LIVE
Loading latest headlines...

বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০

লায়লাতুল কদর নামকরণের কারণ কি? বিস্তারিত আলোচনা!



- কদরের এক অর্থ সম্মান ইরশাদ হয়েছে :
(وَمَا قَدَرُواْ ٱللَّهَ حَقَّ قَدۡرِهِۦٓ ){আর তারা আল্লাহকে যথার্থ সম্মান দেয়নি}[ সূরা আল আনআম:৯১]
সে হিসেবে লায়লাতুল কদর অর্থ হবে সম্মানিত রাত; কেননা রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে, রাতে ফেরেশতাগণ নেমে আসেন এবং রাতে রবকত-রহমত-মাগফিরাত নাযিল হয়

- কদরের আরেক অর্থ সংকীর্ণকরণ, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:
(وَمَن قُدِرَ عَلَيۡهِ رِزۡقُهُۥ فَلۡيُنفِقۡ مِمَّآ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُۚ )
{আর যার রিয্ক সংকীর্ণ করা হয়েছে সে যেন আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা হতে ব্যয় করে} [ সূরা আত-তালাক:]
লায়লাতুল কদরের ক্ষেত্রে সংকীর্ণকরণের অর্থ হবে লায়লাতুল কদর সংঘটিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট তারিখ গোপন করে রাখা

- কাদ্র কাদার থেকেও উৎকলিত হতে পারে, যার অর্থ হবে রাতে আল্লাহ তাআলা সে বছরের সকল আহকাম নির্ধারণ করেন আল্লাহ তাআলা বলেন:
(يُفۡرَقُ كُلُّ أَمۡرٍ حَكِيمٍ )
{সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়} [সূরা আদ-দুখান:]

লায়লাতুল কদরের ফজিলত মর্যাদা
- লায়লাতুল কদরেই পবিত্র কুরআন নাযিল করা হয়েছে

আল্লাহ তাআলা বলেন :
(إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ)
{নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছিলাইলাতুল কদরে}[ সূরা আল কাদ্র:]

- লায়লাতুল কদর হাজার মাস থেকেও উত্তম
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ )
{লায়লাতুল কদর এক হাজার মাস থেকে উত্তম} [সূরা আল-কাদ্র:] অর্থাৎ লায়লাতুল কদরে আমল করা লায়লাতুল কদরের বাইরে এক হাজার মাস আমল করার চেয়েও উত্তম

- লায়লাতুল কদরে ফেরেশতা জিব্রীল এর অবতরণ

আল্লাহ তাআলা বলেন:
(تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ )
{সে রাতে ফেরেশতারা রূহ (জিব্রীল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে}[ সূরা আল কাদ্র:]

আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘লায়লাতুল কদর হলো সাতাশ তারিখ অথবা ঊনত্রিশ তারিখের রাত, আর ফেরেশতাগণ রাতে পৃথিবীতে কঙ্করের সংখ্যা থেকেও বেশি থাকেন
- লায়লাতুল কদর হলো শান্তির রাত
আল্লাহ তাআলা বলেন :
(سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥ )
{শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত}[ সূরা আল কাদ্র:]
অর্থাৎ লায়লাতুল কদরের পুরোটাই ভালো, এর শুরু থেকে সুবেহ সাদেক পর্যন্ত আদৌ কোনো অনুত্তম বিষয় নেই

- লায়লাতুল কদর মুবারক রাত
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةٖ مُّبَٰرَكَةٍۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ ٣ )
{নিশ্চয় আমি এটি নাযিল করেছি বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি সতর্ককারী}
[ সূরা আদ-দুখান:]

উক্ত আয়াতেলায়লাতুম্ মুবারাকা’- এর অর্থ ইবনে আব্বাস রাযি. এর নিকটলায়লাতুল কদর - রাতে এক বছরের সকল প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়

আল্লাহ তাআলা বলেন:
(فِيهَا يُفۡرَقُ كُلُّ أَمۡرٍ حَكِيمٍ )
{সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়} [ সূরা আদ-দুখান:]

- যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করল, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হলো’(বর্ণনায় ইবনে খুযায়মাহ)
কোন রাত লায়লাতুল কদর?

আল্লাহ তাআলা রাতকে গোপন করে রেখেছেন, যাতে মুসলিম ব্যক্তি রমজানের শেষ দশদিনে অধিক শ্রম ব্যয় করে, বিশেষ করে বেজোড় রাতগুলোয় আর সেগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ২৯ তারিখের রাত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশের বেজোড় রাতগুলোতে লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করো’(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

আলেমদের কেউ কেউ বিভিন্ন দলিলের মাধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে বলেছেন, রাতগুলোর একেকটায় একেক সময় লায়লাতুল কদর সংঘটিত হয়ে থাকে(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

লায়লাতুল কদরে যেসব আমল মুস্তাহাব
- ইতিকাফ : রমজানের শেষ দশকের পুরোটাতেই ইতিকাফ করতে হয়, শুধু লায়লাতুল কদরে নয় আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন
(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

- ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাসসহ আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ছাওয়াবপ্রাপ্তির দৃঢ় বিশ্বাসসহ আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লায়লাতুল কদর যাপন করল, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হলো’(বর্ণনায় বুখারী মুসলিম)

- দুআ : আয়েশা রাযি. বলেন,‘ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি লায়লাতুল কদর পাই তবে কি দুআ করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলো,‘ اللهم إنك عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُ الْعَفْوَ، فاعْفُ عَنِّي অর্থাৎ হে আল্লাহ, আপনি অতি ক্ষমাশীল দয়ালু, আপনি ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন, তাই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন
লায়লাতুল কদরের আলামত
- রাত বেশি ঠাণ্ডাও হয় না, বেশি গরমও হয় না, বরং তা হয় উজ্জ্বল
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে লায়লাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে রাত হলো রমজানের শেষ দশদিনের রাতগুলোয় রাত হলো মুক্ত উজ্জ্বল, যা ঠাণ্ডাও না গরমও না’(বর্ণনায় তিরমিযী)

- লায়লাতুল কদর শেষে সকালের সূর্য আলোকরশ্মি ব্যতীত সাদা হয়ে উদিত হয়
উবায় ইবনে কা রাযি. কে যখন লায়লাতুল কদরের আলামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন তিনি বলেছেন,‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নিদর্শনের কথা বলেছেন, তার দ্বারা আমরা লায়লাতুল কদর চিনতে পারি, অর্থাৎ ওইদিন সূর্যোদয় হয় রশ্মিবিহীন আকারে’ (বর্ণনায় ইবনে খুযায়মাহ)

সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, ‘আলোকরশ্মিবিহীন সাদা আকারে’ (বর্ণনায় তিরমিযী)

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png