LIVE
Loading latest headlines...

শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১

বোবা ধরা কি? ইসলামে এরর প্রতিকার কি?

শনিবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১ 0
বার দেখা হয়েছে

 



‘বোবা ধরা’ সারা বিশ্বের সকল সমাজে প্রচলিত অতি প্রাচীন এবং অতি প্রাকৃতিক ঘটনা। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় “স্লিপিং প্যারালাইসিস” (Sleeping Paralysis) বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। ঘুমের সময় কিংবা স্বপ্ন দেখার সময় অবচেতন মনে অনেকের একটি ঘটনা ঘটে থাকে। যাকে স্লিপ প্যারালাইসিস বা বোবায় ধরা বলা হয়। এই সময় শরীরের পেশী সম্পূর্ণ দুর্বল হয়ে যায়। ফলে মানুষ ঘুমের মধ্যে বা প্রায় জাগ্রত অবস্থায় সম্পূর্ণ অসাড় হয়ে পড়ে। এতে সে মানসিকভাবে জাগ্রত থাকে ঠিকই কিন্তু শারীরিকভাবে হয়ে পড়ে অসাড়।

এই সময় শরীরে কতগুলো পরিবর্তন ঘটে থাকে। যেমন-হার্টবিট কমে যাওয়া, শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, গলায় বা বুকে চাপ অনুভূত হওয়া, নানা রকম দুঃস্বপ্ন কিংবা শত্রুর উপস্থিতি অনুভূত হওয়া ইত্যাদি। এছাড়া ভয় এবং অসহায় বোধ করতে থাকে মানুষ। ঘুমিয়ে গেলে মস্তিষ্ক থেকে পেশীতে সংকেত যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তাই পেশীসমূহ হয়ে যায় অসাড়।

তাই স্লিপ প্যারালাইসিস এর সময় যা করা উচিত-চোখ বারবার নাড়াচাড়ার চেষ্টা করা, এতে স্লিপ প্যারালাইসিস থেমে যায় অল্প সময়ের মধ্যে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিতে চেষ্টা করা। শরীরের কিছু অংশ যেমন-জিহ্বা, পায়ের আঙুল নাড়ানোর চেষ্টা করা। এতে সম্পূর্ণ জেগে উঠা সম্ভব হবে।

স্লিপ প্যারালাইসিস সাধারণত কিছু কারণে হয়ে থাকে।

যেমন-নিয়মিত ঘুমানোর অভ্যাস না থাকলে স্লিপ প্যারালাইসিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই অনিদ্রা পরিহার করা উচিত। ঘুমের সময় চিত কিংবা উপুড় হয়ে না শুয়ে কাত হয়ে শোওয়া উত্তম।

ঘুমের কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পূর্বে খাবার গ্রহণ করা উচিত। মানসিক চাপ স্লিপ প্যারালাইসিসের কারণ হতে পারে। তাই দুশ্চিন্তা পরিহার করুন। ঘুমের ওষুধ পরিহার করা ভালো। ঘুমের ওষুধ স্লিপ প্যারালাইসিসের কারণ হতে পারে। যদি ৬ মাসের অধিক সময় সপ্তাহে একবার স্লিপ প্যারালাইসিস হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ইসলামের চোখে বোবায় ধরলে করণীয়:

বোবায় ধরলে যা যা করা উচিত, তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে,

১) দরূদ শরীফ পড়তে থাকা।

২) আল্লাহর কালাম অর্থাৎ কুরআনুল কারীমের যে কোন সূরা থেকে আয়াতে পাক পাঠ করতে থাকা। সূরা বাকারা, ইখলাস অথবা ইয়াসীনের আয়াতসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।

৩) আয়াতুল কুরসী পাঠ করতে থাকা। এটি অত্যন্ত কার্যকরী।

৪) হুযুরে পাক (সঃ) অথবা কোন নবী বা ওলীর উছিলায় ঐ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

এছাড়াও যাদের পক্ষে সম্ভব হয়, নিজে কোন বিজ্ঞ আলেম ব্যক্তির শরণাপন্ন হয়ে তাঁর থেকে এতদভিন্ন কোন নির্দিষ্ট আয়াতে পাক বা দোয়া জেনে নিতে পারেন

বোবায় ধরা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি চাইলে করণীয়

১) ঘুমানোর আগে অযু করে শোয়া।

২) পুরোপুরি উপুড় হয়ে না শোয়া।

৩) ডান কাত হয়ে শোয়া।

৪) কারও উপুড় হয়ে শোয়ার অভ্যাস সহজে না গেলে, কাঁথা, চাদর বা কম্বল দ্বারা মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে তারপর উপুড় হয়ে শোয়া। তবে ৩ নং আমলটিই অধিকতর শ্রেয় এবং সুন্নত সম্মত।

৫) ঘুমের দোয়াসমূহ পড়ে তারপর ঘুমানো। কি দোয়া পড়ছেন, তার অর্থ জানা থাকলে ভাল। ঘুমের একটি সহজ এবং অধিক পঠিতব্য দোয়া হচ্ছে,

“আল্লাহুম্মা বি-ইস্‌মিকা আমূওতু ওয়া আহ্‌ইয়া।”

অর্থঃ হে আল্লাহ ! তোমারই নামে মৃত্যুবরণ করি, আবার তোমারই নামে জীবন ধারন করি।

৬) দুঃস্বপ্ন দেখে আকস্মাৎ জেগে উঠলে বাম দিকে ফিরে তিনবার “আউযুবিল্লাহি মিনাশ্‌ শাইত্বনির্‌ রাজীম” বলে তিন বার থুথু দেয়া। থুথু দিলে পাশেরজায়গা ভিজে যাবার আশংকা থাকলে থুথুর মত করে ফুঁ দেয়া।

৭) শোবার সময় দশ বার করে “লা- হাওলা ওয়ালা- কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্‌” পাঠ করা।

৮) দুঃস্বপ্ন বা বোবায় ধরার কাহিনী কোনটাই কাউকে না বলা। আর প্রকাশ করলে এমন কারও কাছেই তা করা উচিত যিনি এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেন এবং প্রতিকার বাতলে দিতে পারেন



শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১

ইয়াজিদ ইবনে মোয়াবিয়া সম্পর্কে মহানবী (ﷺ) এর ভবিষ্যত বাণীঃ

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১ 0
বার দেখা হয়েছে


হযরত আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ (رضي الله عنه) উনার থেকেবর্ণিত তিনি বলেন, হুযূর পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন, “দ্বীনইসলাম, ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফত সত্য ও ন্যায়ের উপর অবিচল থাকবে। সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি তা বিনষ্ট করে দিবে, ক্ষতিগ্রস্ত করে দিবে, সে হচ্ছেবনী উমাইয়ার এক নিকৃষ্ট ব্যক্তি। তার নাম হচ্ছে ইয়াযীদ । 

তথ্যসুত্র:➡

(মুসনাদে আবূ ইয়ালা, বাইহাক্কী, আবূ নাঈম, আল ফিতান লিনাঈম ইবনে হাম্মাদ, তারীখে দিমাশক্ব আল কাবীর, তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ১৬৬ নং পৃষ্ঠা, খছাইছুল কুবরালিস সুয়ূতী ২য় জিলদ ২৩৬ পৃষ্ঠা, আস সওয়াইকুল মুহরিক্বাহ ২য় জিলদ ৬৩৩ পৃষ্ঠা, দায়লামী শরীফ ৫ম জিলদ ৯২ পৃষ্ঠা হাদীছ শরীফ নং ৭৫৬৬, সুবুলুল হুদাওয়ার রশাদ ১০ম জিলদ ৮৯ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)

হযরত আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ (رضي الله عنه) উনার থেকেবর্ণিত তিনি বলেন, হুযূর পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন, “দ্বীনইসলাম, ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফত সত্য ও ন্যায়ের উপর অবিচল থাকবে। সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি তা বিনষ্ট করে দিবে, ক্ষতিগ্রস্ত করে দিবে, সে হচ্ছেবনী উমাইয়ার এক নিকৃষ্ট ব্যক্তি। তার নাম হচ্ছে ইয়াযীদ । 

তথ্যসুত্র:➡

(মুসনাদে আবূ ইয়ালা, বাইহাক্কী, আবূ নাঈম, আল ফিতান লিনাঈম ইবনে হাম্মাদ, তারীখে দিমাশক্ব আল কাবীর, তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ১৬৬ নং পৃষ্ঠা, খছাইছুল কুবরালিস সুয়ূতী ২য় জিলদ ২৩৬ পৃষ্ঠা, আস সওয়াইকুল মুহরিক্বাহ ২য় জিলদ ৬৩৩ পৃষ্ঠা, দায়লামী শরীফ ৫ম জিলদ ৯২ পৃষ্ঠা হাদীছ শরীফ নং ৭৫৬৬, সুবুলুল হুদাওয়ার রশাদ ১০ম জিলদ ৮৯ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)

# তৃতীয় শতাব্দীর এক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম আবু ইয়া’আল(রঃ) তাঁর মুসনাদ(ভলি. ২, পেজ ৭১) সহীহ চেইনে উল্লেখ করেনঃ

হযরত আবু উবায়দাহ বিন জারাহ(رضي الله عنه) থেকে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন – “মুসলিম উম্মাহ এর যাবতীয় কাজ কারবারে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়পরায়ণতা পরিলক্ষিত হবে যখন বনি উম্যায়াহ গোত্রের এক জন এসে দ্বীনের মধ্যে ফাটল ধরাবে। তার নাম হবে ইয়াজিদ”

হাদীসটির বর্ণনাকারীর সকলেই সৎ এবং নির্ভরযোগ্য।

# আরেক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বিন হাজর হায়তামী(রঃ) তাঁর আস-সাবাক আল-মুহরিকা গ্রন্থের ১৩২ পৃঃ একই হাদীস উল্লেখ করেছেন।

হযরত আবু দারদা(رضي الله عنه) বলেছেন, “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন – আমার সুন্নাহকে পরিবর্তনকারী প্রথম ব্যক্তি হবে বনি উম্যায়াহ গোত্রের ইয়াজিদ”।

# হাফিজ ইবন কাথীর(রঃ) একই হাদীস উল্লেখ করেছেন তাঁর সুবিখ্যাত আল-বিদ্যায়াহ আন-নিহ্যায়াহ গ্রন্থের ভলি. ৬, পেজ ২৫৬ তে হযরত আবুযার ঘিফারী(رضي الله عنه) থেকে। এই বর্ণনায় ‘যার নাম ইয়াজিদ হবে’ এই কথাটি অনুপস্থিত।

# হাদীসটি এই গ্রন্থেও বর্ণীত আছে

মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা- ভলি. ৮, পেজ ৩৪১, হাদীস নং ১৪৫; দালাইল উন নবুয়্যাত লিল বায়হাকী আবওয়াব ঘাজওয়া তাবুক- হাদীস নং ২৮০২; মাতালিব আল-আলিয়্যাহ- হাদীস নং ৪৫৮৪।

# আমর বিন ইয়াহিয়া সায়ে’দ বিন আমর বিন সায়ে’দ তাঁর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা(رضي الله عنه) এর সাথে মসজিদে নববীতে বসেছিলাম এবং মারওয়ান আমাদের সাথে ছিলেন। হযরত আবু হুরায়রা(رضي الله عنه) বলেছিলেনঃ “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন, কুরাইশ বংশের কিছু যুবকদের দ্বারা আমার উম্মত ধ্বংস প্রাপ্ত হবে”। মারওয়ান বলেন, আল্লাহ এই ধরণের যুবকদের অভিশাপ দেন। হযরত আবু হুরায়রা(رضي الله عنه) বলেন, আমি বলতে পারি অমুক, অমুকের পুত্র অমুক, তমুকের পুত্র তমুক যদি আমি চাই। হযরত আমর বিন ইয়াহিয়া বলেন, আমি আমার দাদার সাথে বনী মারওয়ানে গিয়েছিলাম যখন তারা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছিল এবং এক জন যুবককে দেখতে পেলাম। আমার দাদা বললেন তারাও তাদের একজন হবে। আমরা বললাম তা আপনি ভাল বলতে পারবেন।

[সহীহ বুখারী ভলি. ২, কিতাবুল ফিতনা]

# হযরত আবু হুরায়রা(رضي الله عنه) সূত্রে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন- আল্লাহ তা’আলার সাহায্য প্রার্থনা কর ৭০ দশক হতে এবং এক যুবকের রাজত্বকাল হতে।

[মুসনাদ ইমাম আহমদ, হাদীস নং ৩৮০০]

# সহীহ বুখারী শারীফের ব্যাখ্যাকারী এবং ফাতহুল বারীর লেখক হাফিজ আহমদ বিন হাজর আসকলানী(রঃ) মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা সূত্রে বর্ণনা করে লিখেন, মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বার হাদীসে বলা আছে, হযরত আবু হুরায়রা(رضي الله عنه) বাজারে যাওয়ার সময় প্রার্থনা করত ‘ও আল্লাহ, আমাকে ৬০ A.H. এবং যুবকের রাজত্বকাল পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখ না’

হাফিজ ইবন হাজর আসকলানী(রঃ) এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এই হাদীসে ৬০A.H. এ এক জন শাসকের কথা বলা হয়েছে। হাদীস অনুসারে তাই ঘটে। ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যা এই বছরেই শাসনে বসেন ৬৪A.H. পর্যন্ত এবং এই সময়ে মারা যান।

# সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকারী ইমাম বদরুদ্দীন আইনি(রঃ) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘প্রথম বালক যে শাসন করবে’ এই কথা দ্বারা ইয়াজিদকে বুঝানো হয়েছে।

[উমদাত উল কাদরী ভলি. ১৬, পেজ ৩৩৩]



ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png