LIVE
Loading latest headlines...

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০

সিয়াম বা রোজার ফজিলত ও হিকমত


আভিধানিক অর্থে সিয়াম কোনো কিছু থেকে বিরত হওয়া শরয়ী পরিভাষায় সিয়াম সুবেহ সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় স্বামী-স্ত্রীর মিলন হতে বিরত থেকে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করা।
রোজার ফজিলত
রোজার ফজিলত অঢেল, এর ছাওয়াব বহুগুণে বর্ধিত। আল্লাহ তাআলা রোজাকে তাঁর একান্ত বিষয় বলে উল্লেখ করে এ ইবাদতটিকে মহিমান্বিত করেছেন, এর আযমত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে কুদ্সীতে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আদম সন্তানের প্রতিটি আমলের ছাওয়াবই দ্বিগুণ করে দেয়া হয়। প্রতিটি সৎকাজ দশগুণ থেকে সাতশগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন: তবে রোজা ব্যতীত; কেননা রোজা কেবল আমার এবং আমিই এর প্রতিদান দিই। রোজাদার আমার জন্য তার লালসা ও খাদ্য পরিত্যাগ করে। রোজাদারের দুটি আনন্দ রয়েছে: একটি হলো রোজা ছাড়ার সময়, আর অন্যটি হলো তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়। আর রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্তুরির সুগন্ধি থেকেও প্রিয়। (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম।)
 
রোজা শরীয়তভুক্ত হওয়ার হিকমত
১ - আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়ন ও শরীয়তের বিধানাবলি অনুসরণ করে তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
(لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣)
{আশা করা যায় তোমরা মুত্তাকী হবে।}
[আল বাকারা:১৮৩]
২ - সবর ও ধৈর্যের অভ্যাস গড়ে তোলা ও প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে ইচ্ছাশক্তিকে শাণিত করা।
৩ - দরিদ্র ও নিঃস্বদের প্রতি দয়া ও মমতা প্রদর্শনের প্রতি মানুষকে অভ্যস্ত করে তোলা; কেননা ব্যক্তি যখন ক্ষুধার্থ থাকার যাতনা অনুভব করবে, অভাবগ্রস্তদের প্রতি তার অন্তর ও অনুভূতি কোমল হবে।
৪ - রোজার মাধ্যমে শরীরের আরাম ও সুস্থতা নিশ্চিত করা।
 
রোজার হুকুম
রোজার প্রকারভেদ
বাধ্যতামূলক রোজা:
আর তা দু’প্রকার:
ক. আল্লাহ তাআলা কর্তৃক বান্দার ওপর মৌলিকভাবে ফরজ করে দেয়া রোজা, আর তা হলো রমজানের রোজা। এ রোজা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি।
খ. এমন রোজা যা বান্দা নিজের ওপর ওয়াজিব করে নিয়েছে, যেমন মানত ও কাফফারার রোজা।
 
মুস্তাহাব রোজা
আর তা হলো প্রত্যেক ওই রোজা যা শরীয়ত প্রবর্তকের কাছে পছন্দনীয়। যেমন সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা, প্রতিমাসে তিন রোজা, আশুরার রোজা, যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের রোজা ও আরাফা দিবসের রোজা।
 
রোজা বাধ্যতামূলক হওয়ার শর্ত
১ - ইসলাম : অতএব অমুসলিমের ওপর রোজা রাখা ফরজ নয়।
২ - প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া: অতএব অপ্রাপ্তবয়স্কের ওপর রোজা রাখা ফরজ নয়। তবে যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক-বালিকা রোজা রাখতে সক্ষম হয় তবে রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য এ ব্যাপারে তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে।
৩- সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া: অতএব পাগলের ওপর রোজা রাখা ফরজ নয়।
৪ - রোজা রাখতে সক্ষম হওয়া: অতএব যে রোজা রাখতে অপারগ তার ওপর রোজা রাখা ফরজ নয়।

রোজায় নিয়ত
ফরজ ও ওয়াজিব রোজার ক্ষেত্রে রাত থেকে রোজার নিয়ত করা আবশ্যক। আর যদি নফল রোজা হয়, তবে রাত থেকে নিয়ত করা ওয়াজিব নয়, বরং দিনের বেলায় সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে নিয়ত করে নিলেই রোজা রাখা শুদ্ধ হবে, যদি সুবেহ সাদেকের পর থেকে এমনকিছু গ্রহণ না করা হয় যা রোজা ভেঙ্গে দেয়। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,‘একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে এলেন ও জিজ্ঞাসা করলেন,‘তোমাদের কাছে কি কোনো (খাবার) আছে?’ আমরা বললাম,‘ না, নেই।’ তিনি বললেন: তাহলে আমি রোজা রাখলাম।’(বর্ণনায় মুসলিম)

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png