নারীদের মসজিদে গমন প্রসঙ্গে কিছু কথা
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
নারীদের ওপর ঈদ ও জুমার নামাজ কোনোটাই ওয়াজিব নয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্যও নারীদের মসজিদে না গিয়ে ঘরে পড়লেই বেশি সওয়াব। তাঁদের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া শরিয়ত অনুমোদিত নয়।
পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসে নারীদের পর্দা করার অত্যধিক তাগিদ করা
হয়েছে। সেসব আয়াত ও হাদিস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যত দূর সম্ভব নারীদের নিজ গৃহে অবস্থান জরুরি।
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলি যুগের মতো সৌন্দর্য প্রদর্শন কোরো না। তোমরা সালাত কায়েম করো, জাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো। ’
(সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৩)
নারীদের মসজিদে আসার প্রতি রাসুল (সা.) এর নিরুৎসাহ প্রদান
———————————————————————————————-
নারীদের নামাজ সংক্রান্ত অসংখ্য হাদিস আছে,
যেগুলোতে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের মসজিদে আসতে নিরুৎসাহী করা হয়েছে।
এক. হজরত আবদুল্লাহ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ক্ষুদ্র কক্ষে নারীদের নামাজ বড় কামরার নামাজের তুলনায় উত্তম। ঘরের নির্জন কোণে নামাজ ক্ষুদ্র কক্ষের নামাজের তুলনায় উত্তম। ’
[আবু দাউদ, হাদিস : ৫৭০ (হাদিসটি সহিহ)]
অন্য বর্ণনায় হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নারীদের ঘরে নামাজ পড়া ঘরের বাইরে নামাজ পড়ার চেয়ে উত্তম। ’ (আল মু’জামুল আওসাত, হাদিস : ৯১০১).
দুই. উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নারীদের নামাজের উত্তম জায়গা হলো তাদের ঘরের নির্জন কোণ। [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৬৫৪২ (হাদিসটি হাসান)]
তিন. আবু হুমাইদ আল সাঈদি থেকে বর্ণিত, একবার উম্মে হুমাইদ নামক একজন মহিলা সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে আগ্রহী। ’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি জানি তুমি আমার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পছন্দ করো। কিন্তু তোমার জন্য বড় কামরার তুলনায় গৃহের অন্দরমহলে নামাজ পড়া উত্তম। আবার বড় কামরায় নামাজ পড়া উত্তম বারান্দায় নামাজ পড়ার চেয়ে। বারান্দায় নামাজ আদায় করা উত্তম তোমার মহল্লার মসজিদের চেয়ে। মহল্লার মসজিদ উত্তম আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) থেকে। ’ এ কথা শোনার পর উম্মে হুমাইদ (রা.) তাঁর গৃহের নির্জন স্থানে একটি নামাজের স্থান বানাতে নির্দেশ দিলেন। সেখানেই আজীবন নামাজ আদায় করতে লাগলেন। এ অবস্থায় তিনি ইন্তিকাল করেন। [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৭০৯০; সহিহ ইবনে
খুজাইমা, হাদিস : ১৬৮৯ {হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.)-এর মতে, হাদিসটি হাসান। ফাতহুল বারি : ২/২৯০}]
চার. যেসব পুরুষ প্রয়োজন ছাড়া মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ পড়ে, তাদের বিষয়ে রাগান্বিত হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি ঘরগুলোতে নারী ও শিশুরা না থাকত, তাহলে আমি এশার নামাজের ইমামতির দায়িত্ব অন্যজনকে দিয়ে কিছু যুবকদল দিয়ে তাদের ঘরের সব কিছু
জ্বালিয়ে দিতাম। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮৭৯৬)
এতে বোঝা যায়, যখন নামাজের জামাত চলতে থাকে, তখন নারীরা ঘরে থাকে।
পাঁচ. আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জামাতে জুমার নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের ওপর অকাট্য ওয়াজিব, তবে ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব নয়। ’
[আবু দাউদ, হাদিস : ১০৬৭
(হাদিসটি ইমাম বুখারি ও মুসলিম (রহ.)-এর শর্ত অনুযায়ী সহিহ)। আল মুস্তাদরাক : ১/২৮৮]
ছয়. হজরত মুহাম্মদ ইবনে কাব আল কুরাজি (রহ.) বলেন,, রাসুল (সা.) বলেন, ‘নারী ও দাসের ওপর জুমার নামাজ নাই। ’
[মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৫১৯৬
(হাদিসটি সহিহ)]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন