LIVE
Loading latest headlines...

মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০২০

সাইনুসাইটিস


সাইনুসাইটিস অনেকের মাঝে অতি পরিচিত একটি সমস্যা। মুখমন্ডল ও মস্তিস্কের হাড়কে হাল্কা রাখার সুবিধার্তে মাথার খুলির চারিদিকে কিছু বায়ুকুঠুরি আছে যার নাম সাইনাস। আর সাইনাসের প্রদাহের জন্য যেই রোগটি হয় তা সাইনুসাইটিস নামে পরিচিত। 
সাইনুসাইটিস কী?
সাইনুসাইটিস অতি পরিচিত একটা সমস্যা। মুখমণ্ডল তথা মাথার খুলির চারিদিকে চার জোড়া বায়ুভর্তি কুঠুরি থাকে। এসব কুঠুরিগুলোকেই বলা হয় সাইনাস। এগুলোতে প্রদাহ হলে তখন তাকে বলা হয় সাইনুসাইটিস।
সাইনুসাইটিস কেন হয়?
যেকোনো বয়সের মানুষের সাইনুসাইটিস হতে পারে। সাইনাস একবার কাউকে পেলে সারাজীবনেও সারেনা। সাইনাস থেকে অনেক রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে যেমন- ঠাণ্ডা লাগা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি। সাইনুসাইটিস সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা অন্য ধরনের জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য সমস্যা যেমন নাকে আঘাত পাওয়া, অ্যালার্জি, ঠান্ডা লাগা, ধুলোবালি, নাকের বাঁকা হাড়, নাকে টিউমার ইত্যাদি এ রোগের প্রকোপকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। ঠাণ্ডা লাগা, নাকের পলিপ, নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়া, অ্যালার্জি, ভাইরাল-ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন ইত্যাদি যখনই নাক ও কপালের সাইনাসের ভিতরের অংশগুলোকে বন্ধ করে দেয় তখনই সমস্যাগুলো শুরু হয়ে যায়। এছাড়া নাকের ড্রেনেজ অংশে কোন সমস্যা থাকলেও সাইনুসাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাইনুসাইটিসের উপসর্গগুলো কী কী?
১। সাইনুসাইটিসের সর্বপ্রধান লক্ষণ ব্যথা। সাধারণত বেশীর ভাগ রোগীর মাথাব্যথার সমস্যা হয়। এই সমস্যায় সাধারণত কপালের সামনের অংশে এবং নাকের পাশের অংশে বেশ ব্যথা অনুভূত হয়।সামনের দিকে ঝুঁকে কাজ করলে এ ব্যথা আরও বেড়ে যায়।
২। সকালের প্রথম দিকে বা ঘুম থেকে উঠলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ ধরনের এ ব্যথাটিই সাইনুসাইটিসের প্রধান লক্ষণ।
৩। মাথার বিভিন্ন সাইনাসে ইনফেকশন অনুযায়ী এই ব্যথার অঞ্চল পরিবর্তিত হতে পারে অর্থাৎ ব্যথা নাকের গোড়ায়, উপরের চোয়ালের ওপরে, চোখের নিচে, কপালে ও মাথার নিচে যেকোনো স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোখের উপরে বা নিচের অংশের পাতা ফুলে যেতে পারে।
৪। সাইনুসাইটিস ব্যথার সাথে জ্বর বা হাঁচি-কাশি থাকতে পারে। তবে দেখা যায় যে দীর্ঘমেয়াদি এ সমস্যা থাকলে শরীরে জ্বর নাও থাকতে পারে । ব্যথার সঙ্গে ক্লান্ত লাগা, দাঁতে ব্যথার মতো উপসর্গগুলোও আপনাকে ভোগাতে পারে।
৫। নাকের ভেতরের মাংসগুলো ফোলা থাকতে পারে। নাকের পেছনে নাসাগলবিল অঞ্চলে অর্থাৎ আলজিভের পেছন থেকে আঠালো ঘন পুঁজ বেয়ে নেমে আসতে পারে। অনেক সময় নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া ও সবসময় মাথা ভার ভার মনে হয় যা এর অন্যতম একটা লক্ষণ।
৬। সাইনসাইটিসের কারণে বেশীরভাগ সময় রোগী খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বুঝতে পারে না। অনেক সময় রোগীকে অস্থির , বিমর্ষ এবং কাজের প্রতি অনীহা লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া শারীরিক অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে গা ম্যাজম্যাজ করা, জ্বর ও ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে।
সাইনসাইটিস থেকে সুস্থ থাকতে যা যা করতে হবে:
১। শরীরে আদ্রতার তারতম্য ঘটলে সাইনাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। তাই বেশি বেশি পানি পান করা উচিত। পানির পাশাপাশি পুষ্টিকর ফল ও সবজির জুস খেতে পারেন যা আপনার স্বাভাবিক আদ্রতা বজায় রাখবে।
২। চায়ের পরিবর্তে প্রচুর পানীয় পান করুন। গ্রিন টি পানের অভ্যাস করতে পারেন। পারলে কুসুম থেকে মাঝারি গরম পানিতে ১ টুকরা লেবু চিপে এতে মধু মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন যা আপনার সাইনাসের প্রকোপ কমিয়ে দেবে।
৩। যাদের ধুলাবালিতে অ্যালার্জি আছে তাদের ধুলার সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকুন। সর্দির সমস্যায় আক্রান্ত হলে সর্বদা খেয়াল রাখুন যে আপনার নাক সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে । এখানে অবহেলা করলে আপনার সাইনুসাইটিসের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
৪। অনেক সময় সর্দির কারণে নাক রুমাল বা টিসু দিয়ে মুছতে মুছতে নাক ফুলে যায়। এসময় কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন যা নাকের ফোলা ভাব কমে যেতে সাহায্য করবে।
৫। শ্লেষ্মার কারণে আপনার নাক বন্ধ থাকলে তা প্রথমে দূর করতে হবে। এজন্য যদি পারেন কুসুম গরম স্যালাইন নাক দিয়ে টানার অভ্যাস করুন। তাছাড়া পারলে স্যালাইন নাকের একপাশ দিয়ে টেনে অন্য পাশ দিয়ে বের করে ফেলুন। এতে জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর হবে এবং সাইনাসের প্রকোপ কমবে।
৬। সাইনসাইটিসের সমস্যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহন করা খুবই প্রয়োজন। ঘুমের সমস্যার সাথে সাইনাসের সমস্যা অনেকাংশে জড়িত। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমানোর পাশাপাশি মানসিক চাপটাকেও দূরে রাখার চেষ্টা করুন। ঘুম ও বিশ্রামকে কোনোভাবেই অবহেলা করবেন না।

সাইনাসের সমস্যা দেখা দিলে প্রাথমিক অবস্থায়ই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রোগটিকে দীর্ঘমেয়াদি হতে দিবেন না। অবস্থা বেশি খারাপের দিকে গেলে সার্জারি করা প্রয়োজন হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটা করার দরকার হয় না। সাইনাসের সমস্যা থেকে আরাম পেতে নাকে বাষ্পের ভাপ নিতে পারেন। ওষুধের মাধ্যমে ভালো না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png