![]() |
ঈদ বা জুম্মা অথবা অন্য যেকোন সময় মহিলাদের মসজিদে যাওয়া যাবে না |
ঈদের নামাযে নারীদের অংশগ্রহণ :
————————————————
জুমু’আ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ন্যায় ঈদের নামাযের জন্যও নারীদের ঘর থেকে বের করে আনার অপতৎপরতা চোখে পড়ার মতো।
এ ব্যাপারে সাহাবা, তাবেঈগণের অবস্থান নিম্নে তুলে ধরা হলো।
১.
হযরত ইবনে উমর (রা.) তাঁর স্ত্রীগণকে ঈদগাহে বের হতে দিতেন না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হা. ৫৭৯৫)
সনদের বিচারে হাদীসটি হাসান।
২.
হযরত ইবরাহীম নাখঈ (রহ.) দুই ঈদে নারীদের বের হওয়াকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হা. ৫৭৯৪)
সূত্রের দিক থেকে হাদীসটি সহীহ।
৩.
আব্দুর রহমান ইবনে কাসেম (রহ.) বলেন, ইমাম কাসেম ইবনে মুহাম্মাদ (রহ.) নারীদের ব্যাপারে অনেক কঠোর ছিলেন, নারীদেরকে কখনো ঈদুল ফিতর ও আজহার সময় বের হতে দিতেন না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হা. ৫৭৯৭)
৪.
হজরত হিশাম ইবনে ওরওয়া (রহ.) বলেন, তাঁর পিতা ওরওয়া ইবনে যুবায়ের পরিবারের কোনো নারীকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাযে যেতে দিতেন না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হা. ৫৭৯৬)
সূত্রের দিক থেকে হাদীসটি সহীহ।
৫.
হজরত নাফে (রহ.) তাঁর ঘরের নারীদেরকে ঈদগাহে বের হতে দিতেন না। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক হা. ৫৭২৪)
সূত্রের বিচারে হাদীসটি সহীহ।
দুটি সন্দেহ ও তার নিরসন :
——————————————–
সন্দেহ : ১
কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, যদি বর্তমান যুগে নারীদের মসজিদে যাওয়া ফেতনার আশঙ্কায় নিষেধই হয় তাহলে রাসূল (সা.) স্পষ্ট এ কথা বলে যাননি কেন যে আমার যুগের পর নারীদের মসজিদে আসা নিষেধ?
নিরসন :
এর নিরসন হলো, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শরীয়তের অসংখ্য বিধানাবলির ক্ষেত্রেই এরূপ করে গিয়েছেন যে তা স্পষ্ট করে বলে যাননি। তিনি জানতেন ও বুঝতেন যে প্রিয় সাহাবীগণ তাঁর সকল কথার মর্ম ও উদ্দেশ্য বুঝেই পরবর্তীতে আমল করবেন। তাই সব কথা স্পষ্ট করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম )-এর পরে আবুবকর (রা.)-কে খলিফা বানানোর কথা স্পষ্ট বলে যাননি।
কেননা তিনি বুঝেছেন যে তাঁর সাহাবীগণ বিভিন্ন আকার-ইঙ্গিতে তাঁর উদ্দেশ্য বুঝে নিয়েছেন, এখন আর তাঁদের তা স্পষ্ট বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের আলোচিত বিষয়টিও তদ্রƒপ। নারীদের ফেতনা ও নারীদের পর্দাসংক্রান্ত শত শত হাদীস থাকা সত্ত্বেও সাহাবীগণ এ বিষয়ে রাসূল (সা.)-এর ইচ্ছা বুঝবেন না, তা অসম্ভব।
সন্দেহ : ২
অনেক ভাই বলে থাকেন যে মক্কা-মদীনার হারামাইন শরীফে নারীগণ মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
নিরসন :
আসলে হারামাইনে কিছু জরুরতের ভিত্তিতে নারীগণের জামাতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা হলো, নারীগণ যেহেতু মক্কার মসজিদে হারামে তাওয়াফের জন্য আসতে হয় এবং মদীনার মসজিদে নববীতে জিয়ারতের জন্য এসে থাকেন। এমতাবস্থায় নামাযের আযান হয়ে গেলে বের না হয়ে মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। উলামায়ে কেরাম এ ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছেন। তবে শুধুমাত্র জামাতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে নারীগণ হারামাইনে যাওয়ারও অনুমতি নেই। বর্তমানে না জেনে অনেক নারী শুধু নামাযের জন্যই হারামাইনে উপস্থিত হয়ে থাকেন, তা ঠিক নয়। (দেখুন : ই’লাউস সুনান ৪/২৩১)
তাঁরা নিজেদের হোটেলে নামায আদায় করলে মসজিদে হারামে নামায পড়ার চেয়ে বেশি সাওয়াব পাবে। যা হাদীসে ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঈদ বা জুম্মা অথবা অন্য যেকোন সময় মহিলাদের মসজিদে যাওয়া যাবে না
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
মহিলাদের জন্য ঘরে একাকী নামায পড়াই উত্তম
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَالنِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ قُلْتُ لِعَمْرَةَ أَوَ مُنِعْنَ قَالَتْ نَعَمْ.(رَوَاه الْبُخَارِىُّ فِىْ بَابِ خُرُوجِ النِّسَاءِ إِلَى المَسَاجِدِ بِاللَّيْلِ وَالغَلَسِ)
হযরত আয়েশা রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. যদি জানতেন যে, মহিলারা কী অবস্থা সৃষ্টি করেছে, তাহলে বনী ইসরাইলের মহিলাদের মতো তাদেরকেও (মসজিদে আসতে) নিষেধ করে দিতেন।রাবী বলেন: আমি হযরত আমরাহ রহ.কে জিজ্ঞেস করলাম: তাদেরকে (বনী ইসরাইলের মহিলাদেরকে) কি নিষেধ করা হয়েছিলো? তিনি বললেন: হ্যা। (বুখারী: ৮২৭)
হাদীসটির স্তর: সহীহ। শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি মুসলিম এবংআবু দাউদ শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। (জামিউল উসূল: ৮৭৪৩)
সারসংক্ষেপ : হযরত আয়েশা রাঃ এর সময়েই যদি মহিলাদের অবস্থা এমন পর্যায়ের হয়ে থাকে যা তিনি লক্ষ্য করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ স. বেঁচে থাকলে তাদেরকে মসজিদে আসতে দিতেন না। তাহলে আমাদের এই যুগে রসূলুল্লাহ স. বেঁচে থাকলে মহিলাদের জামাআতে শরীক হওয়ার অনুমতি মিলতো কি? যারা সামাজিক অবস্থা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তারা কোনক্রমে হ্যাঁ বলতে পারবেন না। তবে যারা সামাজিক পরিস্থিতির কোন বিবেচনা না করে হাদীসের শব্দ থেকে দলীল গ্রহণে তৎপর, তারা হয়তো এ হাদীস থেকেও অনুমতি খুঁজে পাবেন।
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا الْعَوَّامُ بْنُ حَوْشَبٍ، حَدَّثَنِي حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم” لاَ تَمْنَعُوا نِسَاءَكُمُ الْمَسَاجِدَ وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ”(رَوَاه ابُوْ داود فى بَابِ مَا جَاءَ فِي خُرُوجِ النِّسَاءِ إِلَى الْمَسْجِدِ )
হযরত ইবনে উমার রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে মসজিদ সমূহে যাতায়াতে বাঁধা দিওনা। তবে ঘরই তাদের জন্য সর্বোত্তম নামাযের স্থান। (আবু দাউদ: ৫৬৭)
হাদীসটির স্তর: সহীহ। এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই বুখারী-মুসলিমের রাবী।
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন:
أخرجه أَبُو دَاوُد وَصَححهُ بن خُزَيْمَةَ
“হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন আর ইবনে খুযাইমা এটাকে সহীহ বলেছেন”। (ফাতহুল বারী: অন্ধকার এবং রাতে মহিলাদের মসজিদে গমন অধ্যায়)
ইমাম নববী রহ. হাদীসটিকে বুখারীর শর্তে সহীহ বলেছেন। (খুলাছাতুল আহকাম: ২৩৫১)
মুসনাদে আহমাদের তাহকীকে শায়খ শুআইব আরনাউত বলেন: حديث صحيح “হাদীসটি সহীহ”। (মুসনাদে আহমাদ: ৫৪৬৮ নম্বর হাদীসের আলোচনায়)
শায়খ আলবানীও হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ-জঈফ আবু দাউদ: ৫৬৭)
সারসংক্ষেপ : এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের নামাযের উত্তম স্থান হলো তাদের ঘর। এ ইরশাদের দ্বারা রসূলুল্লাহ স. মহিলাদের মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করেছেন। এতদ্সত্ত্বেও যদি কোন মহিলা মসজিদে যেতে চায় তাহলে স্বামীদেরকে বলা হয়েছে যে, তোমরাতাদেরকে বাঁধা দিও না। কিন্তু তাদেরকে মসজিদে পাঠানো, নিয়ে যাওয়া বা মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামায আদায়ের জন্য মসজিদে কোন ব্যবস্থা করার মতো কোন উৎসাহ বা ইঙ্গিত এ হাদীসে নেই।
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، أَنَّ عَمْرَو بْنَ عَاصِمٍ، حَدَّثَهُمْ قَالَ: حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «صَلَاةُ الْمَرْأَةِ فِي بَيْتِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهَا فِي حُجْرَتِهَا، وَصَلَاتُهَا فِي مَخْدَعِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهَا فِي بَيْتِهَا»( رَوَاه ابُوْ داود فى بَاب التَّشْدِيدِ فِي ذَلِكَ-يَعْنِىْ فِي خُرُوجِ النِّسَاءِ إِلَى الْمَسْجِدِ)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: নারীর জন্য খাছ কামরায় নামায পড়া হুজরায় নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর ঘরের নির্জন স্থানে নামায পড়া খাছ কামরায় নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। (আবু দাউদ: ৫৭০, মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৫৭, সুনানুল কুবরা লিলবাইহাকী: ৫৩৬১)
হাদীসটির স্তর: সহীহ। হাকেম বলেন: এ হাদীসটি বুখারী-মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।
ইমাম জাহাবীও হাদীসটিকে বুখারী-মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ বলেছেন। ইমাম নববী রহ. হাদীসটিকে মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। (খুলাছাতুল আহকাম: ২৩৪৭)
শায়খ আলবানীও হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ-জঈফ আবু দাউদ: ৫৭০)
সারসংক্ষেপ : এ হাদীসে ঘরের নির্জন স্থানকে মহিলাদের সর্বোত্তম নামাযের স্থান বলা হয়েছে। এ ইরশাদের দ্বারা রসূলুল্লাহ স. মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করেছেন।
حَدَّثَنَا هَارُونُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِي دَاوُدُ بْنُ قَيْسٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُوَيْدٍ الْأَنْصَارِيِّ عَنْ عَمَّتِهِ أُمِّ حُمَيْدٍ امْرَأَةِ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهَا جَاءَتْ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُحِبُّ الصَّلَاةَ مَعَكَ قَالَ قَدْ عَلِمْتُ أَنَّكِ تُحِبِّينَ الصَّلَاةَ مَعِي وَصَلَاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ وَصَلَاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلَاتِكِ فِي دَارِكِ وَصَلَاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ وَصَلَاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِي قَالَ فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتَّى لَقِيَتْ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ (حَدِيثُ أُمِّ حُمَيْدٍ)
আবু হুমাইদ আসসাইদী রা.-এর স্ত্রী উম্মে হুমাইদ থেকে বর্ণিত, তিনি একবার রসূলুল্লাহ স.-এর নিকটে এসে বললেন: ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি আপনার সাথে (জামাআতে) নামায পড়তে ভালোবাসি। রসূলুল্লাহ স. বললেন: আমি জানি যে, তুমি আমার সাথে নামায পড়তে ভালোবাস। তবে খাছ কামরায় নামায পড়া তোমার হুজরায় নামায থেকে উত্তম। আর তোমার হুজরায় নামায পড়া বাড়ীতে নামায পড়া থেকে উত্তম। আর তোমার বাড়ীতে নামায পড়া তোমার গোত্রের মসজিদে নামায পড়া থেকে উত্তম। আর তোমার গোত্রের মসজিদে নামায পড়া আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) নামায পড়া থেকে উত্তম। বর্ণনাকারী বলেন: অতঃপর তাঁর নির্দেশে তাঁর জন্য ঘরের একেবারে ভেতরে এবং অন্ধকারে একটি নামাযের জায়গা তৈরি করা হলো। আর তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই নামায পড়তেন। (মুসনাদে আহমাদ: ২৭০৯০)
হাদীসটির স্তর: সহীহ লিগইরিহী। শায়খ শুআইব আরনাউত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।
আল্লামা নূরুদ্দীন হাইসামী হাদীসটি উল্লেখ করে বলেন: ইমাম আহমাদ রহ. তাঁর মুসনাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন: আব্দুল্লাহ বিন সুআইদ ব্যতীত এ হাদীসের সব বর্ণনাকারী বুখারী-মুসলিমের। আর আব্দুল্লাহকে ইবনে হিব্বান ثقةٌ “নির্ভরযোগ্য” বলেছেন।(মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ২১০৬)
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন:
إِسْنَادُ أَحْمَدَ حَسَنٌ وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيث بن مَسْعُودٍ عِنْدَ أَبِي دَاوُدَ
মুসনাদে আহমাদের সনদটি হাসান হলেও হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আবু দাউদ শরীফের হাদীস এ হাদীসকে সমর্থন করে”।(ফাতহুল বারী: অন্ধকার এবং রাতে মহিলাদের মসজিদে গমন অধ্যায়)
সারসংক্ষেপ : এ হাদীসে মূলতঃ মহিলাদের নামাযের উত্তম স্থান নির্ধারণের বিষয়ে একটি নীতিমালা বর্ণনা করা হয়েছে। আর ওই নীতিমালায় উত্তম হওয়ার মানদ- বা মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে নির্জনতাকে। অর্থাৎ, নির্জনতা যত বেশী হবে মহিলাদের নামাযের জন্য সে স্থানটি ততো বেশী উত্তম হবে। এমনকি নির্জনতার বিবেচনায় মসজিদে নববীতে রসূলুল্লাহ স.-এর পেছনে নামায আদায়ের চেয়েও রসূলুল্লাহ স. অনেক গুণে উত্তম স্থান বললেন ঘরের খাছ কামরাকে। বিবেচক ব্যক্তিগণ অবশ্যই বিবেচনা করবেন যে, মসজিদে নববীতে একটি নামায মসজিদে হারাম ব্যতীত অন্য যে কোন মসজিদের হাজার নামাজের চেয়ে উত্তম। (বুখারী: ১১১৭)
আর রসূলুল্লাহ স.-এর পেছনে আদায়কৃত নামায দুনিয়ার যে কোন ইমামের পিছে আদায়কৃত নামাযের চেয়ে কতগুণ উত্তম আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। এতদসত্ত্বেও রসূলুল্লাহ স. হযরত উম্মে হুমাইদ রা.কে বললেন যে, এই মসজিদে আমার পেছনে আদায়কৃত নামাযের বহুগুণে উত্তম তোমার নিজ ঘরের খাছ কামরার নামায। তাহলে বর্তমান বিশ্বের যে কোন মসজিদে যে কোন ইমামের পেছনে আদায়কৃত নামাযের চেয়ে নিজ ঘরের খাছ কামরার আদায়কৃত নামায কত উত্তম হবে তা ভাষায় প্রকাশের নয়। এ ফযীলাত ছেড়ে দিয়ে নারীদের মসজিদ মুখী হওয়া কোনক্রমেই সওয়াবের উদ্দেশ্যে হতে পারে না; বরং উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু যা নামাযের দোহাই দিয়ে চরিতার্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ হাদীস দ্বারা হযরত ইবনে খুযাইমা রহ. তাঁর সহীহ ইবনে খুযায়মায় শিরোনাম দাঁড় করে বলেন,
أَنَّ قَوْلَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَلَاةٌ فِي مَسْجِدِي هَذَا أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ مِنَ الْمَسَاجِدِ، أَرَادَ بِهِ صَلَاةَ الرِّجَالِ دُونَ صَلَاةِ النِّسَاءِ
নবী কারীম স.-এর বাণী: ‘আমার মসজিদে এক রাকাত নামায (মসজিদে হারাম ব্যতীত) অন্য যে কোন মসজিদে হাজার রাকাত নামায অপেক্ষা উত্তম’ দ্বারা উদ্দেশ্য পুরুষের নামায; নারীদের নামায নয়।
মহিলাদের জন্য ঘরের নির্জন কামরার নামায মসজিদের জামাআতের নামাযের চেয়ে উত্তম হওয়ার ব্যাপারে আরও অসংখ্য সহীহ হাদীস রয়েছে। নমুনা হিসেবে এখানে কয়েকটি হাদীস পেশ করা হলো। এব্যাপারে ইসলামের প্রকৃত অবস্থান জানতে সাহাবায়ে কিরামের আমলও অনেক সহায়ক হবে। তাই এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন সাহাবায়ে কিরামের মন্তব্য বা আমল নিম্নে পেশ করছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন