
আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন কিয়ামতের দিনে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেবেন। আবু হুরায়রা
(রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, কিয়ামতের ময়দানে বান্দার সর্বপ্রথম
যে আমলের হিসাব নেয়া হবে, তা হল নামাজ। উহা যদি বিশুদ্ধহয়ে যায়, তবে সে
মুক্তি পেয়ে গেল ও সফলকাম হল। আর উহা যদি বিনষ্ট বা বরবাদ হয়ে যায়, তবে সে
ধ্বংস ওক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল। (তিরমিজী)
নামাজ যেহেতু এত গুরুত্বপূর্ণ
ইবাদত, তাই এ নামাজ রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাত অনুযায়ী আদায় করতে হবে। রাসূল
(সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমাকে যেভাবে নামাজ আদায় করতে দেখ, সেভাবে নামাজ আদায়
কর। (বুখারী) আমরা এখানে রাসূল (সাঃ) এর নামাজের পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে
আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
১) নামাজের পূর্বে পরিপূর্ণরূপে অজু করাঃ
অজু
করার পূর্বে অজুর দু’আ বলে প্রথমে দু‘হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করতে
হবে, এরপর মুখে ও নাকে তিনবার পানি দ্বারা কুলি করতে হবে ও নাক ঝাড়তে হবে।
অতঃপর মুখমন্ডল ধৌত করতে হবে (কপালের উপর চুল গজানোর স্থান থেকে নিয়ে দাড়ির
নিম্নভাগ অবধি পর্যন্ত, এবং এক কান থেকে নিয়ে অপর কান পর্যন্ত)। এরপর
দু’হাতের আঙ্গুলের শুরু থেকে কনুই পর্যন্ত তিন বার ধৌত করতে হবে। প্রথমে
ডান হাত অতঃপর বাম হাত।
পুনরায় পানি দ্বারা দু’হাত ভিজিয়ে মাথা
মাসেহ্ করতে হবে। এবং দু‘হাত মাথার অগ্রভাগ থেকে নিয়ে পিছনদিকে ফিরাতে হবে
ও দু‘কান মাসেহ্ করতে হবে। দু‘হাতের দুই তর্জনী কানের ভিতরের অংশ এবং
দু‘বৃদ্ধাঙ্গলী দিয়ে বাহিরের অংশে মাসেহ্ করতে হবে।এর পর গর্দান মাসেহ
করতে হবে। এর জন্যনতুনভাবে পানি নেয়ার কোনো দরকার নেই।সবশেষে দু‘পা টাখনুসহ
তিনবার ধৌত করতে হবে।
২) নামাজের নিয়ত করাঃ
নামাজ
শুরুর আগে নির্দিষ্ট নামাজের জন্য নিয়ত করা প্রত্যেক নামাযীর উপর আবশ্যক।
নিয়তের স্থান হল অন্তর।মুখে উচ্চারণের মাধ্যমে নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। কেউ
যদি মুখে নিয়তের শব্দগুলো বলে তাতে সমস্যও নেই।
৩) কিবলামুখী হয়ে আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়ানোঃ
রাসূল (সাঃ) যখনই নামাযে দাঁড়াতেন, কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন। তিনি বলেছেন, যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে, তখন পরিপূর্ণরূপে অজু করবে, অতঃপর কিবলামুখী হয়ে আল্লাহু আকবার বলবে।
৪) নাভির নিচে হাত রাখাঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নিচে
স্থাপন করতেন। (আবুদাউদ-নাসাঈ) নাভির নিচে হাত রাখাটাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা
সাব্যস্ত। এছাড়া অন্য কোথাও রাখার হাদীছ বিশেষ করে বুকের উপর হাত রাখার
হাদীস রয়েছে যেটা দুর্বল।
৫) ছানা পাঠ করাঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) থেকে ছানা পাঠের বিভিন্ন বাক্য প্রমাণিত আছে। সাধারণ পাঠকদের
সুবিধার্থে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত এবংসহজ দু‘আটি এখানে উল্লেখ করা হল।
(سُبْحَانَكَ اَلَلهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَك اَسْمُكَ وَتَعَالَى
جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ) উচ্চারণঃ“সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া
বিহামদিকা ওয়াতাবারাকাস্মুকা ওয়া তা‘লা যাদ্দুকা ওয়া লাইলাহা গাইরুকা”
অর্থঃ “হেআল্লাহ! আমি আপনার প্রশংসা জড়িত পবিত্রতা জ্ঞাপন করছি, আপনার নাম
বরকতময়, আপনার মহানত্ব সমুন্নত। আর আপনি ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নাই”।
৬) সিজদার স্থানে দৃষ্টি রাখাঃ
নবী (সাঃ) নামাজ অবস্থায় মাথা সোজা রেখে যমীনের দিকে দৃষ্টি রাখতেন। তাঁর দৃষ্টি সিজদার স্থান অতিক্রম করতোনা।
৭) কিরাত পাঠ করাঃ
কিরা‘ত
পাঠ করার পূর্বে রাসূল (সাঃ) নীরবে (أعُوْذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ
الرَّجِيْمِ) উচ্চারণঃ “আউজু বিল্লাহি মিনাশ্শায়ত্বানিররাযীম” এবং (بِسْمِ
اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ) উচ্চারণঃ “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম”
পাঠ করতেন। অতঃপর সূরা ফাতিহাপাঠ করতেন। সূরা ফাতিহা পাঠ করা নামাযের
রুকন। সূরা ফাতিহা ছাড়া নামায হবেনা।
৮) মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ জরুরী নয় :
ইমামের
পিছনে মুক্তাদীগণ সূরা ফাতিহা পাঠ করবে না। কারণ, কুরআনের বানী “কুরআন
শরীফ তেলাওয়াত করা হলে তোমরা চুপ থাক। রাসূল (সাঃ) এর বাণী “ইমামের কিরআতই
মুক্তাদির কেরাত।” (মুসলিম) সুতরাং মুক্তাদীগণ সূরা ফাতিহা পাঠ করবে না।
এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন। হাদীসের কোথাও একথা নেই যে, মুক্তাদীদের সূরা
ফাতিহা পড়তে হবে। হাদীসে আছে সুরা ফাতিহা ছাড়া নামায হয় না। এটি একাকি
নামায আদাকারী ও ইমামের জন্য খাস।
৯) সূরা ফাতিহা শেষে মুক্তাদীগণ সবাই নিঃশব্দে আমীন বলবেঃ
রাসূল (রাঃ) যখন সূরা ফাতিহা পাঠ শেষ করতেন, তখন অনুচ্চ স্বরে আমীন বলতেন। (তিরমিযী, আহমদ, হাকেম)
১০) নামাজের প্রথম দু’রাকাতে সূরায়ে ফাতেহার পর অন্য সূরা মিলানো। (একাকী নামায আদায়কারী ও ইমাম)
১১) রুকূ করা প্রসঙ্গঃ
কিরা‘আত
পাঠ শেষে রাসূল (সাঃ) আল্লাহ আকবার (اَللَّهُ اَكْبَرُ) বলে রুকূতে যেতন।
(বুখারী) রুকুতে স্বীয় হাঁটুদ্বয়েরউপর হস-দ্বয় রাখতেন এবং তিনি এজন্য
নির্দেশ দিতেন। (বুখারী) তিনি কনুই দু‘টোকে পাঁজর দেশ থেকে দূরেরাখতেন।
তিনি রুকু অবস্থায় পিঠকে সমান করে প্রসারিত করতেন। এমন সমান করতেন যে, তাতে
পানি ঢেলেদিলেও তা যেন সি’র থাকে। (বুখারী, তিরমিজী, তাবরানী) তিনি নামাযে
ত্রুটিকারীকে বলেছিলেন, অতঃপর যখনরুকূ করবে, তখন স্বীয় হস্তদ্বয়
হাটুদ্বয়ের উপর রাখবে এবং পিঠকে প্রসারিত করে স্থিরভাবে রুকূ করবে।
(আহমাদ)তিনি পিঠ অপেক্ষা মাথা উঁচু বা নীচু রাখতেন না। বরং তা মাঝামাঝি
থাকত। (বুখারী, আবু দাউদ)ৎ
রুকুর দু‘আঃ রুকুতে রাসূল (সাঃ) এই দূ‘আ
পাঠ করতেন (سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ)) উচ্চারণঃ ‘সুবহানা রাব্বীয়াল
আযীম’।অর্থঃ আমি মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা ঘোষণা করছি। এই দূ‘আটি তিনি
তিনবার বলতেন। কখনও তিনবারেরবেশীও পাঠ করতেন। (আহমাদ)১২) রুকূ থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোঃ
অতঃপর রাসূল (সাঃ) রুকূ হতে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন। তিনি এই দূ‘আ বলতে বলতে রুকূ হতে মাথা উঠাতেন, ( سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ) উচ্চারণঃ সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে, আল্লাহ তার কথা শ্রবনকরেন। (বুখারী-মুসলিম) তিনি যখন রুকূ হতে মাথা উঠাতেন, তখন এমনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যে, মেরুদন্ডেরহাড়গুলো স্ব-স্ব স্থানে ফিরে যেত। অতঃপর তিনি দাঁড়ানো অবস্থায় বলতেন, (رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ)) উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকালহাম্দ। হে আমার প্রতিপালক! সকল প্রশংসা তোমার জন্য।
১৩) নামাজে রফউল ইয়াদাইন না করাঃ
রাফউল ইয়াদাইন অর্থ উভয় হাত উঠানো। নবী (সা.) এর নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া অন্য কোথাও রফউল ইয়াদাইন নেই। (মর্মার্থ) (তিরমিযী, নাসায়ী)
১৪) সিজদাহ প্রসঙ্গঃ
অতঃপর রাসূল (সাঃ) আল্লাহ আকবার বলে সিজদায় যেতেন। তিনি বলেছেন, কারও নামায ততক্ষন পর্যন্ত পূর্ণ হবেনা, যতক্ষন না সে সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে অথঃপর আল্লাহ আকবার বলবে, অতঃপরএমনভাবে সিজদাহ করবে যে, তার শরীরের জোড়াগুলো সুসি’রভাবে অবস্থান নেয়। সিজদাহ অবস্থায় পার্শ্বদ্বয় থেকে হস্ত’দ্বয় দূরে রাখতেন। (বুখারী, আবু দাউদ)
নবী (সাঃ) রুকূ-সাজদাহ পূর্ণাঙ্গরূপে ধীরস্থি’রভাবে আদায় করার নির্দেশ দিতেন।
সিজদার দূ‘আঃ
সিজদাহ
অবস্থায় তিনি এই দূ‘আ পাঠ করতেন, (سُبْحَانَ رَبِّيَ الاَعْلَى) উচ্চারণঃ
“সুবহানা রাব্বীয়াল আ‘লা”। অর্থঃ ‘আমি আমার সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা
বর্ণনা করছি’। তিনি এই দূ‘আটি তিনবার পাঠ করতেন।অতঃপর নবী (সাঃ) আল্লাহ
আকবার বলে সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন। তিনি বলেছেন, কোন ব্যক্তির নামায
ততক্ষনপর্যন্ত পূর্ণ হবেনা, যতক্ষন না এমনভাবে সাজদাহ করবে যে, তার দেহের
প্রত্যেকটি জোড়া সুস্থিরভাবে অবস্থান নেয়।
দুই সাজদার মাঝখানে বসাঃ
প্রথম সাজদাহ ও সাজদার তাসবীহ পাঠ করার পর ‘আল্লাহ আকবার’ বলে স্বীয়
মস্তকউত্তলন করতেন। দুই সাজদার মাঝখানে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা ওয়াজিব। নবী
(সাঃ) দুই সাজদার মধ্যবতীঅবস্থায় এমনভাবে স্থিরতা অবলম্ভন করতেন, যার ফলে
প্রত্যেক হাড় স্ব স্ব স্থানে ফিরে যেত। (আবু দাউদ)
দুই সাজদার
মাঝখানে দূ‘আঃ দুই সাজদার মধ্যখানে নবী (সাঃ) এই দূ‘আ পাঠ
করতেন,(اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ وَ ارْحَمْنِى وَ اهْدِنِىْ وَ عَافِنِىْ
وارْزُقْنِىْ) উচ্চারণঃ ‘আল্লাহুম্মাগফিরলী, ওয়ার হামনী, ওয়াহ্দিনী, ওয়া
আফিনী ওয়ারযুকনী’ অর্থঃ “হে আল্লাহ!তুমি আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, হিদায়াত
দান কর, মর্যাদা বৃদ্ধি কর এবং জীবিকা দান কর”। এই দূ‘আ পাঠ করেনবী (সাঃ)
আল্লাহ আকবার বলে দ্বিতীয় সাজদায় যেতেন এবং প্রথম সাজদার মতই দ্বিতীয়
সাজদায় তাসবীহ পাঠকরতেন। অতঃপর আল্লাহ আকবার বলে সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন
(বুখারী) এবং দ্বিতীয় রাকা‘আতের জন্য সোজাদাড়িয়ে যেতেন। (আবু দাউদ)
১৫) প্রথম তাশা্হহুদঃ
নবী
(সাঃ) চার রাকা‘আত বা তিন রাকা‘আত বিশিষ্ট নামাযের প্রথম দুই রাকা‘আত শেষে
তাশাহ্হুদ পাঠের জন্য ডানপা সোজ করে বাম পায়ের উপর বসতেন।(বুখারী) আরেক
হাদীসে আছে নামাযের সুন্নাত হলো ডান পা সোজ করে বামপায়ের উপর বসা।(বুখারী)
তাশাহহুদের উচ্চারণঃ আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস্ ছালাওয়াতু
ওয়াত্বায়্যিবাতু আস্সালামুআলাইকা আইয়্যুহান্ নাবিউ ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহীনআশহাদু
আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া
রাসূলুহু। এভাবে তাশাহ্হুদ পাঠ করার পরআল্লাহ আকবার বলে চার বা তিন
রাকা‘আত বিশিষ্ট নামাযের বাকী নামাযের জন্য দাঁড়াবে। বাকী নামায
পূর্বেরনিয়মে সমাপ্ত করবে।
১৬) শেষ বৈঠক ও সালাম ফেরানোঃ
তাশাহ্হুদ
পাঠের জন্য শেষ বৈঠকে বসা ওয়াজিব। বসার নিয়ম হলো ডান পা খাড়া রেখে বাম
পায়ের উপর বসা।এভাবে বসে প্রথমে আত্যাহিয়াতু পাঠ শেষে রাসূল (সাঃ) এর উপর
(দরূদ) সালাত পাঠ করতে হবে।
দরূদের উচ্চারণঃ
আল্লাহুম্মা
সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা
ইবরাহীমা ওয়াআলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদু ম্মাযীদ। আল্লাহুম্মা বারিক
আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামাবারাকতা আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা
আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদু ম্মাযীদ। দরূদ পাঠ শেষে এই দূ‘আ পাঠ করতেহবে,
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসী জুলমান কাছীরাও ওয়ালা
ইয়াগফিরুজ্ জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরলীমাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ারহামনী
ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর্ রাহীম। (বুখারী) অতঃপর প্রথমে ডান দিকে পরেবাম
দিকে সালাম ফিরিয়ে নামায সমাধা করবে। হে আল্লাহ! আমাদের সবাইকে বিশুদ্ধভাবে
নামাজ আদায়ের তাউফিক দিন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন