরুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্‌যি ওয়ালাকাল হাম্‌দু আন্‌তা ক্বইয়্যামুস্‌ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্‌যি ওয়ালাকাল হাম্‌দু আন্‌তা রব্বুস্‌ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্‌যি ওয়ামান ফীহিন্না আন্‌তাল হাক্কু ওয়া ওয়া‘দুকাল হাক্কু’ ওয়াক্বাওলুকাল হাক্কু ওয়ালিক্বা-উকা হাক্কুন্‌ ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন্‌ ওয়ান্না-রু হাক্কুন ওয়াস্‌ সা-‘আতু হাক্কুন, আল্ল-হুম্মা লাকা আস্‌লামতু ওয়াবিকা আ-মান্‌তু ওয়া 'আলায়কা তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলায়কা আনাব্‌তু ওয়াবিকা খা-সাম্‌তু ওয়া ইলায়কা হা-কাম্‌তু ফাগ্‌ফিরলী মা-ক্বদ্দাম্‌তু ওয়া আখ্‌খারতু ওয়া আস্‌রার্‌তু ওয়া আ’লান্‌তু আন্‌তা ইলা-হী লা-ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা” (অর্থাৎ - হে আল্লাহ! তোমার জন্যই সব প্রশংসা। তুমি আসমান ও জমিনের নূর বা আলো। তোমার জন্যই সব প্রশংসা, তুমিই আসমান ও জমিনের ব্যবস্থাপক। তোমার জন্যই সব প্রশংসা তুমিই আসমান জমিনের এবং এ সবের মধ্যে অবস্থিত সবকিছুর প্রতিপালক। তুমিই হাক্ব বা সত্য। তোমার ওয়া’দা সত্য, তোমার সব বাণী সত্য। তোমার সাথে সাক্ষাতের বিষয়টি সত্য। জান্নাত সত্য, জাহান্নামও সত্য এবং ক্বিয়ামতও সত্য। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছি, তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, তোমার অপর তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করেছি, তোমার কাছেই প্রত্যাবর্তন করেছি, তোমারই জন্যে অন্যদের সাথে বিবাদ করেছি এবং তোমার কাছেই ফায়সালা চেয়েছি। তাই তুমি আমার আগের ও পরের এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে কৃত সব পাপ ক্ষমা করে দাও। একমাত্র তুমিই আমার ইলাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই)। (ই.ফা. ১৬৭৮, ই.সে. ১৬৮৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৪
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ وَابْنُ أَبِي عُمَرَ قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، كِلاَهُمَا عَنْ سُلَيْمَانَ الأَحْوَلِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ أَمَّا حَدِيثُ ابْنِ جُرَيْجٍ فَاتَّفَقَ لَفْظُهُ مَعَ حَدِيثِ مَالِكٍ لَمْ يَخْتَلِفَا إِلاَّ فِي حَرْفَيْنِ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ مَكَانَ قَيَّامُ قَيِّمُ وَقَالَ وَمَا أَسْرَرْتُ وَأَمَّا حَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ فَفِيهِ بَعْضُ زِيَادَةٍ وَيُخَالِفُ مَالِكًا وَابْنَ جُرَيْجٍ فِي أَحْرُفٍ ‏.

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উপরে বর্ণিত হাদীস টি বর্ণনা করেছেন। তবে শুধু দু’টি শব্দ ছাড়া ইবনু জুরায়জ বর্ণিত হাদীসের শব্দসমূহ মালিক বর্ণিত হাদীসের শব্দসমূহের অনুরূপ। দু’টি স্থানের একটি ইবনু জুরায়জ (আরবী) শব্দের পরিবর্তে (আরবী) শাব্দটি উল্লেখ করেছেন। আর অপর স্থানটিতে শুধু (আরবী) কথাটি উল্লেখ করেছেন। আর ইবনু ‘উয়াইনাহ্‌ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হাদীসটিতে কিছু অতিরিক্ত শব্দ আছে এবং অনেকগুলো শব্দের ব্যাপারে তিনি মালিকের এবং ইবনু জুরায়জ-এর সাথে পার্থক্য করেছেন। (ই.ফা.১৬৭৯, ই.সে. ১৬৮৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৫
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، - وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ - حَدَّثَنَا عِمْرَانُ، الْقَصِيرُ عَنْ قَيْسِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ وَاللَّفْظُ قَرِيبٌ مِنْ أَلْفَاظِهِمْ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এই একই সানাদে হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের শব্দ উপরের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ১৬৮০ ই.সে ১৬৮৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَأَبُو مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ قَالُوا حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ، بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ بِأَىِّ شَىْءٍ كَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَفْتَتِحُ صَلاَتَهُ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ قَالَتْ كَانَ إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ افْتَتَحَ صَلاَتَهُ ‏ "‏ اللَّهُمَّ رَبَّ جِبْرَائِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِي لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ تَهْدِي مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ ‏"‏ ‏.

‘আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিঞ্জেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা যখন সলাত আদায় করতেন তখন কীভাবে তাঁর সলাত শুরু করতেন? জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাতে যখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করতে উঠতেন তখন এ দু’আটি পড়ে সলাত শুরু করতেনঃ “ আল্ল-হুম্মা রব্বা জিবরীলা ওয়া মীকাঈলা ওয়া ইস্‌রা-ফীলা ফা-ত্বিরাস্‌ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্‌যি ‘আ-লিমান গয়বি ওয়াশ্‌ শাহা-দাতি আন্‌তা তাহ্‌কুমু বায়না 'ইবা-দিকা ফীমা-কা-নূ ফীহি ইয়াখ্‌তালিফূ নাহ্‌দিনী লিমাখ তুলিফা ফীহি মিনাল হাক্কি বি ইয্‌নিকা ইন্নাকা তাহ্‌দী মান্‌ তাশা-উ ইলা- সিরা-ত্বিম মুসতাক্বীম” (অর্থাৎ - হে আল্লাহ্‌! জিব্‌রীল, মীকাঈল ও ইসরাফীলের প্রতিপালক, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়সমূহের জ্ঞানের অধিকারী। তোমার বান্দারা যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করে তুমিই সেগুলোর ফায়সালা করবে। সত্য ও ন্যায়ের যেসব বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করা হয়েছে সে বিষয়ে তুমি আমাকে পথ দেখাও। তুমিই তো যাকে ইচ্ছা সরল-সহজ পথ দেখিয়ে থাকো )। (ই.ফা. ১৬৮১ ই.সে. ১৬৮৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا يُوسُفُ الْمَاجِشُونُ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ ‏"‏ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ‏.‏ أَنْتَ رَبِّي وَأَنَا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذُنُوبِي جَمِيعًا إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ وَاهْدِنِي لأَحْسَنِ الأَخْلاَقِ لاَ يَهْدِي لأَحْسَنِهَا إِلاَّ أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا لاَ يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّهُ فِي يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ ‏"‏ ‏.‏ وَإِذَا رَكَعَ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَمُخِّي وَعَظْمِي وَعَصَبِي ‏"‏ ‏.‏ وَإِذَا رَفَعَ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ ‏"‏ ‏.‏ وَإِذَا سَجَدَ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ يَكُونُ مِنْ آخِرِ مَا يَقُولُ بَيْنَ التَّشَهُّدِ وَالتَّسْلِيمِ ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ‏"‏ ‏.‏

‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সলাত আদায় করতে দাঁড়াতেন তখন এ বলে শুরু করতেনঃ “ওয়াজ্জাহ্‌তু ওয়াজ্‌হিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস্‌ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্‌যা হানীফাওঁ ওয়ামা– আনা-মিনাল মুশরিকীনা ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্‌ইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল ‘আ-লামীনা লা শারীকা লাহূ ওয়াবি যা-লিক উমিরতু ওয়া আনা- মিনাল মুসলিমীন, আল্ল-হুম্মা আনতাল মালিকু লা- ইলা-হা ইল্লা – আনতা আন্‌তা রব্বি ওয়া আনা- আব্‌দুকা যলাম্‌তু নাফ্‌সী ওয়া‘তারাফ্‌তু বিযাম্‌বী ফাগফিরলী যুনূবী জামী’আন ইন্নাহূ লা- ইয়াগ্‌ফিরুয্‌ যুনূবা ইল্লা-আন্তা ওয়াহদিনী লিআহ্‌সানিল আখলা-ক্বি লা-ইয়াহ্‌দী লিআহ্‌সানিহা- ইল্লা- আন্‌তা ওয়াস্‌রিফ ‘আন্নি সাইয়্যিআহা-লা- ইয়াস্‌রিফু ‘আন্নী সাইয়্যিআহা- ইল্লা- আন্‌তা লাব্বায়কা! ওয়া সা’দায়কা! ওয়াল খায়রু কুল্লুহূ ফী ইয়াদায়কা ওয়াশ্‌ শুর্‌রু লায়সা ইলায়কা আনা –বিকা ওয়া ইলায়কা তাবা-রাকতা ওয়াতা ‘আ-লাইয়তা আস্‌তাগ্‌ফিরুকা ওয়া আতূবু ইলায়ক” (অর্থাৎ- আমি একনিষ্ট হয়ে আমার মুখ সে মহান সত্তার দিকে ফিরিয়ে দিলাম যিনি আসমান ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। আমার সলাত , আমার কুরবানী, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর জন্য যিনি সারা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক। তাঁর কোন শরীক নেই। আমি এ জন্যই আদিষ্ট হয়েছি। আমি মুসলীম বা আত্মসমর্পণকারী। হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম বাদশাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তুমি আমার প্রতিপালক, আর আমি তোমার বান্দা। আমি নিজে আমার প্রতি যুলুম করেছি। আমি আমার পাপ স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমার সব পাপ ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।আমাকে সর্বোত্তম আখলাক বা নৈতিকতার পথ দেখাও। তুমি ছাড়া এ পথ আর কেউ দেখাতে সক্ষম নয়। আর আখলাক্ব বা নৈতিকতর মন্দ দিকগুলো আমার থেকে দূরে রাখ। তুমি ছাড়া আর কেউ মন্দগুলোকে দূরে রাখতে সক্ষম নয়। আমি তোমার সামনে হাজির আছি – তোমার আনুগত্য করতে প্রস্তত আছি। সব রকম কল্যাণের মালিক তুমিই। অকল্যাণের দায় দায়িত্ব তোমার নয়। আমার সব কামনা বাসনা তোমার কাছেই কাম্য। আমার শক্তি-সামর্থ্যও তোমারই দেয়া। তুমি কল্যাণময়, তুমি মহান। আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার কাছেই তাওবাহ্‌ করছি)।আর রুকু করার সময় বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা রাকা’তু ওয়াবিকা আ-মান্‌তু ওয়ালাকা আস্‌লাম্‌তু খশা’আ লাকা সাম’ঈ ওয়া বাসারী ওয়া মুখ্‌খী ওয়া ‘আয্‌মী ওয়া ‘আসাবী” -(অর্থাৎ -হে আল্লাহ্‌! তোমার উদ্দেশ্যেই আত্মসমর্পণ করলাম। আমার কান, চোখ, মগজ, হাড় এবং সব স্নায়ুতন্ত্রী তোমার কাছে নত ও বশীভূত হ’ল)। আর রুকু থেকে বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা রব্বানা– লাকাল হা্‌মদু মিলআস্‌ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল আল আর্‌যি ওয়ামিলআ মা- বায়নাহুমা ওয়ামিলআ মা- শি’তা মিন শাইয়িন্‌ বা’দু”-( অর্থাৎ - হে আল্লাহ্! হে আমার প্রতিপালক, সব প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। আসমান ভর্তি প্রশংসা একমাত্র তোমারই প্রাপ্য)। আর যখন সিজদায় যেতেন তখন বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদ্‌তু ওয়াবিকা আ-মান্‌তু ওয়ালাকা আস্‌লাম্‌তু সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাহী খালাক্বাহূ ওয়াসাও্‌ ওয়ারাহূ ওয়াশাক্বক্বা সাম’আহূ ওয়া বাসারাহূ তাবা-রাকাল্ল-হু আহসানুল খ-লিক্বীন”- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমারই উদ্দেশে আমি সাজদাহ্‌ করলাম। তোমারই প্রতি আমি ঈমান পোষণ করেছি। তোমার উদ্দেশে আমি আত্মসমর্পণ করেছি। আমার মুখমণ্ডল সে মহান সত্তার উদ্দেশে সাজদাহ্‌ করল যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আকৃতি দান করেছেন আর কান ও চোখ ফুটিয়ে শোনা ও দেখার উপযোগী করে তৈরী করেছেন। মহা কল্যাণময় আল্লাহ, তিনি কতই না উত্তম সৃষ্টিকারী)। অতঃপর সবশেষে তাশাহ্‌হুদ ও সালামের মধ্য বর্তী সময়ে তিনি বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মাগ্‌ফীর্‌লী মা- ক্বদ্দাম্‌তু ওয়ামা- আখ্‌খার্‌তু ওয়ামা- আস্‌সরার্‌তু ওয়ামা- আ’লান্‌তু ওয়ামা- আস্‌রাফ্‌তু ওয়ামা- আন্‌তা আ’লামু বিহী মিন্নী আন্‌তাল মুক্বদ্দিমু ওয়া আন্‌তাল মুআখ্‌খিরু লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্‌তা” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বের ও পরের, গোপনে এবং প্রকাশ্যে কৃত গুনাহ ক্ষমা করে দাও। আর যে সব ব্যাপারে আমি বাড়াবাড়ি করেছি তাও ক্ষমা করে দাও। আমার কৃত যেসব পাপ সম্পর্কে তুমি আমার চাইতে বেশী জান তাও ক্ষমা করে দাও। তুমিই আদি এবং তুমিই অন্ত, তুমি ছাড়া আর কেউ ইলাহ নেই )। (ই.ফা. ১৬৮২, ই.সে. ১৬৮৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৬৯৮
وَحَدَّثَنَاهُ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ، إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا أَبُو النَّضْرِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَمِّهِ، الْمَاجِشُونِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ عَنِ الأَعْرَجِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَفْتَحَ الصَّلاَةَ كَبَّرَ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ وَجَّهْتُ وَجْهِي ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ ‏"‏ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ ‏"‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ ‏"‏ وَصَوَّرَهُ فَأَحْسَنَ صُوَرَهُ ‏"‏ ‏.‏ وَقَالَ وَإِذَا سَلَّمَ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ ‏"‏ .‏ إِلَى آخِرِ الْحَدِيثِ وَلَمْ يَقُلْ بَيْنَ التَّشَهُّدِ وَالتَّسْلِيمِ ‏.

আ’রাজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এতে তিনি বলেছেনঃ সলাত শুরু করার সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকবীর বলতেনঃ তারপরে “ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহী” বলতেন। এরপর শেষের দিকে “ওয়া আনা-আও্ওয়ালুল মুসলিমীন” বলতেন। এ হাদীসে তিনি আর বলেছেনঃ যখন তিনি রুকু’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন “সামি ‘আল্ল-হু-লিমান হামিদাহ, রব্বানা- ওয়ালাকাল হাম্দ” এবং তিনি “ওয়া সাও্ওয়ারাহূ ফা আহ্সানা সুওয়ারাহূ” –ও বলতেন (অর্থাৎ তিনি আকৃতি দান করেছেন এবং উত্তম আকৃতি দান করেছেন)। এ বর্ণনাতে আরো আছে, তিনি যখন সালাম ফিরাতেন তখন “আল্ল-হুম্মাগ্ ফিরলী মা-ক্বদ্দামতু” কথাটি থেকে শুরু করে পূর্বোক্ত হাদীসের শেষ পর্যন্ত বলতেন। আর তিনি তাশাহুদ ও সালামের কথা বলেননি। (ই.ফা. ১৬৮৩, ই.সে. ১৬৯০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৭. অধ্যায়ঃ
রাতের সালাতে ক্বিরাআত দীর্ঘ করা মুস্তাহাব

১৬৯৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ، نُمَيْرٍ - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ الأَحْنَفِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَافْتَتَحَ الْبَقَرَةَ فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَةِ ‏.‏ ثُمَّ مَضَى فَقُلْتُ يُصَلِّي بِهَا فِي رَكْعَةٍ فَمَضَى فَقُلْتُ يَرْكَعُ بِهَا ‏.‏ ثُمَّ افْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ فَقَرَأَهَا يَقْرَأُ مُتَرَسِّلاً إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسْبِيحٌ سَبَّحَ وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ ثُمَّ رَكَعَ فَجَعَلَ يَقُولُ ‏"‏ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ ‏"‏ ‏.‏ فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَامَ طَوِيلاً قَرِيبًا مِمَّا رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ فَقَالَ ‏"‏ سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ‏"‏ ‏.‏ فَكَانَ سُجُودُهُ قَرِيبًا مِنْ قِيَامِهِ ‏.‏ قَالَ وَفِي حَدِيثِ جَرِيرٍ مِنَ الزِّيَادَةِ فَقَالَ ‏"‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ"‏ ‏.‏

হুযায়ফাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে তাহাজ্জুদের সলাত আদায় করলাম। তিনি সূরাহ্‌ আল বাক্বারাহ্‌ পড়তে শুরু করলে আমি ভাবলাম তিনি হয়ত একশ আয়াত পড়ে রুকু’ করবেন। কিন্তু এর পরেও তিনি পড়ে চললেন। তখন আমি চিন্তা করলাম। তিনি এর (সূরা আল বাক্বারাহ্‌ ) দ্বারা পুরা দু’ রাকাত পড়ে সালাম ফিরাবেন। কিন্তু তিনি এরপরেও পড়তে থাকলে আমি ভাবলাম সূরাটি শেষ করে তিনি রুকু করবেন। কিন্তু এরপর তিনি সূরাহ নিসা পড়তে শুরু করলেন এবং তা পাঠ করলেন, অতঃপর তিনি সুরাহ্‌ আ-লি ‘ইমরান শুরু করলেন এবং তা পাঠ করলেন। তিনি থেমে থেমে ধীরে ধীরে পড়ছিলেন এবং তাসবীর আয়াত আসলে তাসবীহ পড়ছিলেন আর কিছু চাওয়ার আয়াত আসলে চাইলেন। যখন আশ্রয় প্রার্থনা করার কোন আয়াত পড়ছিলেন তখন প্রার্থনা করছিলেন। অতঃপর তিনি রুকু’ করলেন। রুকু’তে তিনি বলতে থাকলেন, “সুবহা-না রাব্বিয়াল ‘আযীম” (আমার মহান প্রভূ পবিত্র, আমি তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। তাঁর রুকু’ ক্বিয়ামের মতই দীর্ঘ ছিল। এরপর “সামি আল্ল-হু লিমান হামিদাহ” (আল্লাহ শুনে থাকেন যে তাঁর প্রশংসা করে) বললেনঃ এরপর যতক্ষন সময় রুকু’ করেছিলেন প্রায় ততক্ষণ সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন। এরপর সাজদাহ্‌ করলেন। সাজদাতে তিনি বললেন, “সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা” (মহান সুউচ্চ সত্তা আমার প্রভূ পবিত্র, আমি তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি)। তাঁর এ সাজদায়ও প্রায় ক্বিয়ামের সময়ের মতো দীর্ঘায়িত হলো। হাদীসটির বর্ণনা কারী বলেন যে, জারীর বর্ণিত হাদীসে এতটুকু কথা অধিক আছেঃ তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকু’ থেকে উঠে] বললেন, “সামি’আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা- লাকাল হাম্‌দ” ( আল্লাহ শুনেন যে ব্যক্তি তাঁর প্রশংসা করে। হে আমাদের প্রতিপালক, তোমার জন্যই সব প্রশংসা)। ( ই.ফা. ১৬৮৪, ই.সে. ১৬৯১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০০
وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، كِلاَهُمَا عَنْ جَرِيرٍ، - قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، - عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَطَالَ حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سَوْءٍ قَالَ قِيلَ وَمَا هَمَمْتَ بِهِ قَالَ هَمَمْتُ أَنْ أَجْلِسَ وَأَدَعَهُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সলাত আদায় করলাম। এ সালাতে তিনি ক্বিরআত এত দীর্ঘায়িত করলেন যে, আমি একটি মন্দ ইচ্ছা করে বসলাম। আবূ ওয়ায়িল বলেছেনঃ তাঁকে (‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদকে ) জিঞ্জেস করা হ’ল, আপনি কী ধরণের মন্দ ইচ্ছা করেছিলেন? জবাবে তিনি বললেনঃ আমি বসে পড়ার এবং তাঁর পিছনে এ সলাত পরিত্যাগ করার ইচ্ছা করেছিলাম। ( ই.ফা. ১৬৮৫, ই.সে. ১৬৯২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০১
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ الْخَلِيلِ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ ‏.‏

আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৬৮৬, ই.সে. ১৬৯৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৮. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি রাত্র ঘুমিয়ে সকাল করল তার প্রসঙ্গে আলোচনা ।

১৭০২
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ، قَالَ عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ نَامَ لَيْلَةً حَتَّى أَصْبَحَ قَالَ ‏"‏ ذَاكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنَيْهِ ‏"‏ ‏.‏ أَوْ قَالَ ‏"‏ فِي أُذُنِهِ ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কাছে বলা হ’ল যে, সে সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটায় (অর্থাৎ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে না ) এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ ঐ লোকটি এমন যার কানে শাইত্বন পেশাব করে দিয়েছে অথবা বলেছেন, দু’ কানে।[৩৫] ( ই.ফা. ১৬৮৭, ই.সে.১৬৯৮)

[৩৫] শাইত্বনের পেসাব দ্বারা শাইত্বন কর্তৃক ব্যক্তির বিপর্যয় বুঝানো হয়েছে । এ ক্ষেত্রে উপহাসচ্ছলে তাঁকে উজ্জীবিত করা উদ্দেশ্য । (মুসলিম শারহে নাবাবী-১ম খণ্ড ২৬৪পৃষ্টা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৩
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، أَنَّ الْحُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، حَدَّثَهُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم طَرَقَهُ وَفَاطِمَةَ فَقَالَ ‏"‏ أَلاَ تُصَلُّونَ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا أَنْفُسُنَا بِيَدِ اللَّهِ فَإِذَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَنَا بَعَثَنَا ‏.‏ فَانْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قُلْتُ لَهُ ذَلِكَ ثُمَّ سَمِعْتُهُ وَهُوَ مُدْبِرٌ يَضْرِبُ فَخِذَهُ وَيَقُولُ ‏"‏ وَكَانَ الإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَىْءٍ جَدَلاً ‏"‏ ‏.

‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন রাতের বেলা তাঁর ও ফাত্বিমাহ্‌ (রাঃ)–এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি (তাহাজ্জুদের) সলাত আদায় কর না? তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা সবাই তো আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি ইচ্ছা করলে আমাদেরকে জাগিয়ে দিতে পারেন। [‘আলী (রাঃ) বলেছেন] আমি এ কথা বললেঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে গেলেন। যখন তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন, আমি শুনলাম তখন তিনি উরুর উপরে সজোরে হাত চাপড়ে বলছেনঃ মানুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিতর্ক করতে অভ্যস্ত। (ই.ফা. ১৬৮৮, ই.সে. ১৬৯৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৪
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ ثَلاَثَ عُقَدٍ إِذَا نَامَ بِكُلِّ عُقْدَةٍ يَضْرِبُ عَلَيْكَ لَيْلاً طَوِيلاً فَإِذَا اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ وَإِذَا تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَتَانِ فَإِذَا صَلَّى انْحَلَّتِ الْعُقَدُ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌছিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিদ্রা যায় তখন শাইত্বন তাঁর মাথার শেষ প্রান্তে অর্থাৎ ঘাড়ে তিনটা গিরা দেয়। প্রত্যেকটা গিরাতে সে ফুঁক দিয়ে বলে, এখনো অনেক রাত আছে (ঘুমিয়ে থাক) তাই যখন সে ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে তখন একটি গিরা খুলে যায়। এরপর সে ওযু করলে আরো একটি গিরাসহ মোট দু’টি গিরা খুলে যায়। আর যখন সে (তাহাজ্জুদের ) সলাত আদায় করে তখন সবগুলো গিরা খুলে যায়। এভাবে সে কর্মতৎপর ও প্রফুল্ল মনের অধিকারী হয়ে সকাল জেগে উঠে। অন্যথায় মানুষ বিমর্ষ ও অলস মন নিয়ে জেগে উঠে। ( ই.ফা. ১৬৮৯, ইউ.সে. ১৬৯৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

২৯. অধ্যায়ঃ
নাফ্‌ল সলাত নিজ গৃহে আদায় করা মুস্তাহাব, মাসজিদে আদায়ও জায়িয

১৭০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ، عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ اجْعَلُوا مِنْ صَلاَتِكُمْ فِي بُيُوتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا ‏"‏ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কিছু কিছু সলাত বাড়ীতে আদায় করবে। (বাড়ীতে কোন সলাত না আদায় করে) বাড়ীকে তোমরা ক্ববর সদৃশ করে রেখো না। (ই.ফা. ১৬৯০,ই.সে. ১৬৯৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৬
وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، أَخْبَرَنَا أَيُّوبُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ صَلُّوا فِي بُيُوتِكُمْ وَلاَ تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا ‏"‏ ‏.

'আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা বাড়ীতেও সলাত আদায় কর। বাড়ী গুলোকে ক্ববর সদৃশ করে রেখো না। (ই. ফ. ১৬৯১, ই.সে. ১৬৯৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا قَضَى أَحَدُكُمُ الصَّلاَةَ فِي مَسْجِدِهِ فَلْيَجْعَلْ لِبَيْتِهِ نَصِيبًا مِنْ صَلاَتِهِ فَإِنَّ اللَّهَ جَاعِلٌ فِي بَيْتِهِ مِنْ صَلاَتِهِ خَيْرًا ‏"‏ ‏.

জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মাসজিদে সলাত আদায় করবে তখন সে যেন বাড়ীতে আদায় করার জন্যও তার সলাতের কিছু অংশ রেখে দেয়। কেননা তার সলাতের কারণে আল্লাহ তা'আলা তার বাড়ীতে বারাকাত ও কল্যাণ দান করে থাকেন। (ই.ফা. ১৬৯২, ই.সে. ১৬৯৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَثَلُ الْبَيْتِ الَّذِي يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ وَالْبَيْتِ الَّذِي لاَ يُذْكَرُ اللَّهُ فِيهِ مَثَلُ الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় আর যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় না এরূপ দু'টি ঘরের তুলনা করা যায় জীবিত ও মৃতের সঙ্গে। (ই.ফা. ১৬৯৩, ই.সে. ১৭০০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭০৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيُّ - عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ الْبَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ ‏"‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের ঘরসমূহকে ক্ববর সদৃশ করে রেখো না (অর্থাৎ নাফ্‌ল সলাত সমূহ বাড়ীতে আদায় করবে, কারণ যে ঘরে সূরাহ্ বাক্বারাহ্ পাঠ করা হয় শাইত্বন সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়)। (ই.ফা. ১৬৯৪, ই.সে. ১৭০১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১০
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سَالِمٌ أَبُو النَّضْرِ، مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ احْتَجَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حُجَيْرَةً بِخَصَفَةٍ أَوْ حَصِيرٍ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِيهَا - قَالَ - فَتَتَبَّعَ إِلَيْهِ رِجَالٌ وَجَاءُوا يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ جَاءُوا لَيْلَةً فَحَضَرُوا وَأَبْطَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهُمْ - قَالَ - فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ فَرَفَعُوا أَصْوَاتَهُمْ وَحَصَبُوا الْبَابَ فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُغْضَبًا‏ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا زَالَ بِكُمْ صَنِيعُكُمْ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُكْتَبُ عَلَيْكُمْ فَعَلَيْكُمْ بِالصَّلاَةِ فِي بُيُوتِكُمْ فَإِنَّ خَيْرَ صَلاَةِ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ ‏"‏ ‏.

যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খেজুর পাতা অথবা চাটাই দিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি ছোট কামরা তৈরী করে তাতে সলাত আদায় করতে গেলেন। এ দেখে কিছু সংখ্যক লোক এসে তাঁর সাথে সলাত আদায় করলেন। যায়দ ইবনু সাবিত বলেনঃ অন্য এক রাতেও লোকজন এসে জমা হ'ল। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সে রাতে) দেরী করলেন এবং এমনকি তিনি সে রাতে আসলেন না। তাই লোকজন উচ্চৈঃস্বরে তাঁকে ডাকাডাকি করল এবং বাড়ীর দরজায় কঙ্কর ছুঁড়তে শুরু করল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগান্বিত হয়ে তাদের মাঝে এসে বললেনঃ তোমরা যখন ক্রমাগত এরূপ করছিলে তখন আমার ধারণা হ'ল যে, এ সলাত হয়ত তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হবে। অতএব তোমরা বাড়িতেই (নাফ্‌ল) আদায় করবে। কেননা ফরয সলাত ছাড়া অন্যসব সলাত বাড়ীতে আদায় করা মানুষের জন্য সর্বোত্তম। (ই.ফা. ১৬৯৫, ই.সে. ১৭০২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১১
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ حُجْرَةً فِي الْمَسْجِدِ مِنْ حَصِيرٍ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيهَا لَيَالِيَ حَتَّى اجْتَمَعَ إِلَيْهِ نَاسٌ ‏.‏ فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَزَادَ فِيهِ ‏ "‏ وَلَوْ كُتِبَ عَلَيْكُمْ مَا قُمْتُمْ بِهِ ‏"‏ ‏.

যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাটাই দ্বারা ঘিরে মাসজিদের মধ্যে একটি কামরা বানালেন এবং কয়েক রাত পর্যন্ত সেখানে সলাত আদায় করলেন। তা দেখে কিছু লোক সেখানে সমবেত হ'ল। এতটুকু বর্ণনা করার পর বর্ণনাকারী উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করলেন। এর বর্ণনাতে এতটুকু অধিক বর্ণনা হয়েছে যে, এ সলাতে যদি তোমাদের জন্য ফরয করে দেয়া হ'ত তাহলে তোমরা তা আদায় করতে সক্ষম হতে না। (ই.ফা. ১৬৯৬, ই.সে. ১৭০৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩০. অধ্যায়ঃ
রাতের সলাত ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নিয়মিত 'আমালের ফযীলাত

১৭১২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، - يَعْنِي الثَّقَفِيَّ - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَصِيرٌ وَكَانَ يُحَجِّرُهُ مِنَ اللَّيْلِ فَيُصَلِّي فِيهِ فَجَعَلَ النَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ وَيَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ فَثَابُوا ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقَالَ ‏ "‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمْ مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا وَإِنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ مَا دُووِمَ عَلَيْهِ وَإِنْ قَلَّ ‏"‏ ‏.‏ وَكَانَ آلُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم إِذَا عَمِلُوا عَمَلاً أَثْبَتُوهُ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একখানা চাটাই ছিল। রাতের বেলা তিনি এ চাটাই দিয়ে একটি কামরা বানাতেন এবং তার মধ্যে সলাত আদায় করতেন। লোকজন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে এ সলাত আদায় করত এবং দিনের বেলা বিছিয়ে নিত। এক রাতে লোকজন বেশী ভীড় করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকজনকে সম্বোধন করে বললেনঃ হে লোকজন যতটা 'আমাল তোমরা স্থায়ীভাবে করতে সক্ষম হবে ততটা 'আমাল করবে। কেননা আল্লাহ তা'আলা তোমাদের 'ইবাদাতের সাওয়াব দিতে ক্লান্ত হবেন না। বরং তোমরাই 'ইবাদাত বন্দেগী করতে করতে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়বে। আর কম হলেও আল্লাহর কাছে স্থায়ী 'আমাল সর্বাপেক্ষা বেশী পছন্দনীয়। (বর্ণনাকারী বলেন) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী ও বংশধরগণ যে 'আমাল করতেন তা স্থায়ীভাবে সর্বদাই করতেন। (ই.ফা. ১৬৯৭, ই.সে. ১৭০৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَلَمَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ أَىُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ قَالَ ‏ "‏ أَدْوَمُهُ وَإِنْ قَلَّ ‏"‏ ‏.‏

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ মর্মে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, আল্লাহ তা'আলার কাছে কোন্ ধরনের 'আমাল সবচাইতে বেশী প্রিয়। জবাবে তিনি বলেছিলেনঃ কম হলেও যে 'আমাল স্থায়ী (সে 'আমাল আল্লাহ তা'আলার কাছে সবচাইতে বেশী প্রিয়)। (ই.ফা. ১৬৯৮, ই.সে. ১৭০৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৪
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ قَالَ قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ كَيْفَ كَانَ عَمَلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ كَانَ يَخُصُّ شَيْئًا مِنَ الأَيَّامِ قَالَتْ لاَ ‏.‏ كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً وَأَيُّكُمْ يَسْتَطِيعُ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَطِيعُ .

'আলক্বামাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উম্মুল মু'মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। বললামঃ হে উম্মুল মু'মিনীন! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর 'আমাল কেমন ছিল। তিনি কি কোন নির্দিষ্ট 'ইবাদাতের জন্য কোন বিশেষ দিন নির্দিষ্ট করে নিতেন? জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ না। তবে তাঁর 'আমাল ছিল স্থায়ী প্রকৃতির। আর তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কাজ করতে পারেন সেও সে কাজ করতে পারবে? (ই.ফা. ১৬৯৯, ই.সে. ১৭০৬)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৫
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَحَبُّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَكَانَتْ عَائِشَةُ إِذَا عَمِلَتِ الْعَمَلَ لَزِمَتْهُ ‏.‏

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে এমন 'আমাল সবচেয়ে প্রিয় যা কম হলেও স্থায়ীভাবে করা হয়। হাদীসের বর্ণনাকারী ক্বাসিম ইবনু মুহাম্মাদ বলেছেনঃ ‘আয়িশা (রাঃ) কোন্ 'আমাল শুরু করলে তা স্থায়ী ও অবশ্য করণীয় করে নিতেন। (ই.ফা. ১৭০০, ই.সে. ১৭০৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৩১. অধ্যায়ঃ
সলাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে অথবা কুরআন পাঠ ও যিক্‌রে জিহবা জড়িয়ে যেতে লাগলে, ঘুমিয়ে পড়া কিংবা বিশ্রাম নেয়ার আদেশ, যাতে তা কেটে যায়

১৭১৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَسْجِدَ وَحَبْلٌ مَمْدُودٌ بَيْنَ سَارِيَتَيْنِ فَقَالَ ‏"‏ مَا هَذَا ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا لِزَيْنَبَ تُصَلِّي فَإِذَا كَسِلَتْ أَوْ فَتَرَتْ أَمْسَكَتْ بِهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ حُلُّوهُ لِيُصَلِّ أَحَدُكُمْ نَشَاطَهُ فَإِذَا كَسِلَ أَوْ فَتَرَ قَعَدَ ‏"‏ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ زُهَيْرٍ ‏"‏ فَلْيَقْعُدْ ‏"‏ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে প্রবেশ করে দেখলেন মাসজিদের দু'টি খুঁটির মাঝে রশি বেঁধে টানানো আছে। এ দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কিসের জন্য? সবাই বললঃ এটা যায়নাবের রশি। তিনি সলাত আদায় করতে করতে যখন ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েন তখন এ রশিটা দিয়ে নিজেকে আটকে রাখেন। এ কখা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটি খুলে ফেল। তোমরা সানন্দ সাগ্রহ ও স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে সলাত আদায় করবে। সলাত আদায় করতে করতে কেউ যখন ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়বে তখন বসে আদায় করবে। যুহায়র বর্ণিত হাদীসে (আরবী) শব্দ আছে যার অর্থ হ'ল সে যেন বসে পড়ে। (ই.ফা. ১৭০১, ই.সে. ১৭০৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৭
وَحَدَّثَنَاهُ شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৭০২, ই.সে. ১৭০৯)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৮
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ الْحَوْلاَءَ بِنْتَ تُوَيْتِ بْنِ حَبِيبِ بْنِ أَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى مَرَّتْ بِهَا وَعِنْدَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ هَذِهِ الْحَوْلاَءُ بِنْتُ تُوَيْتٍ وَزَعَمُوا أَنَّهَا لاَ تَنَامُ اللَّيْلَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ تَنَامُ اللَّيْلَ خُذُوا مِنَ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَوَاللَّهِ لاَ يَسْأَمُ اللَّهُ حَتَّى تَسْأَمُوا ‏"‏ ‏.‏

'উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন যে, হাওলা বিনতু তুওয়াইত ইবনু হাবীব ইবনু আসাদ ইবনু 'আবদুল 'উয্‌যা একদিন তাঁর কাছে গেলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর কাছে গেলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ এ হ'ল হাওলা বিনতু তুওয়াইত। লোকজন বলে থাকে যে, সে রাতে ঘুমায় না। অর্থাৎ সারারাত 'ইবাদাত-বন্দেগী করে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথায় বিস্মিত হয়ে বললেনঃ সে রাতেও ঘুমায় না? তোমরা নাফ্‌ল ‘আমাল ততটুকু কর যতটুকু তোমাদের সাধ্য আছে। আল্লাহর ক্বসম, তিনি পুরস্কার দিতে ক্লান্ত হবেন না। বরং তোমরাই ('ইবাদাতে) ক্লান্ত হয়ে পড়বে। (ই.ফা. ১৭০৩, ই.সে. ১৭১০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭১৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ، عُرْوَةَ ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِي امْرَأَةٌ فَقَالَ ‏"‏ مَنْ هَذِهِ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ امْرَأَةٌ لاَ تَنَامُ تُصَلِّي ‏.‏ قَالَ ‏"‏ عَلَيْكُمْ مِنَ الْعَمَلِ مَا تُطِيقُونَ فَوَاللَّهِ لاَ يَمَلُّ اللَّهُ حَتَّى تَمَلُّوا ‏"‏ ‏.‏ وَكَانَ أَحَبَّ الدِّينِ إِلَيْهِ مَا دَاوَمَ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ وَفِي حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ أَنَّهَا امْرَأَةٌ مِنْ بَنِي أَسَدٍ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় আমার কাছে আসলেন যখন আমার কাছে একজন মহিলা উপস্থিত ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কে? আমি বললামঃ এ সেই মহিলা যে রাতের বেলা না ঘুমিয়ে সলাত আদায় করে। (এ কথা শুনে) তিনি বললেনঃ তোমরা ততটুকু পরিমাণ 'আমাল করবে যা স্থায়ীভাবে করতে পারবে। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, আল্লাহ তা'আলা (তোমাদের 'আমালের) সওয়াব বা পুরস্কার দিতে অক্ষম হবেন না। বরং তোমরাই 'আমাল করতে অক্ষম হয়ে পড়বে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বীনের ততটুকু 'আমাল অত্যধিক পছন্দনীয় ছিল 'আমালকারী যা স্থায়ীভাবে করতে পারবে। আবূ উসামাহ্ বর্ণিত হাদীসে উল্লেখিত আছে, উক্ত মহিলা ছিলেন বানী আসাদ গোত্রের একজন। (ই.ফা. ১৭০৪, ই.সে. ১৭১১)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭২০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، بْنُ سَعِيدٍ - وَاللَّفْظُ لَهُ - عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلاَةِ فَلْيَرْقُدْ حَتَّى يَذْهَبَ عَنْهُ النَّوْمُ فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا صَلَّى وَهُوَ نَاعِسٌ لَعَلَّهُ يَذْهَبُ يَسْتَغْفِرُ فَيَسُبُّ نَفْسَهُ ‏"‏ ‏.

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ সলাত আদায়কালে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে শুয়ে ঘুমিয়ে নিবে এবং তন্দ্রা বা ঘুম দূর হলে পরে আবার সলাত আদায় করবে। কারণ, তোমরা কেউ হয়ত তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় সলাত আদায় করলে দু'আ ও ক্ষমা প্রার্থনার স্থলে নিজেকে ভৎর্সনা (বদ্‌দু'আ) করে ফেলবে। (ই.ফা. ১৭০৫, ই.সে. ১৭১২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

১৭২১
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ فَاسْتَعْجَمَ الْقُرْآنُ عَلَى لِسَانِهِ فَلَمْ يَدْرِ مَا يَقُولُ فَلْيَضْطَجِعْ ‏"‏ ‏.

হাম্মাম ইবনু মুনাব্‌বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) আমার কাছে আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কিছু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে একটি হাদীস হ'ল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে থেকে কেউ যদি রাতে সলাত আদায় করতে ওঠে আর (ঘুমের প্রভাবে) তার কুরআন তিলাওয়াত আড়ষ্টতা আসে অর্থাৎ সে কি বলছে সে সম্পর্কে তার কোন চেতনা না থাকে তাহলে যেন সে শুয়ে (ঘুমিয়ে) পড়ে। (ই.ফা. ১৭০৬, ই.সে. ১৭১৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png