LIVE
Loading latest headlines...

মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৯

তাৎপর্যময় আশুরা


 তাৎপর্যময় আশুরা  চন্দ্রবর্ষের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখে আশুরা পালিত হয়। মুহররম এটা ক্রমানুসারে তৃতীয় মাস। তবে তা অত্যন্ত মর্যাদা ও ফযীলতপূর্ণ। কুরআন ও হাদিসে এ মাসের অনেক ফযীলতের কথা বলা হয়েছে।
কুরআন মাজিদের ইরশাদ, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে আল্লাহর কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজে)মাসের সংখ্যা বারোটি, সেই দিন থেকে, যে দিন থেকে আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ।(সূরা তাওবা:আয়াত নং৩৬)
প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে মাস চারটির নামও উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে তিনটি ধারাবাহিক মাস তথা জিলকদ,জিলহজ,মুহররম। আরেকটি হল রজব। (বুখারি:হাদিস নং ৫৫৫০)
আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত,রাসূল সা. বলেছেন, ‘রমযানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোযা হল ‘শাহরুল্লাহ’ বা আল্লাহর মাস মহররমের রোযা।(মুসলিম:হাদিস নং ১১৬৩)
হাদিসটিতে লক্ষ্য রাখার বিষয়, মুহররম মাসকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। প্রত্যেক মাসই তো আল্লাহর মাস। তবুও আলাদা করে ‘আল্লাহর মাস’ বলে তার বাড়তি ফযীলতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
এ মাসের অনন্য আরেকটা বৈশিষ্ট্য হল, তার সংগে তাওবা কবুলের ইতিহাস জুড়ে আছে। এক হাদিসে আছে, ‘…এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ একটি জাতির তাওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তাওবা কবুল করবেন। (তিরমিযি:হাদিস নং ৭৪১)
মনে রাখা ভালো, ইস্তিগফারের উত্তম পদ্ধতি হল, কুরআন-সুন্নাহে বর্ণিত ইস্তিগফার বিষয়ক দুআগুলো মুখস্থ করে তা দিয়ে ইস্তেগফার করা। তবে নিজের ভাষায় ইস্তেগফার পাঠ করলেও সমস্যা নেই।
আশুরার ফযীলত
মুহররমের দশ তারিখের দিনকে ‘ইয়াওমে আশুরা’ বা ‘আশুরা দিবস’ বলা হয়। এ দিনে রোযা রাখা মুস্তাহাব। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় থাকাকালেও এ দিনে রোযা রাখতেন। এরপর মদীনায় গিয়ে দেখতে পেলেন, ইহুদিরা এ দিনে রোযা রাখছে। এরপর থেকে নিজে এ দিনে রোযা রাখার সাথে সাথে সাহাবায়ে কেরামকে রোযা রাখার নির্দেশ দেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে দেখলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোযা রাখে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী ব্যাপার, তোমরা এ দিন রোযা রাখছো যে!’ তারা বলল, এটি একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। এ দিন আল্লাহ তায়ালা ফেরাউন ও তার কউমকে ডুবিয়ে মারেন এবং মূসা আ. ও তাঁর অনুসারিদের ফেরাউনের কবল থেকে রক্ষা করেন। তাই শোকর আদায় করার জন্য মুসা আ এ দিন রোযা রেখেছিলেন। আমরাও তাই এ দিন রোযা রাখি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘মূসা আ.এর বিষয়ে আমরা তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার।’ এরপর তিনি রোযা রাখেন এবং অন্যদেরকেও রোযা রাখতে বলেন।(মুসলিম:হাদিস নং১১৩০)
রমযানের রোযা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোযা ফরজ ছিল। তবে এখন তা মুস্তহাব। কিন্তু সাধারণ নফল রোযার চেয়ে এ রোযার ফযিলত একটু বেশি। হাদিসের ইরশাদ, ‘আবু কাতাদাহ রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি আশাবাদি আশুরার রোযার ওসিলায় আল্লাহ তায়ালা অতিতের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দিবেন।(মুসলিম:হাদিস নং১১৬২)
মনে রাখার বিষয়, আশুরার রোযার সাথে নয় বা এগারো তারিখে আরেকটি অতিরিক্ত রোযা মিলিয়ে রাখা ভালো। হাদিসের ইরশাদ, ‘ইবনে আব্বাস রা.থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার দিন রোযা রাখার কথা বললে সাহাবায়ে কেরাম আরয করেন, এ দিনটিকে তো ইহুদি খৃষ্টানরা সম্মান করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আগামি বছর নয় তারিখও রোযা রাখবো। কিন্তুু আগামি বছর আসার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। (মুসলিম:হাদিস নং ১১৩৪)
ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আশুরার দিন রোযা রাখবে। কিন্তু রোযা রাখার ক্ষেত্রে ইহুদিদের বিপরীত করবে। আশুরার আগে একদিন বা পরে একদিন রোযা রাখবে’। (মুসনাদে আহমাদ :২১৫৪)

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png