LIVE
Loading latest headlines...

শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

জান্নাত লাভের জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত।



بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ ثِيَابِ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا محمد بن بشار، وأبو هشام الرفاعي قالا حدثنا معاذ بن هشام، عن أبيه، عن عامر الأحول، عن شهر بن حوشب، عن أبي هريرة، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أهل الجنة جرد مرد كحل لا يفنى شبابهم ولا تبلى ثيابهم " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن غريب .

জান্নাতীদের পোশাক-পরিচ্ছদ।

২৫৪১. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার ও আবু হিশাম রিফাঈ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ জান্নাতীগণ লোমহীন ও শ্মশ্রুহীন এবং আয়ত কাজল টানা চোখ বিশিষ্ট হবেন। তাঁদের যৌবন শেষ হবে না কখনও এবং তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ পুরনো হবে না কখনও।

(আবু ঈসা বলেন) এ হাদীসটি হাসান-গারীব।

Abu Hurairah narrated from the Messenger of Allah (s.a.w) that he said:
"The people of Paradise are without body hair, Murd, with Kuhl(on their eyelids), their youth does not come to an end, and their clothes do not wear out."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৩৯ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৩৯)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)

বর্ণনাকারী: আবু হুরায়রা (রাঃ) (মৃত্যু ৫৭/৫৮/৫৯ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ طَيْرِ الجَنَّةِ

حدثنا عبد بن حميد، أخبرنا عبد الله بن مسلمة، عن محمد بن عبد الله بن مسلم، عن أبيه، عن أنس بن مالك، قال سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم ما الكوثر قال " ذاك نهر أعطانيه الله يعني في الجنة أشد بياضا من اللبن وأحلى من العسل فيها طير أعناقها كأعناق الجزر " . قال عمر إن هذه لناعمة . قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أكلتها أنعم منها " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن . ومحمد بن عبد الله بن مسلم هو ابن أخي ابن شهاب الزهري وعبد الله بن مسلم قد روى عن ابن عمر وأنس بن مالك .

জান্নাতের পাখি।

২৫৪৪. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ...... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কাউসার কি তিনি বললেনঃ এটি একটি নহর, যা আল্লাহ্ তাআলা আমাকে জান্নাতে দান করবেন। তা দুধ অপেক্ষা সাদা এবং মধু থেকেও সুমিষ্ট। এর মাঝে রয়েছে বহু পাখি। এগুলোর গর্দান হবে উটের র্গদানের মত। উমর (রাযিঃ) বললেন, এগুলো তো খুব মোটা-তাজা হবে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেনঃ এগুলোর আহারকারীরা আরো সুখী হবে।

এ হাদীসটি হাসান-গারীব। রাবী মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে মুসলিম হলেন ইবনে শিহাব যুহরী (রাহঃ) এর ভ্রাতুষ্পুত্র।

Anas bin Malik narrated that the Messenger of Allah (s.a.w) was asked:
"What is Al-Kawthar?" He said: "That is a river that Allah has given me"- that is, in Paradise- ’whiter than milk and sweeter than honey. In it are birds whose necks are like the necks of camels." ’Umar said: "Indeed this is plump and luxurious then." So the Messenger of Allah (s.a.w) said, "Those who consume it are more plumb than it."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪২ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪২)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) (মৃত্যু ৯৩ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي سِنِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا أبو هريرة، محمد بن فراس البصري حدثنا أبو داود، حدثنا عمران أبو العوام، عن قتادة، عن شهر بن حوشب، عن عبد الرحمن بن غنم، عن معاذ بن جبل، أن النبي صلى الله عليه وسلم قال " يدخل أهل الجنة الجنة جردا مردا مكحلين أبناء ثلاثين أو ثلاث وثلاثين سنة " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن غريب وبعض أصحاب قتادة رووا هذا عن قتادة مرسلا ولم يسندوه .

জান্নাতীদের বয়স।

২৫৪৭. আবু হুরায়রা মুহাম্মাদ ইবনে ফিরাস বসরী (রাহঃ) ..... মুআয ইবনে জাবাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেনঃ জান্নাতীরা লোমহীন, শ্মশ্রুহীন, কাজলটানা চোখ বিশিষ্ট ত্রিশ বা তেত্রিশ বছরের যুবকরূপে জান্নাতে দাখিল হবে।

হাদীসটি হাসান-গারীব। কাতাদা (রাহঃ)-এর কোন কোন শিষ্য এ হাদীসটিকে কাতাদা (রাহঃ) থেকে মুরসালরূপে রিওয়ায়াত করেছেন। তাঁরা এটিকে মুসনাদ রূপে বর্ণনা করেন নি।

Mu’adh bin Jabal narrated that the Prophet (s.a.w) said:
"The people of Paradise shall enter Paradise without body hair, Murd, with Kuhl on their eyes, thirty years of age or thirty-three years."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৫)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)

বর্ণনাকারী: হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল (রাঃ) (মৃত্যু ১৮ হিজরী)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صَفِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا حسين بن يزيد الطحان الكوفي، حدثنا محمد بن فضيل، عن ضرار بن مرة، عن محارب بن دثار، عن ابن بريدة، عن أبيه، قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " أهل الجنة عشرون ومائة صف ثمانون منها من هذه الأمة وأربعون من سائر الأمم " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن . وقد روي هذا الحديث عن علقمة بن مرثد عن سليمان بن بريدة عن النبي صلى الله عليه وسلم مرسلا ومنهم من قال عن سليمان بن بريدة عن أبيه وحديث أبي سنان عن محارب بن دثار حسن . وأبو سنان اسمه ضرار بن مرة وأبو سنان الشيباني اسمه سعيد بن سنان وهو بصري وأبو سنان الشامي اسمه عيسى بن سنان هو القسملي .

জান্নাতীদের কাতার।

২৫৪৮. হুসাইন ইবনে ইয়াযীদ তাহসান কূফী (রাহঃ) ......... ইবনে বুরায়দা তার পিতা বুরায়দা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ জান্নাতীদের একশ’ বিশ কাতার হবে। এর মধ্যে আশি কাতার হবে এই উম্মতের আর বাকী সব উম্মত মিলিয়ে হবে চল্লিশ কাতার। - ইবনে মাজাহ

হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি আলকামা ইবনে মারছাদ-সুলাইমান ইবনে বুরায়দা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে মুরসাল রূপেও বর্ণিত আছে। কোন রাবী "সুলাইমান ইবনে বুরায়দা-তৎপিতা থেকে’’ বলে উল্লেখ করেছেন। মুহারিব ইবনে দিছার (রাহঃ) থেকে আবু সিনান (রাহঃ) এর রিওয়ায়াতটি হাসান। আবু সিনান (রাহঃ) এর নাম হল দিরার ইবনে মুররা। আবু সিনান (রাহঃ) এর নাম হল সাঈদ ইবনে সিনান। ইনি হলেন বসরী। আবু সিনান শামী (রাহঃ) এর নাম হল ঈসা ইবনে সিনান। ইতি হলেন কাসমালী।

Ibn Buraidah narrated from his father that the Messenger of Allah (s.a.w)said:
"The people of Paradise are a hundred and twenty rows, eighty of them are from this nation, and forty are from the rest of the nations."

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৬ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৬)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: বুরাইদা আসলামী (রাঃ)


بَابُ مَا جَاءَ فِي صَفِّ أَهْلِ الجَنَّةِ

حدثنا محمود بن غيلان، حدثنا أبو داود، أنبأنا شعبة، عن أبي إسحاق، قال سمعت عمرو بن ميمون، يحدث عن عبد الله بن مسعود، قال كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم في قبة نحوا من أربعين فقال لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم " أترضون أن تكونوا ربع أهل الجنة " . قالوا نعم . قال " أترضون أن تكونوا ثلث أهل الجنة " . قالوا نعم . قال " أترضون أن تكونوا شطر أهل الجنة إن الجنة لا يدخلها إلا نفس مسلمة ما أنتم في الشرك إلا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الأسود أو كالشعرة السوداء في جلد الثور الأحمر " . قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح . وفي الباب عن عمران بن حصين وأبي سعيد الخدري .

জান্নাতীদের কাতার।

২৫৪৯. মাহমুদ ইবনে গায়লান (রাহঃ) ..... অবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা প্রায় চল্লিশ জন লোক নবী (ﷺ) এর সঙ্গে একটি তাঁবুতে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা জান্নাতীদের এক-চতুর্থাংশ হলে কি তোমরা সন্তুষ্ট আছে? উপস্থিত সাহাবীরা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান্নাতীদের অধ্যেক হলে সন্তুষ্ট আছ? মুসলিম প্রাণ ছাড়া কেউ জান্নাতে দাখিল হতে পারবে না। মুশরিকদের তুলনায় তোমরা হলে একটি কাল ষাঁড়ের চামড়ায় কতগুলো সাদা লোমের মত বা একটি লাল ষাঁড়ের চামড়ায় গুটি কয়েক কাল লোমের মত।

ইবনে মাজাহ, বুখারি ও মুসলিম

হাদীসটি হাসান-সহীহ। এই বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন ও আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

’Abdullah bin Mas’ud narrated:
"We were in a tent with the Messenger of Allah (s.a.w), about forty of us when the Messenger of Allah (s.a.w) said to us: ’Would you be pleased to be a quarter of the people of Paradise?’ They said:’Yes.’ He said: ’Would you be pleased to be a third of the people of Paradise?’ They said: ’Yes.’ He said: ’Would you be pleased to be one half of the people of Paradise? Verily none shall enter Paradise except a Muslim soul. And you are not with relation to Shirk except like the white hair on the hide of a black bull or like the black hair on the hide of a red bull."

হাদীসের ব্যখ্যা:
এ হাদীছটি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক ভাষণের অংশবিশেষ। তিনি ভাষণটি দিয়েছিলেন মিনায় একটি চামড়ার তাঁবুতে। ভাষণের একপর্যায়ে তিনি জান্নাতবাসীদের মধ্যে অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এ উম্মতের হার বর্ণনা করছিলেন। তাতে অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এ উম্মতের হার পর্যায়ক্রমে এক-চতুর্থাংশ, এক-তৃতীয়াংশ ও অর্ধাংশ বর্ণনা করে সাহাবায়ে কেরামের কাছ থেকে জানতে চাচ্ছিলেন এতে তারা খুশি কি না। প্রতিবারই তারা নিজেদের খুশি হওয়ার কথা ব্যক্ত করছিলেন। তা খুশি হওয়ারই কথা। কেননা পৃথিবীতে কত হাজার হাজার নবী এসেছেন, তাতে কত হাজার হাজার উম্মত তৈরি হয়েছে। সেই অসংখ্য হাজার উম্মতের মধ্যে আমরাও একটি উম্মত। এ অবস্থায় আমরা যদি সর্বমোট জান্নাতবাসীর এক-চতুর্থাংশ হই, তাও তো বড় আশার কথা। সেখানে এক-তৃতীয়াংশ হলে খুশির কোনও সীমা থাকে না। কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের জন্য আরও বড় আশার বাণী অপেক্ষা করছিল। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবশেষে জানালেন যে, জান্নাতবাসীদের অর্ধেকই হবে তাঁর উম্মত।
জান্নাতবাসীদের মধ্যে কোনও কোনও নবীর অনুসারী সংখ্যা হবে দু'-চারজন। কারও শ' খানেক, কারও হাজার খানেক, কারও বা লাখ খানেক। যেমন এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন عرضت علي الأمم، فجعل النبي والنبيان يمرون معهم الرهط، والنبي ليس معه أحد، حتى رفع لي سواد عظيم، قلت: ما هذا؟ أمتي هذه؟ قيل: بل هذا موسى وقومه، قيل : أنظر إلى الأفق، فإذا سواد يملأ الأفق، ثم قيل لي : أنظر هاهنا وهاهنا في آفاق السماء، فإذا سواد قد ملأ الأفق، قيل : هذه أمتك “আমার সামনে উম্মতসমূহকে পেশ করা হল। দেখা গেল দু'-একজন নবী তাঁদের সঙ্গে ছোট ছোট দল নিয়ে যাচ্ছেন। কোনও নবী যাচ্ছেন একা। তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। একপর্যায়ে আমার সামনে একটি বড় দল তুলে ধরা হল। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? এরা কি আমার উম্মত? বলা হল, বরং এরা মূসা ও তাঁর কওম। তারপর আমাকে বলা হল, আকাশপ্রান্তে তাকান। দেখি কি এমন বিশাল এক দল, যারা আকাশপ্রান্ত ছেয়ে ফেলেছে। বলা হল, ওই দিকে তাকান,ওই দিকে তাকান। এভাবে আকাশের সকল প্রান্তে। দেখা গেল বিশাল বিশাল দল আকাশের সকল প্রান্ত ছেয়ে ফেলেছে। বলা হল, এরা আপনার উম্মত।
অপর এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন 
أهل الجنة عشرون ومائة صف، أمتي منهم ثمانون صفا 'জান্নাতবাসীগণ হবে একশ' বিশ কাতার। তার মধ্যে আশি কাতার আমার উম্মত।
এর দ্বারা বোঝা যায়, জান্নাতবাসীদের মধ্যে এ উম্মতের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি হবে। সম্ভবত আল্লাহ তা'আলার রহমতের দিকে তাকিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশা প্রকাশ করেন যে, তাঁর উম্মত জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হবে, তখন আল্লাহ তা'আলা তাঁর সে আশা পূর্ণ করে দেন, সঙ্গে বেশিও দেন। খুবসম্ভব এদিকে ইঙ্গিত করেই কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَى 
“অচিরেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে এত দেবেন যে, তুমি খুশি হয়ে যাবে।
প্রশ্ন হয়, তিনি এ কথাটি তো প্রথমেই জানাতে পারতেন, তার পরিবর্তে প্রথমে এক-চতুর্থাংশ ও তারপর এক-তৃতীয়াংশের কথা বললেন কেন? উত্তর হল, পর্যায়ক্রমে বললে তা অন্তরে বেশি রেখাপাত করে। তাছাড়া কাউকে কোনওকিছুর সবটা একসঙ্গে না দিয়ে কিছু কিছু করে দিলে দেওয়াটা হয় অনেকবার। তা গ্রহীতার প্রতি দাতার খাস দৃষ্টি ও বিশেষ মনোযোগের পরিচয় বহন করে। এর আরও বাড়তি ফায়দা হল, প্রতিবার সুসংবাদদান একটি স্বতন্ত্র নি'আমত। ফলে যতবার সুসংবাদ দেওয়া হবে, ততবার বান্দার পক্ষে পৃথক পৃথক কৃতজ্ঞতা আদায়ের সুযোগ হবে। কৃতজ্ঞতা আদায়ের সুযোগদানও একটি আলাদা নি'আমত বটে।
এ হাদীছে জান্নাতবাসীদের মধ্যে মুসলিম উম্মাহ'র সংখ্যা সর্বাপেক্ষা বেশি হওয়ার কথা জানানোর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে إن الجنة لا يدخلها إلا نفس مسلمة 
(জান্নাতে প্রবেশ করবে কেবলই মুসলিম ব্যক্তি)। অর্থাৎ কোনও কাফের ও মুশরিক জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জান্নাতে প্রবেশ করতে চাইলে অবশ্যই শিরক ও কুফর পরিহার করে আল্লাহর প্রতি, আখিরাতের প্রতি, নবী-রাসূল ও আসমানী কিতাবের প্রতি এবং এমন সবকিছুর প্রতি ঈমান আনতে হবে, যার প্রতি ঈমান আনার জন্য আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে হুকুম রয়েছে। কিন্তু দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই এ শর্ত পাওয়া যায় না।
সব কালেই কাফের-মুশরিকের সংখ্যা বেশি ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের সামনে এ কথা বলেছিলেন, সেই সাহাবায়ে কেরামের যমানায় জাযীরাতুল আরবের বাইরে সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষই ঈমান ও ইসলামের বাইরে ছিল। আজও পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই অমুসলিম। এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, জাহান্নামীদের তুলনায় জান্নাতবাসীর সংখ্যা হবে অতি নগণ্য। তা যে কতটা নগণ্য তা স্পষ্ট করার জন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃষ্টান্ত দেন যে
وما أنتم في أهل الشرك إلا كالشعرة البيضاء في جلد الثور الأسود، أو كالشعرة السوداء في جلد الثور الأحمر 
‘আর অংশীবাদীদের (মুশরিকদের) মধ্যে তোমরা হলে কালো বলদের চামড়ায় সাদা পশমতুল্য অথবা (বললেন,) লাল বলদের চামড়ায় কালো পশমতুল্য। ‘অংশীবাদী' বলে সমস্ত অমুসলিমকে বোঝানো হয়েছে। অমুসলিমগণ কোনও না কোনওভাবে আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে শরীক করেই ফেলে। এমনকি যারা নাস্তিক, আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্ব স্বীকার করে না, প্রকারান্তরে তারা প্রকৃতিকে ঈশ্বর বানাচ্ছে। এটা তো শিরকই হল। যাহোক, এ দৃষ্টান্ত দ্বারা অমুসলিমদের তুলনায় মুসলিমদের সংখ্যা কত অল্প তা সহজেই অনুমান করা যায়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জান্নাত লাভের জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত। কোনও অমুসলিম জান্নাতে যাবে না। 
খ. আল্লাহ তা'আলা যখন আমাদেরকে মুসলিম বানিয়েছেন, তখন আমরা জান্নাত পাওয়ার জন্য আশাবাদী থাকতেই পারি।
গ. জান্নাতবাসীদের মধ্যে মুসলিম উম্মাহ'র সংখ্যা হবে সর্বাপেক্ষা বেশি। এ সুসংবাদ আমাদেরকে জান্নাতলাভের জন্য আশাবাদী করে তোলে।
ঘ. জান্নাতলাভের জন্য যেহেতু ঈমান ও ইসলাম শর্ত, তাই আমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে যাতে মৃত্যু পর্যন্ত ঈমান ও ইসলাম আঁকড়ে ধরে রাখতে পারি।

—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ২৫৪৭ (আন্তর্জাতিক নং ২৫৪৭)

তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)

বর্ণনাকারী: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) (মৃত্যু ৩২ হিজরী)

কোন মন্তব্য নেই:

ফটো গ্যালারী

1/6
ওহুদ যুদ্ধ - হযরত মহাম্মদ (সা:) এর বিপ্লবী জীবন
2/6
মুসলিম নারীর বিধান
3/6
ইসলামি অর্থনীতিতে উপার্জন ও ব্যয়ের নীতিমালা
4 / 6
ইসলামীক জিজ্ঞাসাঃ লাঠি হাতে নিয়ে জুমার খুতবা দেয়া কি সুন্নত?
5/6
মসজিদে নববী যিয়ারতের কিছু আদব-কায়দা
6/6
উম্মাতে মুসলিমার দায়িত্ব

Islam-icon Profile.png